“হুজরাহ” হচ্ছে থাকার জন্য ছোট ঘর…..
_______________________
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম এর পবিত্র স্ত্রী, উম্মুল মুমিনিনদের
প্রত্যেকের জন্যে মসজিদে নববীর পাশে আলাদা আলাদা থাকার ছোট ছোট ঘর ছিলো, আরবীতে হুজরাহ বলা হয়। একবার কিছু সংখ্যক (কাফের) লোক তাদের স্বজাতির
মধ্যে যারা মুসলমানদের হাতে বন্দী ছিলো, তাদের মুক্তির
ব্যপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে কথা বলতে মদীনায়
আসে। এসময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন একজন উম্মুল মুমিনিনের
ঘরে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। তারা বেয়াদবের মতো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম ঘর থেকে বের হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা না করে চিতকার করে রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে ডাকতে থাকে। এই সুরাতে এই ঘটনাটা উল্লেখ করা
হয়েছে এবং তাদের এমন বেয়াদবীর জন্যে নির্বোধ বলে তিরস্কার করা হয়। এই সুরার নামকরণ
এই ঘটনার আলোকেই করা হয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ, আজকে সুরা
হুজুরাতের প্রথম ১০টি আয়াতের তিলাওয়াত, তর্জমা ও তাফসীরসহ
দেওয়া হলো।
তিলাওয়াতের লিংক -
https://www.youtube.com/watch?v=NWQR7xHCatk
তিলাওয়াত করেছেন ক্বারীঃ ইব্রাহীম
আল-জিব্রীন।
আর তাফসীরটুকু নেওয়া হয়েছে - তাফসীর আহসানুল
বায়ান থেকে।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ hadithbd ওয়েবসাইট, তাফসীরটুকু সেখান থেকে সংগৃহীত।
______________________________
আ’উযু বিল্লাহিমিনাশ-শাইতানির রাযীম।
বিসমিল্লাহির-রাহ’মানির
রাহীম।
১. হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ ও রাসূলের
সামনে অগ্রণী হয়োনা এবং আল্লাহকে ভয় কর [ক]। নিশ্চয় আল্লাহ সবকিছু শুনেন ও জানেন।
তাফসীরঃ [ক] এর অর্থ হলো, দ্বীনের ব্যাপারে নিজে থেকে
কোন ফায়সালা করো না (কোন সিদ্ধান্ত নিয়ো না, কোন ফতোয়া দিয়ো
না)। এবং স্বীয় বিবেক-বুদ্ধিকে তার উপর প্রাধান্য দিয়ো না। বরং আল্লাহ ও তাঁর
রাসূলের আনুগত্য কর। নিজের পক্ষ থেকে দ্বীনের সাথে কোন কিছু সংযোজন বা বিদআত রচনা
হল আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে অতিক্রম করার এমন দুঃসাহসিকতা, যা
কোন ঈমানদারের জন্য শোভনীয় নয়। অনুরূপ কুরআন ও হাদীস নিয়ে যথাযথ গবেষণা ও
চিন্তা-ভাবনা না করে কোন ফতোয়া দেওয়া যাবে না এবং ফতোয়া দেওয়ার পর যদি এ কথা
পরিষ্কার হয়ে যায় যে, তা শরীয়তের সুস্পষ্ট বিধির প্রতিকূল,
তবে তার উপর অটল থাকাও এই আয়াতে বর্ণিত নির্দেশের পরিপন্থী। মু’মিনের কর্তব্যই হল, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের
নির্দেশাবলীর সামনে আনুগত্যের মস্তক নত করে দেওয়া। নিজের কথা অথবা কোন ইমামের মতের
উপর অনড় থাকা তার কর্তব্য নয়।
২. হে ঈমানদারগণ! তোমরা নবীর কন্ঠস্বরের
উপর তোমাদের কন্ঠস্বর উঁচু করো না এবং তোমরা একে অপরের সাথে যেরূপ উঁচুস্বরে
কথা বল, তাঁর সাথে
সেরূপ উঁচুস্বরে কথা বলোনা। এতে এমন হতে পারে যে, তোমাদের
সমস্ত আমল নিস্ফল হয়ে যাবে, অথচ তোমরা সামান্য টেরও পাবে
