আজকে একজনের
কথা শুনলাম যাদের ৫ বোনই ব্রেস্ট ক্যন্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করেন। কিছু
কিছু ক্যান্সার আছে যেইগুলো বংশগত, ব্রেস্ট ক্যান্সার তার মাঝে একটা।
মানুষের জীবনে
দুঃখ-কষ্ট ও বিপদ-আপদ দিয়ে আল্লাহ তাদের ঈমানের পরীক্ষা করেন, এর বিপরীতে তাদের
গুনাহ-খাতা ও ভুল-ভ্রান্তিকে মাফ করে তাদেরকে পবিত্র করেন ও জান্নাতে উচ্চ
মর্যাদার জন্য যোগ্য করেন। আমরা সামান্য বিপদেই অধৈর্য হয়ে নিজেদের ভাগ্যের দোষ দিতে
থাকি, অনেকে আল্লাহ সম্পর্কে মন্দ ধারণা করে, তাকদীরের প্রতি অসন্তুষ্ট হন, হতাশ
হয়ে পড়ে...
এই সবগুলো
অকৃতজ্ঞ, নফরমানি ও ঈমানী দুর্বলতার লক্ষণ। মানুষের স্বভাব সম্পর্কে মহান আল্লাহ
তাআ’লা বলেনঃ
আ’উযু বিল্লাহিমিনাশ-শাইতানির রাযীম।
৪৯. মানুষ উন্নতি কামনায় কখনো ক্লান্ত হয় না; যদি তাকে অমঙ্গল স্পর্শ করে, তবে সে
সম্পূর্ণ রূপে হতাশ হয়ে পড়ে।
৫০. বিপদাপদ স্পর্শ করার
পর আমি যদি তাকে আমার অনুগ্রহ আস্বাদন করাই, তখন সে বলতে থাকে, এটাতো আমার প্রাপ্যই
ছিলো; আমি মনে করি না যে, কেয়ামত কোনদিন সংঘটিত হবে। আর আমি যদি আমার পালনকর্তার কাছে
কখনো ফিরে যাই, তাহলে নিশ্চয়ই তাঁর কাছে আমার জন্য কল্যাণ রয়েছে। অতএব, আমি কাফেরদেরকে
তাদের কর্ম সম্পর্কে অবশ্যই অবহিত করব এবং তাদেরকে অবশ্যই আস্বাদন করাব কঠিন শাস্তি।
৫১. আমি যখন মানুষের প্রতি
অনুগ্রহ করি তখন সে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং পার্শ্ব পরিবর্তন করে। আর যখন তাকে অনিষ্ট স্পর্শ
করে, তখন সে লম্বা দোয়া করতে থাকে।
সুরা হা মীম
সাজদাহঃ ৪৯-৫১।
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
“দুনিয়ায় যারা বিপদ-আপদে নিপতিত হয়েছে তাদেরকে যখন কিয়ামতের দিন বিনিময় প্রদান
করা হবে তখন বিপদ-আপত মুক্ত ব্যক্তিরা আশা করবে, দুনিয়ায় যদি তাদের চাঁমড়া কাচি দিয়ে টুকরা টুকরা করে ফেলা হত।”
সহিহ আত্
তিরমিজি,
সংসারের প্রতি অনাসক্তি অধ্যায়, হাদিসঃ ২৪০২, হাদীসটি হাসান সহীহ।
তবে আল্লাহ
বিপদ দেন, আবার আল্লাহ আমাদেরকে বিপদ-আপদ ও ফেতনা থেকে বাঁচার জন্য উপায়-উপকরণ অবলম্বন
করতে বলেছেন। আপনি যদি সহীহ দুয়ার বই (হিসনুল মুসলিম, ১০০০ সুন্নত...) অথবা সুন্নাহর
গ্রন্থগুলো পড়েন (রিয়াদুস সালেহীন, আদাবুল মুফরাদ...), তাহলে দেখবেন রাসুল সাঃ কত
ধরণের খারাপ জিনিস থেকে আল্লাহর কাছে বারবার আশ্রয় চাইতেন, মন্দ ভাগ্য থেকে বেঁচে
থাকার জন্য দুয়া করতেন। কবরের আজাব, জাহান্নামের শাস্তি, বার্ধ্যক্য জনিত কষ্ট
থেকে, ঋণগ্রস্থ হওয়া থেকে, পাপাচার ও কুফর থেকে, নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা,
দ্বীন ও দুনিয়ার নিরাপত্ত...এমন কত যে দুয়া সুন্নাহর মাঝে এসেছে...
