প্লিজ লেখাটা সবাই পড়ুন ও শেয়ার করুনঃ কিভাবে মুসলমান কাফের হয়ে যাচ্ছে…
কেয়ামতের আগে এমন হবে, অনেকে সকাল বেলায় ঈমানদার থাকবে কিন্তু সন্ধ্যা সময় কফের হয়ে যাবে। আবার অনেকে সন্ধ্যা বেলায় ঈমানদার থাকবে ঠিকই, কিন্তু সকাল হতে না হতেই সে কাফের হয়ে যাবে। সে দুনিয়ার ধোকা বা লোভে পড়ে, অথবা বিভিন্ন ফেতনা ফাসাদে পড়ে শিরকি কুফুরীতে লিপ্ত হয়ে কাফের মুর্তাদ হয়ে চিরজাহান্নামী হবে, লা হা’উলা ওয়াকা ক্বুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ।
এক ভাই মেসেজ করে বললেনঃ
মুসলিম ঘরের এক মেয়ে নাকি এক মুশরেক ছেলেকে বিয়ে করতে যাচ্ছে…
নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক। এই কাজ সম্পূর্ণ হারাম। এই মেয়ের যদি আল্লাহ ও তার রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি তিল পরিমান বিশ্বাস থাকে, ঈমানদার মুসলিম হিসবে মৃত্যুবরণ করতে চায়, তাহলে অনুরোধ করবো নিচের লেখাটা মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য।
শুধু পড়ার জন্যইনা, বরং এর ভয়াবহতা অনুধাবন করে, এইরকম ঘৃণ্য পাপাচার থেকে তোওবা করে – এই বিয়ে ভেঙ্গে দিতে। অতীত যুগের ঈমানদারদেরকে ঈমান ধরে রাখার জন্য আগুনে পোড়ানো হতো, লোহার চিরুনি দিয়ে গায়ের গোশত আচড়ানো হতো, মাথা থেকে পা পর্যন্ত করাত দিয়ে কেটে দুই টুকরো করা হতো – আর ঈমান রক্ষার জন্য একটা হিন্দু ছেলেকে তুমি ছাড়তো পারোনা?
কত বড় ঈমানদার তুমি, নিজেকে নিজেই একবার প্রশ্ন করে দেখো?
২-৩ মাস আগেও একবোন মেসেজ করে বলেছিলেন, তার পরিচিত এক মেয়ে এক কাফেরকে বিয়ে করেছে – কাজী অফিসে মিথ্যা কথা বলে যে, ছেলে মুসলিম। তার অপদার্থ বাবা-মা জেনেশুনে এইগুলো মেনে নিয়েছে। এরাই হচ্ছে মূল নষ্টের মূল, সন্তানদেরকে খোলামেলা ছেড়ে দেয় জেনা-ব্যভিচারে জন্য। কেয়ামতের দিন এদের সন্তানদেরকে জাহান্নামে দেওয়ার আগে এদেরকেও জাহান্নামে দেওয়া হবে।
___________________________
আজকাল পথভ্রষ্ট কিছু তরুণ তরুণী অবৈধ প্রেম ভালোবাসা ও জিনা ব্যভিচারের সম্পর্ক থাকার কারণে কাফের, মুশরেক, মূর্তিপূজারী, হিন্দুদের বিয়ে করছে, অথবা সামনে বিয়ে করার স্বপ্ন দেখছে!
