‘উসীলা’ কি?
পীর, ফকির, মাযারওয়ালা, সূফী তরিকত আর মারেফতী লোকেরা যেইভাবে
কুরানের আয়াতের মিথ্যা তাফসীর করেঃ
মহান আল্লাহ বলেছেনঃ
“হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর (অর্থাৎ পরহেযগার হও), তাঁর নৈকট্য অর্জনের জন্য ‘ওসীলা’ অন্বেষণ কর এবং তাঁর পথে জিহাদ কর যাতে তোমরা সফলকাম হও।”
“হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর (অর্থাৎ পরহেযগার হও), তাঁর নৈকট্য অর্জনের জন্য ‘ওসীলা’ অন্বেষণ কর এবং তাঁর পথে জিহাদ কর যাতে তোমরা সফলকাম হও।”
সূরা আল-মায়িদাহ, আয়াত ৩৫।
‘উসীলা’ শব্দের তাফসীরঃ
ইমাম ইবনে কাসীর (রহঃ) তার জগত বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থে উল্লেখ
করেছেন, তাফসীরের ব্যপারে সবচেয়ে জ্ঞানী সাহাবী, আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেছেনঃ
“ওসীলা অর্থ হচ্ছে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের জন্য মাধ্যম।”
আর সেই মাধ্যম হচ্ছে, বান্দার ঈমান ও নেক আমল যেমন- নামায,
রোযা, দুয়া…ইত্যাদি। নিজের ঈমান মজবুত করে, বেশি বেশি নেক আমল করে বান্দা আল্লাহর নৈকট্য
অর্জন করতে পারে।
‘নেক আমল’ – যেমন সহীহ আল-বুখারীর হাদীসে আছে, ৩ জন যুবক গুহায়
আটকা পড়লে তারা প্রত্যেকে নিজের নেক আমলের উসীলা দিয়ে আল্লাহর কাছে দুয়া করেছিলো, এবং
এর মাধ্যমে তারা বিপদ থেকে উদ্ধার পেয়েছিলো।
পক্ষান্তরে, মিথ্যুক পীর সাপেরা নিজেদের বিনা পূজির বংশগত ‘পীরাতির’
জমজমাট ব্যবসার জন্য – কুরানের এই আয়াতে ‘উসীলার’ মিথ্যা, বানোয়াট, মনগড়া তাফসীর করে।
তারা বলে, এইখানে উসীলা অর্থে হচ্ছে – পীর বা কোন আল্লাহর অলী। আল্লাহর নৈকট্য পাওয়ার
জন্য আমাদেরকে পীর ধরতে হবে, কোন না কোন একজন পীরের মুরীদ হতেই হবে! পীর/অলী ধরা ফরয,
তাদেরকে উসীলা দিয়ে আমাদেরকে জান্নাতে যেতে হবে??
এইরকম বানোয়াট তাফসীর করে – এই পীরেরা আল্লাহর অলী হওয়ার দাবী
করে, এবং এইভাবে তাদেরকে উসীলা দিয়ে মুরীদেরা জান্নাতে যাবে – এইরকম ধোকা দেয় তাদের
মুরীদদের। যেমন, হাক্কানী পীর দাবিদার, চরমোনাই পীর সাহেব তার কিতাবে লিখেছেঃ
“এরূপভাবে পরকালেও তাঁহাদের (ওলীদের) ক্ষমতার সীমা থাকিবে না।
হাশরের মাঠে একজন আওলিয়ায়ে কেরামের ‘উসীলায়’ হুজুর ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া ছাল্লামের
হাজার গুনাহগার উম্মতকে আল্লাহ্ পাক মাফ করিয়া দিবেন।”
আশেক মাশুক, পৃঃ ৮১।
নোট – নবী-রাসুলরাই ইয়া নফসী ইয়া নফসী করবে নিজেদের চিন্তায়
– আর ভুয়া কথা বলে আওলিয়ার উসীলায় হাজার হাজার লোক মাফ করে দিবেন? মাফ করার মালিক আল্লাহ,
এখানে বলছে নবী (সাঃ) নাকি মাফ করিয়া দিবেন?? এই লোকটার মাথা ঠিক আছে কিনা সন্দেহ।
একেতো জাল কথা বলে পীরপূজায় লাগাতে চায়, আর নবী মাফ করার মালিক, এই শিরকি কথা বলে বেড়ায়?
কথিত হাক্কানী পীর চরমোনাই সাহেব মুরীদ বাড়ানোর জন্যে যেইভাবে
তার মুরীদদের ব্রেইন ওয়াশ করেঃ
“বান্দা অসংখ্য গুণাহ করার ফলে আল্লাহ্ পাক তাহাকে কবুল করিতে
চাননা। পীর সাহেব আল্লাহ্ পাকের দরবারে অুননয় বিনয় করিয়া ঐ বান্দার জন্য দুআ করিবেন,
যাহাতে তিনি তাহাকে কবুল করিয়া নেন।”
ভেদে মারেফতঃ ৩৪ পৃঃ।
নোট – ডাইরেক্ট কুরান, হাদীস ও ইজমা বিরোধী কথা। কেউ ১০০টা
খুন করেও যদি তোওবা করে তাকেও আল্লাহ তাআ’লা ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ সুরা যুমারে বলছেন,
যারা অনেক বেশী যুলুম (পাপ) করে ফেলেছো তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হবেনা, এমনও
বলেছেন – তোমরা আমাকে ডাকো আমি ডাকে সাড়া দেবো – আর এই পীর সাহেব নামের লোকটা বিনা
দলীলে বলে – আল্লাহ নাকি তোওবা কবুল করতে চান না? তাদের মতো ধর্মব্যবসায়ীরা দুয়া করলে
আল্লাহ নাকি তোওবা কবুল করবে। এর পরেও অন্ধ পীর ভক্তদের চোখের পর্দা সড়েনা?
পীর ধরতে হবে, কুরান হাদীসে এমন কোন কথা নাই – সুরা মায়েদার
৩৫ নাম্বার আয়াতে ‘উসীলার’ মিথ্যা তাফসীর করে সূফীবাদী লোকেরা কোটি কোটি লোকদেরকে মুরীদ
বানিয়ে তাদের টাকা খাচ্ছে – বিনিময়ে মারাত্মক রকমের এই বেদাতীরা সরলমনা মুসলমানদেরকে
শিরক বেদাত শিক্ষা দিয়ে তাদের ঈমান নষ্ট করছে।
উসীলা নিয়ে বিস্তারিত আরো দেখুন এই পোস্টে –
http://ansarus-sunnah.blogspot.com/2014/03/blog-post_334.html