দুয়া ছাড়া আরেকটা
উপায় হচ্ছে, দুনিয়াবী উপকরণ গ্রহণ করা। যেমন, বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ালে ব্রেস্ট
ক্যান্সারের চান্স কমে যায়। আজকাল মানুষ সন্তান কম নেয় ফলে বুকের দুধ খাওয়ানো কমে
গেছে, গর্ভনিরোধক বড়ি, ইঞ্জেকশান নেয়, এই সবগুলো হচ্ছে উচ্চমাত্রার #হরমোন যার
দ্বারা শরীরের অনেক কৃত্তিম পরিবর্তন করা হচ্ছে। একারণে ৪০ উর্ধ অনেক নারীদের মাঝে
স্থূলতা, ডায়েবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ অনেক জটিল ব্যধি বেড়ে গেছে। এছাড়া পুরুষের
সিগারেট তাদের লাংস, হার্ট ধ্বংস করে দেয়, পুরুষদের হার্ট এটাক, ডায়েবেটীস,
উচ্চরক্তচাপের বড় একটা কারণ #স্মোকিং। সাধারণ মানুষদের কথা কি বলবো, মেডিকেলে পড়া ডাক্তার
যখন দেখি শয়তানের ধোঁকায় পড়ে বিবেক বুদ্ধিকে না খাটিয়ে, হাসপাতালের কম্পাউন্ডেই
বসে সিগারেট টানছে, তখন আল্লাহর ঐ আয়াতটার কথা মনে পড়ে – “যাদেরকে কিতাব দেওয়া হয়েছে কিন্তু
তার উপর আমল করেনা, তাদের উপমা হচ্ছে পুস্তকবহনকারী #গাধার মতো। কত নিকৃষ্ট সেই
উদাহরণ!” (সুরা জুমুয়াহ)
যাই হোক, সমস্ত
হারাম কাজ থেকে বেঁচে চলা, সুন্নাহর অনুসরণ বা সতর্ক হয়ে জীবন যাপন করলে ও আল্লাহর
কাছ থেকে বিপদ থেকে নিয়মিত আশ্রয় চাইলে ইন শা’ আল্লাহ নিরাপদ থাকা যাবে। প্রসংগক্রমে
বলে রাখা ভালো, প্রতিটা নারীর জানা থাকা উচিত ব্রেস্ট ক্যান্সারের লক্ষণগুলি, যাতে
করে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
এক্ষেত্রে
স্বাস্থ্য সেবাদানকারী এনজিওগুলোর বিভিন্ন প্রচারণা আছে, সেইগুলোর দিকে লক্ষ্য
রাখলে আশা করি মা-বোনেরা প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো জানতে পারবেন। তবে খেয়াল রাখবেন, এই
এনজিওগুলো আসলে ইসলামের #দুশমনের দ্বারা পরিচালিত, এবং এদের গোপন ষড়যন্ত্র আছে,
ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে। বার্থ কন্ট্রোল তার মাঝে একটা, এছাড়া তাদের আরো অনেক
প্রোগ্রাম আছে, আপনি বুঝেন আর না বুঝেন, এটাই সত্যি। আর অতি সম্প্রতিতো অষ্টম শ্রেণীর
কিশোরী মেয়েদেরকে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে, কিভাবে বহু পুরুষের সাথে নিরাপদে(!) শারীরিক
সম্পর্কে রাখতে পারে। একটা নারীকে নষ্ট করা মানে একটা পরিবারকে ধ্বংস করা, একটা
নষ্ট মেয়েকে যে বিয়ে করবে, তার স্বামী-সন্তান গোটা পরিবারটাই নষ্ট হবে...
