সোমবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৫

ভূমিকম্প সম্পর্কে শায়খ বিন বায (রহঃ) এর নসীহত‍

ভূমিকম্প সম্পর্কে শায়খ বিন বায (রহঃ) এর নসীহত‍
অনুবাদকঃ শাইখ আবদুল্লাহ আল কাফী
- গ্রাজুয়েট, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে যে সকল ভূমিকম্প দেখা যায়, নিঃসন্দেহে তা আল্লাহর এক প্রকার নিদর্শন। তিনি এর মাধ্যমে বান্দাদেরকে ভয় দেখাতে চান। যেমন তিনি বলেন,
 وَمَا نُرْسِلُ بِالْآيَاتِ إِلا تَخْوِيفًا
আমি শুধু ভয় দেখানোর জন্য আমার নিদর্শন সমূহ প্রেরণ করে থাকি। [সুরা বনি ইসরাঈলঃ ৫৯]
ভূমিকম্প আল্লাহর এক প্রকার বড় নিদর্শন। যা ঠেকানোর ক্ষমতা পৃথিবীতে কারো নেই। উন্নত বিশ্বের সব ধরণের টেকনোলোজি এখানে ব্যর্থ। কিন্তু ভূমিকম্পের মাধ্যমে মানুষের যে ক্ষয়-ক্ষতি হয়, বিপদে পড়ে তাদের জান-মাল নষ্ট হয় তার মূল কারণ হচ্ছে শিরক ও পাপাচার। যেমন আল্লাহ বলেন,
وَمَا أَصَابَكُمْ مِنْ مُصِيبَةٍ فَبِمَا كَسَبَتْ أَيْدِيكُمْ وَيَعْفُو عَنْ كَثِيرٍ
তোমাদের উপর যে মসিবতই এসেছে তা তোমাদের কৃতকর্মের কারণে এসেছে। আর বহু সংখ্যক অপরাধের শাস্তি না দিয়েই আল্লাহ্‌ তোমাদের ক্ষমা করে দিয়ে থাকেন। [সুরা শূরাঃ ৩০]
তিনি আরও বলেন,
مَا أَصَابَكَ مِنْ حَسَنَةٍ فَمِنَ اللَّهِ وَمَا أَصَابَكَ مِنْ سَيِّئَةٍ فَمِنْ نَفْسِكَ
হে মানুষ! যে কল্যাণই তুমি লাভ করে থাকো, তা আল্লাহর দান এবং যে বিপদ তোমার ওপর এসে পড়ে তা তোমার নিজের উপার্জন ও কাজের বদৌলতেই আসে। [সুরা নিসাঃ ৭৯]
তিনি আরও বলেন,
فَكُلًّا أَخَذْنَا بِذَنْبِهِ فَمِنْهُمْ مَنْ أَرْسَلْنَا عَلَيْهِ حَاصِبًا وَمِنْهُمْ مَنْ أَخَذَتْهُ الصَّيْحَةُ وَمِنْهُمْ مَنْ خَسَفْنَا بِهِ الْأَرْضَ وَمِنْهُمْ مَنْ أَغْرَقْنَا وَمَا كَانَ اللَّهُ لِيَظْلِمَهُمْ وَلَكِنْ كَانُوا أَنْفُسَهُمْ يَظْلِمُونَ
শেষ পর্যন্ত প্রত্যেককে আমি তার অপকর্ম ও গুনাহের জন্য পাকড়াও করি। তারপর তাদের কারোর ওপর আমি পাথর বর্ষণকারী বাতাস প্রবাহিত করি এবং কাউকে একটি প্রচণ্ড বিস্ফোরণ আঘাত হানে। আবার কাউকে আমি ভূমিকম্পের মাধ্যমে ভূমি ধস দিয়ে ভূগর্ভে প্রোথিত করি এবং কাউকে (বন্যা-জলোচ্ছ্বাস-প্লাবন প্রভৃতির মাধ্যমে) পানিতে ডুবিয়ে দিই। আল্লাহ তাদের প্রতি জুলুমকারী ছিলেন না, কিন্তু তারা নিজেরাই নিজেদের ওপর জুলুম করছিল। [সুরা আনকাবূতঃ ৪০]
তাই সকলের উপর ওয়াজিব (আবশ্যক) হচ্ছে আল্লাহর কাছে তওবা করা, তাঁর দ্বীনকে আঁকড়ে ধরে তার উপর অটল থাকা। শিরক বিদআত সহ সকল প্রকার অন্যায়-অনাচার ও পাপাচার থেকে সতর্ক থাকা। যাতে করে আল্লাহ তাদেরকে দুনিয়া ও আখেরাতে নিরাপত্তা দান করেন। আল্লাহ বলেন,
وَلَوْ أَنَّ أَهْلَ الْقُرَى آمَنُوا وَاتَّقَوْا لَفَتَحْنَا عَلَيْهِمْ بَرَكَاتٍ مِنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ وَلَكِنْ كَذَّبُوا فَأَخَذْنَاهُمْ بِمَا كَانُوا يَكْسِبُونَ
যদি দেশের লোকেরা ঈমান আনতো এবং তাকওয়ার নীতি অবলম্বন করতো, তাহলে আমি তাদের জন্য আকাশ ও পৃথিবীর রবকত সমূহের দুয়ার খুলে দিতাম। কিন্তু তারা তো সত্যকে প্রত্যাখ্যান করেছে, মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে। কাজেই তারা যে অপকর্ম করে যাচ্ছিলো তার জন্য আমি তাদেরকে পাকড়াও করেছি। [সুরা আরাফঃ ৯৬]
ওমার বিন খাত্তাব (রাঃ) এর যুগে একবার মদীনাতুল মুনাওয়ারায় ভূমিকম্প হয়েছিল, তখন তিনি এনিয়ে খুতবা দিয়েছিলেন এবং মানুষকে ওয়ায-নসিহত করেছিলেন। বলছিলেন, কত দ্রুত তোমরা অপরাধে জড়িয়ে পড়েছো? পুনরায় যদি ভূমিকম্প হয়, তবে আমি তোমাদের মাঝে থাকব না, মদীনা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাব।
বর্ণিত হয়েছে যে, ওমার বিন আবদুল আযীয (রহঃ) এর যুগেও একবার ভূমিকম্প হয়েছিল, তখন তিনি বিভিন্ন শহরের আমীরদেরকে চিঠি লিখে জনগণকে দান-সাদকা করতে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন।