না।
তাফসীরঃ এখানে সেই আদব, শ্রদ্ধা, ভক্তি ও মর্যাদা-সম্মানের কথা বর্ণনা করা হয়েছে, যা
প্রত্যেক মুসলিমকে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর জন্য নিবেদন করতে হয়। প্রথম আদব হল,
তাঁর উপস্থিতিতে যখন তোমরা আপোসে কথোপকথন কর, তখন
তোমাদের কণ্ঠস্বর যেন তাঁর কণ্ঠস্বরের উপর উঁচু না হয়ে যায়। দ্বিতীয় আদব হল,
যখন নবী করীম (সাঃ)-এর সাথে কথোপকথন কর, তখন
অতি বিনয়, ভদ্রতা ও ধীরতার সাথে কর। ঐভাবে উচ্চৈঃস্বরে তাঁর
সাথে কথা বলো না, যেভাবে তোমরা আপোসে নিঃসংকোচে পরস্পরের
সাথে বলে থাক। কেউ বলেছেন, এর অর্থ হল, ‘হে মুহাম্মাদ! হে আহমাদ!’ বলে ডেকো না, বরং শ্রদ্ধার সাথে ‘হে
আল্লাহর রসূল!’ বলে সম্বোধন করো। যদি আদব ও
শ্রদ্ধা-সম্মানের এই দাবীগুলোর খেয়াল না কর, তবে বেআদবী
হওয়ার সম্ভাবনা আছে, যার ফলে তোমাদের সৎকর্মাদি নিষ্ফল হয়ে
যেতে পারে, অথচ তোমরা তার কোন টেরও পাবে না। এই আয়াতের ‘শানে নুযূল’ (অবতরণের পটভূমিকা) জানার
জন্য দেখুনঃ বুখারী, তাফসীর সূরা হুজুরাত। তবে নির্দেশের দিক
দিয়ে আয়াতটি ব্যাপক।
৩. যারা আল্লাহর রসূলের সামনে নিজেদের
কন্ঠস্বরকে নীচু করে,
আল্লাহ তাদের অন্তরকে তাক্বওয়ার জন্যে শোধিত করেছেন। তাদের জন্যে
রয়েছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার।
তাফসীরঃ এই আয়াতে প্রশংসা করা হয়েছে সেই
লোকদের, যাঁরা
রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর মান-মর্যাদার প্রতি খেয়াল করে নিজেদের কণ্ঠস্বর নীচু রাখতেন।
৪. যারা হুজরার আড়াল থেকে আপনাকে উচুস্বরে
ডাকে, তাদের
অধিকাংশই হচ্ছে নির্বোধ।
তাফসীরঃ এই আয়াত বনী তামীম গোত্রের কিছু
বেদুঈন (অভদ্র) লোকদের ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়েছে; তারা একদা দুপুর বেলায়,
নবী করীম (সাঃ)-এর বিশ্রামের সময়, তাঁর ঘরের
বাইরে দাঁড়িয়ে অসভ্য ভঙ্গিতে ‘ওহে
মুহাম্মাদ! ওহে মুহাম্মাদ!’ বলে ডাকাহাঁকা করতে লাগল; যাতে তিনি বেরিয়ে আসেন।
(মুসনাদ আহমাদ ৩/৪৮৮, ৬/৩৯৪) মহান আল্লাহ বললেন, তাদের অধিকাংশই অবুঝ। অর্থাৎ, নবী করীম (সাঃ)-এর
মান-মর্যাদা, আদব ও শ্রদ্ধার দাবীসমূহের খেয়াল না রাখা হল
মূর্খতা।
৫. যদি তারা আপনার বের হয়ে তাদের কাছে আসা
পর্যন্ত অপেক্ষা করত,
তবে তা-ই তাদের জন্যে মঙ্গলজনক হত [1]। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। [2]
তাফসীরঃ
[1] অর্থাৎ, তোমার বের হওয়ার অপেক্ষা
করত এবং তোমাকে ডাকার ব্যাপারে তাড়াহুড়ো না করত, তবে তা
দ্বীন ও দুনিয়া উভয় দিক দিয়ে তাদের জন্য উত্তম হত।
[2] এই জন্য তাদেরকে পাকড়াও করেননি, বরং আগামীতে নবী (সাঃ)-এর
প্রতি আদব ও শ্রদ্ধা-সম্মানের খেয়াল রাখার তাকীদ করে দিলেন
৬. হে ঈমানদারগণ! যদি কোন পাপাচারী ব্যক্তি
তোমাদের কাছে কোন সংবাদ নিয়ে আসে,
তবে তোমরা সেটা পরীক্ষা করে দেখবে [1], যাতে
অজ্ঞতাবশত তোমরা কোন সম্প্রদায়ের ক্ষতিসাধনে প্রবৃত্ত না হও এবং পরে নিজেদের
কৃতকর্মের জন্যে অনুতপ্ত না হও।
তাফসীরঃ [1] এই আয়াতটি অধিকাংশ মুফাসসিরের
মতে অলীদ ইবনে উকবা (রাঃ) সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে। যাঁকে নবী করীম (সাঃ)
