ইলমী পরীক্ষা (পর্ব-২)
পূর্ণমান: ৫০, সময়: ১০০ মিনিট।
(১) ঈমানদার ব্যক্তির
উপমা কোন গাছের মতো?
উত্তরঃ ঈমানদার
ব্যক্তির উপমা হচ্ছে খেজুর গাছের মতো, যেই গাছের ফল মিষ্টি এবং যার পাতা কখনো ঝরে
পড়েনা। নিচের এই হাদীসে রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম এই উপমা দিয়েছিলেনঃ
আবদুল্লাহ ইবনে
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “গাছপালার মধ্যে এমন একটি গাছ আছে, যার পাতা ঝরে পড়ে না। এবং তা হল মুমিনের দৃষ্টান্ত। তোমরা আমাকে বলতে পার, সেটা কোন গাছ?” অতঃপর লোকজনের খেয়াল জঙ্গলের গাছ পালার প্রতি গেল। আবদুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) বলেন, আমার মনে হতে লাগল যে, সেই গাছটি হল খেজুর গাছ। কিন্ত্বু আমি
উত্তর বলতে লজ্জাবোধ করলাম। সাহাবায়ে কিরাম (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসুলু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনিই আমাদের সেই গাছের
নামটি বলে দিন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “তা হল খেজুর গাছ।” আবদুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) বলেন, পরে আমি আমার পিতাকে (অর্থাৎ উমার রাঃ কে) আমার মনে যা এসেছিল সেটা বললাম। তিনি
বললেন,
তুমি যদি তখন তার উত্তর বলে দিতে যে, সেটা হচ্ছে খেজুর গাছ, তবে আমি অমুক অমুক সম্পদ লাভ করার চাইতেও
বেশী খুশি হতাম।
সহীহ মুসলিম, ইসলামিক
ফাউন্ডেশান অনুবাদ, হাদিস নম্বরঃ ৬৮৩৮।
(২) টিভিতে নাটক
সিনেমা দেখা হারাম কেনো?
উত্তরঃ টিভিতে নাটক
সিনেমা দেখা অনেকগুলো কারণেই হারাম। যেমন –
(ক) গায়ের
মাহরাম অর্থাৎ যাদেরকে বিয়ে করা জায়েজ এমন নারীদেরকে দেখা পুরুষদের জন্যে
সর্ববস্থাতেই হারাম। আর নারীরা শুধুমাত্র প্রয়োজন থাকলে যেমন নারী ডাক্তার না
থাকলে পুরুষ ডাক্তারকে দেখানো, মুফতির কাছে ফতোয়া জিজ্ঞেস করা অথবা আলেমের কাছে
দ্বীন শিক্ষা করা, ইত্যাদি ক্ষেত্রে নারীরা গায়ের মাহরাম অর্থাৎ যাদেরকে বিয়ে করা
জায়েজ এমন পুরুষদেরকে দেখতে পারবে। নাটক-সিনেমাতে নারী বা পুরুষদেকে দেখা কোন
প্রয়োজনের মাঝে পড়েনা বরং তা হারাম, ও মূল্যবান সময় নষ্ট। গায়ের মাহরামদেরকে দেখা
মানুষের অন্তরে বিপরীত লিংগের প্রতি কামনা-বাসনার সৃষ্টি করে। এই সমস্ত কুফফার,
বেদ্বীন ও খবিস প্রকৃতির নারী ও পুরুষদেরকে দেখা সম্পূর্ণ হারাম।
(খ) অশ্লীলতা – নাটক ও সিনেমার প্রতি মানুষের মূল
আকর্ষণ হচ্ছে অশ্লীল ছবি ও গল্প, যা মানুষকে যিনা ও ব্যভিচারের দিকে উৎসাহিত করে।
অথচ ইসলাম সমস্ত অশ্লীলতাকে হারাম করা হয়েছে। এটা খুব অবাক হওয়ার বিষয় না যে,
বর্তমান যুগে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া অনেক নারী ও পুরুষ টিভিতে কাফের মুশরেকদের সংকৃতি
দেখে তাদের মতো অবাধ যৌনতায় লিপ্ত হচ্ছে।
(গ) গান-বাজনা
যা মানুষকে আল্লাহর যিকির ও পরকালকে ভুলিয়ে দেয় এবং হারাম এবং সীমা লংঘনে উৎসাহিত
করে।
(ঘ) এই সমস্ত
প্রোগ্রামে কাফের মুশরিকরা কৌশলে শিরকি ও কুফুরী মুসলিমদের অন্তরে ঢুকিয়ে দিচ্ছে।
বর্তমানে অধিকাংশ বাড়িতে হিন্দী সিরিয়াল চলে। আর সেই সমস্ত বাড়িতে মসজিদের আযান
প্রবেশ করার পূর্বেই হিন্দুদের উলু ধ্বনি ও পূজার ঘন্টা আগে প্রবেশ করছে। মুসলিম
জাতি হিসেবে আমাদের অবস্থা বড়ই লজ্জাজনক।
এছাড়া আরো অনেক
কারণ রয়েছে, সংক্ষেপে এতোটুকুই উল্লেখ করলাম।
(৩) গায়ের মাহরাম
পুরুষের সামনে নারীদের পা কি ঢাকতে হবে?
