তোওবা ও ইস্তিগফার নিয়ে কুরআনের
কয়েকটি আয়াতের তর্জমাঃ
তোওবা অর্থ আল্লাহর দিকে ফিরে আসা,
আর ইস্তিগফার অর্থ আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। আপনারা
কেউ তোওবা ও ইস্তেগফার করতে ক্লান্ত হবেন না বা, নিজের কৃত পাপের কারণে তোওবা করার
ব্যপারে হতাশ হবেন না। একজন বান্দার আমল
নামায় যেই আমল আল্লাহকে সবচাইতে বেশি খুশি করে, এবং যেই আমল দ্বারা বান্দা দুনিয়া
ও আখেরাতের ব্যপারে সবচাইতে বেশি উপকৃত হয়, সেটা হচ্ছে তোওবাহ। তোওবার গুরুত্ব ও
উপকারীতা নিয়ে অনেক আয়াত ও হাদীস রয়েছে।
আ’উযুবিল্লাহি-মিনাশ-শাইত্বানির
রাযীম।
(১) মহান আল্লাহ তাঁর
বান্দাদেরকে তোওবাকারী ও অত্যাচারী, এই দুইভাগে ভাগ করেছেন। এখানে তৃতীয় কোন ভাগ
নেই। মহান আল্লাহ বলেন, “যারা তোওবা করবেনা,
তারাই হচ্ছে অত্যাচারী” সুরা আল-হুজুরাতঃ
১১।
(২) মহান আল্লাহ সমস্ত মুসলমানকে
তোওবা করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, “হে
মুমিনগণ! তোমরা সকলে আল্লাহর পানে তোওবা (প্রত্যাবর্তন) কর, যাতে
তোমরা সফলকাম হতে পার।” সুরা আন-নূরঃ ৩১।
(৩) “হে
মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর কাছে তোওবা কর, এমন তোওবা কর যা আন্তরিক।
আশা করা যায়, তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের খারাপ কাজগুলো
মুছে দেবেন এবং তোমাদেরকে প্রবেশ করাবেন এমন জান্নাতে, যার
তলদেশে দিয়ে নদী প্রবাহিত হয়।” সুরা তাহরীমঃ ৮।
(৪) আল্লাহ তাআ’লা তাঁর
গুনাহগার বান্দা, সে যতই গুনাহ করুক না কেনো, কেউ যদি আন্তরিক তোওবা ও ইস্তেগফার
করে তাহলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ বলেন, “(হে
নবী!) আপনি বলুনঃ (আমি আল্লাহ এই কথা ঘোষণা করছি যে), হে আমার বান্দারা! তোমরা যারা
(পাপ কাজ বেশি করে) নিজেদের প্রতি যুলুম (অত্যাচার) করেছ, তারা আল্লাহর রহমত (করুণা)
হতে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেবেন। নিশ্চয় তিনিই চরম ক্ষমাশীল,
পরম দয়ালু।” সুরা
আয-যুমারঃ ৫৩।
(৫) “আর তিনি
(আল্লাহ) হচ্ছেন ক্ষমাশীল, ভালোবাসায় পূর্ণ।” সুরা আল-বুরুজঃ
১৪।
(৬) “তারা কি
একথা জানতে পারেনি যে, আল্লাহ তাঁর বান্দাদের তোওবা কবুল করেন এবং
যাকাত গ্রহণ করেন? নিশ্চয়ই আল্লাহ হচ্ছেন তোওবা কবুলকারী,
করুণাময়।” সুরা তোওবাহঃ ১০৪।
(৭) “সুতরাং
আপনি আপনার পালনকর্তার পবিত্রতা বর্ণনা করুন এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন।
নিশ্চয় তিনি তোওবাহ কবুলকারী।” সুরা নাসরঃ ৩।
(৮) “তারা কি
লক্ষ্য করে না যে, প্রতি বছর দুই-একবার তারা বিপর্যস্ত হচ্ছে।
কিন্তু এরপরেও তারা তওবা করেনা, কিংবা উপদেশ গ্রহণ করে না।” সুরা
তোওবাহঃ ১২৬।
(৯) তোওবা করলে মহান আল্লাহ তাঁর
বান্দাদেরকে দুনিয়া ও আখেরাতে উভয় দুনিয়াতেই এর উত্তম প্রতিদান দেন। আল্লাহ তাআ’লা বলেন, “আর তোমরা
নিজেদের পালনকর্তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর। অতঃপর তাঁর দিকে প্রত্যাবর্তন কর।
তাহলে তিনি তোমাদেরকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত উত্তম রিযিক (জীবন উপকরণ) দান করবেন
এবং অধিক আমলকারীকে বেশী করে দেবেন। আর যদি তোমরা বিমুখ হতে থাক, তবে
আমি তোমাদের উপর এক মহা দিবসের আযাবের আশঙ্কা করছি।” সুরা হুদঃ
৩।
(১০) “অতঃপর আমি
(নূহ তার জাতির লোকদেরকে) বলেছিঃ তোমরা তোমাদের পালনকর্তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা
কর, তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল। (তোমরা যদি ক্ষমা প্রার্থনা করো তাহলে), তিনি
তোমাদের উপর অজস্র ধারায় বৃষ্টি বর্ষণ করবেন। আর তোমাদের ধন-সম্পদ ও
সন্তান-সন্ততি বাড়িয়ে দিবেন, তোমাদের জন্যে বাগান স্থাপন
করবেন এবং তোমাদের জন্যে নদী-নালা প্রবাহিত করবেন।” সুরা নূহঃ
১০-১২।