প্রশ্নঃ রুকু ও সিজদার তাসবীহ এর বাংলা অর্থ কি?
রুকুর তাসবীহঃ সুবহা’না রাব্বিয়াল আ’যীম।
অর্থঃ আমি আমার মহান প্রভুর পবিত্রতা বর্ণনা করছি।
সুবহা’না – পবিত্রতা ঘোষণা করছি
রাব্বি – আমার রব্বের বা আমার প্রতিপালকের
আ’যীম – মহান
সিজদার তাসবীহঃ সুবহা’না রাব্বিয়াল আ’লা
অর্থঃ আমি আমার মহান সুউচ্চ রব্বের পবিত্রতা বর্ণনা করছি।
সুবহা’না – পবিত্রতা ঘোষণা করছি
রাব্বি – আমার রব্ব বা আমার প্রতিপালক
আল-আ’লা – যিনি সুউচ্চ ও মহান
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রুকু ও সিজদার মাঝে বিভিন্ন মাসনুন দুয়া করতেন। তবে রুকুতে
নিজে থেকে কোন দুয়া করা নিষিদ্ধ। শুধুমাত্র নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম রুকুতে যেই দুয়া করেছেন সেই দুয়া করা যাবে।
রুকু ও সিজদার সময় পড়ার জন্য সুন্দর একটা দুয়া/তাসবীহঃ
আমরা রুকু-সিদজা বা নামাযের কোন কাজটা কেনো করি আসলে বেশিরভাগ
মানুষই জানিনা।
মা আয়েশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ "সুরা নাসর নাযিল
হাবার পর রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)
سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ رَبَّنَا
وَبِحَمْدِكَ، اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي
এই দোয়াটি রুকু ও সিজদার সময় বেশি বেশি পাঠ করতেন।”
সহিহ বুখারী, খন্ড ৬, অধ্যায় ৬০, হাদিস নং- ৪৯৩।
কেনো রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সুরা নাসর নাযিল হওয়ার পর এই দুয়াটা
বেশি পড়তেন?
উত্তর হচ্ছে সুরা নাসরে আল্লাহ তাআ’লা রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে আদেশ করেছেনঃ
فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ
وَاسْتَغْفِرْهُ ۚ إِنَّهُ كَانَ تَوَّابًا
উচ্চারণঃ ফাসাব্বিহ' বিহা'মদি রাব্বিকা ওয়াস্তাগফিরহু, ইন্নাহু কানা তাওয়্যাবা।
অর্থঃ অতএব, আপনি আপনার পালনকর্তার
“হামদ” (প্রশংসা সহকারে) “সাব্বিহ” (পবিত্রতা বর্ণনা করুন)
এবং ওয়াস্তাগফিরহু (তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন, কারণ) নিশ্চয় তিনি হচ্ছেন “তাওয়্যাবা” (তাওবা কবুলকারী)।
এই আয়াতের উপর আমল করার জন্য তিনি রুকু ও সিজদাতে বেশি বেশি এই
দুয়াটা পড়তেন।
سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ رَبَّنَا
وَبِحَمْدِكَ، اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي
উচ্চারণঃ সুবহা'নাকা আল্লা-হুম্মা
রব্বানা ওয়া বিহা'মদিকা
আল্লা-হুম্মাগফির লী।
অর্থঃ হে আল্লাহ! আমাদের রব্ব! আপনার প্রশংসাসহ আপনার পবিত্রতা
ও মহিমা বর্ণনা করছি। হে আল্লাহ! আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন।
আবু দাউদঃ ৮৭০, তিরমিযীঃ ২৬২, নাসাঈঃ ১০০৭, ইবন মাজাহঃ ৮৯৭, আহমাদঃ ৩৫১৪, শায়খ আলবানীর মতে
হাদীসটি সহীহ, সহীহুত তিরমিযীঃ ১/৮৩।
সুবহা’নাকা – পবিত্রতা ঘোষণা
করছি, রাব্বানা – হে আমাদের রব্ব,
ওয়া = এবং, বিহা’মদিকা = প্রশংসা সহকারে, আল্লা-হুম্মা = হে আল্লাহ!
আল্লা-হুম্মা + মাগফিরলী = আল্লা-হুম্মাগফিরলী,
আল্লা-হুম্মা = হে আল্লাহ! মাগফিরলি = তুমি আমাকে ক্ষমা করো
বিঃদ্রঃ রুকুতে সুবহা’নাল্লাহ রাব্বিয়াল আ’যীম বা সিজদাতে সুবহা’নাল্লাহ রাব্বিয়াল আ’লা ৩/৫/৭ পড়ে পরে এই দুয়া পড়তে পারেন, ১/২/৩ আপনার যত বার ইচ্ছা। যেকোনো রুকু/সিজদাতেই পড়তে পারেন, আপনার ইচ্ছা অনুযায়ী।
এছাড়া মাঝে মাঝে এই দুয়াটাও করতে পারেন – রুকু এবং সিজদা উভয়
জায়গাতেই –
سُبوحٌ، قُدُّوسٌ، رَبُّ الْمَلَائِكَةِ وَالرُّوحِ
সুব্বূহুন
কুদ্দূসুন রব্বুল মালা-ইকাতি ওয়াররূহ।
“(তিনি/আপনি) সম্পূর্ণরূপে দোষ-ত্রুটিমুক্ত, অত্যন্ত পবিত্র ও মহিমান্বিত,
ফেরেশতাগণ ও রূহ এর রব্ব।
মুসলিমঃ
৪৮৭, আবূ দাউদঃ ৮৭২।