আমি তো মুসলমান! আমি
পূজা করতে যাই না, পূজা দেখতে যাই. . .
=> বলা হয় মুসলমানদের
দেশ, রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম. . .কিন্তু স্কুল-কলেজ, ইউনিভার্সিটি, অফিস, আদালাতে, রাস্তা-ঘাটে
সামান্য কয়েকজন মুশরিকের জন্য বিশাল মূর্তি স্থাপন করা হচ্ছে, পূজার গান-বাজনা দিয়ে
পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে।
=> বর্তমান যুগের
এমন অনেকে রয়েছে যারা নিজেদেরকে ঈমানদার দাবী করে, কিন্তু পূজার দিনগুলোতে মুশরিকদের
দেব-দেবীর মূর্তি দেখার জন্য ভীড় জমান।
=> পূজা উপলক্ষ্যে
মুশরিকদের সাজানো জাক-জমকপূর্ণ ডেকোরেশান, গান-বাজনার আর বেহায়া মেয়েদের রূপে পাগল
হয়ে লক্ষ লক্ষ মুসলমান পুরুষ ও নারীরা আল্লাহকে ভুলে গিয়ে মুশরিকদের সাথে মিলে-মিশে
পূজা উদযাপন করছে।
=> অনেকে মুশরিকদের
সাথে বন্ধুত্ব ও ভালোবাসার কারণে পূজা উপলক্ষ্যে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।
=> অনেক নেতা-কর্মীরা
অমুসলিমদের মাঝে জনপ্রিয়তা ও ভোট পাওয়ার জন্য, ক্ষমতার লোভে প্রতিবেশী মুশরিক দেশের
সমর্থন পাওয়ার জন্য মুশরিকদের মন্দিরে পূজার উদ্বোধন করছেন, “ধর্ম যার যার উৎসব সবার” বলে মুসলমানদেরকে মূর্তি পূজার
দাওয়াত দিচ্ছেন।
_____________________________
পূজা উপলক্ষ্যে মুশরিকদেরকে
শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন?
বাংলাদেশের হিন্দুদের
মাঝে সবচাইতে বড় পূজা হচ্ছে দুর্গা পূজা। অপর একটি বৃহত্তর পূজা হচ্ছে সরস্বতী পূজা।
নাম শুনে বুঝা যায়, দুর্গা, সরস্বতী হচ্ছে মহিলার নাম। পূর্ব-পশ্চিম, মুশরিক যেখানের
হোক, তাদের মাঝে সাধারণ একটা স্বভাব হচ্ছেঃ নারী পূজা করা।
মহান আল্লাহ বলেন, “তারা (মুশরিকরা) আল্লাহকে বাদ দিয়ে
শুধু নারীর পূজা করে এবং বিদ্রোহী ও অবাধ্য শয়তানের পূজা করে।” সুরা নিসাঃ ১১৭।
উবাই ইবনু কা’ব রাদিয়াল্লাহু আ’নহু বলেন, “প্রত্যেকটা মূর্তির সাথে একটা করে
নারী জ্বিন থাকে।” আহমাদঃ ২১২৬৯, সনদ হাসান, ইবনু কাসীর, তাফসীর সুরাহ নিসাঃ আয়াত-১১৭।
মক্বা বিজয়ের পরে রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের আদেশ অনুযায়ী খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিয়াল্লাহু আ’নহু বিখ্যাত “উযযা” মূর্তি ধ্বংস করার সময় সেখান থেকে
কালো কুচকুচে রঙ্গের, উস্কু-খুস্কু চুল বিশিষ্ট একটা নগ্ন নারী জ্বিন বের হয়ে আসে।
তিনি সেই জিনকে তলোয়ার দিয়ে আঘাত করে দ্বিখন্ডিত করে ফেলেন। নাসাঈ কুবরাঃ ১১৫৪৭, তাবাকাত
ইবনু সা’দঃ ২/১৪৫-১৪৬।
_____________________________
কুরআনে আল্লাহ পাক ‘ফিতনাহ’ শব্দ দ্বারা কয়েকটি বিষয়কে বুঝিয়েছেনঃ
(১) পরীক্ষা (test,
trail),
(২) আযাব বা শাস্তি
(punishment, torment),
(৩) শিরক
(associating partner with Allah).
