#হজ্জ
(১) ইসলামের পঞ্চম রুকন বা স্তম্ভ হচ্ছে হজ্জ।
(২) সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের জন্যে জীবনে একবার হজ্জ করা ফরয।
(৩) কেউ যদি প্রাপ্ত বয়ষ্ক অবস্থায়, হালাল সম্পদ
দ্বারা একবার হজ্জ করে, সেটা নিজের হোক বা বৈধ উপায়ে প্রাপ্ত
অন্যের সম্পদ দ্বারা হোক, জীবনে তার উপর হজ্জ করা আর কখনো ফরয
হবে না।
(৪) নাবালক অবস্থায় কেউ হজ্জ করলে, সাবালক হলে আর
হজ্জ করার সামর্থ্য থাকলে, তখন তাকে পুনরায় হজ্জ করতে হবে।
(৫) নারীদের জন্যে মাহরাম পুরুষ ছাড়া একাকী হজ্জ করতে যাওয়া জায়েজ নয়।
বোনের স্বামী মাহরাম নয়, শ্বশুড় মাহরাম।
(৬) রসুল সাঃ হজ্জ করেছেন জীবনে একবার।
(৭) রসুল সাঃ বলেছেন, “কবুল হয়েছে
এমন হজ্জের প্রতিদান জান্নাত ছাড়া আর কিছুই না।” আল্লাহু আকবার।
(৮) কাবাকে ‘বায়তুল্লাহ’ বা আল্লাহর ঘর বলা হয়। আর কাবা ঘরকে কেন্দ্র করে নির্মিত
মসজিদকে ‘মসজিদুল হারাম’ বলা হয়।
এখানে হারাম অর্থ সম্মানিত, যেখানে
রক্তপাত নিষিদ্ধ।
(৯) সহীহ হাদীসে রয়েছে, মসজিদুল হারামে নামাযের সওয়াব
অন্য যেকোন মসজিদের তুলনায় এক লক্ষ গুণ বেশি। সুবহা’নাল্লাহ!
(১০).যার জন্যে হজ্জ ফরয হয়েছে, তাদের জন্যে হজ্জ
কিভাবে করতে হবে, সেটা শিক্ষা করাও ফরয। হজ্জ যখনই করুন,
তার অনেক পূর্ব থেকেই এর নিয়ম কানুন শিখার চেষ্টা করুন। মানুষ ২-১
মাসে, ছোট ছোট কিছু বই পড়ে হজ্জের মতো এতো বড় ইবাদত
পূর্ণাংগভাবে শিখতে পারেনা, এর জন্যে সময় ও মেহনত দিতে হবে।
(১১) বিনা কারণে হজ্জ পিছানো গর্হিত ও ঘৃণিত একটা কাজ। যখনই সামর্থ্য হবে
আর সম্ভব হবে তখনই হজ্জ করে নিন। বিনা কারণে হজ্জে দেরী করা অজ্ঞ ও বোকা লোকদের
কাজ। এটা শয়তানী একটা ধোঁকা।
(১২) পিতা-মাতার অনুমতি না থাকলে, বা পিতা-মাতার
পূর্বে হজ্জ করা যাবেনা, ছেলে-মেয়ে বড়া নাহলে, সাবালিকা
মেয়ের বিয়ে না দিয়ে হজ্জে যাওয়া ঠিক না – এইগুলো সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ধারণা ও অজ্ঞ লোকদের মনগড়া ফতোয়া।
(১৩) রসুল সাঃ এর কবর জিয়ারত করা বা মদীনা শহর দেখতে যাওয়া হজ্জের কোন অংশ
নয়।
(১৪) হজ্জ তিনভাবে করা যায়ঃ তামাত্তু, কিরান ইফরাদ।
ক