মূল উৎসঃ আরবী রচনাটি ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত।

নবী সুন্নাহ “তোমরা রাত পর্যন্ত রোজা পূর্ণ কর।”

এক ভাই প্রশ্ন করেছেন, ক্বুরানে আল্লাহ বলেছেন তোমরা রাত পর্যন্ত রোজা পূর্ণ কর। [সুরা বাকারাহঃ ১৮৭]
এখন আমরা ইফতার করি মাগরিবের সময়, সন্ধ্যা বা সন্ধ্যার আগেই, এখন আমাদের রোযাগুলো কি ঠিক হচ্ছে? সন্ধ্যা আর রাত তো কোনভাবেই এক হতে পারে না, সন্ধ্যা শেষ হবার পরই রাত আসে?

উত্তরঃ এটা নিয়ে মুফাসসিরিন একরাম অনেক কথা বলেছেন, তবে পাঠকদের সুবিধার্থে আমি সংক্ষেপে সহজ ভাষায় কিছু কথা বলছি। ক্বুরআনুল কারীমের আয়াত বুঝতে হয় রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুন্নাহর আমল অনুসারে। কারণ, ক্বুরানুল কারীম নাযিল হয়েছিলো মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপরে, এজন্য কোন আয়াতের অর্থ কি, কোন আয়াত কিভাবে আমল করতে হবে, সেই ব্যপারে আমাদের মাঝে তিনিই সবচেয়ে বেশি জানতেন। আল্লাহ তাআলা ক্বুরানুল কারীম সরাসরি বই আকারে না পাঠিয়ে একজন মানুষকে রাসুল হিসেবে পাঠিয়েছেন এবং তাঁর উপর নাযিল করেছেন এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, যাতে করে কোন আয়াতের অর্থ কি এবং সেটা কিভাবে আমল করতে হবে, সেটা মানুষদের মাঝে নির্বাচিত ও মনোনীত একজন ব্যক্তি (রাসুল) যদিনি নিজে মানুষকে আমল করে তা দেখিয়ে দেবেন ও শিক্ষা দেবেন। আল্লাহ তাআলা যখন বলেছেন, তোমরা রাত পর্যন্ত রোজা পূর্ণ কর এই আয়াতের আলোকে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইফতার করেছেন মাগরিবের ওয়াক্ত শুরু হলেই, এবং তাঁর সাহাবাদেরকেও আদেশ করেছেন সূর্য ডোবার পরেই ইফতারি করার জন্য। ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী, সূর্য ডোবার পর থেকেই অর্থাৎ মাগরিবের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পর থেকেই রাত শুরু হয়, যদিওবা তখনো সূর্যের আলো না মিলিয়ে পুরোপুরি অন্ধকার না হোক। এনিয়ে সহীহ হাদীসগুলো জানার জন্য আপনার সুরা বাকারার ১৮৭ নাম্বার আয়াত ও সুরা বনী ইস্রাইলের ৭৯ নাম্বার আয়াতের তাফসীরে দেখুন, তাফসীর ইবনে কাসীর থেকে। উল্লেখ্য, বিভ্রান্ত জাতি যারা নিজেদের শিয়াআহলে ক্বুরান নামে পরিচয় দেয় এবং নিজেদের মুসলমান বলে দাবী করে, (আসলে তারা ক্বুরানের অমান্যকারী দুইটি জাতি), তারা ইয়াহুদীদের দেখাদেখি আমাদেরকে রাতের অন্ধকার হলে ইফতারি করার জন্য বলে। এরা দাবী করে তারা ক্বুরান মানে, কিন্তু হাদীস বা সুন্নাহ মানেনা। এই জাহেল লোকেরা এটা বুঝেনা ক্বুরানেই আল্লাহ আদেশ করেছেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আদেশ ও নিষেধ মানার জন্য। এখন, নবীর কথা না মানলে সেটা যে ক্বুরানের কথা না মানার সমান, এই সহজ কথাটা তাদের ব্রেইনে ঢুকেনা। 

