জেএমবি,
তাকফিরী, জসীম উদ্দিন রাহমানী, গালিবাজ লোকদের ব্যপারে সতর্কবাণী এবং বাংলাদেশে
খারেজী মতবাদের আমদানি (পর্ব -১)...
কিছুদিন পূর্বে #খারেজী কারা, খারেজীদের
লক্ষণগুলো কি এইনিয়ে পোস্ট দিলে আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করলাম, কিছু মানুষের অবস্থা
যেন জোঁকের মুখে লবণ দিলে যা হয়, ঠিক তেমনি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম যাদেরকে জাহান্নামের #কুকুর বলেছেন, তাদের ইতিহাস ও পরিচয় নিয়ে পোস্ট দিলাম,
এতেও কিছু মানুষ যারা নিজেদেরকে মুসলিম দাবী করে তারা খেপে গিয়ে আমাদেরকে নোংরা
ভাষায় গালি ও অভিশাপ দেওয়া শুরু করলো, আমি নাকি সৌদির আরবের দালালী করছি, #মুজাহিদদেরকে
খারেজী বলছি, নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক।
অন্য আরেকটা পোস্টে শায়খ মুনাজ্জিদের
ফতোয়ার মাঝে জিহাদের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করার বিষয়টা নিয়ে কেউ যাতে বিভ্রান্ত না
হন, সেইজন্য ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রচিত ‘ইসলামের নামে জঙ্গিবাদ’ বইটি পড়তে সাজেস্ট করি। এরই প্রেক্ষিতে
একজন আমাদেরকে মেসেজ করে অভিযোগ করেন, জসীম উদ্দিন রাহমানী নামের তাদের এক শায়খ ড.
খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীরের সমালোচনা করেছেন, কারণ তিনি নাকি কাফের-মুশরিকেদের
সাথে ষড়যন্ত্র করে মুসলিমদেরকে নিরস্ত্র করতে চাচ্ছেন, মুসলিমদেরকে জিহাদ থেকে বিরত
রেখে তাঁদেরকে আমেরিকার গোলাম বানাতে চাচ্ছেন!!
মেসেজাদাতা আরো
অভিযোগ করে বললেন, আমরা নাকি আওয়ামীলীগ সরকারের দালালী করছি। শুধু দাওয়াতের কথাই
বলি, জিহাদের কথা বলিনা!!
=> দালাল
অর্থ হচ্ছে, যে টাকা খেয়ে নিজের ঈমানকে বিক্রি করে দেয়, ব্যক্তিগত লাভের জন্য
ইসলামের দুশমনদের হয়ে কাজ করে। কোনরকম প্রমান ছাড়াই তিনি নিজের মনমতো আমাদেরকে
#দালাল বলে ঘোষণা করে বসলেন! অথচ, ইসলামের শিক্ষা হচ্ছে, স্পষ্ট প্রমান ছাড়া কাউকে
দালাল বলে গালি দেওয়াতো দূরের কথা – কারো সম্পর্কে #খারাপ চিন্তা করাই হচ্ছে পাপ! এমনকি যারা আন্দাজে কথা বলে
তারা যেন ধ্বংস হয় বলে ক্বুরানে তাদের ব্যপারে কঠোর সতর্কবাণী উচ্চারণ করা হয়েছে।
কথা প্রসংগে
বলে রাখা ভালো, মেসেজদাতা হচ্ছেন একজন নারী। আর আপনি যদি একটু খোঁজ-খবর জানা থাকে
বর্তমান দুনিয়ার বাস্তবতা সম্পর্কে, তাহলে নিশ্চয়ই জেনে থাকবেন, বর্তমানে কিছু #তরুণ
যুবক বের হয়েছে যারা মুসলিম দেশগুলোতে বুলেট দিয়ে বা বোমাবাজি করে অথবা, নির্বাচন,
ভোট, হরতাল, অবরোধ বা ভাংচুর ইত্যাদি অনৈসলামিক কাজ দিয়ে #শরিয়াহ_কায়েম করতে চান।
আর কেউ যদি তাদের প্রচার করা চরমপন্থী মতবাদের সাথে একমন না হন – তাহলে তাকে মুনাফেক, দালাল,
মুর্তাদ, তাগুতের গোলাম, ইয়াহুদী-খ্রীস্টানদের পাচাটা কুকুর, দরবারী আলেম ইত্যাদি
আজেবাজে গালি দেওয়া হচ্ছে। আগে এটা আরব ও ইংরেজী ভাষাভাষী মুসলিমদের মাঝে একটা
ট্রেন্ড চালু ছিলো যা বিগত কয়েক বছর ধরে বাংলা ভাষাভাষী মুসলিমদের মাঝেও দেখা
যাচ্ছে। আর যেহেতু বর্তমানে অনেক কিছুতেই নারীরা পুরুষদের সাথে সমানতালে কাজ করে
যাচ্ছে, তাই এইরকম গালিবাজ ফতোয়াবাজদের মাঝে পুরুষদের পাশাপাশি বাংলাদেশী নারীদের
অংশগ্রহণও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অথচ, নারীদের দায়িত্ব ও পুরুষদের দায়িত্ব এক নয়, আর
আলেম না হয়ে দ্বীনের ব্যপারে মতামত দেওয়াতো পুরুষদের জন্যই কতোটা জঘন্য ও ভয়াবহ। দুঃখজনক
হলেও সত্যি কথা হচ্ছে - ফেইসবুক শায়খ, ইউটিউব মুফতি মুহাদ্দিসদের পাল্লায় পড়ে অনেক
পুরুষদের সাথে সাথে অনেক দ্বীনদার নারীরাও #তাকফিরী ফেতনার শিকার হচ্ছেন। আল্লাহ
আমাদের সবাইকে নিরাপদ রাখুন।
চলবে (ইন শা’ আল্লাহ)....