________________________
(১) গাজওয়াতুল হিন্দ সম্পর্কে একটু বলবেন?
‘গাজওয়ায়ে হিন্দ’ বা হিন্দুস্থানের যুদ্ধ
ভারত বিজয় সম্পর্কিত হাদীসের ব্যপারে আল্লামাহ হামুদ
আত-তুয়াইজিরি রাহিমাহুল্লাহ বলেছেন, “আবু হুরাইরা রাঃ কর্তৃক ‘হিন্দের বিজয়’ সম্পর্কিত যেই হাদীস
বর্ণিত হয়েছে, হাদীসটি যদি সহীহ হয়ে থাকে তাহলে এই বিজয় এখনো
সংঘটিত হয়নি। যখন ঈসা আঃ পুনরায় আগমন করবেন তখন হিন্দের বিজয় হবে। আল্লাহ ভালো
জানেন।” ইফহাত আল-জামআ’হঃ ১/৩৬৬।
.
শায়খ Muzammel Hoque লিখেছেনঃ
আবু হুরাইরা বলেন, রাসুল সঃ ‘গাজওয়ায়ে হিন্দ’ (হিন্দুস্থান বা
সিন্ধু যুদ্ধের) অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। আমি সে যুদ্ধ পেলে তাতে আমার জান-মাল সব
দিয়ে শরীক হবো। যদি মারা যাই তাহলে হবো উত্তম শহীদ। আর যদি জয়ী হয়ে বেঁচে থাকি
তাহলে আমি হবো ‘গাজী’ আবু হুরাইরা। মুসনাদে আহমাদঃ ২/২২৯, নাসায়ীঃ
৩১৭৩।
সাওবান রাঃ রাসুল কারীম সঃ থেকে বর্ণনা করেন; তিনি বলেছেনঃ “আমার উম্মতের দুইটি সেনা গোষ্ঠী হবে, আল্লাহ তাদেরকে
জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করবেন। তার মধ্যে একটি মারিয়াম পুত্র ঈসার সঙ্গী হয়ে
হিন্দ (হিন্দুস্থান) বিজয় করবে।” মুসনাদে আহমাদঃ ৫/২৭৮,
নাসায়ীঃ ৩১৭৫, শায়খ আলবানী সহীহ বলেছেন।
‘গাজওয়ায়ে হিন্দ’ সম্পর্কে যেসব হাদিস পাওয়া যায় তম্মধ্যে এই হাদিস দুইটি
বিশেষ ভাবে উল্লেখ করার মত। একটি দাঈফ বা দুর্বল, আরেকটি
সহীহ বলে কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন। এই যুদ্ধ হয়ে গেছে না আগামীতে হবে তা নিয়ে
আলেমদের মাঝে মতের মিল হয়নি। এই যুদ্ধ কখন হয়েছে বা কখন হবে, তা নিয়েও মতানৈক্য রয়েছে। কারণ আল্লাহর রাসুল দিন-কাল ঠিক করে বলেন নি।
ইসলাম যেসব বিষয়ে স্থান-কাল ঠিক করে নাই, তা নিয়ে আমাদের
অনধিকার চর্চা করা ঠিক নয়। হওয়া না হওয়া নিয়ে সুখ বা দুঃখ প্রকাশ করারও যুক্তি
নেই। তা নিয়ে ঝগড়ার অবতারণা করাও সমীচীন নয়। এই জাতীয় হাদিস থেকে উম্মতের জন্য এক