- তামাত্তু হচ্ছেঃ প্রথমে শুধু উমরার নিয়ত করবে,
উমরা করে ইহরাম থেকে ফারেগ হয়ে যাবে। পরে ৮-ই জিলহজ্জ তারিখে হজ্জের
জন্যে নিয়ত করে ইহরাম বাঁধবে। অর্থাৎ, তামাত্তু হজ্জে উমরা ও
হজ্জ দুটোই করা হয়, তবে আলাদা আলাদা নিয়তে, এবং মাঝখানে ইহরাম থেকে ফারেগ হয়ে দুইটিকে পৃথক করা হয়। তামাত্তু করা
উত্তম, এবং রাসুল সাঃ এটাকে পছন্দ করেছিলেন, যদিও তার সাথে হাদঈ’ (কুরবানীর
পশু) থাকার কারণে তিনি নিজে কিরান হজ্জ করেছিলেন।
খ
- কিরান হচ্ছেঃ প্রথমেই উমরা ও হজ্জের নিয়ত একই সাথে করা হয়, এবং উমরা করে ইহরাম অবস্থাতে থেকে ৮ তারিখ
পর্যন্ত হজ্জের অপেক্ষাতে থাকবে। কিরানে উমরা ও হজ্জ একই নিয়তে করা হয়।
গ
- ইফরাদ হচ্ছে শুধুমাত্র হজ্জের নিয়ত করা,
উমরা না করা।
(১৫) মসজিদে নববী সাঃ জিয়ারত করা সওয়াবের কাজ। আর এই উদ্দ্যেশ্যে মদীনায় সফর
করা জায়েজ রয়েছে। কিন্তু রসুল সাঃ এর কবর দেখার নিয়তে মদীনায় সফর করা জায়েজ নয়।
বিষয়টা মনোযোগ দিয়ে বুঝার চেষ্টা করুন। নিয়ত করতে হবেঃ মসজিদে নববী সাঃ দেখা,
আর সেখানে গেলে আপনি নবী সাঃ এর কবর জিয়ারত করতে পারবেন। কিন্তু
রাসুল সাঃ এর কবর দেখাকে মদীনাতে যাওয়ার আপনার উদ্দেশ্য বানাবেন না।
(১৬) তাবলীগ জামাতের লিখক মাওলানা জাকারিয়া সাহেবের লিখা ‘ফাজায়েলে হজ্জ’ একটা
মারাত্মক বিদাতী বই, যেখানে
ঈমান ও আকিদাহ ধ্বংসকারী, মিথ্যা ও বানোয়াটা কিসসা-কাহিনী
দিয়ে ও অনেক জাল-জয়ীফ হাদীস দিয়ে লিখা হয়েছে। হজ্জের উপরে সূফীবাদের অনুসারীদের
লিখা অনেক শিরক-বিদাত ও কুসংস্কারপূর্ণ বই রয়েছে। এই সমস্ত বই ধ্বংস করা জরুরী।
(১৭) অনেক হজ্জ কাফেলা আসলে বিদাতী হুজুরের ধর্ম নিয়ে ব্যবসা, যারা হজ্জের মাঝে শিরক ও বিদাত শিক্ষা দেয়। এদের ব্যপারে সাবধান!
(১৮) হজ্জ শিখার জন্যে আপনারা
-
শায়খ আব্দুল হামীদ ফাইজীর লিখা বই পড়তে পারেন। বইটা নেটে ফ্রী পাওয়া
যায়।
-
শায়খ সাইফুদ্দীন বেলাল ও শায়খ মতিউর রহমান মাদানীর লেকচার রয়েছে
কুরান ও সহীহ হাদীস ভিত্তিক, সেইগুলোর অডিও ভিডিও ডাউনলোড
করে শুনতে পারেন।
কৃতজ্ঞতাঃ
শায়খ আব্দুল হামীদ ফাইজী, শায়খ
মতিউর রহমান মাদানী, শায়খ সাইফুদ্দিন বেলাল, শায়খ আব্দুর রাক্বীব বুখারী।