(১) বিয়ে উপলক্ষ্যে মেয়েরা কনের গায়ে এবং ছেলেরা
বরের গায়ে হলুদ দিতে পারে, এটা গায়ের রঙ উজ্জ্বল করে। কিন্তু গায়ে হলুদ নামে অনুষ্ঠান
করা, গান বাজনা, নৃত্য, নারী পুরুষের বেহায়াপনা, পুরুষদের মদ পান করা…এইগুলো বিজাতীয় হিন্দুদের সংস্কৃতি এবং নিকৃষ্ট
অপচয় যা ইসলাম সম্মত নয়। বর্তমানে নামধারী কিছু মুসলমান কাফের মুশরেকদের অনুসরণ করে
গর্ব বোধ করে, তাদের খারাপ কাজগুলো বর্জন করতে হবে।
(২) ‘মানসুখ’ শব্দের অর্থ রহিত হওয়া। ইসলামের প্রথম দিকে
কিছু বিধান ছিলো সাময়িক, যা পরে ওয়াহী নাযিল করে অন্য বিধান দ্বারা পরিবর্তন করা হয়েছে।
প্রথম দিকের ক্বুরানের সেই আয়াত বা হাদীসগুলোকে মানসুখ বলা হয়। ক্বুরানের আয়াত বা যেই
হাদীস মানসুখ, সেইগুলোর উপর আমল করা যায় না। বিশেষ দ্রষ্টব্য, জনপ্রিয় কিছু টিভি বক্তা
অজ্ঞতাবশত ‘মানসুখ’ এর বিষয়টিকে অস্বীকার বা অপব্যখ্যা করেছে। আপনারা তাফসীর ইবনে কাসীর থেকে সুরা বাক্বারাহর ১৪২ নম্বর আয়াতের ব্যখ্যা দেখলে
আরো বিস্তারিত জানতে পারবেন।
(৩) যার মজি বেশি বেশি বের হয় যে এমনকি সালাতের
সময়েও বের হয়, সে প্রত্যেক ওয়াক্তে সালাতের পূর্বেলজ্জস্থান পানি দ্বারা ধৌত করবে এবং
ওযু করে সালাত পড়বে। আর লজ্জাস্থানে টিস্যু বাঁ কাপড় দিয়ে রাখবে যেন কাপড়ে না লাগে।
সালাতের পূর্বে সেই টিস্যু পরিবর্তন করে নিবে।
উল্লেখ্য যাদের অসুস্থতা বা রোগের কারণে বারবার
বায়ু নিঃসরণের মাধ্যমে বা মজি বের হয়ে ওজু ভেঙ্গে যায় - তারা প্রথমে একবার ওজু করবেন।
আর এই এক ওজু দিয়েই এক ওয়াক্তের সমস্ত ফরজ, নফল, সুন্নত নামাজগুলো পড়বেন। মাঝখানে ওজু
ভেঙ্গে গেলেও তার নামাজ নষ্ট হবেনা, কারণ তিনি ''মাজুর'' বা অসুস্থ ব্যক্তি। এইভাবেই
তিনি নামাজ পড়বেন যতদিন না সুস্থ হচ্ছেন, ইন শ আল্লাহ কোন সমস্যা নেই।
(৪) অপছন্দ সত্ত্বেও অনেকের বাড়ি থেকে ইসলামের
মানেনা এমন জাহিল ছেলেদের সাথে বিয়ে দেওয়া হয়, এটা মহা অন্যায়। অবশ্য সুন্নত মানে এমন
ছেলের সংখ্যা বিয়ের বাজারে খুবই কম। একান্তই যদি বিয়ে করতে হয় ছেলের সাথে কথা বলে নিবেন,
ছেলেকে দাঁড়ি রাখতে হবে, টাখনুর উপরে কাপড় পড়তে হবে, হালাল জীবিকা অর্জন করতে হবে এবং
অবশ্যই সালাত পড়তে হবে। প্রয়োজনে কাবিন নামায় লিখে রাখবেন, এইগুলো না মানলে মেয়ে তালাক
নিয়ে নিবে। সমস্যা হচ্ছে এতে করে অনেক ধোকাবাজ লোকেরা সম্পদশালী বাবার টাকা লোভে বা
মেয়ের চাকুরির ইনকাম বা সৌন্দর্যের লোভে পড়ে ‘হ্যা করবো’ বলে বিয়ে করবে ঠিকই, কিন্তু বিয়ের পরে সেই জাহিলই
