(১) নারীরা ঈদের দিন, বিয়ে উপলক্ষ্যে আনন্দ উদযাপনের জন্য ছোট বালিকাদের কন্ঠে গাওয়া গান শুনতে
পারবে। আর সেই ক্ষেত্রে ধফ, যা একমুখী তবলার মতো, সেটা ব্যবহার করতে পারবে।
(২) মুসলিম নারী ও পুরুষদের
জন্য উত্তম হচ্ছে সুন্দর ও উপদেশ মূলক কবিতা বা ছন্দ। সীমা লংঘন না হলে এইগুলো বলা,
লিখা ও শোনা - সবই জায়েজ। এমনকি স্বয়ং রাসুল সাঃ ছোট কবিতা শুনেছেন,
সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমানিত। তবে বর্তমানে কন্ঠ সুন্দর করে গানের
মতো যেইগুলো গাওয়া হচ্ছে, মানুষ যেইগুলোকে আদর করে নাশিদ বা
ইসলামিক গান নাম দিয়েছে - এইগুলো হচ্ছে ফিতনাহ ও বাকোয়াজ।
(৩) মসজিদে জামাত হয়ে গেলে
পরে যারা পৌঁছাবে, তারা কয়েকজন বা অন্তত দুইজনে মিলে জামাত
করা যাবে, জামাতের সওয়াব পাওয়া যাবে। এতে কোন বাঁধা নেই,
জামাতের পরে দ্বিতীয় জামাত সহীহ মুসলিমের সালাত অধ্যায়ের সহীহ হাদীস
দ্বারা প্রমানিত।
(৪) ফরজ গোসল থাকা অবস্থায়
পশু জবাই করা যাবে, কোন সমস্যা নেই।
(৫) যে কোন ফরয নামায একা
পড়ার সময় ইকামত দেওয়া ভালো, দিলে সওয়াব পাবেন। না দিলেও
নামায হবে।
(৬) আপনারা শুধুমাত্র টিভি,
ফেইসবুক, ইন্টারনেটের উপর নির্ভর না করে
সত্যিকারে আলেম উলামাদের (যেমন শায়খ বিন বাজ, শায়খ ইবনে
উসায়মিন, শায়খ ফাউজান...) ওয়াজ-লেকচার শুনে কিংবা বই-পুস্তক
পড়ে দ্বীন সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান করবেন। সঠিক জিনিস জানা থাকলে কোনটা সঠিক, কোনটা ভুল ধরতে পারবেন। আমি একটা উদাহরণ দেই। জনপ্রিয় ইসলাম প্রচারক ডা.
জাকির নায়েক বলেছেন, "আল্লাহ সব কিছু করতে পারেন না,
আমি ১০০০টা জিনিসের নাম জানি, যেইগুলো আল্লাহ
করতে পারেন না।" নাউযুবিল্লাহি মিং যালিক! জ্ঞান থেকে বঞ্চিত একশ্রেণীর অল্প
ইলম সম্পন্ন লোকেরা ডা. জাকির নায়েকের প্রতি অন্ধ ভক্তিতে এই কুফুরী যুক্তিটাকে
সঠিক মনে করছে এবং এটা মানুষের মাঝে প্রচার করছে। কোন ব্যক্তির অন্ধ অনুসরণ
দ্বীনকে নষ্ট করে, আল্লাহ আমাদেরকে হেফাজত করুন।
(৭) Mufassial Islam, লিমন ফকির, Asad noor - এই তিন ধর্মত্যাগী শয়তান
ইসলামের বিরুদ্ধে সীমাহীন মিথ্যাচার করছে। সাধারণ মানুষের দ্বীন সম্পর্কে গভীর
জ্ঞানের অভাব, একারণে তারা অনেককে বিভ্রান্ত করছে বা ক্বুরআন
ও হাদীস নিয়ে সন্দেহের মাঝে ফেলছে। আপনারা নির্ভরযোগ্য মাধ্যম থেকে দ্বীন শিখবেন,
এবং সমস্ত মন পূজারী, বিদআ'তী, পথভ্রষ্ট কিংবা নাস্তিকদের লেখা ও কথা থেকে দূরে
রাখবেন, কারণ এরা অন্তরে ব্যাধির জন্ম দেয়। এদেরকে
গালি-গালাজ করে বা এদের সাথে তর্ক করে সময় নষ্ট করবেন না, তবে
এদের শয়তানী সম্পর্কে মুসলিমদেরকে সতর্ক করবেন। এদের মধ্যে কোন এক শয়তান বুখারীতে
বর্ণিত সহীহ হাদীস সম্পর্কে সন্দেহে ফেলার চেষ্টা করছে। এমনই একটি হাদীসঃ
আনাছ ইবনে মালিক ও কাতাদা (রাঃ) থেকে
বর্ণিত: তারা বলেন, নবি (সাঃ) দিনে বা রাতে পর্যায়ক্রমে
(মধ্যবর্তি ফরজ গোসল ছাড়া) ১১ জন বিবির সঙ্গে সঙ্গম করতেন। (৯ জন বিবাহ সুত্রে ও
২ জন শররিয়তী
স্বত্বাধিকার সুত্রের) কাতাদা বলেন, আমি
আনাছকে (রাঃ) জিজ্ঞাসা করলাম, হযরতের কি এতই শক্তি ছিল?
