প্রেম ভালোবাসা কি আসলেই শয়তানের উপহার??
আজকে সকালে আমি লিখেছিলামঃ
“স্বামী স্ত্রী মাঝে
ভালোবাসা সৃষ্টি করে দেন আল্লাহ তায়ালা, আর প্রেমিক
প্রেমিকার মাঝে ভালোবাসা সৃষ্টি করে বিতাড়িত শয়তান। শয়তানের দেওয়া উপহার বিয়ে
বহির্ভূত ভালোবাসা নিয়ে যারা ঘর বাধার স্বপন দেখছেন আশা করি বিষয়টা মাথায় রাখবেন।
আল্লাহর অভিশাপ শয়তানের উপরে, শয়তানের কাজকর্মে লিপ্ত
হলে সেই অভিশাপ কি কোন মানুষের উপরেও পড়বেনা?”
আমার এই লেখার উপরে বেশ কিছু ভাই আপত্তি
তুলেছেন,
বিয়ে বহির্ভূত নারী ও পুরুষের মাঝে সম্পর্ককে শয়তানের কাজ
বলে মেনে নিতে। নিচে আমি কিছু ক্বুরানের ৩টি আয়াত ও তার উপরে সংক্ষি্পত আলোচনা
তুলে দিলাম, আপনারাই বিবেচনা করুণ।
বারাক-আল্লাহ ফীকুম।
admin : আনসারুস সুন্নাহ
শয়তান মানুষকে প্রতিশ্রতি দেয় এবং
মানুষের মনে মিথ্যা আশা-বাসনা সৃষ্টি করেঃ
“সে (শয়তান) প্রতিশ্রতি
দেয় এবং মানুষের মনে মিথ্যা বাসনার সৃষ্টি করে। আসলে শয়তান তাদের যে ওয়াদা দেয়
তা প্রতারণা ছাড়া আর কিছুইনা।”
[সূরা ৪ আন নিসাঃ আয়াত ১২০]
***শয়তান নারী ও পুরুষকে কাছে এনে তাদের
মাঝে যোগাযোগ ও আকর্ষণ সৃষ্টি করে দেয়। যার ফলে তারা অবৈধভাবে একজন আরেকজনকে কামনা
করতে থাকে আর মনে করে তাকে পেলেই সে সুখী হতে পারবে। এইভাবে পুরুষদেরকে নারীদের
দিয়ে এবং নারীদেরকে পুরুষদের দিয়ে শয়তান আদম সন্তানদের ধোঁকা দিয়ে পাপাচারে লিপ্ত
করে।
শয়তান মানুষের মন্দ কাজকে তাদের কাছে
শোভনীয় ও মোহনীয় করে তোলেঃ
“শয়তান তাদের মন্দ
কাজসমূহকে তাদের দৃষ্টিতে চমৎকার ও মনোহরী করে তোলে এবং এভাবে তাদের সরল সঠিক পথ
অবলম্বনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।”
[সূরা ২৯ আনকাবুতঃ আয়াত ৩৮]
***অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত নারী পুরুষের
কামনা (অন্তরের যিনা), হারাম দৃষ্টিপাত (চোখের যিনা), স্পর্শ করা (হাতের যিনা), অশ্লীল কথা বলা (কথার
যিনা),
বিভিন্ন প্রকার নোংরামি ও অশ্লীলতা এমনকি সর্বশেষ
যিনা-ব্যভিচার, পরকীয়াতে লিপ্ত করে। এতো জঘন্য কাজে
লিপ্ত থেকেও তারা এইগুলোতে জড়িত থাকে, কারণ শয়তান এই
পাপগুলোকে তাদের কাছে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করে যে, তারা এইগুলোর মোহ থেকে বেড়িয়ে আসতে পারেনা।
শয়তান মানুষকে অশ্লীল ও মন্দ কর্মে
প্রলুব্ধ করেঃ
“যে শয়তানের পদাংক
অনুসরণ করে, সে জেনে রাখুক, শয়তান অশ্লীল ও মন্দ কাজের আদেশ দেয় (প্রলুব্ধ করে)।”
[সূরা ২৪ আন নূর : আয়াত ২১]
***শয়তান সবার প্রথম আদম আঃ ও হাওয়্যা
আঃ কে আল্লাহর নিষেধের কাজে কুমন্ত্রনা দিয়ে তাদের লজ্জাস্থান প্রকাশ করে দিয়েছিল।
এইজন্য আজ পর্যন্ত শয়তানের ১ নাম্বার চাল হচ্ছে অশ্লীলতা ও নগ্নতা। এইযে বর্তমানে
টিভিতে,
পেপারে, রাস্তায় শরীর দেখানো
অর্ধনগ্ন বেহায়া মেয়েদেরকে দেখতে পাচ্ছেন – এটা একটা শয়তানী ষড়যন্ত্র, পুরুষদেরকে উত্তেজিত
করে তাদেরকে যিনার রাস্তায় নিয়ে যাওয়া। ইসলাম এইজন্য নারীদেরকে সম্পূর্ণ কভার করতে
আদেশ করেছে, যাতে করে পুরুষদের জন্য কোন প্রকার
ফেতনা না থাকে।
যারা হিদায়াতের পথ দেখতে পেয়েও তা
পরিত্যাগ করে, শয়তান তাদের কাজকে শোভন করে দেখায় এবং
তাদেরকে মিথ্যা আশা দেয়ঃ
“হিদায়াত সুস্পষ্টভাবে
প্রকাশিত ও প্রমাণিত হবার পর যারা তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, শয়তান তাদেরকে তাদের এ আচরণ শোভন ও চমৎকার করে দেখায় এবং তাদেরকে মিথ্যা আশা
আকাংখায় লিপ্ত করে রাখে।”
[সূরা ৪৭ মুহাম্মদ : আয়াত ২৫]
***প্রেম-ভালোবাসায় লিপ্ত থেকে বহু ছেলে
সময়, পড়াশোনা ও জীবন নষ্ট করে, বহু মেয়ে প্রেমিকের মন
রক্ষা করতে গিয়ে সতীত্ব নষ্ট করে গর্ভবতী হয়, এবোরশান করে
সন্তান,
নিজের স্বাস্থ্য ও জীবন নষ্ট করে। বছরের পর বছর অনিশ্চিত
ঝুলে থাকে কবে বিয়ে হবে, শেষে বিয়ে হয়না, প্রেমিক/প্রেমিকা ধোঁকা দেয়। এ সবই হচ্ছে, আল্লাহর আদেশ
(হেদায়েত) লংঘন করে পাপাচারে লিপ্ত হওয়ার দুনিয়াবী সামান্য প্রতিদান, আর পরকালের শাস্তি আরো কঠিন।