প্রলয়ংকার নাটক খাড়া করাও নেহায়েত বাড়াবাড়ি ছাড়া কিছু নয়। হাদীসের ভাষ্য যদি সত্য
হিসাবে ধরে নেয়া হয়, আর ধরে নেওয়া হয় যে এই যুদ্ধ হয়ে গিয়েছে,
তাহলে তা অস্বীকার করার মত এমন কোন শক্তিশালী দলীল নাই। আর না হয়ে
থাকলে ভবিষ্যতে কবে হবে, তা বলার ক্ষমতা কারো নাই।
সুলতান মাহমুদ গাজনাবী গাজনাহ থেকে শুরু করে খোরাসান
বুখারা সমরকন্দ হয়ে কাশ্মীর আফগানিস্তান পর্যন্ত রাজ্যের সীমানা বিস্তার করেন। ২৪
বছরের শাসন কালে ১২টি যুদ্ধ করেন এবং সকল যুদ্ধেই জয়লাভ করেন। এত বড় বিজয় ও সফলতা
নিশ্চিতভাবে অলৌকিক সাহায্যের বার্তা বহন করে। তিনি ৪২২ হিজরী সনে মৃত্যুবরণ করলে
তার ঐ রাজ্য সেলজুকিদের হাতে চলে যায়। সেখান থেকে ৫৮২ হিজরীতে ‘ঘৌরি’ সুলতানরা দখল করে
নেয়। এটাকেই যদি কেউ সেই ‘গাজওয়ায়ে হিন্দ’ বলে মনে করে তাকে কিইবা বলার থাকতে পারে? নতুবা হয়ত আগামীতে হবে, তাতেইবা এত ব্যতিব্যাস্ত
হওয়ার কি কারণ থাকতে পারে?
________________________
(২) assalamualikum....vai
meyeder ki onno der dinn er dawat dewa foroj...tader ki dinn er dawat deyar
jonno ghor theke jayej ace???....sami jodi na chay tar por o ki ghor theke
bahir hoye dinn er dawat deya jabe or proyojon ace...???
১/ নারীদের দাওয়াতের ক্ষেত্র তাদের নিজেদের ঘরে। সফর
করে বাইরে যাওয়া তাদের জন্যে ফরজ নয়।
২/ কোন নারী যদি দ্বীনের জ্ঞান সম্পন্ন হয় তাহলে হিজাব
পর্দার মধ্যে থেকে সে কোন মহিলা মাদ্রাসা বা গার্লস স্কুলে দ্বীন শিক্ষা দিতে বা
নিতে পারে। বা তার নিকট আত্মীয় বা বন্ধুদের visit করতে পারে, মাহরাম
সহ।
৩/ স্বামীর অবাধ্য হওয়া যাবেনা। তবে ফিতনাহ আশংকা না
থাকলে এবং স্বামীর অধিকারে ত্রুটি না করলে, স্বামীর উচিৎ স্ত্রীকে দ্বীনের ব্যপারে
সাহায্য করা।
৪/ প্রচলিত তাবলীগ জামাতের জোড় নামে যেই প্রোগ্রাম এখানে
ভুল শিক্ষা দেওয়া হয়, আর এরা নিজেদের মনগড়া পদ্ধতিতে দ্বীন পালন করছে। তাদের ব্যপারে সাবধান
থাকতে হবে।
________________________
(৩) নারী জাতিকে কার পাজর থেকে সৃষ্টি
করা হয়েছে?