তিনি বললেন,আমাদের
মধ্যে এই কথা প্রসিদ্ধ ছিল যে, রাছুলাল্লাহর ৩০ জন পুরুষের
শক্তি আল্লাহর তরফ থেকে
প্রাপ্ত ছিলেন। [দ্র: বোখারী, ১ম
খ. ১২ সংস্করণ, আ. হক, হাদিছ নং-১৯০,পৃ: ১৪৫; হামিদিয়া লাইব্রেরী]
এই হাদীস বর্ণনার পরে সেই শয়তান
লিখেছেঃ
"আমার প্রশ্ন রাসুল (সাঃ)
১১ জন বিবির সঙ্গে সঙ্গম করতেন আর এটা কি সে সাহাবাদের সামনে এসে বলতেন? আসলে কি বলতে পারে? নাকি সাহাবাদের সেই দৃষ্টতা ছিলো
যে, রাসুল (সাঃ) কে জিজ্ঞাসা করতে পারে। এমন পেট বানানো
হাদীস গুলি রাসুল (সাঃ) মত পবিত্র মহান মানুষটিকে খাটো করেছে। আসলে ভাবতে হবে কোরআন
আর হাদীস কি? কোরআন সোষ্টার আর হাদীস সৃষ্টির। কোরআন স্বা
পামাণে নিজেই অটুট আর হাদীস নিজের প্রামাণে শত শত কেতাব আর উপমা দিয়ে বোঝাতে আজ
শত শত বছর ধরে লড়ছে।"
এই শয়তানের সন্দেহের উত্তরঃ
১১ জন স্ত্রীর ব্যপারটা বলি, রাসুল
সাঃ প্রত্যেক বিবির ঘর আলাদা ছিলো, আর রাতে তাঁর ঘরের পাশে
সর্বদা একজন সাহাবী খেদমত ও পাহারার জন্য প্রস্তুত থাকতেন। তাই রাসুল সাঃ এক রাতে
কতজন বিবির ঘরে যেতেন, সেই সাহাবীর জন্য জানা খুব স্বাভাবিক
ব্যপার ছিলো। আর রাসুল সাঃ সেই সাহাবীর কাছে এক রাতে গোসল করার জন্য কতবার পানি
চাইতেন, সেটা বর্ণনা করা সেই সাহাবীর জন্য খুব সহজ। এভাবেই
আসলে আমরা জানতে পেরেছি যে, রাসুল সাঃ এক রাতে তাঁর সব
বিবিদের সাথে অবস্থান করেছেন। এর জন্য রাসুল সাঃ নিজের এই কথা সাহাবীদেরকে বলার
প্রয়োজন ছিলো না। অথচ এই আহাম্মক শয়তান হাদীসের অর্থ বুঝতে না পেরে হাদীসটাকে পেট
বানানো হাদীস বলছে, নাউযুবিল্লাহ। আল্লাহ এদেরকে হেদায়েত
করুন, আর নয়তো এদেরকে ধ্বংস করে এদের অনিষ্ট থেকে
মুসলিমদেরকে হেফাজত করুন। ইসলামী আইন না চালু থাকায় যেমন নাস্তিক-মুর্তাদেরা যা
খুশি বলছে, ঠিক তেমনি এই খবিস মুসলমান নাম নিয়ে মুসলমানদেরকে
বিভ্রান্ত করতে চাইছে। আপনারা এমন শয়তানদের থেকে সাবধান!