বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৪

শায়খ আলবানী কে ছিলেন?


শায়খ আলবানী কে ছিলেন?

   বিগত শতাব্দীর শ্রেষ্ঠতম আলেমদের মধ্যে একজন হচ্ছেন মুহা’ম্মাদ নাসিরউদ্দিন আলবানী, যিনি শায়খ আলবানী নামে বেশি পরিচিত কারণ তাঁর জন্মস্থান ছিলো আলবেনিয়াতে। তিনি একজন হাদীস শাস্ত্রের আলেম ছিলেন। অসামান্য জ্ঞানের অধিকারী শায়খ আলবানীর হাদীস শাস্ত্রে তাঁর যে খেদমত, বলা যেতে বিগত কয়েকশত বছরেও এই খেদমত কেউ করতে পারেন নি। আজকে আরব বিশ্বে সর্বজন স্বীকৃত এই আলেমের কাজকে বেদাতপন্থী মূর্খ ছাড়া আরকেউ অস্বীকার করতে পারেনা। নামাযের উপরে উনার গবেষণা ভিত্তিক একটা বই আছে “রাসুলুল্লাহর সালাত” নামে, বলা যেতে পারে নামাযের উপরে শ্রেষ্ঠ বইগুলোর মাঝে একটা। আপনারা এই বইটা অবশ্যই কিনবেন।

***নবী (সঃ) যেউভাবে নামায পড়তেনঃ শায়খ নাসিরুদ্দিন আলবানী (রহঃ)
অনুবাদক – এম এন সিরাজুল ইসলাম। এই অনুবাদক ছাড়া অন্যটা কিনবেন না। সেগুলোতে মূল বইয়ের ভুল অর্থ ও বিকৃত করা হয়েছে।

http://islamhousebd.wordpress.com/2011/08/30/নবী-সাল্লাল্লাহু-আলাইহি/


   আমাদের দেশের বেদাতপন্থী অনেক হুজুর-মাওলানারা শায়খ আলবানীর বিরুদ্ধে অনেক আজেবাজে কথা বলে। তাদের মতে তিনি নাকি কোনো আলেম নাহ! শায়খ আলবানীর হাদীসের তাহকীক, সহীহ ও জয়ীফ নির্ধারণ, বিদাত উতখাতের জন্য তাঁর আজীবন প্রচেষ্টা দিয়ে বেদাতীদের ধর্মব্যবসার ১২টা বাজিয়েছেন, এই জন্য কবর-মাজার পূজারী, পীর পূজারীরা তার বিরুদ্ধে লেগেছে।

   কারণ বেদাত যদি উঠে যায় তাহলে বেনামাযী, সুদখোর, ঘুষখোর ইত্যাদি লোকদের বাড়ীতি মীলাদ-কিয়াম, সবিনা খতম, খতমে ইউনুস, খতমে জালালী করে, শবে মেরাজ, কবর যিয়ারত করিয়ে, ইসালে সওয়াব, বুখারী খতম ইত্যাদি অনুষ্ঠান করে হারাম পয়সা খাওয়ার ধান্দা উঠে যাবে। 

   মসজিদের শিরকের চর্চা করে তাবীজ-কবচ লিখে অর্থ উপার্জন করে হারাম ইনকাম বন্ধ হয়ে যাবে।

   লক্ষ লক্ষ পীর, ফকির আর দরবেশ মানুষকে মুরীদ বানিয়ে বাতিল পদ্ধতিতে মানুষের ঈমান নষ্ট করছে আর বাতিল পন্থায় তাদের অর্থ আত্মসাত করছে, এই ধর্মব্যবসা উঠে যাবে।

   এইজন্য এই মাযার পূজারী আর পীর পূজারী আলেমরা শায়খ আলবানীর নামে আজেবাজে কথা বলে। অথচ দেখুন আরব বিশ্বের শ্রেষ্ঠ আলেমরা তাঁর সম্পর্কে কি বলেছেনঃ

   বিগত শতাব্দীর শ্রেষ্ঠতম আলেম, কুরআন ও সুন্নাহর মুহাক্কিক গবেষক, আরব বিশ্বের সর্বজন স্বীকৃত শীর্ষস্থানীয় আলেমে দ্বীন, সৌদি আরবের সাবে গ্র্যান্ড মুফতি, আল্লামাহ শায়খ আব্দুল আজীজ বিন আব্দুল্লাহ বিন বায রাহিমাহুল্লাহ বলেনঃ
“বর্তমান বিশ্বে আসমানের নিচে আল্লামাহ মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দীন আলবানীর মত এত বড় হাদীসের আলেম আমি দেখি নি।”

   শায়খ বিন বায রাহিমাহুল্লাহ এর নিকট এই হাদীসটি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। যেখানে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ

“আল্লাহ তায়ালা প্রতি একশ বছরের মাথায় এই উম্মতের জন্য এমন একজনকে পাঠাবেন যিনি দ্বীন ইসলামকে সংস্কার করবেন।”

শায়খ বিন বাজ বলেনঃ “আমার ধারণা, শায়খ মুহাম্মদ নাসিরুদ্দীন আলবানী হলেন এ যুগের মুজাদ্দিদ বা সংস্কারক। আল্লাহই সবচেয়ে ভাল জানেন।”

   সৌদি আরবের শীর্ষস্থানীয় আলেম, শাইখ মুহাম্মদ বিন সালেহ আল উসাইমীন রাহিমাহুল্লাহ বলেনঃ
“শায়খ মুহাম্মদ নাসিরুদ্দীন আলবানীর সাথে বিভিন্ন বৈঠকে বসার পর (যদিও তা কম) যা বুঝতে পেরেছি তা হল, তিনি সুন্নাহর প্রতি আমলে আগ্রহী এবং আমল-আকীদা উভয় ক্ষেত্রেই বিদআ’ত উখাতে খুবই আগ্রহী। আর তার লিখিত বই-পুস্তক পড়ে তার ব্যাপারে জানতে পারলাম যে, তিনি হাদীসের সনদ ও মতন উভয় ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত জ্ঞানের অধিকারী। এ সকল বই-পুস্তক দ্বারা আল্লাহ তাআ’লা অনেক মানুষকে উপকৃত করেছেন। তার ছাত্ররা যেইভাবে জ্ঞানার্জনের ক্ষেত্রে লাভবান হয়েছে ঠিক তেমনি “মানহাজ” বা নীতি নির্ধারণ এবং ইলমে হাদীসের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টির ক্ষেত্রেও তারা লাভবান হয়েছেন। এটি মুসলমানদের জন্য বড় একটি বড় প্রাপ্তি। আলহা’মদুলিল্লাহ। আর ইলমে হাদীসের ক্ষেত্রে তার জ্ঞানগর্ভ গবেষণা সত্যি চমকৃত হওয়ার মত।”

আরো জানতে চাইলে নিচের লিংকে দেখুনঃ

http://islamqa.info/ar/110667


Collected and Edited from Shaykh Abdullah Al Kafi