উত্তরঃ হ্যা
হবে। নিচে হাদীসের দলীল উল্লেখ করছি।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “যে ব্যক্তি অহংকার
বশত (পায়ের গোড়ালীর নীচে) কাপড় ঝুলিয়ে চলবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার প্রতি রহমতের
দৃষ্টিপাত করবেন না।”
এ কথা শুনে নবী
পত্নী উম্মে সালামা রাদিয়াল্লাহু আ’নহা জিজ্ঞাসা করলেন, তাহলে নারীরা চাদরের নিম্নাংশ কতটুকু পরিমাণ ঝুলিয়ে রাখবে? রাসুল বললেন, নারীরা অর্ধেক হাত পরিমাণ কাপড় ঝুলিয়ে রাখবে। উম্মে সালামা আবারও প্রশ্ন করলেন, এ অবস্থায়তো
মহিলাদের পা দেখা যাবে। তার উত্তরে রাসুল বললেন, তাহলে নারীরা একহাত পরিমাণ কাপড় ঝুলিয়ে
রাখবে, এর বেশি নয়।”
সুনানে তিরমিযীঃ ১৭৩১, সুনানে নাসায়ীঃ ৫৩৩৬, হাদীসটি হাসান সহীহ, শায়খ আলবানী, সিলসিলাহ সহীহাঃ ১৮৬৪।
এই হাদীস
দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, নারীদের পা ঢেকে রাখা ওয়াজিব, যা সাহাবি পত্নীগণের অজানা ছিল না। আর এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, মহিলার পা দেখাতে যদি ফিৎনার আশংকা থাকে, তাহলে নারীদের সমস্ত সৌন্দর্যের আধার
মুখমন্ডল দেখা পুরুষদের জন্যে আরো অনেক বেশি ফিৎনার কারণ। সুতরাং, যারা বলে নারীদের
চেহারা ঢাকা বা নিকাব পড়া ওয়াজিব নয়, তাদের ফতোয়া কতটুকু দলিল ভিত্তিক ও যুক্তি
সংগত, এটা বিজ্ঞ পাঠকদের চিন্তার খোরাক হিসেবে ছেড়ে দিলাম।
(৪) সুরা দুহার
শানে নুযুল কি?
উত্তরঃ ওয়াহী
নাযিলের শুরুর দিকে একবার অসুস্থতার কারণে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম দুই বা তিন রাত তাহাজ্জুদ সালাতের জন্য
উঠতে পারেন নি। এসময় জিব্রাঈল আ’লাইহিস
সালাম কোন ওয়াহী নিয়ে আসেন নি। এতে করে আবু লাহাবের স্ত্রী উম্মে জামিল এসে বলল, হে মুহাম্মাদ! আমার
মনে হয়,
তোমার শয়তান তোমাকে পরিত্যাগ করেছে (নাউযুবিল্লাহি মিন
যালিক)! দুই বা তিন দিন ধরে আমি তাকে তোমার কাছে আসতে দেখছি না। তখন আল্লাহ নাযিল করলেন,
“শপথ পূর্বাহ্নের! শপথ রজনীর যখন তা গভীর
হয়! (হে নবী!) আপনার রব আপনাকে পরিত্যাগ করেন নি এবং
আপনার প্রতি রুষ্ট হন নি।” [সুরা দুহাঃ আয়াত ১-৩]
সহীহ বুখারী, (ইসলামিক ফাউন্ডেশন অনুবাদ), তাফসীর অধ্যায়ঃ হাদিস
নং-৪৫৮৭।
এই সুরা নাযিল
করে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম এর পক্ষে থেকে স্বয়ং আল্লাহ তাআ’লা মুশরিকদের মন্দ কথার জবাব দিলেন, এবং তাঁর ইহকাল অপেক্ষা পরকাল উত্তম এই
কথা বলে তাঁকে সান্ত্বনা দিলেন।
(৫) খাওয়ার পূর্বে
বিসমিল্লাহ না বললে কি ক্ষতি হবে? শুরুতে বিসমিল্লাহ বলতে
ভুলে গেলে কি করতে হবে?