এমন আমি নিজে জানি, একটা ছেলে এক হিন্দু মেয়েকে বিয়ে করে, দুইজন আলাদা আলাদা ধর্মে থাকা অবস্থাতেই! ছেলেটার পরিবার এই সম্পর্ক মেনে না নেওয়ায় ছেলেটা দীর্ঘদিন তার বাবা-মার সাথে যোগাযোগ বন্ধ রাখে ও তার পরিবারের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে (অবশ্য ছেলেটা নামাযী, মুসলিম ছিলো কিনা জানা নাই। বর্তমানে সেকি আদৌ তার পরিবারে ফিরে এসেছিলো কিনা জানা নাই)।. উল্লেখ্য ছেলেটা জাফর ইকবালের ছাত্র এবং অন্তরে “জাফর ইকবালের চেতনা ও আদর্শ” লালন করত।
আরেকটা আধা হিজাবী (মাথায় ছোট্ট একটা রুমাল বাধা) মেয়ে হিন্দু ক্লাসমেট প্রেমিকের হাত ধরে বাসা থেকে বেড়িয়ে যায় (অবশ্য, মেয়েটা নামাযী ছিলো কিনা জানা নাই)।
কাফের দেশ সমূহে বসবাস করা অনেক পরিবার ছেলে-মেয়েদেরকে কাফেরদের স্কুলে পাঠায়, সেখানে কাফেরদের ছেলে-মেয়েদের সাথে তাদের সম্পর্ক হয়। এভাবে তারা কাফেরদের সংস্কৃতি ও ধর্মে বড় হয়ে উঠে। একসময় এরা জেনা-ব্যভিচারে লিপ্ত হয়। মুসলিম ঘরের কতযে মেয়ে কাফেরদের হাত ধরে ঘর থেকে বেড়িয়ে যায়, বিয়ে ছাড়াই তাদের বাচ্চা পেটে নিয়ে ঘুরে বেড়ায়…
ধিক তোমাদেরকে, ধিক নিকৃষ্ট তোমাদের এই জীবন!
নিজেদেরই ঈমান আছে কিনা সন্দেহ…
বিয়ে করছো একজন কাফের, মূর্তি পূজারীকে?
বাংলাদেশর কুফুরী আইনে এই বিয়ে জায়েজ হলেও আল্লাহর কাছে এই বিয়ে সম্পূর্ণ নাজায়েজ, হারাম।
কোন মুসলিম যদি কোন কাফের/মুশরেক নারী বা পুরুষকে বিয়ে করে, এই বিয়ে কুরান, সুন্নাহ ও সমস্ত আলেমদের ঐক্যমতে হারাম। এই বিয়ের ফলে কোন প্রকার স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক সাব্যস্ত হবেনা। কোন মুসলমান যদি এই বিয়েকে সমর্থন করে, এইগুলো ঠিক মনে করে, যার যার ব্যক্তিগত অধিকার মনে করে, তাহলে কুরান ও সুন্নাহকে অস্বীকার করার কারণে সে নিজেই কাফের ও মুর্তাদ হয়ে যাবে।
বাংলাদেশ, ভারত ইত্যাদি গণতান্ত্রিক, ইসলাম বিরোধী আইন-আদালতের দেশসমূহে এই বিয়ের লাইসেন্স দিলেও, এমনকি (কুফুরী) জাতিসংঘ থেকেও সার্টিফিকেট নিয়ে আসলেও এই বিয়ে কস্মিনকালেও কবুল হবেনা।
এইভাবে অবৈধ বিয়ে করে নারী পুরুষ যতবার মিলিত হবে, প্রত্যেকবার ফেরেশতারা তাদের আমলনামায় জেনা-ব্যভিচারের পাপ লিখে রাখবেন।
এটা পরিষ্কার জেনা, এর ফলে জন্ম নেওয়া সন্তান হবে জারজ !!
এভাবে অবৈধ বিয়ে করে নারী পুরুষ মিলিত হয়ে যে বাচ্চা জন্ম নেবে – এই বাচ্চাগুলো অবৈধ এবং জারজ। এমনকি, জেনা-ব্যভিচারের ফলে বাচ্চা মায়ের পেটে আসার পরে যদি বিয়ে করে অথবা কাফের মুসলিমও হয়ে যায়, তবুও ঐ সন্তানটা “ইসলামী শরিয়াহ” মোতাবেক হারাম বলেই গণ্য হবে। অনেকে গালি দেয় “হারামজাদা” বলে। হারাম মানে নিষিদ্ধ, জাদা মানে সন্তান। এই বিয়ের ফলে জন্ম নেওয়া সন্তানগুলোকে উর্দুতে “হারামজাদা” বলা হয়, বাংলায় বলা হয় জারজ সন্তান, ইংরেজীতে বলা হয়…