শুধুমাত্র হাওয়া আঃ কে আদম আঃ এর বুকের বা পাশের বাঁকা
একটি হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। ঈসা সাঃ ছাড়া বাকি সমস্ত আদম সন্তান বাবা-মায়ের
মাধ্যমে এসেছে। তবে যেহেতু আদম আঃ মাটির তৈরী সেই হিসাবে নারী ও পুরুষ সবাইকে
মাটির তৈরী মানুষ বলা হয়। কিন্তু নারী হাওয়া আঃ এর সৃষ্টি সরাসরি মাটি থেকে না হয়ে
আদম আঃ থেকে হওয়ায়, সাধারণভাবে বলা হয়, নারীরা পুরুষের বুকের বাঁকা হাড়
থেকে সৃষ্টি। আর একারণে নারী ও পুরুষ স্বাভাবিকভাবেই একজন আরেকজনের প্রতি আকৃষ্ট
হয়ে পড়ে।
________________________
(৪) আসসালামলাইকুম।মৃত্যু মহিলাকে কি
পুরুষ কোন ভাই বা পুরুষ আত্বীয় স্বজন দেখতে পারবে? জানার খুব
দরকার ছিল।
ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ...বাবা, চাচা, মামা, সন্তান, আপন ভাই,
স্বামী বা মাহরাম যে কেউ দেখতে পারবে। মানুষ মৃত্যুর পরে তার
স্বামী/স্ত্রী দেখতে পারবে। আমাদের দেশে অজ্ঞ লোকেরা মনে করে, স্ত্রী মৃত্যুবরণ করলে বিয়ে ভেংগে যায়, তাই তার
স্বামী তাকে দেখতে পারবেনা। এবং অনেককে তার মৃত স্ত্রীকে দেখতে দেওয়া হয়না। এটা
একটা মারাত্মক অজ্ঞতা।
________________________
(৫) ছেলেরা এখন সারাদিন বউ দের এ চামচামি
করে কাজেই এইসব বউ জামাই এর হক রিলেটেড পোস্ট না দিয়ে এক্তু সন্তান এর উপর মায়ের
হক রিলেটেড পোস্ট দিলে খুশি হই!!
- যে যেটার ভুক্তভোগী, সে সেটাকেই প্রধান সমস্যা মনে করে। স্ত্রীর গোলামী করে যেমন অনেক পুরুষেরা
মায়ের হক্ক নষ্ট করে, তেমনি অনেক পুরুষেরা প্রবৃত্তির
অনুসারী হয়ে স্ত্রীর হক্ক নষ্ট করে। দুটো সমস্যাই সমাজে খুব বেশি প্রচলিত।
- একটা মানুষ বড় হয়ে কেমন হবে, সেটা ছোটবেলায় বাবা-মায়ের কাছ থেকে শিখে। অনেক বাবা-মা নিজেরাই
সন্তানদেরকে দ্বীন শেখানোর চেষ্টা করেনা, এমন বেদ্বীন
সন্তানদের জন্যে বাবা মায়ের হক্ক নষ্ট করা তখন খুব স্বাভাবিক। যে আল্লাহর হক্ক
আদায় করেনা, সে মা বাবার হক্ক আদায় না করতে আর কাকে ভয় করবে?
________________________
(৬) কোন নারী যদি চাকুরী করতে চাই আর
স্বামী চাকরী করতে না দেই তা হলে বিয়ে ভেঙ্গে যায়| অথবা
চাকুরী করতে দিলেও টাকা পয়সা স্ত্রীর মা বাবাকে দেই এবং মা বাবাকে নমিনী করে|
এ ব্যাপারে শরীয়াতের হুকুম কি?
- জটিল প্রশ্ন, বিয়ের
পূর্বে তাদের মাঝে কি কথা হয়েছিলো, চাকুরীর ধরণ কি, চাকরী করলে স্বামীর অধিকার নষ্ট হবে কিনা জানা প্রয়োজন। স্ত্রী শরিয়ত
সম্মত কোন চাকরি করছে এমন অবস্থায় স্বামী যদি বিয়ের পূর্বে স্ত্রীকে চাকরি করতে
দিবে বলে কথা দেয়, আর চাকরির কারণে স্বামীর অধিকার নষ্ট না
হয়, তাহলে বিয়ের পরে স্বামী স্ত্রীকে চাকরি ছাড়তে বাধ্য করতে
পারবেনা। আর স্ত্রীর টাকা তার, সে যাকে ইচ্ছা তাকে দিতে
পারে। আমি সময় পেলে লিখবো ইন শা আল্লাহ, ভুলে গেলে মনে করিয়ে
দিবেন।
যাযাকাল্লাহু বিখাইর|| মেয়েটি চাকুরীর জন্য অনুমতি নিয়েছিল
এবং সে সরকারী ব্যাংকে চাকুরী করে|
- সরকারি ব্যংক সুদী প্রতিষ্ঠান। এখানে
চাকুরী করা নারী ও পুরুষ সকলের জন্যে হারাম।
________________________
(৭) যদি বিয়ের আগে সহবাস করে আপন জেডার
সাথে স্ব ই ইচ্চায় জোর পুর্বক নয়। আর বিয়ের পরে স্বামি তা জানতে পারে। তখন স্বামির
কি করা উচিত। দয়া করে একটু বলবেন ভাই উপকার হবে।
[প্রশ্ন নং ২০]
একজন মহিলা বলে, সে এক নেককার লোকের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ
হয়েছে। সে বিবাহের পূর্বে এমন কিছু কাজ করেছে যা আল্লাহ পছন্দ করেন না। এখন তার
মনে বিষয়টি সর্বদা পীড়া দিচ্ছে। এখন তার প্রশ্ন, সে কি তার
স্বামীকে পূর্বে যা কিছু ঘটেছে তা জানাবে?