উত্তরঃ খাওয়ার পূর্বে
বিসমিল্লাহ না বললে সেই খাবারে শয়তান শরীক হয়, বিসমিল্লাহ বলে খাওয়া শুরু করলে সেই
খাবার থেকে শয়তান কিছু খেতে পারেনা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘‘যে খাবারে আল্লাহর নাম নেওয়া হয়না, শয়তান সেই খাবারকে
তার জন্যে হালাল মনে করে।”
সহীহ বুখারীঃ ৩২৮০, সহীহ মুসলিমঃ ২০১৭, সুনানে তিরমিযীঃ ১৮১২, সুনানে আবু দাউদঃ ৩৭৩১।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন যে, ‘‘কোন ব্যক্তি যখন নিজ বাড়িতে প্রবেশের সময় ও আহারের সময় আল্লাহ তাআ’লাকে স্মরণ করে; অর্থাৎ (‘বিসমিল্লাহ’ বলে) তখন শয়তান তার সংগীদেরকে বলে, ‘আজ না তোমরা এ বাড়িতে রাত্রি যাপন করতে পারবে, আর না তোমরা কোন খাবার খেতে পারবে।’ অন্যথা যখন সে প্রবেশ কালে
আল্লাহ তাআ’লাকে স্মরণ করে না (অর্থাৎ ‘বিসমিল্লাহ’ বলে না), তখন শয়তান তার সংগীদেরকে বলে, ‘তোমরা রাত্রি যাপন করার স্থান পেলে।’ আর যখন আহার কালেও আল্লাহ তাআ’লাকে স্মরণ করে না (অর্থাৎ ‘বিসমিল্লাহ’ বলে না), তখন শয়তান তার চেলাদেরকে বলে, ‘তোমরা রাত্রিযাপনের জন্যে জায়গা ও রাতের খাবার দুটোই পেয়ে গেলে।”
সহীহ মুসলিমঃ ২০১৮, সুনানে আবু দাউদঃ ৩৭৬৫, সুনানে ইবনু মাজাহঃ ৩৮৮৭, মুসনাদে আহমাদঃ ১৪৩১৯।
খাবার শুরুতে
বিসমিল্লাহ বলতে ভুলে গেলে যা বলতে হয়ঃ
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘‘তোমাদের কেউ যখন আহার করবে, সে যেন শুরুতে আল্লাহ তাআ’লার নাম নেয় (অর্থাৎ ‘বিসমিল্লাহ’ বলে)। আর যদি শুরুতে সে আল্লাহর নাম
নিতে ভুলে যায়, তাহলে সে যেন বলে
بسمِ اللَّهِ فِي
أَوَّلِهِ وَآخِرِهِ
উচ্চারণঃ বিসমিল্লাহি
ফী আওওয়ালিহী ওয়া আখিরিহী।
অর্থঃ এই
(খাওয়ার) শুরু ও শেষ আল্লাহ্র নামে।
সুনানে আবু দাউদঃ
৩৭৬৭,
সুনানে তিরমিযীঃ ১৮৫৮, সুনানে ইবনু মাজাহঃ
৩২৬৪,
হাদীসটি হাসান সহীহ, শায়খ আলবানী।
(৬) ইয়াহুদী-খ্রীস্টানরা
কি কাফের নাকি কাফের নয়? তাদের সাথে বন্ধুত্ব করা যাবে?