বানু-মুসত্বালিক গোত্রের যাকাত আদায় করার জন্য প্রেরণ করেছিলেন। কিন্তু তিনি
(রাস্তা থেকেই ফেরৎ) এসে খামকা রিপোর্ট দিলেন যে, তারা যাকাত দিতে অস্বীকার
করেছে। আর এই খবরের ভিত্তিতে নবী করীম (সাঃ) তাদের বিরুদ্ধে সৈন্য প্রেরণের ইচ্ছা
করলেন। কিন্তু পরক্ষণে জানতে পারলেন যে, এ খবর ভুল ছিল এবং
অলীদ (রাঃ) সেখানে যানইনি। তবে সনদ ও বাস্তবতা উভয় দিক দিয়ে এই বর্ণনা সহীহ নয়।
তাই এই ধরনের কথা রসূল (সাঃ)-এর একজন সাহাবী সম্পর্কে বলা ঠিক নয়। তবে হ্যাঁ,
আয়াতের শানে নুযুলের প্রতি দৃকপাত না করেই বলা যায় যে, এতে অতি গুরুত্বপূর্ণ এমন একটি নীতি বর্ণনা করা হয়েছে, যা বৈয়াক্তিক ও সামাজিক উভয় জীবনে বড় গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যেক ব্যক্তি এবং
প্রত্যেক শাসকের দায়িত্ব হল, তাদের কাছে যে সংবাদই আসে --
বিশেষ করে চরিত্রহীন, ফাসেক (চুগোলখোর, গীবতকারী) ও ফাসাদী প্রকৃতির লোকদের পক্ষ হতে, সে
ব্যাপারে প্রথমে যাচাই করে দেখা। যাতে ভুল বুঝে কারো বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ
না করা হয়।
৭. তোমরা জেনে রাখ, তোমাদের মধ্যে আল্লাহর
রসূল রয়েছেন। তিনি যদি অনেক বিষয়ে তোমাদের আবদার মেনে নেন, তবে
তোমরাই কষ্ট পাবে [1]। কিন্তু আল্লাহ তোমাদের অন্তরে ঈমানের প্রতি মহব্বত
(ভালোবাসা) সৃষ্টি করে দিয়েছেন এবং তা তোমাদের হৃদয়ের জন্য পছন্দনীয় করে দিয়েছেন।
পক্ষান্তরে কুফর, পাপাচার ও নাফরমানীর প্রতি তোমাদের অন্তরে
ঘৃণা সৃষ্টি করে দিয়েছেন। তারাই হচ্চছে সৎপথ অবলম্বনকারী।
তাফসীরঃ [1] আর এর দাবী এই যে, তোমরা তাঁর শ্রদ্ধা ও
আনুগত্য কর। কেননা, তিনি তোমাদের ভালাই ও কল্যাণের ব্যাপারে
বেশী জানেন। কারণ, তাঁর উপর অহী নাযিল হয়। অতএব তোমরা তাঁর
পিছনেই চল। তাঁকে তোমাদের পিছনে চালাবার প্রচেষ্টা করো না। কেননা, তিনি যদি তোমাদের পছন্দনীয় কথাগুলো মানতে আরম্ভ করে দেন, তবে তোমরাই বেশী সমস্যায় পড়ে যাবে। যেমন, অন্যত্র
বলেছেন, {وَلَوِ اتَّبَعَ الْحَقُّ أَهْوَاءَهُمْ لَفَسَدَتِ
السَّمَاوَاتُ وَالْأَرْضُ وَمَنْ فِيهِنَّ} অর্থাৎ, সত্য যদি তাদের
কামনা-বাসনার অনুগামী হত, তাহলে বিশৃংখল হয়ে পড়ত আকাশ-মন্ডলী,
পৃথিবী এবং ওদের মধ্যবর্তী সবকিছুই। (সূরা মু’মিনূন ৭১ আয়াত)
৮. এটা আল্লাহর কৃপা ও নিয়ামতঃ আল্লাহ
সর্বজ্ঞ প্রজ্ঞাময়।
তাফসীরঃ এ আয়াতটিও সাহাবায়ে কিরাম (রাঃ)দের
ফযীলতের অধিকারী হওয়ার এবং তাঁদের ঈমান ও হিদায়াতের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকার জ্বলন্ত
প্রমাণ। {وَلَوْ
كَرِهَ الْكَافِرُوْنَ}
৯. যদি মুমিনদের দুই দল যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে
পড়ে, তবে
তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দিবে [1]। অতঃপর যদি তাদের একদল অপর দলের উপর
আক্রমন করে বসে, তবে তোমরা আক্রমণকারী দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ
করবে; যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে
[2]। যদি ফিরে আসে, তবে তোমরা তাদের মধ্যে ন্যায় অনুযায়ী
মীমাংসা করে দিবে এবং ইনছাফ করবে[3] । নিশ্চয় আল্লাহ ইনছাফকারীদেরকে পছন্দ করেন
[4]।
তাফসীরঃ