সহশিক্ষা ও
নারী-পুরুষের ফ্রী মিক্সিং দিয়ে নারীদেরকে #হেজাব পর্দা থেকে বের করে তাদের চরিত্র
ও সতীত্ব নষ্ট করার মাধ্যমে মুসলমানদের সমাজকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র ১৮ ও ১৯ দশকের
ওরিয়েন্টালিস্টরা (ইসলামের দুশমন) প্রকাশ্যেই ঘোষণা দিয়েছিলো।
হায় আফসোস!
আজকে মুসলমানেরা দুনিয়ার লোভে (নারী, সম্পদ, ভোগ-বিলাস...) তাদের শত্রুদের (মানুষ
ও জিন শয়তানের) কথা শুনে নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারছে, আর কাফেরদের কাছে প্রতিটা
জায়গায় মার খাচ্ছে। যারা আলেম তারা বিপদ থেকে উম্মতকে আগেই সতর্ক করে দেন। আর যারা
জাহেল ও প্রবৃত্তির অনুসারী তারাও বিপদটা বুঝতে পারে, কিন্তু সেটা ধ্বংস হয়ে যাওয়ার
পরে, ততক্ষণে অনেক দেরী হয়ে যায়। মিশরে মুসলমানদের উপরে যে বিপদ এসেছিলো ওলামায়ে #রব্বানীরা
আগেই উপদেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু আবেগের ঘোড়ায় সওয়ার হয়ে, পথভ্রষ্ট মূর্খ আলেমদের
পাল্লায় পড়ে, যেইটা ইসলাম নয় সেটার জন্য শহীদ হওয়ার (আল্লাহর রাস্তায় নয়, শয়তানের
রাস্তায়) বাসনা নিয়ে অনেকেই #বেকার তাদের জীবন ও সম্পদ নষ্ট করেছে...
বিপদগ্রস্থ,
অসহায় ও দুর্বল ও রোগীদের সেবা বা সাহায্য করা #অন্তর নরম করার একটা আমল, দুনিয়া ও
পরকালের অনেক হিসাব মেলাতে সাহায্য করে। মৃত্যু পথযাত্রী বা কঠিন রোগে আক্রান্ত
কাউকে দেখতে গেলে অনেক সওয়াব ও ফেরেশতারা যেমন তার জন্য দুয়া করে...তার পাশাপাশি
তাদেরকে দেখলে আপনি বুঝতে পারবেন, তাদের তুলনায় আল্লাহ আপনাকে কত বেশি নিয়ামত দান
করেছেন।
“যে সকল বস্তু তোমরা চেয়েছ, তার প্রত্যেকটি থেকেই তিনি তোমাদেরকে
দিয়েছেন। যদি আল্লাহর নেয়ামত গণনা কর, তবে তোমরা সেইগুলো গুণে শেষ করতে পারবে না। নিশ্চয়
মানুষ অত্যন্ত জালেম এবং অকৃতজ্ঞ।”
সুরা ইব্রাহীমঃ ৩৪।
একটি মাসয়ালাঃ
বিপদ বা
পরীক্ষার জন্য কখনো দুয়া করা যাবেনা, বিপদ বা পরীক্ষা কামনা করা সম্পূর্ণ হারাম।
বরং পরীক্ষা থেকে বাঁচার জন্য দুয়া করতে হবে। অতীতে এমন হয়েছে, অনেক জ্ঞানী ও
আল্লাহওয়ালা লোকও পরীক্ষা কামনা করেছে, কিন্তু পরে অধৈর্য হয়ে গেছে। এমন একজন
লোকের কথা ওলামারা উল্লেখ করেছেন, যেকিনা পরীক্ষায় পড়ে অধৈর্য হয়ে পরে ছোট
শিশুদেরকে বলতো তার জন্য দুয়া করতে, (ছোট বাচ্চারা নিষ্পাপ, আল্লাহ তাদের দুয়া
দ্রুত কবুল করতে পারেন এই আশায়)।