উত্তরঃ মুসলিম
আলেমদের সর্বসম্মত ঐক্যমতে ইয়াহুদী-খ্রীস্টানরা কাফের বা অবিশ্বাসী, যদিও তারা
আল্লাহকে বিশ্বাস করে। তাদের কাফির হওয়ার জন্যে অনেক কারণ রয়েছে তার মাঝে রয়েছে –
(ক) সমস্ত
মিথ্যা মাবূদ বর্জন করে এক আল্লাহর ইবাদত না করার জন্যে। ইয়াহুদীরা তাদের নবী
রাসূলদের যেমন উযায়ির আ’লাইহিস সালাম এবং খ্রীস্টানরা ঈসা আ’লাইহিস সালামকে উপাসনা করার কারণে কাফির ও মুশরিক বলে গণ্য হবে।
(খ) রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম কে আল্লাহর সর্বশেষ
নবী হিসেবে ঈমান না আনার জন্যে তারা কাফির।
(গ) আল্লাহর নাযিলকৃত সর্বশেষ আসমানী কিতাব ক্বুরানুল
কারীমের প্রতি ঈমান না আনার কারণে তারা কাফির।
উল্লেখ্য, কাফির দেশে বসবাসকারী কিছু লোক যাদের মাঝে
রয়েছে জনপ্রিয় এমেরিকান বক্তা নোমান আলী খান, তারা দাবী করেছে কুরানুল কারীমে
আল্লাহ তাআ’লা ইয়াহুদী
খ্রীস্টানদেরকে কাফির বলেন নি বা, ক্বুরানের সংজ্ঞা অনুযায়ী ইয়াহুদী
খ্রীস্টানদেরকে কাফির বলা সঠিক নয়। এ কথার দ্বারা আসলে ক্বুরানুল কারীম ও ইসলামী
আক্বিদাহ সম্পর্কে তাদের মারাত্মক অজ্ঞতা প্রকাশিত হয়। আমাদের জানা থাকা প্রয়োজন
যে, সুস্পষ্ট কাফিরদেরকে কাফির না বলা কুফুরী।
(৭) ‘কানতারা’ কি?
উত্তরঃ পুলসিরাত
পার হওয়ার পর ‘কানতারা’ বা সাঁকো পথের একটি বাধা রয়েছে। এটি শুধু মুমিনদের
পরস্পরের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে একজন মুমিন অন্য
একজনের মুমিনের উপর যে অন্যায় বা যুলুম করেছে তার পারস্পরিক বদলা নেওয়া হবে।
রাসুলু্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
“মুমিনগণ জাহান্নাম থেকে মুক্ত হয়ে জান্নাত ও জাহান্নামের
মাঝে ‘কানতারা’ বা সাঁকোপথ অতিক্রমকালে তাদের পরস্পরিক দেনা পাওনা পরিশোধের কাজ সমাপ্ত করা হবে, যে দেনা-পাওনা দুনিয়াতে অমিমাংসিত রয়ে গেছে। পারস্পরিক দেনা-পাওনা পরিশোধিত হবার
পরই তারা জান্নাতে প্রবেশের অনুমতি লাভ করবে।”
সহীহ বুখারী।
(৮) সুরা তাওবাহর
পূর্বে বিসমিল্লাহ নেই কেনো?
উত্তরঃ সাহাবারা
যখন মুসহাফ আকারে ক্বুরানের সুরাগুলো একত্রিত করেন, তখন তারা নিশ্চিত ছিলেন না যে,
সুরা তাওবা কি নতুন একটা সুরা নাকি পূর্ববর্তী সুরা আনফাল এর অংশ। একারণে সুরা
তাওবাকে মুসহাফে পৃথক স্থান দিলেও তার পূর্বে ‘বিসমিল্লাহ-হির রাহমানির রাহীম’ লিখেন নি।
(৯) বিয়ের জন্য
মোহর কম হওয়া ভালো নাকি বেশি হওয়া ভালো? মোহর কি নগদ নাকি
বাকীতে দিতে হবে?
উত্তরঃ বিয়ের জন্য
মোহর মেয়ের মর্যাদা এবং ছেলের সামর্থ্য – এই দুইটি
জিনিসের দিকে লক্ষ্য করে নির্ধারণ করা উচিৎ। মোহর কম হওয়া ভালো, তবে চাইলে কোন
মেয়ে অধিক মোহর দাবী করতে পারে। অহেতুক বেশি মোহর দাবী করে ছেলের জন্যে কষ্টকর করা
ঠিক নয়। মোহর সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্যে এই পোস্ট দেখুন –
https://www.facebook.com/Back.to.Allah.bangla/photos/pb.125167817515974.-2207520000.1452344328./1497568256942583/?type=3&size=207%2C206&fbid=1497568256942583