#তাগুত
তাগুত অর্থ হচ্ছে সীমা লংঘনকারী, তাগুত বলতে আসলে ‘আল্লাহদ্রোহী’ বোঝায়। যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অন্য
কোন কিছুর ইবাদত বা পূজা করতে আদেশ করে, অথবা যাকে পূজা করা হয় এবং লোকেরা তার
ইবাদত করে এতে সে রাজী-খুশি থাকে, তাহলে ঐ ব্যক্তিকে তাগুত বলা হয়।
বাংলাদেশে এমন অনেক তাগুত রয়েছে, যারা গায়রুল্লাহর
উপাসনার দিকে মানুষকে আহবান করে। তাদের মাঝে সবচাইতে বড় তাগুতের মধ্যে রয়েছে ভন্ড
পীর ও মুরশিদ, যারা ইসলাম বিরোধী, ঈমান বিরোধী শিক্ষা দিয়ে তাদের মুরীদের ঈমান
নষ্ট করে। আর বিনিময়ে মূর্খ মুরীদের টাকা অন্যায়ভাবে ভোগ করে। এমন সুস্পষ্ট কাফির
ও মুশরেক পীরদের মাঝে সবচাইতে বেশি ধ্বংসাত্মক কয়েকটি পীরের নামঃ
(১) দেওয়ানবাগী - এই দেওয়ানবাগী নিজেকে আল্লাহ দাবী
করেছে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে এমন
কটুক্তি করেছে, যা নাস্তিকদেরকেও ছাড়িয়ে গেছে।
(২) মাইজভান্ডারী - এরা গান-বাজনা করে, ওরশ নামক
মদ-গাজার আসর করে।
(৩) চন্দ্রপুরী - এই ব্যক্তি দাড়ি রাখেনা, নাচ,
গান-বাজনা সব কিছুই তার দরবারে চলে। এই ব্যক্তিকে তার মুরীদেরা হিন্দুদের মতোই
একেবারে হাত পা ছড়িয়ে মাটিতে শুয়ে সিজদাহ করে।
(৪) আটরশি বা জাকের পার্টি - এই পীর সাহেবেরও দাড়ি নেই।
আটরশি পীরকে তার মুরীদেরা আল্লাহর মতো সমান মনে করে।
(৫) তোফাজ্জল হোসাইন ভৈরবী - এ কোন পীর না, কিন্তু সে
ডাইরেক্ট কবর পূজারী। এবং তার ওয়াজ নামক চিল্লাফাল্লা ও বাকোয়াজ দিয়ে দিনরাত
মানুষকে পীর পূজা, মাযার পূজার দিকে দাওয়াত দেয়।
(৬) কোয়ান্টামের গুরুজী বা মহাজাতক - এ হচ্ছে ডিজিটাল
পীর, যে হিন্দু, বৌদ্ধ ও সূফীদের, বিভিন্ন ধর্ম মিলিয়ে কোয়ান্টাম নামক নতুন একটা
ধর্ম চালু করেছে। কিন্তু উপরে উপরে কিছু ইসলামের কথা বলে সে মুসলমানদেরকে ধোকা
দিচ্ছে।
যাই হোক এমন আরো অনেক আলেম নামক জালেম রয়েছে, যারা কোটি
কোটি মুসলমানদের ঈমান নষ্ট করছে। এই সমস্ত পীর-পুরোহিতের যারা মুরীদ হয়, তাদের
আকিদাহ বা বিশ্বাস কেমন হয় একটু শুনুনঃ
(১) নামায সব সময় পড়তে হয় না। মাঝে মাঝে নামায পড়লেই হয়
বা, পড়ার মতো নামায জীবনে একবার পড়লেই হয়।
(২) পীরকে এবং পীরের মাযারকে সেজদাহ না করলে বেয়াদবী হয়।
(৩) পীরের মাযার জিয়ারত না করলে জীবনে অনেক বড় ক্ষতি
হয়ে যাবে।
(৪) নামায-রোযা করে জান্নাতে যাওয়া যায়না, জান্নাতে
যেতে হলে পীরের মুরিদ হতে হবে।
(৫) পীর জান্নাতে নিয়ে যাবে।
(৬) পীর কবরে সওয়াল জওয়াব দিয়ে দিবে।
(৭) আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্যে গান-বাজনা করতে হয়।
এজন্যে এরা ওরশ নামক শিরকের মেলায় ৫০ হাজার, ৭০ হাজার টাকা দিয়ে মহিলা কন্ঠশিল্পী
ভাড়া করে আনে। এমন বেপর্দা, ভন্ড মহিলা শিল্পীদের একজন হচ্ছে কন্ঠশিল্পী মমতাজ,
যেকিনা গণতন্ত্রবাদীদের সংসদ সদস্য হয়েছিলো।
(৮) পীর ও তার মুরিদেরা যখন আল্লাহক পেয়ে যায়, তখন
নাচানাচি করে। আপনারা ইউটিউবে সার্চ করলে এমন পীর ও তাদের মুরীদের অনেক নাচানাচির
ভিডিও দেখতে পারবেন।
(৯) পীরের জন্যে অনেক মহিলা স্বামীকে অমান্য করে, তালাক
দেয়, পরিবার ফেলে বৈরাগী হয়ে পীর পূজাতে লেগে যায়। অনেকে ছেলে-মেয়ে মা-বাবার কথা
শুনেনা, মা বাবার উপর অত্যাচার করে।
(১০) পীরের দরবার চালানোর জন্যে পীরকে হাদিয়া(!) দিতে
