নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “আল-উলামা ওয়ারাসাতুল আম্বিয়া” অর্থাৎ, আলেমরা হচ্ছে নবী-রাসুলদের ওয়ারিশ বা
উত্তরাধিকারী। এজন্য যুগে যুগে শয়তানের একটা ষড়যন্ত্র হচ্ছে উলামায়ে রাব্বানীদের
থেকে সাধারণ মানুষকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া, বিভিন্নভাবে তাদেরকে যাতে মানুষ না
চিনে, তাদের কাছ থেকে উপকৃত হতে না পারে, সেই চেষ্টা করা। এতে করে তারা প্রকৃত
ইসলাের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে এবং সহজেই ভন্ড আলেমদের খপ্পড়ে, অথবা শিরক-বেদাত,
হারাম ও পাপাচারের গর্তে গিয়ে পড়বে।
কেয়ামতের লক্ষণ হচ্ছে – আলেমদের
সংখ্যা কম হবে আর তোতা পাখির মতো মুখস্থ বিদ্যার অধিকারী কিন্তু প্রজ্ঞার অভাব,
এমন বক্তা ও ক্বারীদের সংখ্যা বেশি হবে। তাদের ইলম কম হবে, কিন্তু মুখস্থ বিদ্যায়
পারদর্শী হবে, যা বলবে নিজেরা না বুঝে ভুল ব্যখ্যা করবে। আর বর্তমানে এমনটাই দেখা
যাচ্ছে, সরলমনা মুসলমানেরা ইলমের অভাবে এইরকম হাফেজে দলীলদেরকেই আল্লামাহ, মুফতি
বলে মনে করছে! কেয়ামতের পূর্বে মানুষ অজ্ঞ লোকদেরকে আলেম মনে করে তাদের কাছে ফতোয়া
চাইবে। ঐ মূর্খরা তখন নিজের মনগড়া ফতোয়া দিয়ে নিজেরাও পথভ্রষ্ট হবে, সাথে সাথে
তাদের যারা অনুসরণ করবে তাদেরকেও জাহান্নামী বানাবে (নাউযুবিল্লাহ)।
যাই হোক, চলুন আজকে আমরা মসজিদুল হারাম বা কাবার
সম্মানিত মুদাররিস (শিক্ষক) ও ডেপুটি মুফতি, শায়খ ওয়াসী উল্লাহ আব্বাস
হা'ফিজাহুল্লাহ এর সংক্ষিপ্ত জীবনী জেনে নেই।
___________________________
আল্লামাহ শায়খ ডা. ওয়াসী উল্লাহ আব্বাস (হা’ফিজাহুল্লাহ), তিনি মূলত আমাদের পাশ্ববর্তী দেশ ইন্ডিয়াতে জন্মগ্রহণ
করেছিলেন। কিন্তু অল্প বয়স থেকেই দীর্ঘদিন ধরে তিনি সৌদি আরবে বসবাস কর আসছেন।
সেখানেই তিনি পড়াশোনা করেন এবং বর্তমানে মসজিদুল হারাম থেকে দ্বীন প্রচার করে
যাচ্ছেন। ১৯৬৮ সালে তিনি "মদীনা ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়" থেকে তাঁর
ব্যাচেলার ডিগ্রী সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি মক্কার "উম্মুল কুররাহ
বিশ্ববিদ্যালয়" থেকে এম.এ. ও পরে হাদীসের উপর পি.এইচ.ডি. ডিগ্রী সম্পন্ন
করেন। ১৯৭৯ সাল থেকে তিনি উম্মুল কুররাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের এম.এ. ও পি.এইচ.ডি.
ছাত্রদেরকে তাফসীর, হাদীস, হাদীসের উসুল শিক্ষা দিয়ে আসছেন। এছাড়া মসজিদুল হারামে
তিনি বিগত ১৬ বছর ধরে নিয়মিত আরবী ও উর্দু ভাষাতে দারস দিয়ে যাচ্ছেন, ঠিক সেই
জায়গা থেকে যেখান থেকে দারস দিয়েছেন রইসুল মুফাসসির, বিখ্যাত সাহাবী আব্দুল্লাহ
ইবনে আব্বাস (রাঃ), বিশিষ্ট তাবেয়ী আতা ইবনে আবি রাবাহ (রহঃ) তাঁদের ছাত্রদেরকে
দারস দিতেন। এটা একজন আলেমের জন্য অত্যন্ত সম্মান ও মর্যাদার বিষয়, আল্লাহ তাঁকে
কবুল করে নিন, আমিন। তিনি হারামে সহীহ বুখারী ও সুনানে আবু দাউদ, হাদীসের উসুলের
উপর কিতাব সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বই থেকে দারস দিয়ে থাকেন।
শায়খের একটা আমলঃ শায়খ বলেন, “আমি এমন কোনো নামায নেই যেই নামাযের সিজদাতে ‘রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া...’ এবং ‘রাব্বির হাম হুমা...’, এই দুইটা দুয়া করিনা। মা শা’ আল্লাহ! খুব সুন্দর একটা আমল, আমরাও চেষ্টা করবো সিজদাতে
গুরুত্বপূর্ণ এই দুইটা দুয়াগু বেশি করে পড়ার জন্য।
একটা লক্ষ্যণীয় বিষয়ঃ শায়খ তার লেকচারে প্রায়ই নবী
সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নাম বললে “পেয়ারা নবী” (প্রিয় নবী) বলে সম্বোধন করে থাকেন। শায়খের অনেক
লেকচার আরবী ও উর্দুতে পাওয়া যায়, আপনারা YouTube এ Shaykh Wasi Ullah Abbas লিখে
সার্চ দিয়ে তার লেকচার শুনতে পারবেন। শায়খ উয়াসী উল্লাহ
আব্বাস এর ইলম অর্জন
করা মহান যাত্রা ও সংক্ষিপ্ত জীবনী শায়খের কাছ থেকেই শুনুন এই লিংকে -
https://www.youtube.com/watch?v=bNIuZddOp2Q