যেমন মহান আল্লাহ তাআ’লা বলেন, “ফিতনাহ মানুষ হত্যার চাইতে জঘন্য।” সুরা আল-বাক্বারাহঃ ১৯১।
এই আয়াতের তাফসীর সম্পর্কে
আবুল আলিয়া, মুজাহিদ, আল-হাসান, জাহহাক, ইকরিমা, সাঈদ ইবনে জুবায়ের, কাতাদাহ (আল্লাহ
তাদের সকলের প্রতি রহম করুন), ক্বুরানের তাফসীরকারক হিসেবে প্রসিদ্ধ এই সমস্ত তাবেয়ীরা
সকলেই বলেছেন, এই ফিতনার অর্থ হচ্ছেঃ “শিরক”।
অর্থাৎ এই আয়াতের উদ্দিষ্ট
অর্থ হচ্ছে, শিরকের পাপ মানুষ খুনের চাইতে নিকৃষ্ট। সুতরাং, মুশরিকদের পূজা উপলক্ষ্যে
যারা তাদেরকে শুভেচ্ছা জানাবে, তাদের উৎসবে শরীক হবে, তারা খুনের চাইতে নিকৃষ্ট পাপকে
সমর্থন জানানো এবং তাতে শরীক হওয়ার জঘন্য পাপে লিপ্ত হলো।
.
আজকাল অনেক পূজা মন্ডপে
হিন্দুদের চাইতে মুসলমানদেরকেই বেশি দেখা যায়। এমনিভাবে কালের ব্যবধানে এক সময় নামধারী
এই মুসলমানেরা ‘ঈমান’ থেকে বের হয়ে মূর্তি পূজার ‘শিরকে’ লিপ্ত হবে। এটা আখেরী জামানাতে কেয়ামতের একটা লক্ষণ। এ সম্পর্কে সাল্লাল্লাহু
আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের সহীহ হাদীসগুলো
আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরছি।
_____________________________
(১) কেয়ামতের পূর্বে
মুসলিম নামধারী কতগুলো লোক মূর্তি পুজা করবেঃ
আবু হুরায়রাহ রাদিয়াল্লাহু
আ’নহু হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু
আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “কিয়ামত ততক্ষণ পর্যন্ত সংঘটিত হবে
না, যতক্ষণ ‘যুল-খালাসার’ পাশে দাওস গোত্রের মহিলারা কোমর দুলিয়ে নাচবে।” সহীহ বুখারীঃ ৭১১৬; সহীহ মুসলিমঃ
৭১৯০ (৫১/২৯০৬)।
নোটঃ যুল-খালাসাহ হল
দাওস গোত্রের দেবতার মূর্তি। ইয়ামানের যুলখালাস নামক স্থানে দাওস বংশের এই মূর্তি ছিল,
কোন বর্ণনায় এই স্থানের নাম তাবালাহ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞতার যুগে তারা এই মূর্তির
ইবাদত করতো, সেখানে তাওয়াফ (চক্কর) দেয়া হতো।
.
(২) মুসলিমদের কোনো
কোনো বংশ মূর্তি পূজা আরম্ভ করবে আর কিছু সংখ্যক মুশরিকদের সাথে মিলে যাবেঃ
রাসুল সাল্লাল্লাহু
আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের আযাদকৃত দাস
সাওবান রাদিয়াল্লাহু আ’নহু হতে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আমি আমার উম্মাতের ব্যাপারে পথভ্রষ্ট
ইমাম বা নেতাদেরকে ভয় করছি। অচিরেই আমার উম্মাতের কোনো কোনো গোত্র বা সম্প্রদায় প্রতিমা
পূজায় লিপ্ত হবে, এবং আমার উম্মতের কতগুলো গোত্র মুশরিকদের সাথে যোগ দিবে।” আবু দাউদঃ ৪২৫২; ইবনু মাযাহঃ ৩৯৫২;
সহীহ, শায়খ আলবানি রাহি’মাহুল্লাহ।
.
