Be aware of “American
Islam”
প্রশ্নঃ ইয়াসির ক্বাদীর কথা শোনা যাবে?
উত্তরঃ ইয়াসির ক্বাদী আজকে একটা পোস্ট
দিয়েছে (আমার ফ্রেন্ডলিস্টের কারো কারো লাইক-কমেন্ট এর কারণে চোখে পড়লো)। সেই
পোস্টের আপডেট, ২রা জানুয়ারী ২০১৫ দুপুর ২:৩৪ পর্যন্তঃ
12,024 others like this.
378 comments
3,217 shares
অতীতের মতো এবারও ডিসেম্বর মাস আসতেই বিদাতী
এবং মুশরিকদের প্রতি নরমপন্থী হওয়ার জন্যে শরিয়াত সম্পর্কে তারা বাধনহীন কলম একটু
বেশি বেগবান হয়েছে। একটি বিষয়ে শরিয়াতে কি হুকুম এবং মুসলিম হিসেবে সেই ব্যপারে
আমাদের দৃষ্টিভংগি কেমন হওয়া উচিৎ, সে সম্পর্কে পূর্ব থেকে ইলম না থাকলে সরলমনা
অনেক ভাই ও বোনেরাই ইয়াসির ক্বাদীর চমকপ্রদ যুক্তি-তর্ক উপস্থানপন দেখে বিভ্রান্ত
হন। ইয়াসির ক্বাদী সেই লেখাতে কি লিখেছেন বা তার কি বিভ্রান্তি বা ভুল ছিলো, সেই
বিশ্লেষণে না গিয়ে, মদীনা ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে ছাত্র থাকা অবস্থাতেই সেখানকার শায়খরা
তার সম্পর্কে কি বলেছিলেন সেটা তুলে ধরছি –
(১) শায়খ মুহা’ম্মাদ বিন হাদী আল-মাদখালী হা’ফিজাহুল্লাহ বলেন, “ইয়াসির ক্বাদী একজন মিথ্যুক,
হিজবী...”।***
(২) ইয়াসির ক্বাদী এবং তাঁর সহপাঠীদের সাথে কিছু
ব্যপারে মতবিরোধ হয়। ইয়াসির ক্বাদী তখন তার সহপাঠীদের নিয়ে শায়খ ইব্রাহীম আর-রুহাইলি
হা’ফিজাহুল্লাহ-র সাথে কথা বলেন। সেই বৈঠকের পর
শায়খ ইব্রাহীম আর-রুহাইলি ইয়াসীর ক্বাদীকে বলেন, “তোমার বরং তোমার সহপাঠীদের কাছ থেকেই শেখা উচিৎ।”
(৩) ইয়াসির ক্বাদী এমেরিকাতে কবরপূজারী সূফী, রাফেজী
শীয়াসহ সমস্ত শিরক বিদআ’ত
প্রচারকারী পথভ্রষ্ট দলের সাথে পারস্পরিক সম্পর্ক ও সহায়তার চুক্তিতে
আবদ্ধ হয়। এ ব্যপারে শায়খ মুহা’ম্মাদ
বিন হাদী আল-মাদখালী হা’ফিজাহুল্লাহ
বলেন, “ইয়াসির ক্বাদী যেই নীতির উপরে আছে, এই নীতির
উপরে থেকে কেউ যদি মদীনা ইসলামিক ইউনিভার্সিটি নয়, খোদ কা’বা শরীফ থেকে ডিগ্রী নিয়ে আসলেও সেই ডিগ্রী তার
কোন উপকারে আসবেনা।”
(৪) এমেরিকা, ইংল্যান্ডের মতো কুফফার
দেশগুলোতে বসবাসকারী মুসলিমদের ব্যবসা-বাণিজ্য, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, নারী পুরুষ
ফ্রী-মিক্সিং ইত্যাদি সম-সাময়িক বিষয়ে মক্কা-মদীনা বা অন্যান্য দেশের বড় আলেমদের
ফতোয়া জিজ্ঞেস করা ঠিক নয়, বরং কাফের দেশে অবস্থানকারী হামযা ইউসুফ, ইয়াসির ক্বাদী,
শুয়াইব ওয়েব...এমন ব্যক্তিদেরকেই জিজ্ঞেস করতে হবে। ইয়াসির ক্বাদী এমন বক্তব্য
প্রচার করা শুরু করলে শায়খ
সালেহ আল-ফাওজান হা’ফিজাহুল্লাহকে
এ ব্যপারে প্রশ্ন করা হলে শায়খ ফাওজান বলেন, “এই ব্যক্তি তোমাদেরকে আলেমদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন
করতে চাচ্ছে।”