যদিও আমাদের দেশে “হারামজাদা” বলে মানুষকে গালি দেওয়া হয়, এটা অন্যায়। কেউ যদি আসলে হারাম সন্তান না হয়ে থাকে, তাহলে তাকে হারামজাদা বলা – মারাত্মক অপরাধ। এটা একদিকে খারাপ ও অন্যায় একটা গালি, তার উপর তার পিতা-মাতার উপর জেনার মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হয়। আর কারো বাবা-মা যদি আসলেই খারাপ কাজ করে থাকে তবুও তার বাবা-মায়ের পাপের জন্য অন্যায়ভাবে তাদের সন্তানকে অপমান করতে ইসলাম আমাদের অনুমতি দেয়না।
কুরান থেকে দলীল, কাফের ও মুশরেকদের বিয়ে করা হারামঃ
মহান আল্লাহ বলেন:
“আর তোমরা মুশরেক নারীদেরকে বিয়ে করোনা, যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে। অবশ্যই মুসলমান দাসী মুশরেক স্বাধীন নারী অপেক্ষা উত্তম, যদিও তাদেরকে তোমাদের কাছে ভালো লাগে। এবং তোমরা (নারীরা) কোন মুশরেকের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ো না, যে পর্যন্ত সে ঈমান না আনে। একজন মুসলমান দাসও একজন স্বাধীন মুশরেকের তুলনায় অনেক ভাল, যদিও তোমরা তাদের দেখে মোহিত হও। তারা তোমাদেরকে দোযখের দিকে আহ্বান করে, আর আল্লাহ নিজের হুকুমের মাধ্যমে আহ্বান করেন জান্নাত ও ক্ষমার দিকে। আর তিনি মানুষকে নিজের নির্দেশ বলে দেন যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে”।
সুরা আল-বাকারাহ: ২২১।
বিঃদ্রঃ মুসলমান পুরুষেরা আহলে কিতাবীদের কোনো ধার্মিক ও চরিত্রবান সতী (ইয়াহুদী অথবা খ্রীস্টান) নারীকে বিয়ে করতে পারবে, আল্লাহ এটা হালাল করেছেন। কিন্তু কোনো মুসলমান নারী কোনো অবস্থাতেই ইয়াহুদী বা খ্রীস্টান পুরুষকে বিয়ে করতে পারবেনা।
এটা আল্লাহর বিধান, একজন ঈমানদার হিসেবে আমাদের মনে রাখতে হবে আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী – তিনি আমাদের জন্য সর্বোত্তম বিধান দিয়েছেন – তাতে তিল পরিমাণ সন্দেহ নাই। বিষয়টা আমরা বুঝি বা বুঝি, আমাদের ভালো লাগুক বা না লাগুক। এই কথার দলীল হচ্ছে
“তোমাদের (মুসলমান পুরুষদের) জন্যে হালাল সতী-সাধ্বী মুসলমান নারী এবং তাদের সতী-সাধ্বী নারী, যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তোমাদের পূর্বে, যখন তোমরা তাদেরকে মোহরানা প্রদান কর তাদেরকে স্ত্রী করার জন্যে, কামবাসনা চরিতার্থ করার জন্যে কিংবা গুপ্ত প্রেমে লিপ্ত হওয়ার জন্যে নয়। যে ব্যক্তি বিশ্বাসের বিষয় অবিশ্বাস করে, তার শ্রম বিফলে যাবে এবং পরকালে সে ক্ষতিগ্রস্ত হবে”।
সুরা আল-মায়িদাহ, আয়াত ৫।
ইয়াহুদী ও খ্রীস্টান ছাড়া সমস্ত হিন্দু, কাফের, মুশরেক, বেদ্বীন নারীকে বিয়ে করা একজন ঈমানদার পুরুষের জন্য সম্পূর্ণ হারাম।
আর কোনো ঈমানদার নারীর জন্য বৈধ নয় কোনো কাফেরকে বিয়ে করা, চাই সে আহলে কিতাব বা অন্য যেকোনো ধর্মের হোক।
এইরকম বিবাহে যারা আবদ্ধ আছে তারা কি করবে?
