ইন্টারনেট মুসলিম,
ভার্চুয়াল ইসলাম (পর্ব-৪)
আহলে হাদীস,
সালাফী, সহীহ আকিদাহ, ডা. জাকির নায়েক ভক্ত, এমন নামে-বেনামে বিভিন্ন লেবেলধারী
অনেক লোকেরা ছবি নিয়ে মারাত্মক ফিতনাহর মাঝে ডুবে আছে। টিভি, ইন্টারনেট থেকে দ্বীন
শেখা অনেক ছাত্রদের কাছে ছবি তোলা বা ছবি প্রচার করা যেন ফরয-ওয়াজিব হয়ে গেছে।
তাদের অনেকে প্রিয় বক্তাদের ছবি ছাড়া কুরআনের একটা আয়াত প্রচার করতে পারছেন না।
প্রতিদিন সকাল-বিকাল প্রিয় বক্তাদের একটা করে ছবি পোস্ট না করলে তাদের দিনটাই যেনো
নষ্ট হয়ে গেলো। অমুক শায়খ খুতবা দেবেন, তার একটা ছবি। অমুক বক্তা হজ্জে গেছেন,
কাবার সামনে তার একটা সেলফী। অমুক নামায পড়ছেন, দুয়া করছেন, তার একটা ছবি। ছবি
প্রচার করার কত যে বাহানা! সাধারণ মানুষের কথা নাহয় বাদই দিলাম. . .তাদের বিশাল বড়
বক্তারাই যত্রতত্র নিজেদের, নিজেদের ছেলে-মেয়েদের ছবি তুলে প্রচার করার
প্রতিযোগীতায় লিপ্ত। ঈমানদারদের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে সব সময় নিজেদেরকে আড়াল রাখতে চায়।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম কে বলতে শুনেছি, “মহান আল্লাহ্ মুত্তাক্বী, প্রশস্ত অন্তরের
অধিকারী ও আত্মগোপনকারী বান্দাকে ভালোবাসেন।” সহীহ মুসলিমঃ
৭৬২১।
আর বর্তমান যুগের
নারী পুরুষেরা যেনো ফেইসবুক ইন্টারনেটে কোন একভাবে নিজেকে, নিজেদের স্ত্রী-সন্তানদেরকে,
নিজেদের ঈমান-আমল মানুষের মাঝে প্রচার করে জনপ্রিয়তা বাড়ানোর অসুস্থ প্রতিযোগীতায়
লিপ্ত। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই কাজগুলোকে অনেকে তাদের দাওয়াতের(!) প্রধান মাধ্যম
বানিয়ে ফেলেছে। আর ইলম থেকে বঞ্চিত লোকেরা এমন অজ্ঞতাপ্রসূত কাজগুলোর জন্যে বাহবা
দিচ্ছে। কিছু কিছু মানুষের অজ্ঞতা এতোটাই মারাত্মক যে, অবাক না হয়ে পারা যায়না।
যেই সমস্ত আলেমরা যেমন শায়খ বিন বাজ, শায়খ আলবানী, শায়খ ফাউজান…ছবি তোলার নিষেধাজ্ঞার ব্যপারে সবচাইতে কঠোর ফতোয়া প্রদানকারী, আলেমদের ইখতিলাফ (মতবিরোধের) দোহাই দিয়ে সেই
সমস্ত আলেমদের ছবিও প্রচার করতে তারা দ্বিধা বোধ করছেনা। সহিহ আকিদাহ লেবেল নিয়ে
এমন অজ্ঞ ইসলাম প্রচারকারীদের ফিতনাহ থেকে আল্লাহ তায়া’লা মুসলিম জাতিকে হেফাজত করুন, আমিন।
দাঁড়ি-টুপি পড়া
অনেক লোকেরা মনে করে, আমরা পুরুষ মানুষ, আমাদের আবার কিসের লজ্জা? সুতরাং ইচ্ছামতো
নিজে ছবি প্রচার করে ফ্যাশান শো করি। আবার অনেক হিজাবী কিন্তু মুখ খোলা মহিলারা
মনে করছে, আমিতো হিজাব-পর্দা করছি। সুতরাং, হিজাব পর্দার আড়ালে বাজারের চাইতে
নিকৃষ্ট একটা জায়গা ফেইসবুকে নিজের চেহারা বা শরীরের অংগ-ভংগি দ্বারা যদি পুরুষদের
চোখে একটু ‘মজা’ দিতে পারি, তাহলে এতে এমন আর কি ক্ষতি হয়ে
গেলো? এইভাবে অনেক নামাযী, ধার্মিক লোকেরাও অমুলসিম কিংবা ফাসেক নায়ক-নায়িকাদের
মতো ছবি তোলা এবং প্রচার করার ফ্যাশানে আক্রান্ত। ফেইসবুক, ইন্টারনেটে যত্রতত্র
ছবি প্রচার করার ফিতনাহর ব্যপারে বিস্তারিত জানার জন্য আমি আপনাদের কিছু লিংক
দিচ্ছি।
.
ইসলামে ছবি অঙ্কনের
হুকুম
- শায়খ আব্দুল্লাহ
শাহেদ আল-মাদানী
https://www.facebook.com/dawati.kaj/posts/1799829283622562
.
প্রয়োজন ছাড়া
ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলার বিধান কি?
- শায়খ আব্দুর
রাক্বিব মাদানী হাফিজাহুল্লাহ
https://www.youtube.com/watch?v=YTjFnS-bnP0
.
ফেইসবুকে নিজের ছবি
পোষ্ট সম্পর্কে ইসলামী শরীয়তের হুকুম কি?
- শায়খ মতিউর রহমান
মাদানী
https://www.youtube.com/watch?v=mYAtrzbjWCk
.
বিঃদ্রঃ
(১) লেখাটা ভালো
করে পড়ে, তার অর্থ অনুধাবন না করে কেউ কোন মন্তব্য করবেন না। অপ্রাসংগিক বা যেকোন
ধরণের অসংগত কমেন্ট রিমুভ করা হবে।
(২) ব্যক্তিগত
কারণে নিয়মিত পোস্ট কিংবা নতুন কোন প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা। সুতরাং,
আমাদের পোস্টগুলোতে প্রশ্ন বা মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার জন্যে সকলকে বিনীতভাবে
অনুরোধ করা হলো।