আজ সন্ধ্যায় আমাদের পেইজে প্রকাশিত “পুরুষের
তুলনায় নারীর অধিকার কেমন?” – পোস্টে এক
ভাই মন্তব্য করেছেন,
“আপনি ডা.
জাকির নায়েকের নারী এবং পুরুষের অধিকার নিয়ে লেকচারটি শুনলে সঠিক ব্যাখ্যাটা বুঝতে
পারবেন। উনি বলেছেন সমান এবং এর সুন্দর ব্যাখ্যাও দিয়েছেন।”
উত্তরঃ ডা. জাকির নায়েক কোন আলেম নন, তার
কথার ব্যপারে আপনারা সাবধান থাকবেন। বর্তমানে অল্প ইলম সম্পন্ন একশ্রেনীর লোকেরা
অন্ধ ভক্তিতে মনে করেঃ ডা. জাকির নায়েক যা বলেন, তাই বুঝি
ক্বুরআন ও হাদীসের মতো অভ্রান্ত! অথচ ক্বুরআন সম্পর্ক গভীর জ্ঞানের অভাবে ডা.
জাকির নায়েক এমন কিছু কথা বলেছেন, যা ক্বুরআনের সাথে
সুস্পষ্ট সাংঘর্ষিক। উপরে আপনি যা বলেছেন, সেটা তারই একটা
উদাহরণ। আপনার কাছে যেটা সুন্দর ব্যখ্যা, ক্বুরআন ও হাদীসের সাথে মিলিয়ে দেখলে
সেটা অজ্ঞতা ছাড়া আর কিছুই না। এই বিষয়ে আল্লাহ তাআ’লা ক্বুরআনুল
কারীমে কি বর্ণনা করেছেন, নীচে আমি সংক্ষিপ্তভাবে তা উল্লেখ করছি। যারা অধিক জানতে
আগ্রহী, তারা অন্ধভাবে টিভি, ইউটিউব বা ফেইসবুকের অনুসরণ না করে
দ্বীনি বই-পুস্তক খুলে, আলেম-উলামাদের বক্তব্য শুনে নিজেদের
সংশয় দূর করে নেবেন ইংশা আল্লাহ।
__________________________
(১) আল্লাহ তাআ’লা ইরশাদ
করেছেন,
الرِّجَالُ قَوَّامُونَ عَلَى النِّسَاءِ بِمَا فَضَّلَ اللَّهُ بَعْضَهُمْ عَلَىٰ بَعْضٍ
“পুরুষ
নারীর কর্তা। কারণ, আল্লাহ তাদের একজনকে (পুরুষকে) অপরের (নারীর)
উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন।” সুরা
আন-নিসাঃ ৩৪।
আয়াতের তাফসীরঃ এই আয়াতে পুরুষদের
কর্তৃত্ব ও দায়িত্বশীলতার দুইটি কারণ বলা হয়েছে। প্রথমটি হল, আল্লাহ
প্রদত্তঃ যেমন, পুরুষোচিত শক্তি ও সাহস এবং মেধাগত যোগ্যতায়
পুরুষ সৃষ্টিগতভাবেই নারীর তুলনায় অনেক বেশী। (তাফসীর আহসানুল বায়ান)।
(২) উক্ত আয়াত ছাড়াও নারীর
ওপর পুরুষের বিশেষ অধিকার ও প্রাধান্যের কথা ক্বুরআনুল কারীমের আরো বিভিন্ন স্থানে
রয়েছে। যেমন, মহান আল্লাহ সুরা বাক্বারায় ইরশাদ করেছেন,
وَلَهُنَّ مِثْلُ الَّذِي عَلَيْهِنَّ بِالْمَعْرُوفِ ۚ وَلِلرِّجَالِ عَلَيْهِنَّ دَرَجَةٌ ۗ وَاللَّهُ عَزِيزٌ حَكِيمٌ
“পুরুষদের যেমন
স্ত্রীদের ওপর অধিকার রয়েছে, তেমনি স্ত্রীদেরও অধিকার রয়েছে পুরুষদের
ওপর নিয়ম অনুযায়ী। কিন্তু নারীদের উপর পুরুষদের কিছুটা মর্যাদা আছে। আর আল্লাহ
মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।” সুরা
বাক্বারাহঃ ২২৮।
আয়াতের তাফসীরঃ বিশিষ্ট তাফসীরবিদ
সাহাবী আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আ’নহু বলেছেন, “আল্লাহ তাআ’লা পুরুষকে
স্ত্রীলোকের তুলনায় বিশেষ উচ্চ মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য দান করেছেন।” তাফসীরে
কুরতুবী।
এই আয়াতে নারীর ওপর পুরুষের
শ্রেষ্ঠত্বের কথা স্পষ্টরূপে বর্ণনা করা হয়েছে। আর এই শ্রেষ্ঠত্ব যে মর্যাদার
শ্রেষ্ঠত্ব, শুধু দায়িত্বের শ্রেষ্ঠত্ব নয়, তা
বলাই বাহুল্য। এই আয়াতের তাফসীরে তা সুবিদিত।
(৩) নবী
সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “আমি যদি কাউকে কারো জন্য সিজদাহ করার আদেশ করতাম, তাহলে নারীকে আদেশ করতাম, সে যেন তার স্বামীকে সিজদাহ করে।’’ তিরমিযিঃ
১১৫৯।