বুধবার, ২৮ মে, ২০১৪

সাইয়্যেদিনা ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম এর দুয়া



সাইয়্যেদিনা ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম এর দুয়া.....

ছোটবেলায় নবী-রাসূলদের কাহিনী পড়া বা শোনার সময় যে নবীর কাহিনী সবচাইতে বেশি হৃদয় স্পর্শ করে যেত তাদের মধ্যে একজন হচ্ছেন - সাইয়্যেদিনা ইব্রাহীম খলিলুল্লাহ আলাইহিস সালাম।

যেইভাবে তিনি একাই তার পিতাসহ পুরো সমাজের বিরোধীতা করেন মূর্তিপূজার বিরুদ্ধে এবং মানুষকে “তাওহীদ” এর দাওয়াত দেন - সত্যিক বিস্ময়কর একটা ঘটনা।

এইভাবে “তাওহীদ” এর দাওয়াত দেওয়ার কারণে পুরো দেশবাসী যখন তার বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত হয় তখন জালেম শাসক নমরুদ ইব্রাহীম আলাইহিস সালামকে আগুনে নিক্ষেপ করতে আদেশ করেন। আল্লাহর হুকুমে বিশাল অগ্নিকুন্ড ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম এর জন্য হয়ে যায় শীতল ও আরামদায়ক।

নবী-রাসূলদের কাহিনীগুলো জানা ও পড়া সকলের জন্যই একান্ত কর্তব্য, কারণ তারা হচ্ছেন আমাদের জন্য রোল মডেল। তবে, মা-বোনদের উচিত এইগুলো আরো বেশি করে পড়া ও গল্প বলার অভ্যাস আয়ত্ত করা। একজন “মা” হচ্ছেন তার সন্তানদের জন্য শ্রেষ্ঠ শিক্ষক। মা যদি ভালো হয় আশা করা যায় ছেলে-মেয়েদের “তারবিয়া” ভালো হবে। আজকাল হিন্দী ও কাফের মুশরেকদের অশ্লীল সংস্কৃতির ছোবলে মুসলিমদের পরিবারে ইসলাম চর্চাতো উঠেই যাচ্ছে। আজকাল শিশুরা যতগুলো হিন্দুদের দেব-দেবী আর কার্টুনের নাম জানে এতোগুলো নবী-রাসুলদের নাম জানেনা, যতগুলো হিন্দী অশ্লীল গান মুখস্থ এতোগুলো সুরা তাদের মুখস্থ না। এই দোষ তাদের বাবা-মায়ের, কারণ তাদের বাবা-মায়েরও একই দশা! তবে বিশেষ করে বাবার কাপুরুষতা এই জন্য বেশি দায়ী। আজকাল অধিকাংশ ভাইয়েরাই তাদের স্ত্রীদেরকে হিন্দী সিরিয়াল দেখা থেকে বিরত রাখতে পারেনা, ইসলাম এর ব্যপারে জানাতে পারেনা। পারবে কি করে, নিজের অবস্থাই হচ্ছে…

যাইহোক, ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম পরবর্তীতে আল্লাহর হুকুমে ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম তার স্ত্রী ও প্রিয় সন্তান ইসহাক আলাইহিস সালামকে মক্কার কাবার কাছে রেখে যান, যাতে করে কালক্রমে এখানে বসতি গড়ে উঠে। মাঝে মাঝে ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম তার স্ত্রী ও সন্তানদেরকে দেখতে যেতেন। এমনই একসময় মুওয়্যাহিদ (তাওহীদবাদীদের) ইমাম, সাইয়্যেদিনা ইব্রাহীম খলিলুল্লাহ আলাইহিস সালাম এর তার সন্তান ও বংশধরদের জন্য হৃদয় ছুয়ে যাওয়া কিছু দুয়া যা কুরানুল কারীমে উল্লেখ করা হয়েছে.....

ক্বারীঃ শায়খ আইয়ুব, তিনি একসময় মদীনার মসজিদুন-নববী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ইমাম ছিলেন। ২০১১ সালে মদীনার বিখ্যাত ইসলামিক ইউনিভার্সিটির একটা অনুষ্ঠানের শুরুতে তার তেলাওয়াত করা কিছু অংশ। কুরানে বর্ণিত এই দুয়গুলো মুখস্থ করে দুয়া করতে পারলে ভালো।

'উযু বিল্লাহিমিনাশ-শাইতানির রাযীম।
৩৫. যখন ইব্রাহীম বললেনঃ হে আমার পালনকর্তা! আপনি এই শহরকে শান্তিময় করে দিন এবং আমাকে ও আমার সন্তান-সন্ততিকে মূর্তি পূজা থেকে দূরে রাখুন।
৩৬. হে আমার পালনকর্তা! এরা (মূর্তিগুলো) অনেক মানুষকে বিপথগামী করেছে। অতঃপর, যে আমার অনুসরণ করল, সে আমার এবং যে আমার অবাধ্যতা করল, (তার ব্যপারে আমি আশা করি) নিশ্চয় আপনি ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।
৩৭. হে আমাদের পালনকর্তা! আমি আমার এক সন্তানকে তোমার পবিত্র গৃহের (কাবার) সন্নিকটে চাষাবাদহীন উপত্যকায় আবাদ করেছি; হে আমাদের পালনকর্তা, যেন তারা নামায কায়েম রাখে। অতঃপর, আপনি কিছু লোকের অন্তরকে তাদের দিকে আকৃষ্ট করে দিন এবং তাদেরকে ফল দ্বারা রিযক দান করুন, সম্ভবতঃ তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে।
৩৮. হে আমাদের পালনকর্তা! আপনি তো জানেন, আমরা যা কিছু গোপনে করি এবং যা কিছু প্রকাশ্যে করি। আল্লাহর কাছে পৃথিবীতে ও আকাশে কোন কিছুই গোপন নয়।
৩৯. সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য! যিনি আমাকে এই বার্ধক্যে ইসমাঈল ও ইসহাককে দান করেছেন, নিশ্চয় আমার পালনকর্তা দোয়া শ্রবণ করেন।
৪০. হে আমার পালনকর্তা! আমাকে নামায কায়েমকারী করুন এবং আমার সন্তানদের মধ্যে থেকেও। হে আমাদের পালনকর্তা আপনি আমাদের দুয়া কবুল করুন।
৪১. হে আমাদের পালনকর্তা! যেদিন হিসাব কায়েম করা হবে সেই দিন আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে এবং সমস্ত মুমিনদেরকে ক্ষমা করুন। (আমীন)
সুরা ইব্রাহীমঃ ৩৫-৪১।