*** শায়খ মুহা’ম্মাদ বিন হাদী আল-মাদখালী হা’ফিজাহুল্লাহ ইয়াসির ক্বাদীকে কেনো মিথ্যুক বলেছনে, একথা আমার জানা না থাকলেও সে যে মিথ্যা কথা বলে বা ভুল
তথ্য উপস্থাপন করে তার ভক্ত-শ্রোতাদেরকে বিভ্রান্ত করে, আমি আপনাদেরকে এমন দুটি
উদাহরণ দিচ্ছি।
(ক) ২০১৩ সালে ইয়াসির ক্বাদী দাবী করে, “ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম রাহিমাহুল্লাহ কাফেরদের
উৎসব উপলক্ষ্যে তাদেরকে শুভেচ্ছা জানানো যাবে বলে ফতোয়া দিয়েছেন”, যা আসলে বানোয়াট, বাস্তবতার সম্পূর্ণ
বিপরীত। ইমাম ইবনুল কাইয়্যিমসহ সমস্ত আলেমরা এব্যপারে একমত যে, “কাফেরদের উৎসব উপলক্ষ্যে তাদেরকে শুভেচ্ছা
জানানো হারাম।”
(খ) ২০১৪ সালে ইয়াসির ক্বাদী দাবী করে, “শায়খ নাসির উদ্দিন আলবানী ও শায়খ আব্দুল
আজিজ ইবনে বাজ মানব রচিত আইন দ্বারা বিচারকারী ব্যক্তিকে সর্ব অবস্থাতেই মুসলিম
বলেছেন।”
এখানে আসলে আলেমদেরকে হেয় করার জন্যে তাদের কথাকে
খন্ডিতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। শায়খ নাসির উদ্দিন আলবানী, শায়খ আব্দুল আজিজ ইবনে
বাজ এবং অন্য আলেমরা মানব রচিত আইন দ্বারা বিচারকারী ব্যক্তিকে তার আকীদাহ অনুযায়ী
কখনো ‘ফাসেক জালেম কিন্তু মুসলিম’ কখনো ‘কাফের’ হবে বলে ফতোয়া দিয়েছেন। তারা সর্ববস্থায়
কাফের বা সর্ববস্থায় মুসলিম বলে ফতোয়া দেন নি।
ইয়াসির ক্বাদীর বিভ্রান্তিকর কিছু কথার
স্ক্রীনশট ছবিতে দেওয়া হলো, আপনারা আরো ডিটেইলস জানার জন্যে তাকে নিয়ে আমাদের
পূর্বের এই পোস্ট “Shake” ইয়াসীর ক্বাদী (The Unqualified Qadhi) –
http://ansarus-sunnah.blogspot.com/2014/04/shake-unqualified-qadhi.html
এবং আবু মুসসাব-এর এই ভিডিওটা দেখতে পারেন –
https://www.youtube.com/watch?v=d6ux72MnP-s
সর্বশেষঃ একদিন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
বললেন, “আমি আমার উম্মাতের জন্য একটি বিষয়কে দাজ্জাল
এর থেকেও বেশী ভয় করি।”
(একজন সাহাবী বললেন), আমি ভয় পেয়ে জিজ্ঞেস করলাম,
“হে আল্লাহর রাসুল, সেটি কি?” তিনি বললেন, “বিপথগামী এবং পথভ্রষ্ট আলেম।”
মুসনাদে ইমাম আহমাদঃ ২১৬২১, তাবরানীঃ ৭৬৫৩, হাদীসটি
সহীহ।
ইমাম মুহাম্মাদ ইবনে সিরীন রাহিমাহুল্লাহ বলেন,
“এই যে জ্ঞান (দ্বীনের ব্যপারে), এটাই হচ্ছে তোমার
দ্বীন। সুতরাং, কার কাছে থেকে তুমি দ্বীনের জ্ঞান নিচ্ছ, সেই ব্যাপারে সতর্ক থাকো।”
আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আ’নহু বলেন,
“মানুষ হচ্ছে তিন প্রকার,
(১) আ’লিম (শিক্ষিত বা দ্বীনের ব্যপারে জ্ঞানী
ব্যক্তি)
(২) মুতাআ’ল্লিম (দ্বীনের শিক্ষার্থী), এবং এ দুই প্রকারের
লোকজনই হচ্ছে মুক্তির পথে।
(৩) নিম্নমানের এমন লোকজন,
যারা যে কোন লোকের কথা অনুসরণ করে এবং তার ডাকে সাড়া দেয়।”
[উসুলুস সুন্নাহ (বাংলা),
পৃষ্ঠা-১০৭]