শুক্রবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৫

গণতন্ত্রের মতো শিরকি মতবাদ

গণতন্ত্রের মতো শিরকি মতবাদ ইসলাম কোনোদিন সমর্থন করেনা। কারণ এই মতবাদ অনুযায়ী রাষ্ট্রের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় (নেতা নির্বাচনে) একজন আলেমে দ্বীন, একজন নেককার মুত্তাকী, পরহেজগার মানুষের ভোটের যে মূল্য, সেই একই মূল্য রয়েছে একজন খুনি, ধর্ষক, জেনাকারী, পতিতা, লম্পটের। দুইজনের ভোটের বা দুইজনের মতামতের কোনো পার্থক্য নাই। এমনকি একজন বিধর্মী, ইসলামের দুশমনেরও সমান অধিকার!

সুবহা'নাল্লাহ ! আমি বুঝিনা কিছু মানুষ নিজদেরকে মুসলমান দাবী করে আবারা গণতন্ত্রের পক্ষে সাফাই গায়। এরা হয় অজ্ঞ, নয়তো পথভ্রষ্ট !! আল্লাহু মুস্তাআন !!!

আমি যখন ছোটবেলায় গ্রামে ছিলাম তখন কন্ঠশিল্পী "মমতাজ" এর গান চায়ের দোকানগুলোতে বাজতে শুনতাম। এতো অশ্লীল ও জঘন্য !! আর তার শ্রোতারাও ছিলো সেই পর্যায়ের নিম্নমানের !!!

যাইহোক পরবর্তীতে তার সম্পর্কে আরো জানতে পারি, সে সুফীবাদী বাউল ধর্মে বিশ্বাসী। মারেফতের নামে প্রকাশ্য শিরকি কুফুরীতে লিপ্ত। সে যে কথা বলে আসলে শয়তান তাকে দিয়ে এইগুলো বলাচ্ছে, মানুষকে কাফের মুশরেক বানানোর জন্য...

গণতন্ত্র অনুযায়ী নিকৃষ্ট এই মহিলা (মমতাজের) ভোট আর আমাদের দেশের সবচেয়ে ভালো আলেমের ভোটের মাঝে কোনো পার্থক্য নাই। এই মহিলা নাকি এমপি ও হয়ে গেছে। আর গণতান্ত্রিকবাদীরা এমপিদেরকে "আইনপ্রণেতা" বলে (নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক) !!

