প্রশ্নঃ নামাযে চারটি স্থান ব্যতীত অন্য কোন স্থানে হাত উত্তোলনের
কথা কি প্রমাণিত আছে? অনুরূপভাবে জানাযা ও দু’ঈদের ছালাতের তাকবীরের সময় হাত উত্তোলন
করার কি বিধান?
(নামাযে রফউল ইয়াদাইন বা হাত উত্তোলনের বিধান কি?)
উত্তরঃ নামাযে যে চার স্থানে রফউল ইয়াদাইন বা হাত উত্তোলন করা
সুন্নাত তা জেনে নেয়া আবশ্যক।
১. নামাযের প্রারম্ভে তাকবীর তাহরিমা বলার সময়
২. রুকূতে যাওয়ার সময়
৩. রুকূ থেকে উঠার সময়
৪. প্রথম তাশাহুদ শেষ করে তৃতীয় রাকাআতে উঠার সময়।
এই চারটি স্থানের বিষয়ে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
থেকে বিশুদ্ধভাবে বর্ণনা এসেছে। দলীলঃ- ইবনু ওমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَرْفَعُ يَدَيْهِ حَذْوَ مَنْكِبَيْهِ إِذَا افْتَتَحَ الصَّلَاةَ وَإِذَا كَبَّرَ لِلرُّكُوعِ وَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ رَفَعَهُمَا كَذَلِكَ أَيْضًا وَقَالَ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ وَكَانَ لَا يَفْعَلُ ذَلِكَ فِي السُّجُودِ
“রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’কাঁধ বরাবর
হাত দু’টিকে উত্তোলন (রফউল ইয়াদাইন) করতেন্ত যখন নামায শুরু করতেন, যখন রুকূর জন্য
তাকবীর দিতেন এবং যখন রুকূ থেকে মাথা উঠাতেন তখনও এরূপ হাত দু’টিকে উঠাতেন এবং বলতেন
‘সামিয়াল্লাহুলিমান হামীদাহ্ রাব্বানা ওয়ালাকাল হামদু।’ তিনি বলেন, সিজদার সময় তিনি
এরূপ করতেন না।”
ইবনু ওমার (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর
ক্রিয়াকলাপ সমূহ অতি সুক্ষ্ণভাবে অনুসন্ধান করতেন ও তার অনুসরণ করতেন। তিনি তাঁর নামাযের
নিয়ম-কানুনগুলো অনুসন্ধান করে যা দেখেছেন তা ছিল- তাকবীরে তাহরিমা, রুকূ করা, রুকূ
থেকে উঠা এবং প্রথম তাশাহুদ থেকে উঠার সময় হাত উত্তোলন করা। আর তিনি বলেছেন, নবী (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরূপ হাত উঠানো সিজদার সময় করতেন না। এরকম বলা ঠিক হবে না যে,
হয়তো ইবনু ওমার সিজদার সময় হাত উঠানোর অবস্থাগুলো দেখেন নি বা সে সময় সতর্ক ছিলেন না।
কেননা, তিনি কিছু কিছু স্থানের বর্ণনা দেয়ার পর বলেছেন এরূপ তিনি সিজদর সময় করতেন না।
এদ্বারা বুঝা যায় তিনি নিশ্চিত হয়েই এ কথা বলেছেন সন্দেহ বা সংশয়ের উপর ভিত্তি করে
নয়।
আর জানাযা ও দু’ঈদের প্রত্যেক তাকবীরের পরেও রফউল ইয়াদাইন বা
হাত উত্তোলন করা শরীয়ত সম্মত।
গ্রন্থঃ ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম, বিভাগঃ সালাত, প্রশ্ন নং- ২৩৫।
ফাতওয়া দিয়েছেন আল্লামাহ, শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন
(রহঃ)।