তাবলিগ জামাত ও চিল্লা সম্পর্কে শায়খ সালিহ আল-ফাওজানের ফাতওয়াঃ
“চিল্লা দেওয়া যাবে?”
আমাদের মসজিদে
আরবী কথা বলে এমন কিছু লোক নিয়ে এসেছে তাবলিগ জামাতের লোকেরা, উদ্দেশ্য মানুষকে ইজতেমায়
নেওয়ার জন্য কনভিন্স করা।
আরব দেশ থেকে
জাহেল লোকদেরকে ভুল বুঝিয়ে এরা ইজতেমায় নিয়ে আসে, আর আমাদের দেশের জাহেল লোকদেরকে দেখিয়ে
বলে - দেখো আরব দেশের আলেম ওলামারা আমাদের সাথে চিল্লাতে আসে। অজ্ঞ মানুষেরা তাদের
“লম্বা জোব্বা” আর “আরবী কথা” শুনে মনে করে ওরা হচ্ছে বড় আলেম। অথচ লক্ষ লক্ষ খ্রীস্টান
আছে আরব দেশে যারা আরবীতে কথা বলে। কিন্তু পরিবেশের কারণে এই জাহেলগুলোই হচ্ছে তাবলিগ
জামাতের কাছে "হিরো"।
আরব দেশের মূর্খ
লোকদেরকে ইজতেমায় এনে তারা গর্ব করে - অথচ আরব দেশের বিগত শতাব্দীর ও বর্তমানের শ্রেষ্ঠ
আলেম ওলামারা যে তাদের শিরক আর বিদাতের কারণে অনেকে আগেই তাবলীগ জামাতকে প্রত্যাখ্যান
করেছেন, সৌদি আরবে রাষ্ট্রীয়ভাবে এই সূফী জামাতকে ব্যান করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে
– তাদের সংবিধান “ভেজাল আমল” কিতাবকে বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে - সাধারণ মানুষকে কোনোদিন
এইগুলো জানতে দেয়না। এইকথাগুলো এদের সবাই জানেনা, মুরুব্বীগুলো কেউ কেউ জানে, কিন্তু
এইব্যপারে চুপ থেকে সাধারণ অনুসারীদেরকে ধোঁকা দিচ্ছে।
তাবলিগ জামাতের
সাথে চিল্লায় যাওয়া নিয়ে শায়খ সালিহ আল-ফওজান (হা’ফিজাহুল্লাহ), যিনি বর্তমানে আরব
বিশ্বের সবচাইতে বড় আলেমদের একজন, তার ফাতওয়া অনুবাদ করে দেওয়া হলো।
তাবলিগ জামাত
ও চিল্লা সম্পর্কে শায়খ সালিহ আল-ফাওজানের ফাতওয়াঃ
“চিল্লা দেওয়া
যাবে?”
প্রশ্নকর্তাঃ
আল্লাহ আপনার সাথে ভালো আচরণ করুন হে সম্মানিত শায়খ!
এটাকি জায়েজ
কোথায় বেড়িয়ে পড়া এক মাসের জন্য, এক সপ্তাহের জন্য অথবা একদিনের জন্য যেইভাবে তাবলিগ
জামাতের লোকেরা করে থাকে? এটা কি সুন্নত নাকি বিদআ’ত?
শরীয়তের জ্ঞান
অর্জনে অধ্যায়নরত এমন কারো জন্য এটাকি জায়েজ, এই জামাতের সাথে চিল্লা দেওয়া বা বের
হওয়া?
শায়খ সালিহ
আল-ফওজান এর ফাতওয়াঃ
“এটা জায়েজ
নয়, কারণ এটা একটা বিদআ’ত। এভাবে বেড়িয়ে যাওয়া ৪০ দিন, ৪ দিন, ৪ মাস এটা হচ্ছে বিদআ’ত।
এটা প্রমানিত যে, তাবলিগ জামাত হচ্ছে ভারতীয় দেওবন্দীদের মধ্য থেকে একটা “সূফী” জামাত।
তারা একদেশ থেকে অন্য দেশে যায় তাদের “সূফীবাদ” প্রচার করার জন্য। আহলে সুন্নত ওয়াল
জামাতের অনুসারী কোন ব্যক্তি, তাওহীদের অনুসারী ব্যক্তির জন্য এটা জায়েজ নয় যে, তাদের
সাথে তাবলীগে বেড়িয়ে পড়া। কারণ সে যদি এদের সাথে যায় তাহলে সে তাদেরকে বেদাত প্রচার
করতে সাহায্য করলো। এবং লোকেরা তাকে উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার করবে - “অমুক (আলেম বা শিক্ষিত
লোক) তাদের সাথে তাবলীগে গেছে”, অথবা এটা বলবে “সাধারণ মানুষ সবাই আমাদের সাথে যায়”,
অথবা তারা বলবে “আরে তাবলিগ জামাত এইদেশে (সৌদি আরবে) বৈধ।” এইজন্য তাদেরকে পরিত্যাগ
করা ওয়াজিব, তাদেরকে পরিত্যাগ করা ওয়াজিব এবং তাদের দিকে মনোযোগ দেওয়া যাবেনা (তাদের
কথা শোনা যাবেনা)।
এটা এজন্য যে,
তারা তাদের বিদআ’ত তাদের দেশে নিয়ে ফিরে যাবে, আমাদের আরব দেশগুলোর মাঝে ছড়াতে পারবেনা।
এছাড়া তাদের সাথে গিয়ে তাদেরকে শিক্ষা দেওয়াও জায়েজ নয়। এটা ভুল, কারণ তারা দ্বীনের
জ্ঞান অর্জন করতে চায়না। তারা জ্ঞান অর্জন করতে চায়না কারণ তারা ধোকাবাজির লোক, তাদের
বিশেষ উদ্দেশ্য আছে। তারা এসেছে তোমাদেরকে (সূফীবাদ ও ইলিয়াসি তরীকা) শিক্ষা দেওয়ার
জন্য, তারা এজন্য আসেনি যে তোমাদের কাছ থেকে কিছু শিখবে। তারা এসেছে তোমাদেরকে তাদের
“সূফীবাদ” ও তাদের “মাযহাব” শিক্ষা দেওয়ার জন্য। তারা তোমাদের কাছে শিখতে আসেনাই, তারা
যদি শিখতে আসতো তাহলে তারা আরব দেশের ওলামাদের সাথে মসজিদে বসতো এবং তাদের কাছ থেকে
কিতাব অধ্যায়ন করতো। এসব ভুলের মধ্য থেকে এর দ্বারা ধোকায় পড়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
নাআ’ম।
- আল্লামাহ, শায়খ সালিহ আল-ফওজান।
ফাতওয়াটা শায়খ
ফাওজান এর নিজ মুখ থেকে শুনতে পারবেন নিচের লিঙ্কে। এছাড়া ইমাম মুহাম্মাদ ইবনে ইব্রাহিম
রাহিমাহুল্লাহ, ইমাম বিন বাজ রাহিমাহুল্লাহ, ইমাম আলবানী সব আরব দেশের বহু আলেম ভারতীয়
দেওবন্দী সূফী এই জামাতের গোমরাহীর কারণে উম্মতকে সতর্ক করেছেন এবং এদের থেকে দূরে
থেকে বিশুদ্ধ কুরান ও সুন্নাহ ভিত্তিক পড়াশোনা করতে বলেছেন।