অথচ মুসলমানদের একমাত্র আইনপ্রণেতা/হুকুমদাতা হচ্ছেন আল্লাহ রাব্বুল আ'লামীন। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
তাদের কি এমন কোনো শরীক দেবতা আছে, যারা তাদের জন্যে সে ধর্ম বানিয়ে দিয়েছ, যার অনুমতি আল্লাহ দেননি? [সুরা শুরাঃ ২১]

আল্লাহ তাআলা আরো বলেনঃ
তারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে নিজেদের আলেম ও ধর্ম-যাজকদেরকে রব্ব বানিয়ে নিয়েছে। [সূরা তাওবাঃ ৩১]।

এইরকম সমাজের জঘন্য লোকেরা যখন রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে বসে পড়ে তখন সমাজের অবস্থাটা কি দাঁড়ায়?
১. মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নেই। প্রতিদিন মানুষ খুন হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকে, কোনো বিচার নেই। কে কখন খুন হয় তার কোনো গ্যারান্টী নেই, যারা বিচার চাইতে যায় উলটা তারাও খুন হয়???
২. নারী সমাজ চরমভাবে নির্যাতিত। খুন, ধর্ষণ, পতিতাবৃত্তি, সংস্কৃতির নামে নারী ব্যবসা...
৩. বিচারপতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাই নির্যাতিত ও লাঞ্চিত, বিচার হয় টাকা নয় ক্ষমতা অনুযায়ী...
৪. বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি নামে ছাত্রদের খুনী, ধর্ষক পশু হিসেবে গড়ে উঠা।

৫. সুদ, ঘুষ, জেনা, ব্যভিচার, বিশৃংখলা সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে...

বৃহস্পতিবার, ২৩ এপ্রিল, ২০১৫

রোযা অবস্থায় মুখে লালা বেশি আসে

প্রশ্নঃ রোযা অবস্থায় মুখে লালা বেশি আসে আর বারবার থুথু ফেলতে হয়। এমন অবস্থায় নামাযে কি করণীয়।

উত্তরঃ ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি বারাকাতুহু। রোযা অবস্থায় কখনো মুখে লালা জমাবেন না, নামাযের ভেতরেই হোক বা বাইরে। এটা আসলে অভ্যাসের ব্যপার, একবার থুথু ফেলা শুরু করলে শয়তান এসে অন্তরে বারবার ওয়াসওয়াসা দিতে থাকে, যার ফলে ক্রমাগত থুথু আসতেই থাকে এবং আপনি ফেলতেই থাকেন। রোযা অবস্থায় এভাবে শরীর থেকে পানি ও মিনারেলসগুলো বেরিয়ে গেলে পানিশূন্য হয় শরীর দুর্বল হয়ে যাবে। মনে রাখবেন, অল্প থুথু বা লালা গিলে ফেললে রোযা ভাংগেনা। তাই নেক্সট রোযা থেকে অল্প লালা আসা মাত্র গিলে ফেলবেন, এইভাবে আস্তে আস্তে অভ্যস্ত হবেন, যাতে করে রোয়া রাখা অবস্থায় লালা আসার বদ অভ্যাস দূর হয়। আর লালা আসছে নাকি না আসছে এইগুলো নিয়ে চিন্তা করলে আরো বেশী লালা আসবে। তাই এইগুলো নিয়ে আপনি চিন্তাই করবেন না, আস্তে আস্তে প্র্যাক্টিস করে যেমন এমনিতে রোযা ছাড়া নামায পড়লে মুখে লালা আসেনা, ঠিক তেমনি রোযা অবস্থায়ও যাতে মুখে লালা বেশি না আসে, শরীরকে সেইভাবে আয়ত্ত করতে হবে। তবে কফ গিলে ফেলবেন না, নামাযের ভেতরে হলে আর পাশে কেউ না থাকলে বাম দিকে অথবা পায়ের নিচে ফেলে দিতে পারেন, তবে কখনোই সামনের দিকে ফেলবেন না। আল্লাহ তোওফিক দান করুন,আমিন।   

