লাইলাতুল ক্বদর কত তারিখে?
(১) শায়খ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন রাহিমাহুল্লাহ তাঁর “রমযান মাসের ৩০ আসর” নামক বইয়ে লিখেছেন,
“লাইলাতুল ক্বদর রমযান মাসের শেষ সাত দিনের মধ্যে (২৩-৩০) যেকোন
এক দিনে হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কেননা, আব্দুল্লাহ ইবন উ’মার রাদিয়াল্লাহু আ’নহুমা থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের
যুগে কতিপয় সাহাবী রমযানের শেষ সাত দিনে লাইলাতুল ক্বদর স্বপ্নে
দেখেছিলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,
“আমি
দেখতে পাচ্ছি যে তোমাদের সবার স্বপ্ন শেষ সাত দিনের ব্যাপারে এসে একাত্মতা ঘোষণা করছে।
সুতরাং, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি ক্বদরের রাতকে নির্দিষ্ট করতে
চায়, সে যেন শেষ সাত দিনের মধ্যে তা নির্ধারণ করে।” সহীহ বুখারীঃ ২০১৫, সহীহ মুসলিমঃ ১১৬৫।
অনুরূপভাবে সহীহ মুসলিমের হাদীসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
“তোমরা
রমযানের শেষ দশ রাতে লাইলাতুল ক্বদর অন্বেষণ কর। যদি তোমাদের কেউ দুর্বল থাকে অথবা
অক্ষম হয়, তাহলে সে যেন শেষ সাত রাতে সেটা খুঁজতে অপারগ না হয়।” সহীহ মুসলিমঃ ১১৯৫।
আর শেষ সাত দিনের বেজোড় রাতগুলোর
মধ্যে ২৭-তম রাত্রিটিই লাইলাতুল ক্বদর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কারণ, উবাই ইবন কাআ’ব রাদিয়াল্লাহু আ’নহু বলেছেন, “আল্লাহর কসম!
আমি অবশ্যই সে রাতটিকে জানি, যে রাতটিতে কিয়াম করার
(নামায পড়ার) জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম
আমাদেরকে আদেশ দিয়েছিলেন। আর তা হচ্ছে, রমযানের ২৭-তম
রাত।” সহীহ মুসলিমঃ ৭৬২।
(২) শায়খ মুহাম্মাদ
নাসির উদ্দীন আলবানী রাহিমাহুল্লাহ তাঁর “তারাবীহ ও ইতিকাফ” নামক বইয়ে লিখেছেন,
“সবচাইতে অগ্রগণ্য মত
অনুযায়ী ২৭শে রমযানের রাত্রিই হচ্ছে লাইলাতুল ক্বদর।” তাঁর
এই মতের পক্ষে তিনি দলিল হিসেবে নীচের এই হাদীসটিকে পেশ করেছেন।
উবাই ইবনে কাআ’ব রাদিয়াল্লাহু আ’নহু বলেছেন, “যিনি ছাড়া আর কোন (সত্য) উপাস্য নেই, সেই সত্ত্বার কসম! লাইলাতুল ক্বদর রমযান মাসেই লুক্কায়িত রয়েছ। (এ কথা বলার সময়) তিনি ইন শা আল্লাহ না বলেই কসম
করলেন। তারপর বললেন, আল্লাহর কসম! সেটি কোন রাত? আমি অবশ্যই সেই রাতটিকে জানি। লাইলাতুল
ক্বদর হচ্ছে সেই রাত, যে রাতে নামায পড়ার জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম
আমাদেরকে নির্দেশ প্রদান করেছেন। আর তা হচ্ছে, ২৭শে রমযানের
রাত। লাইলাতুল ক্বদরের নিদর্শন হচ্ছেঃ ঐ রাত শেষে সকালে সূর্য এমন পরিষ্কারভাবে উঠবে যে, তাঁর কোন কিরণ থাকবেনা।”
অন্য একটি বর্ণনায় এটিকে তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আ’লাইহি
ওয়া সাল্লাম থেকে ‘মারফূ’ সূত্রে বর্ণনা করছেন।
সহীহ মুসলিমঃ ৭৬২, আবু দাউদঃ ১৩৭৮, মিশকাতঃ ২০৮৮, সহীহ আবু দাউদঃ ১২৪৭।