উত্তর: স্বামী স্ত্রীর উভয়েরই কেউ অপরকে জানান ওয়াজিব
নয় যে, অতীতে
সে কি করেছে। কেউ যদি এসব পঙ্কিলতার দ্বারা পরীক্ষিত হয়ে থাকে তাহলে সে যেন তা
আল্লাহর ওয়াস্তে গোপন করে। তার জন্য খালেস তাওবাই যথেষ্ট।
তবে কেউ যদি কুমারী মেয়েকে বিবাহ করে অতঃপর প্রকাশিত
হয় যে, মেয়েটি
প্রকৃত কুমারী নয়, অতীতে অপকর্ম করার কারণে, তাহলে সে যে মোহর দিয়েছে তা ফেরত নিয়ে তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে
পারে। আর যদি সে দেখে যে, সে তাওবা করেছে যার ফলে আল্লাহ তার
দোষ গোপন রেখেছেন তাহলে যদি তাকে দাম্পত্যে রেখে দেয় তাহলে অবশ্যই মহান আল্লাহ
কর্তৃক নেকী ও সোয়াবের ভাগী হবে।
________________________
(৮) চোখের নজর লাগা সত্যি। হিংসার বশে
মানুষের চোখের নজর দ্বারা মানুষের জান-মালের অনেক ক্ষতি, এমনকি
মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
________________________
(৯) ছবির ফিতনাহ নিয়ে আমাদের একটা পোস্টে
একভাই লিখেছেন, "কিছু ইসলামী ওয়েবসাইটে মহিলাদের
মেহেদীযুক্ত হাতের ছবি, বিবাহের আকর্ষণীয় পোশাকে ছবি (যদিও
মুখ ঢাকা), আরও কিছু বোরকা পড়া মহিলার ছবি (পেছন দিক হতে
তোলা), যেখানে অবয়ব বোঝা যায় কারণ বোরকা খুব অল্প ঢিলেঢালা,
এগুলো দেওয়াও জায়েজ হবে বলে মনে হয়না। সবগুলোই ফেতনা বলেই মনে হয়,
যদিও মুখও ঢাকা! !আমি এসব ছবি দেওয়ারও বিরোধী!!"
- এইগুলোকে আমিও ফিতনাহ এবং অজ্ঞতা বলে
মনে করি। সহীহ আকিদাহ, ভ্রান্ত আকিদাহর...প্রায় সমস্ত ফেইস
বুক পেইজে এই কাজগুলো করা হয়। এইভাবে আস্তে আস্তে দাওয়াতী কাজের মান নীচে নামবে,
মানুষ আলেমদেরকে বাদ দিয়ে মিডিয়াতে মূর্খ লোকদের রঙচঙ্গা ও জনপ্রিয়
ইসলামের দিকে ঝুঁকে পড়বে। আল্লাহু মুস্তায়া'ন।