উত্তরঃ আজকে এই মুহূর্ত থেকে তাদের আলাদা হয়ে যাওয়া ফরয। ছেলে-মেয়েগুলো মুসলিম নারী বা পুরুষের বলেই গণ্য হবে। ছেলে বা মেয়ে যদি সত্যিকারের ঈমান এনে মুসলিম হয়ে থাকে তাহলে উভয়ে আন্তরিক তোওবা করে মুসলিম মেয়ের বাবা/ওয়ালীর অনুমতি সাপেক্ষে বিয়ে করতে পারবে। আর মেয়ে যদি কাফের থেকে মুসলিম হয়, তাহলে তার কাফের বাবা তার ওয়ালী হবেনা, কোন মুসলিম তার ওয়ালী হবে। উল্লেখ্য শুধু সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্য মুখে ঈমান আনলে সেই ঈমান কবুল হবেনা। অনেকে নারী আছে আসলে নারী পূজারী, আর অনেক নারী আছে আসলে পুরুষ পূজারী। এরা প্রেমিক বা প্রেমিকের জন্য এমন কোনো খারাপ কাজ নেই যে করতে পারেনা, এমনকি বাপ-দাদার ধর্মও ছাড়তে পারে। এইরকম লোকদেখানো ঈমান আনলে তাকে কোনো মুসলিম নারী বা পুরুষ বিয়ে করতে পারবেনা। ডা. জাকির নায়েকের অনুষ্ঠানে যেমন দেখা যায়, পাক্কা ঈমান সহকারে মুসলিম হয়, নামায পড়ে ইসলামের বিধি বিধান মেনে চলে, শুধুমাত্র তখনই তাকে বিয়ে করা জায়েজ হতে পারে।
___________________________
সর্বশেষঃ জেনা ব্যভিচারের শাস্তি কি?
বিবাহিত জেনাকারী ও জেনাকারিনীদের দুনিয়াবী শাস্তিঃ
বিবাহিত নারী বা পুরুষ যদি জিনার অপরাধে জড়িয়ে পড়ে, আর তা ইসলামী বিচারালয়ে প্রমানিত হয় অথবা সে চারবার নিজে থেকেই স্বীকারোক্তি দেয় (শাস্তি মাথে পেতে নেওয়ার জন্য) – (২টার যেকোনো একটা হলেই শাস্তি প্রযোজ্য হবে) তাহলে তার শাস্তি হচ্ছে তাকে "রজম" বা পাথর ছুঁড়ে হত্যা করা হবেঃ
জাবির বিন আব্দুল্লাহ আল আনসারি (রাঃ) হতে বর্ণিত:
বনি আসলাম গোত্রের এক লোক রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর কাছে এসে জানালো যে সে জিনা করেছে এবং নিজের বিরূদ্ধে চার বার সাক্ষ্য দিল। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাকে "রজম" বা প্রস্তরাঘাতে মৃত্যুর নির্দেশ দিলেন, কারণ সে বিবাহিত ছিল।
সহীহ বুখারি ভলিউম ৮, বুক ৮২, নম্বর ৮০৫।
রজম প্রয়োগের এই ঘটনাটি বুখারির ৮টা, মুসলিমের ৯টা, আবু দাউদের ৪টা, মুয়াত্তা ইমাম মালিকের ২ টা সহ মোট ২৩ টা সহীহ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে।
বিঃদ্রঃ জেনাকারী নারী বা পুরুষের এমন ধারণা পোষণ করা মোটেই ঠিকনা, আমাদের দেশে এই নিয়ম নাই - তাই আপাতত কিছু আনন্দ করে নেয়া যাক।
দুনিয়াতে শাস্তি না হলে পরকালের শাস্তি আরো ভয়ংকর। জাহান্নামের আগুনের কড়াইয়ে পুড়া কি ভয়ংকর হতে পারে? ৫ মিনিট চুলার আগুনে ছোট্ট একটা আঙ্গুল দিয়েই দেখতে পারেন সহ্য করতে পারেন কিনা?
কি কঠিন অবস্থা হবে আগুনের কড়াইয়ে যখন উলংগ করে পুড়ানো হবে যার আগুন দুনিয়ার আগুনের ৭০ গুণ আর যেই আগুন কখনো কমবেনা, না শাস্তি কমানো হবে! (নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক)
যিনাকারীদের পরকালীন শাস্তিঃ
রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ “আমি স্বপ্নে একটি চুলা দেখতে পেলাম যার উপরের অংশ ছিল চাপা আর নিচের অংশ ছিল প্রশস্ত আর সেখানে আগুন উত্তপ্ত হচ্ছিল, ভিতরে নারী পুরুষরা চিল্লাচিল্লি করছিল। আগুনের শিখা উপরে আসলে তারা উপরে উঠছে, আবার আগুন স্তিমিত হলে তারা নিচে যাচ্ছিল, সর্বদা তাদের এ অবস্থা চলছিল, আমি জিবরীল আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞেস করলামঃ এরা কারা? জিবরীল আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললঃ তারা হল, অবৈধ যৌনচারকারী নারী ও পুরুষ।
সহীহ আল-বুখারী।