রোযা শুরু হলো অনেকদিন, এর প্রথম দশক প্রায় শেষের দিকে – তারপরেও
অনলাইন ও অফলাইন মিলিয়ে নির্ভরযোগ্য সোর্স থেকে প্রাপ্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করে দুঃখজনক
হলেও কিছু সত্যি কথাঃ
“আর আমি সৃষ্টি করেছি জাহান্নামের জন্য বহু জ্বিন ও মানুষ। তাদের অন্তর আছে,
কিন্তু তার দ্বারা তারা চিন্তা-ভাবনা করে না, তাদের চোখ আছে কিন্তু তার দ্বারা তারা দেখেনা,
আর তাদের কান আছে কিন্তু তার দ্বারা
তারা শোনে না। তারা চতুষ্পদ জন্তুর মত; বরং তাদের চেয়েও
নিকৃষ্টতর। তারাই হল উদাসীন ও শৈথিল্যপরায়ণ।”
সুরা আল-আ’রাফঃ ১৭৯।
১. পুরুষদের মাঝে এখনো দাড়ি চাছার ‘ফাসেকী’ কাজ চলছে, মেয়দের
মতো গাল চকচকে করে রাখার ইয়াহুদী, খ্রীস্টান ও কাফের-মুশরেকদের তরীকা থেকে তোওবা করে
রাসুল সাঃ এর আদেশ মোতাবেক দাড়ি রাখার মতো ঈমানী শক্তি অর্জন করা সম্ভব হলোনা বেশিরভাগ
যুবকেরই।
২. বাইরে গেলে প্যান্ট টাখনুর উপরে পড়তে অনেকেই লজ্জা পায়,
মানুষ কি মনে করে? কেয়ামতের দিন শতকোটি মানুষের সামনে উলংগ অবস্থায় যখন জাহান্নামে
প্রবেশ করিয়ে অপমানজনক শাস্তির দেওয়া হবে, তখন তার স্বাদ কেমন লাগবে এটা নিয়ে চিন্তা
করার সময় অনেকেরই নেই।
৩. বোকা কিসিমের মেয়দেরকে প্রেমের ফাদে ফেলে তাদের সাথে সম্পর্ক
করা ও তাদেরকে অবৈধভাবে উপভোগ করার চরিত্রহীনতা এই রমযানেও মাঝেও চলছে সমানতালে। এমনকি
রোযা অবস্থাতেও অনেকে তোওবা না করে অবৈধ সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছে। বহু কলেজ ইউনিভার্সিটির
সামনে দিয়ে গেলে আপনি ধান্দায় পড়ে যাবেন – এইখানে পড়াশোনা হয় নাকি ‘নাইটক্লাবের নষ্টামি’
শিক্ষা দেওয়া হয়। বাবা মায়েরা উচ্চ শিক্ষার(!) আশায় চোখ বন্ধ করে এই সমস্ত চরিত্রহীন
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছেলে মেয়দেরকে পাঠাচ্ছে – প্রতিদানঃ ইয়াবা, মদ, জুয়া ড্রাগসে আসক্ত
ছেলে, রংবাজি করে হারাম উপার্জন করা খুনি সন্ত্রাসী, পতিতা পর্যায়ের শিক্ষিত(!) মেয়ে…
জাহান্নামের একদিন পৃথিবীর কত দিনের সমান? মুরগির আত্মা কিছু
ছেলেরা বলে – ভাই সম্পর্ক হয়ে গেছে, ওকে ছাড়া থাকতে পারিনা! তারা মনে করে অবৈধ সম্পর্কের
কারনে ফাহেশা কাজে লিপ্ত থাকাটা ছোটখাট বিষয়। দুনিয়ার এই সামান্য কয়টা দিন ধৈর্য ধরতে
না পেরে হারাম কাজে লিপ্ত মানুষেরা চিন্তা করেনা – অনন্ত কালের শাস্তি যখন শুরু হবে
তখন কিভাবে ধৈর্য ধরে থাকবে?
৪. হারাম খেলা-ধূলা (ভিডিও গেমস, ফুটবল) চলছে – অনেকেই রোযা
রেখে সময় কাটানোর (নষ্ট করার) জন্য এই হারাম মাধ্যমগুলো বেছে নিচ্ছে।
৫. ইফতারি নিয়েই সিগারেটের খবিস নেশা শুরু করে দেয় অনেকে। আবার
সাহরীর সময়েও চলে সর্বনাশা ধূয়া খাওয়ার নেশা! সমস্ত আলেমরা একমত সিগারেট একটা খবিস
জিনিস, এটা অপচয় আর অপচয়কারী হচ্ছে শয়তানের ভাই। সমস্ত ডক্টররা একমত ধূমপান হচ্ছে এক
প্রকার স্লো পয়জনিং – টাকা দিয়ে সিগারেট কিনে খাওয়া আর বিষ খাওয়া একই কথা। তারপরেও
বেপরোয়া মানুষগুলো চিন্তা করেনা – কতবড় পাপ কামাই হচ্ছে এই খবিস জিনিসটা খেয়ে।
৬. গান বাজনা, নাটক সিনেমা দেখা অনেক ছেলে মনে করে এইগুলো হচ্ছে
গর্বের বিষয় – নিজে এই পাপকাজ করে আবার মানুষের মাঝে বুক ফুলিয়ে প্রচার করে বেড়ায়।
এইরকমভাবেই মুনাফেকী ঢুকে যাচ্ছে তাদের অন্তরে, ফলে তাদের ঘরের মেয়েরা বেপর্দা, বয়ফ্রেন্ডের
কথা ফেইসবুকে প্রচার করে বেড়ায় – তবুও তাদের মাঝে কোন ফিলিংস নাই, শিরকি কুফুরী হিন্দুদের
মূর্তিপূজার নাটক-সিনেমা ও গান বাজে তাদের
ঘরে – তাদের ঈমানের ফিল্টারে এইগুলোও কিছু যায় আসেনা।
৭. সুদী চাকরী, সুদের কোম্পানি থেকে লাভবান হওয়া, বিসমিল্লাহ
বলে সুদের ফাইল খোলা অফিসার। ঈদ উপলক্ষে ঘুষ দাবী, রোযা রেখে ঘুষের জন্য সাধারণ মানুষকে
হয়রানি করা, খাদ্যে ফরমালিনের মতো বিষ দেওয়া, ঈদ উপলক্ষে জেনা-ব্যভিচারের নাটক সিনেমা,
গান-বাজনা বানানো, এইগুলোর জন্য মানুষের কাছে দুয়া চাওয়া। আশ্চর্যজনকভাবে এই মানুষগুলোর
কেউ কেউ নিজেকে মুসলমান মনে করে, মুসলমানদের সাথে রোযার মাসে না খেয়ে থাকে।
সর্বশেষ, হারাম ও পাপ কাজে লিপ্ত থেকে, নিজের কুপ্রবৃত্তির
অনুসরণ করে, অল্প সময়ের দুনিয়া ভোগ করে যারা জাহান্নামে যাবে তারা জাহান্নামে গিয়ে
যেই কথা বলবেঃ
“তারা (জাহান্নামবাসীরা) আরও বলবেঃ আমরা যদি (নবী রাসূলদের
কথা) শুনতাম অথবা বুদ্ধি খাটাতাম, তাহলে আমরা জাহান্নামবাসীদের মধ্যে থাকতাম না।”
আল্লাহ আমাদের বোঝার তোওফিক দান করুন – আমিন।