(১)
ইমাম তাহাবী রাহিমাহুল্লাহ (মৃত্যু ৩২১ হিজরী), তার
বিখ্যাত আহলে “আহলে
সুন্নাত ওয়াল জামা’আতের
আকীদা” নামক
কিতাবে উল্লেখ করেছেনঃ “আমীর ও শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করাকে আমরা জায়েয মনে করি না, যদিও তারা যুলুম-অত্যাচার করে। আমরা তাদেরকে অভিশাপ দিব না, এবং তাদের আনুগত্য হতে হাত গুটিয়ে নিব না। তাদের আনুগত্য আল্লাহর
আনুগত্যের সাপেক্ষে ফরয, যতক্ষণ না তারা আল্লাহর
অবাধ্যচরণের আদেশ দেয়। আমরা তাদের মঙ্গল ও কল্যাণের জন্য দুয়া করব।” [আকীদাহ আত-ত্বাহাবীয়া]
(২) মুসলিম আমীর বা শাসকদের প্রকাশ্যে
সমালোচনা করা জায়েজ নয়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলছেন,
“যে
ব্যক্তি সুলতানকে (শাসক/নেতাকে) উপদেশ দিতে চায়, সে যেন প্রকাশ্যে
সেটা না করে। বরং তার জন্যে করণীয় হচ্ছে, সে তার সুলতানের
হাত ধরে নিয়ে তাকে লোকচক্ষুর আড়ালে ব্যক্তিগতভাবে উপদেশ দেবে। যদি সেই সুলতান তার
উপদেশ গ্রহণ করে, তাহলে সেটা তার (সুলতানের) জন্যে ভালো
এবং এটাই তার করা উচিৎ। কিন্তু সুলতান যদি উপদেশ গ্রহণ না করে, তাহলে উপদেশদাতা তার দায়িত্ব থেকে মুক্তি পেলো।”
হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ইবনে আবি আ’সিম তার “আস-সুন্নাহ” নামক গ্রন্থে। শায়খ
আলবানী রাহিমাহুল্লাহু হাদীসটিকে ‘সহীহ’
বলেছেন, যিলাল আল-জান্নাহ।
___________________
(৩) শায়খ মুহাম্মদ আল-আনজারী
হাফিজাহুল্লাহ তুরস্কের ক্যু সম্পর্কে বলেছেন,
“এরদোগান আল্লাহ তাঁকে হেফাজত করুন, তিনি একজন মুসলিম শাসক। আল্লাহর অবাধ্যতা ছাড়া (জায়েজ ও কল্যাণকর
বিষয়ে) তাঁর কথা শুনতে ও মানতে হবে। এরদোগান তুরস্কের ‘ওয়ালীউল আমর’, যা আমি আমার কয়েকটি
লেকচারে উল্লেখ করেছি এবং রেকর্ডকৃতও হয়েছে। ক্যু (সরকারে বিরুদ্ধে সামরিক
অভ্যুত্থান) হচ্ছে খুরুজ, এটা খারেজীদের আদর্শ।”
(৪) শায়খ আহমাদ আস-সুবাই’য়ী হাফিজাহুল্লাহ
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোগান সম্পর্কে বলেছেন,
“আহলে সুন্নাহর অনুসারীগণ প্রেসিডেন্ট
এরদোগানকে শরিয়ত সম্মত একজন বৈধ শাসক বলে মনে করে। (কল্যাণকর ও জায়েজ কাজে) তার
আনুগত্য করা মুসলিম শাসক হিসেবে তার অধিকার। তার অবাধ্য হওয়া এবং তার বিরুদ্ধে
বিদ্রোহ করা জায়েজ নয়। জনসমুক্ষে তার সমালোচনা করা নিষিদ্ধ, যদিও তিনি ‘ইখোয়ানুল মুসলিমিন’ এর মতো একটি দলের সাথে সংযুক্ত, যেই দলটি বিদাতের কারণে আলেমদের পরিচিত। সুতরাং, ইখোয়ানুল মুসলিমিন দলটি তাদের বিদাতের কারণে সমালোচিত, কিন্তু প্রকাশ্যে প্রেসিডেন্ট এরদোগানের সমালোচনা করার অনুমতি নেই।”