বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৬

কাবার সামনে selfie

আমার এক ফেইসবুক ফ্রেন্ড কাবার সামনে selfie (নিজের ছবি নিজে) তুলে আপলোড করেছে। সেই ছবিতে দেখলাম অনেক লাইক করে সমর্থনও জানিয়েছে। যেই ভাই ছবিটা আপলোড করেছে সে কিন্তু কোন বিদাতপন্থী দলের অনুসারী নয়, সহীহ আকিদাহর অনুসারী। আর যারা লাইক করেছে তাদেরও বেশিরভাগ সালাফী, আহলুল হাদীস মানহাজের অনুসারী কিংবা ডা. জাকির নায়েকের ভক্ত। এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই যে, ডা. জাকির নায়েকের মতো জনপ্রিয় একজন ইসলামিক ব্যক্তিত্ব ইহরাম অবস্থাতে কাবার সামনে, রাসুলু্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কবরের সামনে selfie তুলে তার verified page publish করেন, তাহলে তার ভক্ত ও শ্রোতা সরলমনা মুসমানেরাও তাদের উস্তাদের মতোই একই কাজে লিপ্ত হবে। সত্যি কথা বলতেঃ অধিকাংশ মানুষ ইলম নয়, আবেগের অনুসারী হয়ে থাকে।
.
যাই হোক, বছর দুয়েক পূর্বে (সম্ভবত ২০১৪ সালে), সাউদী আরবের প্রখ্যাত আলেমে-দ্বীন ও মুফতি, আল্লামাহ সালিহ আল-ফাউজান হাফিজাহুল্লাহ মসজিদুল হারামে একজন লোককে selfie তুলতে দেখে তার সমালোচনা করে বলেন, এই লোকটি একজন criminal.
- অপ্রয়োজনে ছবি তোলা জায়েজ নয়। কাবাঘর ইবাদতের জায়গা, আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের জায়গা। মসজিদুল হারামের মতো সম্মানিত ও আল্লাহর পছন্দের একটি স্থানে বেহুদা কাজ করে ইখলাস নষ্ট করা, নিজের আমলকে দূষিত করা মূর্খতা ছাড়া আর কিছুইনা। আধুনিকে যুগের টেকনোলজি আমাদের অনেক উপকারে আসছে, কিন্তু সেটা আমাদের অনেকের দ্বীনের মারাত্মক ক্ষতি করছে, যা আমরা টেরও পাচ্ছিনা। আল্লাহুল মুস্তাআন।
.
সালাফী, আহলুল হাদীস মানহাজের অনুসারী অনেক ভাইয়েরা মনে করেঃ আল্লামাহ মুহাম্মদ বিন সালেহ আল-উসায়মিন রাহিমাহুল্লাহ ব্যপকভাবে, যত্রতত্র ছবি তোলাকে জায়েজ বলে ফতোয়া দিয়েছেন। এটা ভুল ধারণা। আল্লামাহ মুহাম্মদ বিন সালেহ আল-উসায়মিন রাহিমাহুল্লাহ তাঁর ফতোয়ার মাঝে উল্লেখ করেছেনঃ
রাসুলু্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন যে ঘরে ছবি রয়েছে, সে ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করে না। সহীহ বুখারী, পোশাক অধ্যায়। সুতরাং, স্মৃতি স্বরূপ কারও ছবি যত্ন করে রেখে দেওয়া জায়েয নয়। কাজেই, যার কাছে এ রকম ছবি রয়েছে, তার উচিৎ এগুলো নষ্ট করে দেয়া। চাই সেই ছবি দেয়ালে ঝুলন্ত থাকুক কিংবা এ্যালবামের ভিতরে সংরক্ষিত থাকুক অথবা অন্য কোন স্থানে থাকুক। কারণ ঘরের মধ্যে ছবি থাকলে ঘরের মালিক রহমতের ফেরেশতাদের প্রবেশ থেকে বঞ্চিত হবে।
ফতোয়া আরকানুল ইসলামঃ আকিদাহ অধ্যায়, ৮৫ নং প্রশ্নের উত্তর, পৃষ্ঠা-২২৬, তাওহীদ প্রকাশনী।
আল্লামাহ মুহাম্মদ বিন সালেহ আল-উসায়মিন রাহিমাহুল্লাহ আরো বলেছেন, স্মৃতি সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে ছবি সংগ্রহ করা নিষিদ্ধ।
ফতোয়া আরকানুল ইসলামঃ আকিদাহ অধ্যায়, ৮৭ নং প্রশ্নের উত্তর, পৃষ্ঠা-২২৭, তাওহীদ প্রকাশনী।
.
সর্বশেষঃ আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা বলেন, সুতরাং (হে নবী!), আপনি আমার বান্দাদেরকে সুসংবাদ দিন। (আমার সেই সমস্ত বান্দাদের জন্যে সুসংবাদ), যারা মনোযোগ সহকারে কথা শুনে, অতঃপর তার মাঝে যা উত্তম, তার অনুসরণ করে। আল্লাহ তাদেরকেই সৎপথ প্রদর্শন করেন, আর তারাই হচ্ছে সত্যিকারের বুদ্ধিমান। সুরা আয-যুমারঃ ১৭-১৮।
.

যেকোন অসংগত কমেন্ট বিনা নোটিশে remove করা হবে, জাযাক আল্লাহু খায়রান।