(১)
আমার অত্যন্ত প্রিয় একটা আয়াত, যা বার বার শুনতে ইচ্ছে করেঃ
আল্লাহ সুবহা’নাহু তাআ’লা বলেন, “হে ঈমানদারগণ! তোমরা ধৈর্য ধারণ করো। ধৈর্য ধারণের ব্যপারে
তোমরা একজন আরেকজনের সাথে প্রতিযোগীতা করো এবং (শত্রুদের বিপক্ষে) সর্বদা প্রস্তুত
থাকো। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক, যাতে করে তোমরা সফলকাম হতে পারে। [সুরা আলে-ইমরানঃ ২০০]
(২)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া
সাল্লাম-এর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা উপদেশঃ “যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন ভাল কথা বলে আর নয়তো চুপ থাকে।” [সহীহ বুখারী]
(৩) এই
মুবারক হাদীসের আলোকে ইমাম শাফেয়ী রাহিমাহুল্লাহ বলেন, “তুমি যদি কোন কথা বলতে চাও,
তাহলে তার পূর্বে চিন্তা করে নিও। যদি মনে করো যে, এই কথার ফলে কোন ক্ষতি নেই, তাহলে সেটা বলো। আর যদি
মনে করো যে, এই কথা বললে ক্ষতি হবে, তাহলে
তুমি চুপ থাকো।”
(৪)
আমাদের জীবনে সবচাইতে মূল্যবান জিনিস হচ্ছে সময়, অথচ আমরা এই
জিনিসটারই সবচাইতে বেশি নষ্ট বা অপচয় করি। হারাম কাজে লিপ্ত হয়ে; যেমনঃ অন্যের গীবত করে, গান শুনে, টিভি দেখে, গায়ের মাহরামদের সাথে রসের গল্প জমিয়ে
ইত্যাদি, অথবা বেহুদা কাজ করে; যেমনঃ
বিভিন্ন আড্ডায়, ফেইসবুকে ফাসেক ও বোকা লোকদের সাথে নিজের বিষয় নয় এমন অপ্রয়োজনীয়
কথা বলে বা তাদের কার্যকলাপ প্রত্যক্ষ করে, এইভাবে আমরা
আমাদের মূল্যবান সময়কে ধ্বংস করি। ধরুন আমরা যদি ১০টা মিনিট সময় নষ্ট করি কারো
সাথে বেহুদা আড্ডা দিয়ে, এতে দুনিয়া বা আখেরাতের কোন লাভ নেই,
বরং এর মাঝে যদি হারাম কোন কথা বলি যেমন গীবত করা, কারো নামে মিথ্যা অপবাদ দেই বা অহংকার করি, তাহলেতো বরং গুনাহ হবে, যার
জন্য শাস্তি নির্ধারিত রয়েছে। পক্ষান্তরে আমরা যদি এক মিনিটে মাত্র একবার “সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি” বলি, আল্লাহর
যিকিরের কারণে আমাদের অন্তরে প্রশান্তি নাযিল হবে, আর
পরকালের জন্যে জান্নাতে একটা করা গাছ লাগানো হবে। আর বাকি নয়টা মিনিট যদি বিশ্রাম
নেই তাহলে সেটা শরীর ও মনের জন্যে উপকারী হবে। কারণ চুপ থাকাও একতা ইবাদত, আর
অতিরিক্ত কথা ও হাসি মানুষকে অন্তরকে মেরে ফেলে। অথবা এই সময়ের মাঝে নিজে কোন কষ্ট
না করে শুধু কোন আলেমের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনি বা ক্বুরান তেলাওয়াত শুনি, এর
দ্বারাও অনেক উপকৃত হব। সুতরাং আমাদের সব সময়ে খেয়াল রাখতে হবে, কোন জিনিসে আমাদের
উপকার আছে, আর কোন জিনিসে ক্ষতি বা শুধু শুধু সময় নষ্ট হচ্ছে। এ ব্যপারে পরকালের
আশা রাখে এমন একজন ঈমানদারকে আর দশটা মানুষের চাইতে অনেক বেশি বুদ্ধি ও সতর্কতা
অবলম্বন করতে হবে।
(৫) একজন
সাহাবীর সুন্দর একটা ঘটনা শুনুন। আবু দুজানা রাদিয়াল্লাহু আ’নহু মৃত্যুরোগে বিছানায় শায়িত ছিলেন। এসময় তাঁর চেহারা একেবারে
চাঁদের মতো উজ্জ্বল হয়ে ছিলো। এ ব্যপারে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বললেন, “আমার কাছে (পরকালের হিসাব-নিকাশের ব্যপারে) ভরসা করার মতো
দুইটি আমল ছাড়া তেমন কিছুই নেই। তার প্রথমটি হচ্ছে এই যে, আমি কখনোই অনর্থক কথা বলতাম না। আর দ্বিতীয়
হচ্ছে, মুসলিমদের জন্যে আমার অন্তর সব সময় পরিষ্কার ছিলো।”
“অন্তর পরিষ্কার রাখা” কথাটির অর্থ
হচ্ছেঃ মুসলিমদের প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ, ঘৃণা, অহংকার বা শত্রুতা পোষণ না করা।
আল্লাহ আমাদের সকলকে সাহাবাদের মতো করেই আলাহ ও তাঁর রাসুলের
আনুগত্য করার তোওফিক দান করুন।
আমাদের পেইজের লেখাগুলো উপকারী মনে করলে আপনাদের বন্ধুদের মাঝে
প্রচার করুন এবং সাদকায়ে জারিয়ার সওয়াব লাভ করুন। পেইজ থেকে পোস্ট শেয়ার করার
চাইতে লেখাগুলো কপি করে নিজের টাইমলাইনে পোস্ট করুন, এতে মানুষ শেয়ারকৃত পোস্টের
চাইতে পড়তে বেশি আগ্রহী হবে। আর আমাদের বা কোন আলেমের কাছ থেকে লেখা সংগ্রহ করলে,
মূল লিখকের নাম উল্লেখ করে দিবেন।