বিবর্তন
মতবাদ একটি “কুফুরী” মতবাদঃ
রাসুলু্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘‘প্রতিটি সন্তান ইসলামের
ওপর জন্মগ্রহণ করে। কিন্তু তার পিতা-মাতা তাকে ইহুদি, খ্রিস্টান কিংবা
পৌত্তলিক অর্থাৎবিপথগামী বানায়।’’ সুনানে আত-তিরমিজি।
.
মুসলিমদের ঘরে জন্মগ্রহণকারী
প্রতিটি বাবা-মায়ের উপর ফরয দায়িত্ব হচ্ছে ছোট থেকেই সন্তানদেরকে ঈমান শিক্ষা
দেওয়া, ইসলাম শিক্ষা দেওয়া, যাতে করে বড় হয়ে তারা
আল্লাহর অনুগত বান্দা হয়ে জীবন পরিচালনা করতে পারে। সন্তানদেরকে ছোটবেলা থেকে
ইসলাম শিক্ষা না দিলে, কুরআন ও সুন্নাহ শিক্ষার আলোয়
আলোকিত না করলে স্বাভাবিকভাবে বড় হয়ে তারা বেনামাযী, ফাসেক
(পাপীষ্ঠ), এমনকি কাফের, মুশরেক
বা নাস্তিক হয়ে যেতে পারে। সেইজন্য, সন্তানদেরক ছোট থেকেই
কুরআন ও হাদীস শিক্ষা দিয়ে ইসলামের উপরে গড়ে তুলতে হবে, এবং
যাবতীয় শিরক, কুফর ও কবীরাহ গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার জন্যে
ট্রেনিং দিয়ে গড়ে তুলতে হবে।
.
বলা হয়ে থাকে, আমাদের দেশের
শতকরা ৮৫ ভাগ মানুষ হচ্ছে মুসলমান। অথচ, দুর্ভাগ্যজনকভাবে
এই দেশের স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মুসলমান
সন্তানদেরকে ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক, যেইগুলো বিশ্বাস
করলে মানুষের ঈমান নষ্ট হয়ে মুর্তাদ হয়ে যাবে, এমন
ভ্রান্ত মতবাদ শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। এটা আসলে কাফের-মুশরেক ও নাস্তিকদের একটা ঘৃণ্য
ষড়যন্ত্র। বিজ্ঞান, ফিলোসফি, সাহিত্য
শিক্ষা দেওয়ার নামে সিলেবাসে এমন বিষয়বস্তু ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে, যা ইসলামের সাথে সম্পূর্ণ বিপরীত। এমনই একটা ভ্রান্ত মতবাদ হচ্ছেঃ
বিবর্তন মতবাদ।
.
বিবর্তন মতবাদ অনুযায়ী মানুষ
সৃষ্টি হয়েছে বানর জাতীয় একটা প্রাণীর ধীরে ধীরে পরিবর্তনের মাধ্যমে। আগে বানরের
মতো একটা প্রাণী ছিলো, এই দুনিয়াতেই…আস্তে আস্তে তারা
পরিবর্তিত হয়ে মানুষের মতো রূপ ধারণ করে। এই মতবাদ সম্পূর্ণ কুরআন বিরোধী। কুরআনুল
কারীম অনুযায়ীঃ আল্লাহ মানুষকে সরাসরি মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন, সেটা এই দুনিয়াতে
নয়, জান্নাতে। আল্লাহ তাআ'লা
প্রথম আদম আ’লাইহিস সালাম-কে সৃষ্টি
করে জান্নাতে বসবাস করতে দেন তার স্ত্রী হাওয়া আ’লাইহিস
সালাম-এর সাথে। পরে তারা উভয়ে নিষিদ্ধ বৃক্ষ খেলে তাদেরকে দুনিয়াতে পাঠান।
আল্লাহ্ তাআ’লা বলেন, “আমি মানুষকে পচা কাদামাটি থেকে তৈরী
শুস্ক ঠনঠনে মাটি দ্বারা সৃষ্টি করেছি। এবং জিনকে এর আগে লু এর আগুনের দ্বারা
সৃজিত করেছি। আর আপনার পালনকর্তা যখন ফেরেশতাদেরকে বললেনঃ আমি পচা কর্দম থেকে তৈরী
বিশুষ্ক ঠনঠনে মাটি দ্বারা সৃষ্ট একটি মানব জাতির সৃষ্টি করব। অতঃপর যখন তাকে
ঠিকঠাক করে নেব এবং তাতে আমার রূহ থেকে ফুক দেব, তখন তোমরা তার সামনে সেজদায় পড়ে
যেয়ো।” সুরা আল-হিজরঃ
২৬-২৯।
এই আয়াতগুলো থেকে স্পষ্ট, আল্লাহ আদম আ’লাইহিস সালাম-কে সৃষ্টি করেছেন সরাসরি মাটি থেকে, অন্য কোন কিছু
থেকে নয়। এছাড়া বিবর্তনবাদের মূল বক্তব্যে, সমগ্র জীব জগত
কারো বিশেষ সৃষ্টি, এই কথাটাকেই অস্বীকার করা হয়েছে।
বিবর্তনবাদীদের মতে মানুষ, গাছ,পশু-পাখি
এইগুলো এমনি এমনি সৃষ্টি হয়ে গেছে, এইগুলো আসলে
প্রাকৃতিকভাবেই সৃষ্টি হয়েছে…
.
