শয়তান
সম্পর্কে কুরআনুল কারীমে বর্ণিত কয়েকটি আয়াত
(১)
হে আদমের সন্তানেরা! আমি কি তোমাদেরকে বলে রাখিনি যে, তোমরা শয়তানের ইবাদত করোনা,
সেতো তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু? আর তোমরা শুধুমাত্র আমারই ইবাদত কর। এটাই হচ্ছে সিরাত্বাল মুস্তাক্বীম (সরল-সঠিক পথ)।
(ইতিঃপূর্বে) শয়তান তোমাদের অনেক দলকে পথভ্রষ্ট করেছে। তবুও কি তোমরা বুঝনি? সুরা ইয়াসীনঃ ৬০-৬২।
(২) হে আদমের সন্তানেরা! শয়তান যেন তোমাদেরকে
বিভ্রান্ত করতে না পারে; যেমন সে তোমাদের পিতামাতাকে জান্নাত থেকে বের করে দিয়েছে
এমতাবস্থায় যে, তাদের পোশাক তাদের থেকে খুলিয়ে দিয়েছি, যাতে তাদেরকে লজ্জাস্থান দেখিয়ে
দেয়। সে (ইবলীস শয়তান) এবং তার দলবল তোমাদেরকে দেখতে
পারে, যেখান থেকে তোমরা তাদেরকে দেখনা। আমি শয়তানদেরকে তাদের
বন্ধু করে দিয়েছি, যারা ঈমান আনে না। সুরা আ’রাফঃ ২৭।
(৩) শয়তান তোমাদেরকে দারিদ্রতার ভয় দেখায় এবং
ফাহেশাহ (অশ্লীল বা জঘন্য কাজের) আদেশ দেয়। পক্ষান্তরে, আল্লাহ
তোমাদেরকে নিজের পক্ষ থেকে ক্ষমা ও অধিক অনুগ্রহের ওয়াদা করেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়,
সুবিজ্ঞ। সুরা বাক্বারাহঃ ২৬৮।
(৪) আর আমি তোমাদেরকে (মানুষকে) সৃষ্টি করেছি,
এরপর আকার-অবয়ব, তৈরী করেছি। অতঃপর আমি ফেরেশতাদেরকে
বলেছি, তোমরা আদমকে সেজদা কর। তখন সবাই সেজদা করেছে,
কিন্তু ইবলীস সে সেজদাকারীদের অন্তর্ভূক্ত ছিল না। আল্লাহ (ইবলীস শয়তানকে) বললেন, আমি যখন নির্দেশ দিয়েছি, তখন তোকে (আদমকে)
সেজদা করতে কিসে বারণ করল? সে (ইবলীস) বলল, আমি আদমের চাইতে শ্রেষ্ঠ। কারণ, আপনি আমাকে আগুন দ্বারা সৃষ্টি করেছেন আর আদমকে সৃষ্টি করেছেন
মাটির দ্বারা। আল্লাহ বললেন, তুই এখান
থেকে বেরিয়ে যা। এখানে অহংকার করার কোন
অধিকার তোর নাই। অতএব, তুই বের হয়ে যা। তুই হীনতমদের অন্তর্ভুক্ত। ইবলীস
বলল, আমাকে কেয়ামত দিবস পর্যন্ত অবকাশ দিন। আল্লাহ বললেন, তোকে
সময় দেয়া হল। সুরা আ’রাফঃ ১১-১৫।
(৫) সে (ইবলীস শয়তান) বললঃ, হে আমার পলনকর্তা!
আপনি যেমন আমাকে পথভ্রষ্ট করেছেন, আমিও তাদের (আদম আঃ ও তার সন্তানদের) সবাইকে পৃথিবীতে
নানা সৌন্দর্যের দিকে আকৃষ্ট করব এবং তাদের সবাইকে পথভ্রষ্ট করে দেব। তবে আপনার মনোনীত বান্দাদের ছাড়া। আল্লাহ বললেন, এটা আমার
পর্যন্ত সিরাত্বাল মুস্তাক্বীম (সরল-সঠিক পথ)। যারা আমার বান্দা, তাদের উপর তোর কোন ক্ষমতা নেই; কিন্তু পথভ্রষ্টদের মধ্য
থেকে যারা তোর পথে চলে (তাদেরকে তুই পথভ্রষ্ট করতে পারবি)। সুরা
হিজরঃ ৩৯-৪২।
(৬) যারা আল্লাহর উপর ঈমান আনেনা, আর ঈমান আনেনা
কেয়ামত দিবসের প্রতি, তাদের সাথী হয় শয়তান, শয়তান যার সাথী হয় সেতো হল সবচাইতে খারাপ
সাথী। সুরা নিসাঃ ৩৮।
(৭) (হে নবী!)
আপনি কি লক্ষ্য করেননি যে, আমি কাফেরদের উপর শয়তানদেরকে ছেড়ে দিয়েছি। তারা তাদেরকে
বিশেষভাবে (খারাপ কাজে) উৎসাহিত করে। সুরা মারইয়ামঃ ৮৩।
(৮) এরা যে রয়েছে (মানুষেরর মাঝে কাফের, মুশরেক
ও মুনাফেক যারা দ্বীনের ব্যপারে বাঁধা সৃষ্টি করে), এরা হচ্ছে (মানুষ) শয়তান। এরা নিজেদের বন্ধুদের (কাফের সৈন্যবাহিনীর) ব্যাপারে তোমাদেরকে ভয় দেখায়। সুতরাং,
তোমরা তাদেরকে ভয় করো না। আর তোমরা যদি সত্যিকারের
ঈমানদার হয়ে থাক, তবে শুধু আমাকেই ভয় কর। সুরা আলে-ইমরানঃ ১৭৫।
(৯) যখন সব কাজের ফায়সলা হয়ে যাবে, তখন শয়তান
বলবেঃ নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে যে সত্য ওয়াদা দিয়েছিলেন (আজ তা সত্যি হলো), আর আমি
তোমাদের সাথে যে ওয়াদা করেছি, অতঃপর আজ আমি তা ভঙ্গ করেছি। তোমাদের উপরতো আমার কোন ক্ষমতা ছিল না, কিন্তু এতটুকু যে, আমি তোমাদেরকে
(খারাপ কাজের দিকে) ডেকেছি, অতঃপর তোমরা আমার কথা মেনে নিয়েছ। অতএব তোমরা আমাকে ভৎর্সনা করো না বরং তোমরা নিজেদেরকেই ভৎর্সনা কর। আমি তোমাদের উদ্ধারে সাহায্যকারী নই। এবং তোমরাও আমার উদ্ধারে সাহায্যকারী নও। ইতোপূর্বে তোমরা আমাকে যে আল্লাহর শরীক করেছিলে, আজি আমি তা অস্বীকার করছি। নিশ্চয় যারা জালেম, তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। সুরা
ইব্রাহীমঃ ২২।