(৩) কেয়ামতের পূর্বে
‘লাত’ ও ‘উজ্জার’ পূজা এমনভাবে শুরু হবে যেইভাবে
জাহেলিয়াতের সুময় (অন্ধকার যুগে) প্রচলিত ছিলঃ
আয়িশাহ রাদিয়াল্লাহু
আ’নহা হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, “রাত ও দিন শেষ হবে না, যতক্ষন পর্যন্ত না লাত ও উযযা দেবতার পূজা আবার শুরু
করা হবে।”
এ কথা শুনে আমি (আয়িশায়)
বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ নাযিল করেছেন, “তিনি তাঁর রাসুলকে পাঠিয়েছেন হিদায়াত
ও সত্য দ্বীন সহকারে, সকল দ্বীনের উপর বিজয়ী করার জন্য, যদিও মুশরিকরা তা অপছন্দ করে।” সুরা আত-তাওবাঃ ৩৩।
এই আয়াত নাযিলের পর
আমি তো (আয়িশাহ) মনে করেছিলাম যে, এ প্রতিশ্রুতি পূরন করা হবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “তা অবশ্যই হবে। তবে যতদিন আল্লাহ
ইচ্ছা করবেন ততদিন পর্যন্ত তা বলবৎ থাকবে। অতঃপর তিনি এক মনোরম বাতাস প্রেরন করবেন।
ফলে যাদের অন্তরে সরিষার দানা পরিমান ঈমান আছে তাদের প্রত্যেকেই মৃত্যুবরণ করবে। পরিশেষে
যাদের মাঝে কোন কল্যাণ (ঈমান) নেই তারাই শুধু বেঁচে থাকবে। অতঃপর তারা আবার পিতৃ-পুরুষদের
ধর্মের (শিরকের) দিকে ফিরে যাবে।” সহীহ মুসলিমঃ ৭১৯১ (৫২/২৯০৭)।
.
(৪) মুসলমান হয়েও যারা
মুশরিকদের দেব-দেবী দেখতে যাবে, তাদের উপরে আল্লাহর গজব বর্ষিত হবেঃ
উমার ইবনে খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু
আ’নহু বলেছেন, “তোমরা মুশরিকদের উৎসবের দিনগুলোতে
তাদের উপাসনালয়ে প্রবেশ করো না। কারণ, সেই সময় তাদের উপর আল্লাহর গযব নাযিল হতে থাকে।” ইমাম ইবনুল ক্বাইয়্যিম রাহি’মাহুল্লাহ তাঁর ‘আহকামুল জিম্মাহ’ (১/৭২৩-৭২৪), সহীহ সনদে বায়হাক্বী
থেকে এই রেওয়ায়েতটি বর্ণনা করেছেন।
_____________________________
মানুষ চায় প্রবৃত্তির
অনুসরণ করতে। এই সুযোগে ‘আলেম’ নাম নিয়ে একশ্রেনীর জাহিল লোকেরা শ্রোতাদের মাঝে জনপ্রিয়তা অর্জনের জন্য ক্বুরআন
ও হাদীস বিকৃত করে, সম্মানিত আলেমদের ফতোয়া নিয়ে মিথ্যা কথা বলে “হালালকে হারাম” আর “হালালকে হারাম” বানিয়ে দেয়। ইলম থেকে বঞ্চিত সরলমনা
মুসলমানেরা প্রবৃত্তির অনুসারী এমন লোকদেরকেই মধ্যমপন্থী, BALANCED, যুগোপযোগী শায়খ
বলে মনে করে ধোঁকা খায়। এমনই একটা বাস্তব উদাহরণ হচ্ছে, “এমেরিকান ইসলামের” ধারক-বাহক ইয়াসির UNQUALIFIED ক্বাদী।
আমার এই পোস্ট এমনিতেই বড় হয়ে যাওয়ায় এনিয়ে কথা না বাড়িয়ে কৌতূহলী পাঠকদের জন্য একটা
লিংক শেয়ার করছি –
(1) Why You Are
Doing To Muslims by Abu Mussab Wajdi Akkari
https://www.youtube.com/watch?v=z_xSfWL7ctU
.
(2) Be aware of “American Islam”
https://www.facebook.com/Back.to.Allah.bangla/photos/a.130928300273259.14132.125167817515974/1496079073758168/?type=3&hc_ref=SEARCH
_____________________________
মহান আল্লাহ আমাদেরকে
এবং আমাদের পরিবারকে প্রকাশ্য ও গোপন, নামে ও বেনামে, সকল ধরনের মূর্তি পূজা এবং যাবতীয়
শিরকি কর্মকাণ্ড থেকে হেফাযত করুন (আমিন)।