[1] এই সন্ধির পদ্ধতি হল, তাদেরকে কুরআন ও হাদীসের
প্রতি আহবান করতে হবে। অর্থাৎ, কুরআন ও হাদীসের আলোকে তাদের
দ্বন্দ্বের সমাধান খুঁজতে হবে।
[2] অর্থাৎ, আল্লাহ ও তাঁর রসূল
(সাঃ)-এর বিধানানুসারে নিজেদের দন্ধ মিটাতে না চায়, বরং
ঔদ্ধত্য ও বিদ্রোহের পথ অবলম্বন করে, তবে অন্য মুসলিমদের
কর্তব্য হবে বিদ্রোহী দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা, যে পর্যন্ত
না তারা আল্লাহর নির্দেশকে মেনে নিতে প্রস্তুত হয়ে যায়। আলোচ্য আয়াতে বিদ্রোহী
দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অথচ হাদীসে কোন মুসলিমের বিরুদ্ধে
যুদ্ধ করা কুফরী বলা হয়েছে। তো কথা হল, এটা কুফরী তখনই হবে,
যখন বিনা কারণে মুসলিমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হবে। কিন্তু এই যুদ্ধের
ভিত্তি যদি বিদ্রোহ হয়, তবে এই যুদ্ধ কেবল জায়েযই নয়,
বরং তার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যা প্রমাণ করে
যে, এ যুদ্ধ উত্তম ও তাকীদপ্রাপ্ত। অনুরূপ কুরআন বিদ্রোহী এই
দলটিকে বিশ্বাসী (মু’মিন)
বলেই আখ্যায়িত করেছে;
যার অর্থ এই যে, শুধু বিদ্রোহের কারণে,
যা মহাপাপ তার ফলে ঐ দলটি ঈমান থেকে খারিজ হয়ে যায় না। যেমন,
খাওয়ারিজ এবং কোন কোন মু’তাযিলাদের আকীদা-বিশ্বাস। তাদের মতে মহাপাপ
সম্পাদনকারীরা ঈমান থেকে বহিষ্কার হয়ে যায়।
[3] অর্থাৎ, বিদ্রোহী দলটি যদি
বিদ্রোহাচরণ থেকে আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে, তবে
ন্যায়ভাবে অর্থাৎ, কুরআন ও হাদীসের আলোকে উভয় দলের মাঝে
মীমাংসা ও সালিস করে দিতে হবে।
[4] আর তাঁর এই ভালবাসার এটাই দাবী যে, তিনি সুবিচারকারীদেরকে
উত্তম প্রতিদান দানে ধন্য করবেন।
১০. আর মুমিনরা তো হচ্ছে একে অন্যের ভাই!
অতএব, তোমরা
তোমাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে মীমাংসা করবে [1] এবং আল্লাহকে ভয় করবে, যাতে করে তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হও [2]।
তাফসীরঃ
[1] এটি পূর্বের নির্দেশেরই তাকীদ স্বরূপ।
অর্থাৎ, মু’মিনরা যখন পরস্পর ভাই ভাই, তখন তাদের সবার মূল বস্তু
হল ঈমান। অতএব, এই মূল বস্তুর দাবী হল, একই ধর্মের উপর বিশ্বাস স্থাপনকারীরা যেন আপোসে লড়ালড়ি না করে। বরং পরস্পর
এক সাথে মিলে-জুলে, একে অপরের দুঃখে-সুখে শরীক হয়ে, পরস্পরকে ভালবেসে এবং একে অপরের হিতাকাঙ্ক্ষী ও কল্যাণকামী হয়ে থাকে। আর
যদি কখনও ভুল বুঝাবুঝির ফলে তাদের মধ্যে দূরত্ব ও ঘৃণা সৃষ্টি হয়ে যায়, তবে তা দূর করে তাদের আপোসে পুনরায় সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ব কায়েম করতে হবে।
(যেহেতু এক মু’মিন
অপর মুমিনের জন্য আয়না স্বরূপ।) (আরো দেখুন, সূরা তাওবার ৭১নং আয়াতের
টীকা)
[2] অর্থাৎ, সমস্ত বিষয়ে আল্লাহকে ভয়
কর। সম্ভবতঃ এর ফলে তোমরা আল্লাহর রহমতের অধিকারী হয়ে যাবে। সম্ভাবনা ও আশাব্যঞ্জক
কথা সম্বোধিত (মানুষের) দিকে লক্ষ্য করে এ রকম বলা হয়েছে। কেননা, আল্লাহর রহমত ও করুণা তো ঈমানদার ও আল্লাহভীরুদের জন্য নিশ্চিত। পরবর্তী
আয়াতগুলিতে মুসলিমদেরকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ চারিত্রিক শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে।