আপনার দ্বীন সম্পর্কে জানুন
(পর্ব-৬)
(এই সিরিজের ইতিঃপূর্বের
পোস্টগুলো পড়ার জন্যে কমেন্টের লিংক দেখুন)
বিসমিল্লাহ। আলহা’মদুলিল্লাহ। ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আ’লা রাসুলিল্লাহ। আম্মা বাআ’দ।
আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
কেমন আছেন? আজকে ইন শাআল্লাহ ১৩টা মাসয়ালা বলে দেবোঃ
(১) সালাতে হাচি আসলে আস্তে করে "আলহামদুলিল্লাহ"
বলা যাবে। তবে সালাতরত অবস্থায় অন্য কারো হাচি বা সালাম এর জবাব দিলে সালাত ভেংগে যাবে।
(২) এক্সিডেন্ট বা চোখের নজর থেকে বাচার জন্যে
ছোট বাচ্চার কপালে নজর ফোটা, কৃষিখেতে বা ফলগাছে মাশায়াল্লাহ লিখে রাখা, কালো পতাকা
বা ভূতের ছবি/মূর্তি ঝুলানো, গাড়িতে ছিড়া জুতা ঝুলানো - এই সবগুলো কাজ কুসংস্কার এবং
শিরকি বিশ্বাস।
(৩) মানুষের সবচাইতে মূল্যবান উপার্জন হচ্ছে
ছেলে-মেয়ে। সন্তানদেরকে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার বানানোর চাইতে তাদেরকে মুসলিম বা আল্লাহর
বান্দা বানানো বেশি জরুরী। সুতরাং খেয়াল রাখবেন, আপনার ছেলেমেয়েরা দুনিয়াবী শিক্ষা
নিতে গিয়ে যেনো তাদের দ্বীনকে হারিয়ে না ফেলে।
(৪) তিনিই হচ্ছেন আলেম, যাকে অন্য আলেমরা আলেম
হিসেবে স্বীকার করেন। যিনি আলেম নন, তাকে ১০০কোটি সাধারণ মুসলমান যদি দুনিয়ার শ্রেষষ্ঠ
আলেম বলে দাবী করে, তবুও তিনি আলেম নাও হতে পারেন।
(৫) সারা বিশ্বের সমস্ত মুসলমান কিয়ামত পর্যন্ত
এক হবেনা, তবে হ্যা ঈসা (আঃ) না আসা পর্যন্ত। আপনি নিজে হক্ক জানার চেষ্টা করুন, হক্কের
অনুসরণ করুন এবং অন্যদেরকে সেইদিকে দাওয়াত দিন। কে মানলো কে না মানলো, কে খুশি হলো
কে রাগ করলো সেটা আমাদের দেখার বিষয় না। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাকে হেদায়েত করেন।
(৬) ক্যান্সার হাসপাতালের জন্যে লটারি কেনা ও
সরকারী প্রাইজবন্ড কেনা হারাম।
(৭) স্ত্রীদের মোহরানা আদায় করতেই হবে, বিয়ের
রাত্রে হাতে-পায়ে ধরে মাফ করানো যাবেনা। সেইজন্যে যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী মোহর নির্ধারণ
করতে হবে। আর অহেতুক মোহর বাড়ানো উচিত নয়। যৌতুকের টাকা পেটে থাকলে কেয়ামতের দিন হারামখোর
হিসেবে উঠতে হবে।
(৮) চিংড়ি মাছ, চা, কফি পান করা জায়েজ। সিগারেট,
জর্দা, তামাক পাতা, গুল খাওয়া হারাম।
(৯) আল্লাহর নাযিলকৃত কোন বিধানকে (ফরয/ওয়াজিব
বা নফল/সুন্নত কাজকে) অপছন্দ বা ঘৃণা করা কুফুরী, যার কারণে একজন নামাযী ব্যক্তির সমস্ত
আমল নষ্ট হয়ে যেতে পারে। সুতরাং, জিহাদ, দাড়ি, বোরখা, পুরুষের একাধিক বিয়ে করা, ইসলামি
রাষ্ট্রের আইন-কানুনকে যে অপছন্দ করবে তার অন্তরে মুনাফেকী রয়েছে।
(১০) জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা,
গণতন্ত্র - এই ৪টি কুফুরী মতবাদ, যা ক্বুরান ও সুন্নাহর সাথে সাংঘর্ষিক।
(১১) ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) বা অন্য কোন ইমাম
বা বর্তমান যুগের কোন একজন আলেম সম্পর্কে যে বাজে মন্তব্য বা কটুক্তি করবে, সে প্রকৃত
আহলে হাদীস নয়, সে প্রকৃত হানাফী নয়, সে একজন জাহিল মূর্খ।
(১২) টিভিতে ফুটবল ক্রিকেট খেলা দেখা হারাম।
কাফের দেশের খেলোয়াড়দের ভালোবাসা হারাম, তাদের ভালোবাসার কারণে তাদের জার্সি পড়া হারাম।
(১৩) পুত্রবধূর জন্যে শ্বশুড়, এবং শ্বাশুড়ির
জন্যে কন্যার স্বামী মাহরাম, তাদের সামনে পর্দা করা ফরয নয়, তাদের সাথে হজ্জ করতে যাওয়া
যাবে। তবে, ফিতনা থেকে সতর্ক থাকতে হবে কারণ দুনিয়াতে অনেক খারাপ উদাহরণ আছে।