বুধবার, ২২ এপ্রিল, ২০১৫

#দুনিয়ার_জীবনের_উপমাঃ

_________________________________
#দুনিয়ার_জীবনের_উপমাঃ
একজন শায়খ একবার তার ছাত্রদেরকে দুইটি বইয়ের মাঝে যেকোন একটা করে সবাইকে উপহার দিলেন। বইগুলোর মাঝে একটা ছিলো মোটা ও দেখতে খুব সুন্দর, আর অন্য বইটা ছিলো চিকন, দেখতে তেমন সুন্দর বা আকর্ষণীয় না! যেই ছাত্ররা মোটা বই পেলো তারা খুশি হলো কারণ, বেশি পৃষ্ঠা বেশি পড়তে ও জানতে পারবে। অন্যদিকে যারা চিকন বই পেলো, তারা কম লেখা থাকায় ব্যথিত হলো। যাইহোক, কিছুদিন পর সেই শায়খ ঘোষণা দিলেন, তিনি তার ছাত্রদেরকে পরীক্ষা করবেন। আর পরীক্ষার নিয়ম হচ্ছে, ইতিঃপূর্বে তিনি যাকে যেই বই দিয়েছিলেন তাকে সেই বই থেকেই প্রশ্ন করা হবে। এবার যারা মোটা বই পেয়েছিলো তারা চিন্তায় পড়ে গেলো ও আফসোস করতে লাগলো। হায়! শায়খ যদি তাদেরকে চিকন বইগুলো দিতেন! কারণ পরীক্ষায় ভালো করার জন্য মোটা বই বেশি পড়তে হবে, বেশি পরিশ্রম। আর ইতিঃপূর্বে যার চিকন বই পেয়ে আফসোস করছিলো, এবার তারা খুশি হলো। চিকন বই মানে কম পড়া, কম কষ্ট করে পরীক্ষায় ভালো করা যাবে। এবার শায়খ তাদেরকে বললেন, আমাদের দুনিয়ার জীবনের উপমা হচ্ছে ঠিক এমনি। আল্লাহ দুনিয়ার জীবনে যাদেরকে বেশি নেয়ামত দান করবেন, কেয়ামতের দিন তাকে বেশি প্রশ্ন করবেন। আর যাকে কম নেয়ামত দেওয়া হবে, কেয়ামতের দিন তাকে প্রশ্নও করা হবে কম।
আল্লাহ তায়া'লা দুনিয়া সম্পর্কে বলেছেন,
দুনিয়ার জীবন ধোকায় পূর্ণ সাময়িক ভোগ-বিলাসের বস্তু ছাড়া আর কিছুইনা। [সুরা আলে-ইমরানঃ ১৮৫]
_________________________________
#রিদা_মিন_ক্বালিল বা #অল্পে_সন্তুষ্ট_থাকা
জীবনে সুখী হওয়ার একটা শর্ত হচ্ছে, রিদা মিন ক্বালিল বা অল্পে তুষ্ট থাকা। দুনিয়াতে অনেকে আপনার চাইতে অনেক বেশি ভোগ-বিলাসে থাকবে, আবার দুনিয়াতে অনেকে আপনার চাইতে অনেক বেশি দুঃখ-কষ্টে থাকবে। আপনি যদি দুনিয়ার ব্যপারে আপনার চাইতে উপরের কারো দিকে তাকান, তাহলে আল্লাহ্‌ আপনাকে যা দিয়েছে সেটা অনেক কম মনে হবে। ফলে আপনি আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া না করে উল্টা না পাওয়ার জন্য আফসোস করে নাশোকরী করে বসবেন। আর দ্বীনের ব্যপারে যদি আপনি আপনার থেকে কোন নিচু ব্যক্তির দিকে তাকান তাহলে নিজের পাপ কাজগুলোকে অনেক কম মনে হয়ে নিজেকে আল্লাহর ওয়ালী ভাবতে শুরু করবেন।
সেইজন্য রাসুল সাঃ বলেছেন, তোমরা সবসময় দুনিয়ার ব্যপারে তোমাদের চাইতে নিচু কারো প্রতি লক্ষ্য করবে, আর দ্বীনের ব্যপারে তোমাদের চাইতে উত্তম কোন ব্যক্তির দিকে লক্ষ্য করবে। এতে করে তোমরা তোমাদের প্রতি আল্লাহর দেওয়া নেয়ামতগুলোর কথা স্বরণ করতে পারবে এবং এটা তোমাদেরলে তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞশীল হতে সাহায্য করবে।
_________________________________
অল্পে তুষ্ট থাকা নিয়ে শেখ সাদীর একটা কবিতার বাংলা অনুবাদঃ
একদা ছিলনা জুতা চরণ যুগলে
দহিল হৃদয়-অমন সেই ক্ষোভানলে,
ধীরে ধীরে চুপি চুপি দুঃখাকুল মনে
গেলাম ভজনালয়ে ভজন কারনে।
দেখি সেথা একজন পদ নাহি তার
অমনি জুতার খেদ ঘুচিল আমার।
পরের দুঃখের কথা করিলে চিন্তন
আপনার মনে দুঃখ থাকে কতক্ষণ?
_________________________________

