প্রশ্নঃ আমি একটি সুদী ব্যাংকে চাকুরী
করি, যা সুদ ভিত্তিক লোন দেয় এবং সুদ ভিত্তিক ডিপোজিট গ্রহন করে। আমি জেনেছি যে, সুদী ব্যাংকে কাজ করা হারাম, তাই অনুগ্রহ করে
নিম্নের প্রশ্নগুলির উত্তর দিনঃ
১. আমার এই ব্যাংকের চাকুরী হারাম কি না, আমি একজন সাধারন কর্মচারী, (ব্যাংকের) অর্থের
মালিক নই?
২. আমি কি এই চাকুরী ছেড়ে দিয়ে অন্য
একটি চাকুরী খুজব, এই জেনে যে - এই চাকুরীর সম পরিমান
বেতনের কাজ পাওয়া খুবই কষ্টকর। আমি কি অন্য কাজ পাওয়ার আগেই ব্যাংক ছেড়ে দিব, নাকি অপেক্ষা করব অন্য কাজ পাওয়া পর্যন্ত?
৩. আমি ১২ বছর ব্যাংকে কাজ করেছি, এই বছর গুলির হারাম রুযীর ক্ষেত্রে বিধান কি? আমি এই ব্যাংকে কাজ করে যে আয় করেছি তা হারাম কিনা? আমি যে হজ্জ করেছি তার অর্থ এই ব্যাংকের বেতনের টাকা দিয়ে করা হয়েছে, আমার এই হজ্জ কি গ্রহন যোগ্য?
উত্তরঃ
প্রথমতঃ সুদী ব্যাংকের কাজ করা নিষিদ্ধ
এবং আপনার জন্য বৈধ নয় কাজ চালিয়ে যাওয়া কেননা তা পাপ এবং সীমালঙ্ঘনের কাজে
সহায়তার মধ্যে পরে।
আল্লাহ্ এটি নিষেধ করেছেন এই বলেঃ
“পাপ ও সীমালঙ্ঘনের
ব্যাপারে তোমরা একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাত...”
সুরা আল-মাই’য়িদাহ, আয়াত ২।
জাবির রাদি’আল্লাহু’আনহু থেকে সহীহ সনদে
মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিতঃ “রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লা’নত করেছেন, সুদখোরের উপর, সুদদাতার উপর, এর লেখকের উপর ও উহার
সাক্ষীদ্বয়ের উপর।”
সহীহ মুসলিম, মুসনাদে আহ্মদ।
অনুরূপভাবে আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহ ইবনে
মাসঊদ রাদি’আল্লাহু’আনহু বলেছেনঃ
“রাসুল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম লা’নত করেছেন, সুদখোরের উপর, সুদদাতার উপর, এর লেখকের উপর ও উহার সাক্ষীদ্বয়ের উপর।”
পাঁচ জন মুহাদ্দীস থেকে বর্ণিত, ঈমাম আহমদ, আবু দাঊদ, আল-তিরমিযী, আল-নাসাঈ এবং ইবনে মাযাহ্। ইমাম
তিরমিযী এই হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।
***সুদী ব্যংকে কাজ করার জন্য আপনাকে
আল্লাহ্র কাছে তোওবা করতে হবে।
দ্বিতীয়তঃ বিগত বছর গুলি ব্যাংকে কাজ
করার জন্য, আমরা আশা করি আল্লাহ্ আপনার গুনাহ্
ক্ষমা করবেন এবং এই সময়ে আপনি যা আয় করেছেন তাতে কোন সমস্যা নেই, যদি এই বিষয়ে আপনি ইসলামের বিধান না জেনে থাকেন। আমরা এও আশা করি আল্লাহ্
আপনার হজ্জ কবুল করুন যা এই অর্থ দ্বারা সম্পাদন করা হয়েছে, আল্লাহ্ বলছেনঃ
“কিন্তু আল্লাহ্ বৈধ
করেছেন ব্যবসা-বাণিজ্য, অথচ নিষিদ্ধ করেছেন সুদখরি। অতএব
যার কাছে তারা প্রভুর তরফ থেকে এই নির্দেশ এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে তার জন্যে যা
গত হয়ে গেছে, আর তার ব্যাপার রইল আল্লাহ্র কাছে। আর
যে ফিরে যায় তারাই হচ্ছে আগুনের বাসিন্দা, এতে তারা থাকবে
দীর্ঘকাল। আল্লাহ্ সুদখুরিকে নিষ্ফল করেছেন, এবং
দান-খয়রাতকে অগ্রগামী করেছেন। আর আল্লাহ্ সকল অবিশ্বাসী পাপীকে ভালোবাসেন না।”
আল্লাহ্ যেন আমাদের সফলতা দান করেন, সালাম ও দরূদ বর্ষিত হোক আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর উপর, তার পরিবার এবং সাথীদের উপর।
মূল উৎসঃ
ফাতওয়া আল-লাজনাহ আদ-দাই’য়িমাহঃ ভলিউম ১৫, পৃষ্ঠা ৪৫-৪৬, ফাতওয়া নম্বরঃ ২৯৩০।
স্থায়ী ফাতওয়া কমিটির সদস্যবৃন্দঃ-
১. সদস্যঃ আল্লামাহ, শায়খ আব্দুল্লাহ ইবনে ক্বুওদ রাহি’মাহুল্লাহ
২. সদস্যঃ আল্লামাহ, শায়খ আব্দুল্লাহ ইবেন গুদাইয়্যান রাহি’মাহুল্লাহ
৩. ডেপুটি চেয়ারম্যানঃ আল্লামাহ, শায়খ আব্দুর রাজ্জাল আরিফী রাহি’মাহুল্লাহ
৪. চেয়ারম্যানঃ “ইমাম” আব্দুল আ’জিজ ইবনে আবদুল্লাহ
ইবনে বাজ রাহি'মাহুল্লাহ
মূল ফতোয়ার লিংকঃ-
http://alifta.net/Fatawa/FatawaDetails.aspx?languagename=en&View=Page&PageID=5478&PageNo=1&BookID=7