হয়। মুরিদের এই হাদিয়া হচ্ছে পীরদের এক নাম্বার ইনকামের সোর্স। অশিক্ষিত, দরিদ্র,
সরলমনা, নির্বোধ নারী-পুরুষেরা সারা মাস কঠোর পরিশ্রম করে টাকা-পয়সা জমায় আর
ছেলে-মেয়েদেরকে কোন টাকা-পয়সা না দিয়ে বা, নামমাত্র কিছু টাকা দিয়ে বেশিরভাগ টাকাই
পীরের হাতে তুলে দেয়। আর পীর দরিদ্র মুরীদের দেওয়া টাকা দিয়ে রাজার হালে বিলাস
বহুল জীবন যাপন করে।
(১১) পীরেরা চালাকি করে, ভয় দেখিয়ে বা কৌশলে মুরিদের
সম্পত্তি লিখে নেয়, আত্মসাৎ বা দখল করে নেয়।
(১২) গর্দভ শ্রেণীর কিছু পুরুষ মুরীদ থাকে, যারা তদবীর,
ঝাড়ফুক, তাবীজ, রোগের চিকিৎসা বা বিভিন্ন উসীলায় পীর নামক চলমান শয়তানদের কাছে
তাদের স্ত্রী কন্যাদেরকে তুলে দেয়। অনেক পীর কৌশলে তার ভক্ত নারীদেরকে অন্যায়ভাবে
ভোগ করে। এমন অনেক সত্যিকারের উদাহরণ রয়েছে।
(১৩) বিপদে পড়লে পীর বিপদ থেকে উদ্ধার করে। একারণে
মুরীদেরা বিপদে পড়ে আল্লাহকে ডাকেনা, তাদের পীর বাবাকে ডাকে।
(১৪) আল্লাহ মানুষের অন্তর দেখেন, সুতরাং পীর সাহেব
দাড়ি না রাখলে, সিগারেট বা মদ-গাঁজা খেলে, মেয়ে নিয়ে আনন্দ ফূর্তি করলে তেমন কোন
সমস্যা নাই।
(১৫) যাদের ছেলে মেয়ে হয়না তাদেরকে মাযারে শোয়ার মৃত
পীর অথবা জিন্দা পীর সন্তান দিতে পারে। একারণে আমাদের দেশের হাজার হাজার নামধারী
মুসলমানেরা আজমীর শরীফ নামক নাকাপ, শিরকিস্থানে গিয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ে।
(১৬) মিলাদ পড়লে রাসুল সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর কবর ছেড়ে স্বয়ং নিজে মিলাদ মাহফিলে চলে আসেন।
(১৭) রাসুল সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম-ই হচ্ছেন আল্লাহ, মিরাজের রাতে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল এক
হয়ে গেছেন।
নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক...
আমি উপরে যেইগুলো লিখেছি তার কোনটাই বানিয়ে বানিয়ে
লিখিনি, বরং এই সবগুলো বাংলাদেশের পীর নামক ধর্ম ব্যবসায়ী ও তাদের মুরীদের মাঝে
খুব বেশি প্রচলিত। আপনারা এদের ব্যপারে একটু খোঁজ খবর নিলে পীর-মুরিদের মাঝে এমন
হাজারো শিরকি ও কুফুরী কাজ দেখেতে পারবেন। পীর নামক তাগুতেরা এভাবেই সরলমনা,
অশিক্ষিত মুসলমান নারী ও পুরুষদের ঈমান নষ্ট করছে। আপনারা এদের ব্যপারে সচেতন হন,
ইতিমধ্যেই এরা অনেককে গোমরাহ বানিয়ে জাহান্নামের রাস্তায় নিয়ে গেছে।
এমন পথভ্রষ্ট, ভন্ড আলেম ও পীরদের ফেতনা সম্পর্কে রাসুল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে অনেক আগেই সতর্ক করে করছেনঃ
(১) একদিন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
বললেন, “আমি আমার উম্মাতের জন্য একটি বিষয়কে দাজ্জাল এর থেকেও
বেশী ভয় করি।” (একজন সাহাবী বললেন), আমি ভয় পেয়ে
জিজ্ঞেস করলাম, “হে আল্লাহর রাসুল, সেটি কি?” নবীজি বললেন, “বিপথগামী এবং পথভ্রষ্ট আলেম।”
মুসনাদে ইমাম আহমাদঃ ২১৬২১, তাবরানীঃ ৭৬৫৩, হাদীসটি
সহীহ।
(২) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো
বলেছেনঃ
“(ফিতনার যুগে) কিছু লোক এমন হবে,
যারা জাহান্নামের দরজার দিকে মানুষকে দাওয়াত দিবে (অর্থাৎ তাদের দাওয়াত এমন
ভ্রষ্টতাপূর্ণ হবে, যা জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাবে); যারা তাদের ডাকে সাড়া দিবে
তাদেরকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবে”।
সহীহ বুখারীঃ হাদীস নং-৩৩৩৬, ৬৬৭৯।