মঙ্গলবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৫

নামাযের রুকন, ওয়াজিব, সুন্নত ও নামায ভংগের কারণসমূহ


নামাযের রুকন, ওয়াজিব, সুন্নত ও নামায ভংগের কারণসমূহ
__________________________________
নামাযে রুকন হচ্ছে মোট ১৪টিঃ
১. সামর্থ্য থাকলে দাঁড়িয়ে নামায পড়া।
২. তাকবীরে তাহরীমাহ অর্থাৎ আল্লাহু আকবার বলে নামায শুরু করা।
৩. প্রত্যেকে রাকাতেই সুরা ফাতিহা পাঠ করা।
৪. রুকু করা।
৫. রুকু থেকে উঠে সোজা হয়ে দাঁড়ানো।
৬. (দুই হাত, দুই পা, দুই হাঁটু ও মুখমন্ডল এই) সাতটি  অঙ্গের উপর সিজদা করা।
৭. সিজদা হতে উঠা।
৮. দুই সিজদার মাঝখানে পিঠ সোজা করে বসা।
৯. শেষ বৈঠকে তাশাহ্হুদ (আত্তাহিয়্যাতু...) পড়া।
১০. তাশাহ্হুদ পড়ার সময় বসে থাকা।
১১. নামাযের এই রুকনগুলো ধীর ও স্থিরতার সাথে সম্পাদন করা।
১২. এই রুকনগুলো ধারাবাহিকভাবে একটার পর একটা আদায় করা।
১৩. (শেষ বৈঠকে) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর দরুদ পাঠ করা।
১৪. ডানে ও বামে দুই দিকে সালাম প্রদান করা বা সালাম ফিরিয়ে নামায শেষ করা।
__________________________________
নামাযের ওয়াজিব (বা ফরয) হচ্ছে মোট ৮টিঃ
১. তাকবীরে তাহরীমার তাকবীর ছাড়া নামাযে অন্যান্য তাকবীর সমূহ (আল্লাহু আকবার) বলা।
২. سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ (সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ) বলা। আর ইহা ইমাম ও একাকী নামায আদায় কারীর জন্য ওয়াজিব। তবে মুক্তাদী তা পাঠ করবে না। (অবশ্য একদল আলেমের মতে মুক্তাদীও তা পড়তে পারে।)
৩. ইমাম, মুক্তাদী ও একাকী নামায আদায় কারী সকলের উপর رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ (রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ) সকলের জন্যে বলা ওয়াজিব।
৪. রুকুতে سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيمِ (সুব্হানা রাব্বিয়াল আজীম) বলা।
৫. সিজদায় سُبْحَانَ رَبِّيَ الْأَعْلَى (সুবহানা রাব্বিয়াল আলা) বলা।
৬. দুসিজদার মাঝে رَبِّ اغْفِرْلِي   (রাব্বিগ ফিরলী) বলা।
৭. প্রথম বৈঠকে তাহিয়্যাত (আত্তাহিয়্যাতু...) পড়া। 
৮. প্রথম বৈঠকের জন্য বসা
__________________________________
নামাযের সুন্নাত সমূহ হচ্ছেঃ
১. সানা বা প্রারম্ভিক দুআ পাঠ করা।
২. ডান হাতকে বাম হাতের উপর করে দাঁড়ানো অবস্থায় রুকুর পূর্বে ও পরে বুকের উপর রাখা।
৩. দুই হাতের আঙ্গুল মিলিত ও দণ্ডয়মান অবস্থায় অবস্থায় কাধঁ অথবা দুই কানের লতি পর্যন্ত তুলে ইশারা করা, তাকবীরাতুল ইহরামের সময়, রুকু করার সময়, রুকুহতে উঠার সময় ও প্রথম বৈঠক হতে তৃতীয় রাকাআতের জন্যে দাঁড়ানের সময়।
৪. রুকু ও সিজাদার তাসবীহ সমূহের একের অধিকবার পাঠ করা।
৫. দুই সিজদার মাঝে মাগফিরাত বা ক্ষমার জন্য দুআ একবারের অধিক পাঠ করা।
৬. রুকুতে মাথাকে পিঠের বরাবর বা সমান্তরাল রাখা।
৭. সিজদারত অবস্থায় দুই হাতকে পার্শদ্বয় হতে, পেটকে উরুদ্বয় হতে ও উরুদ্বয়কে পায়ের নলীদ্বয় হতে দূরে রাখা।
৮. (নারী ও পুরুষের উভয়ের জন্য) সিজদার সময় জমিন হতে দুই হাতকে উঁচু করে রাখা।