থেকে যাবে। এমতাবস্থায় মেয়ে পড়বে বিপদে। একটা মেয়ে একবার স্বামীর কাছ থেকে ফিরে গেলে,
তাতে তার বিন্দুমাত্র দোষ না থাকলেও পরবর্তীতে তাকে প্রতিটা জায়গায় লাঞ্চনার শিকার
হতে হয়। সে হয়তো শুধুমাত্র ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সেই ফাসিকের ঘরে পড়ে থাকতে বাধ্য
হবে। আর বর্তমান যুগে ফাসিকদের ঘরে থেকে অনেক নারীই নির্যাতনের শিকার ও চরম দুর্ভোগের
মাঝে জীবন কাটাচ্ছে। আল্লাহ আমাদের বোনদেরকে হেফাজত করুন এবং আমাদের ভাইদেরকে হেদায়েত
করুন।
(৫) অনেক নারী পুরুষ প্রেম ভালোবাসায় লিপ্ত থাকে,
জিনা করার পাশাপাশি ফেইসবুকে স্কাইপিতে উলংগ হয়ে ছবি বা ভিডিও আদান-প্রদান করে। টেলিফোনে
যৌনতার কথা বলে। এটা অন্তরের, চোখের, কানের জিনা, আর এই জিনা থেকে শীঘ্রই লজ্জাস্থানের
জিনা হবে। সুতরাং তোওবা করতে হবে এবং বয়ফ্রেন্ড বা গার্লফ্রেন্ডের চেহারায় মানুষ শয়তান
থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। বর্তমান যুগে তরুণ-তরুণীদের জন্যে বয়ফ্রেন্ড বা গার্লফ্রেন্ডের
চাইতে বড় দুশমন আর কে আছে? হারাম কাজে আনন্দ সাময়িক কিন্তু তার দুর্ভোগ ও যন্ত্রনা
দীর্ঘস্থায়ী।
(৬) অনেকে শুধু সালাম বলে, এটা ঠিক নয়। শুদ্ধ
উচ্চারণে পূর্ণ সালাম বলতে বা লিখতে হবে। আস সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া
বারাকাতুহু বললে ৩০টা নেকী, আস সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ বললে ২০টি নেকী আর
শুধু আস সালামু আলাইকুম বললে ১০টা নেকী।
(৭) ‘ওমান’ নামক আরব একটি দেশে সুন্নীদের চাইতে খারেজী
মতবাদের অনুসারী বেশি, যারা ইবাদী নামে পরিচিত। সেই সমস্ত দেশে বসবাসকারী প্রবাসী
ভাইয়েরা এই জঘন্য আকিদাহর অনুসারী লোকদের থেকে সাবধান। এদের মাঝে অনেক বড় বড় শিরক
ও কুফর রয়েছে এবং এরা সাহাবাদের দুশমন। আমাদের দেশের কিছু লোক আরব দেশের জাহিল
কিছু লোকদের দেখিয়ে নিজেদের ভ্রান্ত ফেরকা সম্পর্কে অহংকার করে। অথচ এরা এটা
জানেনা, আরব দেশসমূহে অনেক আরবী ভাষাভাষী খ্রীস্টানও রয়েছে।
(৮) মানুষের খারাপ নাম রাখা ঠিক নয়, এমনকি দুষ্টামি
করে বাঁ ফেইসবুকেও না। খারাপ নামের প্রভাব ব্যক্তির উপরে পড়ে। যেমন কারো নাম রাখলো
পাথর, এর কারণে তার অন্তর ও আচরণ কঠোর হতে পারে। কারো নাম রাখলো আগুন, তার চরিত্র আগুনের
মতো বেপরোয়া হতে পারে। একারণে রাসুলু্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম কারো নাম খারাপ দেখলে তা পরিবর্তন
করে দিতেন। আবার নাম অতি ভালো রাখা যাবেনা। যেমন এঞ্জেল - ফেরেশতা, ইনোসেন্ট - নিষ্পাপ...এমন
উচ্চ প্রশংসা বাঁ গর্ব করা হয় এমন নাম রাখা যাবেনা।