নির্বোধ ও
লজ্জাহীন নারী ও পুরুষেরা যখন আলেমঃ
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “কেয়ামতের একটা লক্ষণ হচ্ছে যে, মানুষ
জাহেল (মূর্খ) লোকদের কাছ থেকে ইলম (দ্বীনের জ্ঞান) অর্জন করবে।” তাবারানি, জামি আস-সাগীরঃ ২২০৩।
.
(১) তাক্বওয়া নিয়ে লেকচার দিয়ে
বেড়ায় অথচ রাত জেগে বার্সা-রিয়েল, টি-টুয়েন্টি, বিশ্বকাপ দেখে আর ফজরের সময় খেলার
রেজাল্ট প্রচার করে, অন্যদেরকেও হারাম কাজে উস্কানি দেয়। এই সমস্ত খেলা যেখানে
সাবালাক লোকেরা হাটুর উপরে কাপড় পড়ে, খেলার মাঠে বিজ্ঞাপনে উলংগ নারীদের দেখানো
হয়, গান বাজনা, চিয়ার লিডার্স, মদ জুয়ার ছড়াছড়ি....এইগুলো দেখা হারাম, তাদেরকে
আলেমদের বক্তব্য দিলে ‘ডিফরেন্স অফ
অপিনিয়ন’ বলে ইলম দিয়ে হাওয়াকে
(কুপ্রবৃত্তিকে) ঢাকার দুর্বল চেষ্টা করে। সৎ কাজের আদেশ ও অসত কাজের নিষেধ করলে ‘কসমেটিক মুসলিম’, ‘হারাম
পুলিশ’ বলে কটাক্ষ করে।
(২) কাফির দেশে বসবাস
করে, পুরুষদের সাথে
বেপর্দা, ফ্রী-মিক্সিং
জব করে গর্ব করে,
নিজের স্ট্যাটাস নিয়ে বোকা টাইপের পুরুষদেরকে মুগ্ধ করে। মাঝে মাঝে আধা হিজাবী বা চেহারা প্রদর্শন করে পুরুষদের মাঝে ফিতনাকে আরো বাড়িয়ে
দেয়। আর যুক্তিপূর্ণ কথার মাঝে নারী-জাতীয় কমনীয়তা ফুটিয়ে তুলতে পারলে তো কথাই
নেই! পুরুষদের কাছে তিনিই হচ্ছেন আলিমাহ, উস্তাদা, মক্কা মদীনার আলেমরাও ফেইল। এক
লাইন পড়ে তিন লাইন মনগড়া অপব্যখ্যা করলে ভক্তদের কাছে তিনিইই হচ্ছেন বড় আলিমাহ।
মজার ব্যপার হচ্ছে এ সমস্ত #রুয়াইবিদা (নিচু শ্রেণীর ফালতু লোক) যাদের জিহবা লম্বা
কিন্তু জ্ঞান ও বুদ্ধি হচ্ছে খাটো, জন সাধারণের কাছে তারাই বড় আলিম, আলিমাহ।
সাধারণ মুসলমানদের কাছে প্রকৃত আলেমদের কোন দাম নেই। আলেমরা নাকি বর্তমান দুনিয়া
সম্পর্কে জানেন না, তাদের মতো সুন্দর করে বুঝিয়ে বলেন না। আসলে আলেমরা ঠিকই বলেন,
কিন্তু আলেমদের কথা তাদের মনে ধরেনা, কারণ আলেমদের কথা তাদের প্রবৃত্তির সাথে
স্যুট করেনা। যেহেতু আলেমদের কথা শুনে প্রবৃত্তির গোলামী করা যাবেনা, তাই প্রকৃত
আলেমদের মর্যাদা তাদের কাছে নেই। আরেকটা কথা হচ্ছে, আলেমদের কথা শোনা ও বুঝার
জন্যে, তাদের ক্লাস করার জন্যে পরিশ্রম করতে হবে, দ্বীনের জন্যে মেহনত করতে হবে।
কিন্তু অনেকে আশা করে, তারা শুধু হা করবে আর আলেমরা সবকিছু রেডিমেড ধরে গিলিয়ে
দিবেন। দ্বীন শেখার জন্যে ন্যুনতম চেষ্টা-পরিশ্রম করতে হবে, এই কথা তারা মানতে বা
বুঝতে রাজি নন। সস্তায় সবকিছু রেডিমেড জিনিস অল্প শিক্ষিত নামধারী কিছু আলেম/বক্তা
তাদের কাছে পৌছে দিচ্ছে, আর এটাকেই তারা প্রকৃত ইসলাম মনে করে লুফে নিচ্ছে।
.
আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আ’নহু বলেন,
“মানুষ হচ্ছে তিন প্রকার,
(১) আ’লিম (শিক্ষিত বা দ্বীনের ব্যপারে জ্ঞানী ব্যক্তি)
(২) মুতাআ’ল্লিম (দ্বীনের শিক্ষার্থী), এবং এ দুই প্রকারের লোকজনই হচ্ছে মুক্তির পথে।
(৩) নিম্নমানের এমন লোকজন, যারা
যে কোন লোকের কথা অনুসরণ করে এবং তার ডাকে সাড়া দেয়।”
[উসুলুস সুন্নাহ (বাংলা),
পৃষ্ঠা-১০৭]
.
বিঃদ্রঃ আমার এই পোস্টের উদ্দেশ্য
হচ্ছে জাহিল আল-মুরাক্কাব লোকদের ব্যপারে সতর্ক করা। যে ব্যক্তি আসলে মূর্খ,
কিন্তু নিজেকে আলেম বলে মনে করে, তাকে জাহেল আল-মুরাক্কাব বলা হয়। সুতরাং আমার
বক্তব্য উপস্থাপনে ত্রুটি বা দুর্বলতার কারণে কথাগুলো কেউ ব্যক্তিগতভাবে না নিলেই
ভালো হয়। আল্লাহ আমাকে এবং আপনাদেরকে উপকারী ইলম দান করুন এবং অজ্ঞতার কারণে
হীনমন্যতা ও ইলমের কারণে অহংকার থেকে মুক্ত রাখুন, আমিন।