৯. প্রথম বৈঠকে ও দুই সিজাদার মাঝখানে ডান পা খাড়া রেখে বাম পা বিছিয়ে তার উপর বসা। (প্রথম বৈঠকে পুরুষদের মতো করে বসা, নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্য সুন্নাহ)। 
১০. তিন ও চার রাকআত বিশিষ্ট নামাযের শেষ বৈঠকে তাওয়াররুক করা। তাওয়াররুকের নিয়ম হল, বাম পা কে ডান পায়ের নলীর নিচে রাখা, অতঃপর ডান পায়ের পাতা খাড়া রেখে নিতম্বের উপর বসা। (দ্বিতীয় বৈঠকে নারীদের মতো করে বসা, নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্য সুন্নাহ)।
১১. প্রথম ও দ্বিতীয় বৈঠকে তাশাহুদের বসার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শাহাদত আঙ্গুলী দ্বারা ইশারা করা ও দুআর সময় নড়ানো।
১২. প্রথম বৈঠকে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তার পরিবারের উপর এবং ইব্রাহীম ও ইব্রাহীম আলাইহিস সলাতু ওয়াস সালামের  পরিবারের উপর সলাত ও বরকত বর্ষণ করা।  অর্থাৎ, ২টি বৈঠকের নামাযের প্রথম বৈঠকে দুরুদে ইবরাহীম পাঠ করা সুন্নাহ।
১৩. শেষ বৈঠকে দুআ মাসুরা পড়া।
১৪. ফজরের নামাযে, জুমুআর নামাযে, দুই ঈদের নামাযে, বৃষ্টি প্রার্থনার নামাযে এবং মাগরিব ও এশার নামাযের প্রথম দুই রাকআত ফরয নামাযে উচ্চ স্বরে সুরা-ক্বিরাত পাঠ করা।
১৫. যুহর, আসর ও মাগরিবের তৃতীয় রাকআতে এবং এশার সলাতের শেষ দুই রাকআতে চুপিস্বরে সুরা-ক্বিরাত পাঠ করা।
১৬. সূরা ফাতিহা পড়ার পর ক্বুরআনের অন্য স্থান থেকে (সুরা বা আয়াত) পাঠ করা।
নামাযের যে সুন্নাতগুলো আমরা উল্লেখ করেছি, তা ছাড়াও হাদীসে বর্ণিত অন্যান্য সুন্নাতগুলোর প্রতি লক্ষ্য রাখা উচিত। যেমন- ইমাম, মুক্তাদী ও একা একা সলাত আদায়কারীর রুকু হতে উঠে রব্বানা ওয়া লাকাল হামদু এর অতিরিক্ত দুয়া পাঠ করা, এটি সুন্নাত। আরও তার (নামাযের সুন্নাতের) অন্তর্ভূক্ত হচ্ছে, রুকুর সময় দুই হাতের অঙ্গুলগুলো ছাড়ানো বা আলাদা অবস্থায় রেখে দুই হাঁটুকে মজবুতভাবে আকড়ে ধরা। আরো হচ্ছে, সিজদার সময় অঙ্গুলগুলো মিলিত রাখা, নাক মাটিতে লাগিয়ে রাখা. . .ইত্যাদি।
__________________________________
যে সকল কারণে নামায নষ্ট হয়, সেগুলো হচ্ছে মোট ৮টিঃ
১. নামাযে মাসলাহাতের (কল্যাণ মূলক) বহির্ভূত এমন বিষয়ে স্বরণ ও জানা থাকা অবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে কথা বলা। তবে মনের ভুলে অথবা কোন মূর্খ ব্যাক্তি না জেনে কথা বলে ফেললে, তার নামায বাতিল হবে না।
২.  নামাযে উচ্চস্বরে হাসা। তবে সামান্য মুচকি হাসা যা দেখে কেউ বুঝতে ন আপারে তবে তার কারনে নামায ভাংবেনা।
৩. নামাযের ভেতরে কোন কিছু খাওয়া।
৪. নামাযের ভেতরে কোন কিছু পান করা।
৫. নামায চলাকালীন সময় আওরাহ বা লজ্জাস্থান প্রকাশিত হওয়া।
৬. সলাতে ধারাবাহিকভাবে অনেক বেশী বেহুদা বা অনর্থক কাজ করা। (আর অধিক কাজের পরিমাণ নির্ণয় করার মানদণ্ড হল, কেউ তার দিকে তাকালে মনে হবে যেন, সে নামাযের মাঝে নয়)।
৭.  ক্বিবলার দিক থেকে ডান বা বাম দিকে অনেক বেশি সরে যাওয়া।
৮. নামাযের ভেতরে সালাম ফেরানোর পূর্বে যেকোণ সময়ে অযু ভেঙ্গে যাওয়া।
মূল উৎসঃ সারা বিশ্বের মুসলিমদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় পাঠ সমূহ
লেখকঃ ইমাম আব্দুল আজিজ বিন আব্দুল্লাহ বিন বায (রহঃ)।
***এডমিন (আনসারুস সুন্নাহ) কর্তৃক কিছুটা সম্পাদিত।