বায়োলজিক্যাল সাইন্স ও মেডিকেলে
অধ্যায়নরত ভাই-বোনেরা সাবধান!
কুরআন হাদীস সম্পর্কে অজ্ঞ, বিবেক-বুদ্ধি
হারিয়ে কাফেরদের কুফুরী মতবাদে অন্ধবিশ্বাসী কলেজ-ইউনিভার্সিটির
শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কথা শুনে বিবর্তনবাদের মতো স্পষ্ট কুফুরী মতবাদের কবলে পড়ে
ঈমানহারা হবেন না। আপনার বুঝে আসুক, আর না আসুক, দুনিয়ার মানুষ যদি কুরআনের বিপক্ষে ১০০০টা যুক্তি প্রমান উপস্থাপন করুক
না কেনো, একজন মুসলিম হিসেবে আপনি কুরআনের কথা বিশ্বাস
করতে বাধ্য। কারণ, কুরআন কোন মানুষের রচনা নয়। এই কুরআন
সমস্ত সৃষ্টিজগতের স্রষ্টা মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিলকৃত, যিনি এই পুরো পৃথিবীকে সৃষ্টি করেছেন, যিনি
সর্বজ্ঞানী। কেউ যদি মনে করে কুরআনের একটা শব্দ বা অক্ষর ভুল, এমনকি কেউ যদি সন্দেহ করে, তাহলে সে কাফের ও
মুর্তাদ হয়ে যাবে।
আর যদি বিজ্ঞান, বিবেক, যুক্ত-প্রমান এর কথা বলেন, বিবর্তবাদ বিশ্বাস
করতে পারে একমাত্র তারাই যাদের আকল (বুদ্ধি) লোপ পেয়েছে বা mentally retard
শুধুমাত্র তারাই।
.
দুনিয়ার সবচাইতে বড় মূর্খতা হচ্ছে
বিবর্তনাবাদ ও নাস্তিকতা। নাস্তিকরা গরু পূজারী মুশরিকদের চাইতেও নিকৃষ্ট। কারণ, যারা গরুর পূজা
করে তারাও ইলাহ, মাবূদ বা সৃষ্টিকর্তাকে অস্বীকার করেনা।
কিন্তু তারা ভুল ইলাহর উপাসনা করে। কিন্তু হায় আফসোস! বিবর্তনবাদীরা নাস্তিকরা
তাদের সৃষ্টিকর্তাকেই চিনতে পারেনি! সৃষ্টিকর্তাকে না চেনার কারনে সৃষ্টিকর্তার
তুচ্ছ এক সৃষ্টি, প্রকৃতি বা আকাশ-বাতাসকেই তাদের মাবূদ
হিসেবে বানিয়ে নিয়েছে।
.
নাস্তিকদের উদ্দেশ্যে আল্লাহর
প্রশ্নঃ
“তারা কি এমনি এমনিই সৃষ্টি হয়েছে, না তারা নিজেরাই
তাদের স্রষ্টা?” সুরা তুরঃ ৩৫।
.
আপনি জেনে আশ্চর্য হবেন যে, বিবর্তনবাদী
নাস্তিকরা, আসলে এই দাবী করতে চায়ঃ তারা এমনি এমনিই
সৃষ্টি হয়েছে, তাদেরকে কেউ সৃষ্টি করেনি। অবশ্য যাদের
মধ্যে মূর্খতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌছেছে, তাদের কেউ কেউ
এমনও দাবী করে থাকে যে, তারা নিজেরাই তাদের স্রষ্টা। এমন
বিবেক বর্জিত প্রবৃত্তি পূজারীরা পশুর চাইতে নিকৃষ্টঃ
(১) আল্লাহ্ তাআ’লা বলেন, “আর আমি সৃষ্টি করেছি জাহান্নামের
জন্য বহু জ্বিন ও মানুষ। তাদের অন্তর আছে, কিন্তু তার দ্বারা তারা চিন্তা-ভাবনা করে
না, তাদের চোখ আছে কিন্তু তার দ্বারা তারা দেখেনা,
আর তাদের কান আছে কিন্তু তার দ্বারা তারা শোনে না। তারা চতুষ্পদ
জন্তুর মত; বরং তাদের চাইতেও নিকৃষ্টর। তারাই হল উদাসীন ও
শৈথিল্যপরায়ণ।” সুরা আল-আ’রাফঃ আয়াত ১৭৯।
(২) যে ব্যক্তি
শুধুমাত্র নিজের ‘হাওয়া’ বা কামনা-বাসনা ও কুপ্রবৃত্তি দ্বারা পরিচালিত হবে,
তার উপমা হচ্ছে চতুষ্পদ জন্তুর মতো নির্বোধ, যারা উত্তম কথা শুনেওনা, বুঝেওনা। আল্লাহ্ তাআ’লা আরো বলেছেন, “আপনি কি তাকে দেখেন না, যে ব্যক্তি তার
প্রবৃত্তিকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছে? তবুও কি আপনি তার
যিম্মাদার হবেন? আপনি কি মনে করেন যে, তাদের অধিকাংশ কথা শোনে অথবা বুঝতে পারে? তারা
তো চতুষ্পদ জন্তুর মতোই; বরং তার চাইতেও পথভ্রষ্ট।” সুরা আল-ফুরক্বানঃ আয়াত ৪৩-৪৪।
#নাস্তিকতা_একটি_মানসিক_ব্যাধি।