আসমা রাদিয়াল্লাহু আ’নহা রাদিয়াল্লাহু
আ’নহা (পর্ব-১)
রসুলুলাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নবুওতের পূর্বে ও পরে সবচাইতে ঘনিষ্ঠ
বন্ধু, সাহাবীদের
মাঝে সবচাইতে বেশি মর্যাপ্রাপ্ত সাহাবী হচ্ছেন আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আ’নহু। রসুলুলাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি
ওয়া সাল্লাম আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আ’নহুর কিশোরী কন্যা আয়িশাহ
রাদিয়াল্লাহু আ’নহাকে বিয়ে করেছিলেন। এথেকে বুঝা যায়, আবু বকর
রাদিয়াল্লাহু আ’নহু রসুলুলাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কত আপন ও বিশ্বস্ত বন্ধু ছিলেন। আবু বকর, আয়িশাহ ছাড়াও এই
পরিবারের আরেকজন নারী সদস্য ছিলেন, রসুলুলাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সম্মানিত ও মর্যাপ্রাপ্ত সাহাবীদের
একজন। তিনি হচ্ছেন আবু বকরের কন্যা ও আয়িশাহর বড় বোন, আসমা বিনতে আবু বকর,
আল্লাহ তাঁদের সকলের প্রতি সন্তুষ্ট থাকুন। আসমা রাদিয়াল্লাহু আ’নহা মক্কাতে সর্বপ্রথম ইসলাম কবুলকারী সাহাবীদের একজন ছিলেন।
তাঁর উপাধি ছিলোঃ “যাত আন-নিতাকাইন”। তাঁর এই উপাধি সম্পর্কে বিস্তারিত ঘটনাটা জানার ২০১৪-সালে
১৯-শে নভেম্বরে লিখেছিলাম
<<< যাত আন-নিতাকাইন >>>
আসমা বিনতে আবু বকর, অর্থাত আবু বকর রাঃ এর মেয়ে
আসমা রাঃ সর্বপ্রথম ইসলাম কবুলকারী সাহাবীদের একজন ছিলেন। তার পিতা আবু বকর রাঃ
যখন তাঁকে ইসলামের দিকে দাওয়াত দেন, তখন তিনি মাত্র ১৪ বছর
বয়সে সেই দাওয়াত কবুল করেন। তিনি যখন ইসলাম কবুল করেন তখন নারী-পুরুষ মিলেয়ে
মুসলমানদের মোট সংখ্যা ছিলো মাত্র ১৭ জন। তার জীবনের বিখ্যাত একটি ঘটনা হচ্ছে,
রাসুল সাঃ যখন মক্কা থেকে মদীনাতে হিজরত করার সিদ্ধান্ত নেন, তখন তিনি
তা শুধুমাত্র আবু বকর রাঃ কে জানান। কারণ, কুরাইশরা তখন রাসুল সাঃ কে হত্যা করার
ষড়যন্ত্র করছিলো, সুতরাং রাসুল সাঃ এর হিজরত করার কথা শুনলে
হয়তো সাথে সাথে আক্রমন করে তাকে হিজরত করার পূর্বেই হত্যা করার চেষ্টা করবে। সেমতে
তিনি একদিন রাতের বেলায় আবু বকর রাঃ এর ঘর থেকে গোপনে মক্কা ছেড়ে মদীনার উদ্দেশ্যে
যাওয়ার সফর শুরু করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। রাসুল সাঃ তার হিজরতের সাথী
হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন এই উম্মতের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব আবু বকর রাঃ-কে। এমন সময়
আসমা রাঃ দীর্ঘ সফরের জন্য প্রয়োজনীয় একটি খাবার ও একটি পানির প্যাকেট প্রস্তুত
করে দিচ্ছিলেন। কিন্তু খাবার ও পানির প্যাকেট ভালো করে বাধার জন্য হাতের কাছে কোন
কিছু খুজে পাচ্ছিলেন না। এমন সময় আবু বকর রাঃ আসমা রাঃ-কে তাঁর কোমরের বেল্ট খুলে
খাবারের প্যাকেটগুলো বাধতে বলেন। আসমা রাঃ তার কোমর থেকে বেল্ট খুলে সেটাকে দুইটা
ভাগ করে খাবার ও পানির প্যাকেটকে বেঁধে দেন। রাসুল সাঃ এই ঘটনা দেখে খুশি হয়ে আসমা
রাঃ এর জন্য দুয়া করেন, “আল্লাহ তোমাকে এই দুইটির পরিবর্তে জান্নাতের দুইটি বেল্ট
দান করুন।”
এই ঘটনার জন্য পরবর্তীতে আসমা রাঃ কে “যাত আন-নিতাকাইন” অর্থাৎ দুইটি
বেল্টের মালিকা বলে উপাধি দেওয়া হয়েছিলো।
বিঃদ্রঃ বর্তমান মুসলমানদের জন্য বড় দুর্ভাগ্যের বিষয়
হচ্ছে,
আমাদের তরুন ভাইয়েরা মুশরেকিন ব্যভিচারিনী নায়িকাদের স্বপ্নে বিভোর,
তাদের নগ্ন ছবি-ভিডিও ও গান দিয়ে মোবাইল ও কম্পিউটার ভর্তি করছে।
আমাদের বোনেরা মুশরেকিন উলংগ অভিনেত্রীদের পোশাকের সাথে পাল্লা দিচ্ছে, এসবে বাধা আসলে স্বামীকে ডিভোর্স দিচ্ছে, আত্মহত্যা
করছে। অথচ আমরা আমাদের আদর্শ সাহাবী ও সাহাবীয়াদের নামই জানিনা। আজকে আমাদের
অনেকেই পাকিস্থান, অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট টিমের খেলোয়াড়দের
নাম, আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের ফুটবল দলের খেলায়াড়দের নাম,
হলিউড-বলিউডের নোংরা নর্দমার কীটের চাইতে নিকৃষ্ট নায়ক-নায়িকা বা
গায়ক-গায়িকাদের নাম মুখস্থ শত শত। মুশরেকিনদের নাটক-সিনেমা দেখে, কুফুরী ও চরিত্রহীনতার গল্প-উপন্যাস পড়ে রামায়ন-মহাভারতের দেব-দেবীর নাম
মুখস্থ। কিন্তু আমাদের কয়জন নবী-রাসুলদের নাম ও তাদের ঘটনাগুলো জানি? কয়জন সাহাবী ও মহিলা সাহাবীদের সম্পর্কে জানি?