__________________________________ 

রবিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৫

কয়েকটি বহুল প্রচলিত বিদাতের নাম

কয়েকটি বহুল প্রচলিত বিদাতের নাম
প্রশ্নঃ আমাদের দেশে বড় ধরনের কি কি বিদআতী কাজ সংঘটিত হচ্ছে, যার সাথে শরীআতের কোনো সম্পর্ক নেই?

উত্তরঃ একজন খাঁটি মুসলিম কোনো আমল সম্পাদনের পূর্বে অবশ্যই পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে দেখবে যে, তার কৃত আমলটি কুরআন ও সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত কি-না। কিন্তু আমাদের দেশের সহজ-সরল ধর্মপ্রাণ মানুষ এমন অনেক কাজ বা আমলের সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত করে রেখেছেন, যার সাথে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর উপর নাযিলকৃত শরীআতে কোনো সম্পর্কে নেই। এমন উল্লেখযোগ্য কিছু বিদআত হলোঃ

১. মীলাদ মাহফিল এর অনুষ্ঠান করা।
২. শবে বরাত পালন করা।
৩. শবে মিরাজ উদযাপন করা।
৪. মৃত ব্যক্তির কাযা বা ছুটে যাওয়া নামাযসমূহের কাফ্ফারা আদায় করা।
৫. মৃত্যুর পর তৃতীয়, সপ্তম, দশম এবং চল্লিশতম দিনে খাওয়া-দাওয়া ও দোআর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা।
৬. ইসালে সাওযাব বা সাওয়াব রেসানী বা সাওয়াব বখশে দেওয়ার অনুষ্ঠান করা।
৭. মৃত ব্যক্তির রূহের মাগফিরাতের জন্য অথবা কোনো বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার উদ্দেশে খতমে কুরআন অথবা খতমে জালালী অনুষ্ঠান করা।
৮. উচ্চকণ্ঠে বা চিৎকার করে যিকর করা।
৯. হালকায়ে যিকর নামে বিদাতী পদ্ধতিতে যিকিরের অনুষ্ঠান করা।
১০. মানুষের বানানো তরীকায় পীরের মূরীদ হওয়া।
১১. ফরয, সুন্নাত, নফল ইত্যাদি সালাত শুরু করার পূর্বে মুখে উচ্চারণ (নায়াইতুয়াল উসালিল্লাহি তাআলা...) করে নিয়্যাত পড়া।
১২. প্রস্রাব করার পরে পানি থাকা সত্ত্বেও অধিকতর পবিত্রতা অর্জনের উদ্দেশ্যে কুলুখ নিয়ে ২০/৪০/৭০ কদম হাঁটাহাঁটি করা বা জোরে কাশি দেয়া অথবা উভয় পায়ে কেঁচি দেওয়া, যা বিদআত হওয়ার পাশাপাশি বেহায়াপনাও বটে।
১৩. ৩টি অথবা ৭টি চিল্লা দিলে ১ হাজ্জের সাওয়াব হবে, এমন ভ্রান্ত বিশ্বাস রাখা।
১৪. সম্মিলিত যিকর ও যিকরে নানা অঙ্গভঙ্গি করা।
১৫. সর্বোত্তম যিকর ‘‘লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ-কে কাটছাট করে শুধু আল্লাহ আল্লাহ বা হু হু অথবা ইল্লাল্লাহ ইল্লাল্লাহ বলে যিকির করা ইত্যাদি।

উল্লিখিত কার্যসমূহ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কিরাম এমনকি চার ইমাম এর আমলের মাঝেও অন্তর্ভুক্ত ছিল না এবং কুরআন-সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিতও নয়। সুতরাং এ সবই বিদআত, যা মানুষকে পথভ্রষ্টতার দিকে পরিচালিত করে, যার চূড়ান্ত পরিণতি জাহান্নামের আযাব ভোগ করা। আল্লাহ তাআলা আমাদের এসব বিদ্আতী কর্মকাণ্ড হতে হিফাযত করুন-আমীন।
Post written by - আব্দুল আজিজ