নারীশিক্ষাঃ ইসলাম ও কাফের-মুশরেকদের ষড়যন্ত্র
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “(দ্বীনের) জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেক
মুসলমান (নর ও নারীর) উপর ফরয।” ইবনে মাজাহ, হাদীস সহীহ।
একজন মনীষি বলেছেন, “তোমরা আমাকে একজন শিক্ষিত
মা দাও, আমি তোমাদেরকে একটা শিক্ষিত জাতি উপহার দেবো।”
নারীদের একটা গুণ, সেটাকে
আপনি ভালো বলেন আর খারাপই বলেন, তাহলো তারা খুব সহজেই প্রভাবিত হয়ে যায়। ভালোর দিকে শিক্ষা দিলে ও উৎসাহিত করলে করলে ভালোর দিকে, খারাপ
পরিবেশ বা খারাপ সংগীর পাল্লায় পড়লে খারাপের দিকে। সে তুলনায়, পুরুষেরা অনেক বেশি একরোখা, জেদী ও বদ মেজাজী, পুরুষেরা সাধারণত নিজেদের ভুল
স্বীকার করতে চায়না, এইজন্য তাদের সংশোধন তুলনামূলক কঠিন। কিন্তু আফসোসের বিষয় হচ্ছে, আমাদের অনেক মুসলমান নারীদের উপর ক্বুরআন ও সুন্নাহর চাইতে কাফের ও মুশরেকদের প্রভাব বেশি।
=> নারীরা টিভি চ্যানেল
দেখে হিন্দী বা মূর্তি পূজারীদের, সেই হিসাবে তারা মুশরেকদের
সংস্কৃতি সভ্যতার প্রতি বেশি আকৃষ্ট।
=> নারীরা পত্রিকা/ম্যাগাজিন পড়ে, গল্পের বই বা উপন্যাস পড়ে দুনিয়া পূজারী
সেকুলার, মুর্তাদ, মুনাফেক, হিন্দু লেখক ও
ঔপন্যাসিকদের। সে হিসাবে তাদের চিন্তাভাবনা, জীবনের ব্যপারে দৃষ্টিভংগি, মোটিভেশান অনেক ক্ষেত্রেই ইসলামের সাথে সামাজস্যপূর্ণ
নয়।
=> অধিকাংশ নারীরা পড়াশোনা করে ক্বুরআন
হাদিস বাদ দিয়ে, বা থাকলেও নামকাওয়াস্তে, লোকদেখানো, কাফেরদের
প্রেসিক্রিপশান অনুযায়ী ইসলাম বিরোধী সেকুলার শিক্ষা-ব্যবস্থায়, নারী পুরুষ অবাধ মেলামেশার
পরিবেশে, যেখানে খুব সহজেই তাদের ঈমান, চরিত্র ও সতীত্ব নষ্ট হচ্ছে।
দুনিয়াবী ফেতনা-ফাসাদ থেকে বাঁচার জন্য যে উপায়, নারীদেরকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ক্বুরআন ও সুন্নাহ শিক্ষা দেওয়া, ইসলামী আদর্শে
গড়ে তোলা, সেটা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত কম। বয়ষ্ক নারীদের প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ক্বুরান ও সুন্নাহ শিক্ষার কোন সুযোগ নাই, বেদাতীদের দ্বারা
নিয়ন্ত্রিত মসজিদগুলোতে নারীদের প্রবেশ সম্পূর্ন নিষিদ্ধ। অথচ
ইসলাম শিক্ষা, ক্বুরান ও সুন্নাহ প্রচার ও প্রসারের সেন্টার হওয়া উচিত ছিলো এই মসজিদগুলো,
যেই দায়িত্ব পালনে তারা অনেকক্ষেত্রেই ব্যর্থ! এইভাবে
ইসলাম সম্পর্কে প্রায় অন্ধকারে থেকেই বড় হচ্ছে নারীরা, তার মানে দেশের অন্তত ৫০% মানুষ।
আমার কথা বিশ্বাস না হলে, প্রচলিত শিক্ষা
ব্যবস্থায় দশজন উচ্চশিক্ষিত নারীকে জিজ্ঞেস করে দেখুন,
কয়জন অন্তত দশটা সুরার অর্থ ও তাফসীর জানেন? সালাত কি পড়ছেন, তার অর্থ কয়জনে জানে? ঈমান, আকীদাহ, ফিকহ,
সুন্নাহ এইগুলো সম্পর্কে অন্তত বেসিক জ্ঞান কয়জন রাখেন?
মা যদি ইসলাম সম্পর্কে ভালো না জানে,
ছেলে মেয়ে কোনদিন ভালো মুসলিম হিসেবে গড়ে উঠবেনা। আর এটাই হচ্ছে কাফের মুশরেকদের ইসলামকে
ধংস করার পরিকল্পনা। নারীদের সমান অধিকার, নারীদের ক্ষমতায়ন ইত্যাদি নামসর্বস্ব কিছু স্লোগান দিয়ে নারীদেরকে ঘর থেকে বের করে, হিজাব-পর্দা
ছাড়িয়ে তাদের মধ্য থেকে ইসলামী আদর্শ নষ্ট করে গোটা মুসলিম সমাজটাকেই
ধ্বংস করা।
এতো গেলো, নারী শিক্ষা
নিয়ে সমস্যা ও বাঁধার কথা। এবার এর সমাধানে আমাদের কি করণীয়? নারীরা যেইভাবে ইসলাম
শিখতে পারেনঃ
(১) ক্বুরআনের প্রথম আদেশ ছিলো “পড়! তোমার প্রভুর নামে, যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন” - সে হিসাবে প্রথম
শুরু করতে হবে ক্বুরআন ও সহীহ হাদীস পড়া এবং জানার মাধ্যমে। ক্বুরআন ও হাদীসের অর্থ জানা, তর্জমা,
তাফসীর ও ব্যখ্যা-বিশ্লেষণ জানার চেষ্টা করা।
(২) ভালো খুতবা হয় এমন মসজিদে জুমুয়াহর সালাত পড়া, ওয়াজ, লেকচার ও
বিভিন্ন কোর্সে সরাসরি অংশগ্রহন করা।
(৩) ইউটিউব, অনলাইন থেকে সহীহ আকীদার আলেমদের অডিও ও ভিডিও লেকচার নিয়মিত শোনা।
(৪) বড় বড় ইমাম ও ক্বুরআন ও সুন্নাহর আলেমদের অনুবাদকৃত বইগুলো
সংগ্রহ করা ও বার বার সেইগুলো অধ্যায়ন করে দ্বীনের মৌলিক
বিষয়গুলর উপরে ব্যপারে জ্ঞান অর্জন করা।
(৫) সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, ইলম বৃদ্ধির জন্য আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দুয়া
করা ও তার জন্য ‘মুজাহাদা’ বা কঠোর চেষ্টা ও পরিশ্রম করা।
(৬) সর্বশেষ, ইন্টারনেটের ফিতনাহ থেকে বেঁচে চলা। ফেইসবুক আর ইসলাম
সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুতে অবস্থান করছে। ফেইসবুক হচ্ছে মূল্যবান সময় নষ্ট আর ফেতনা। এখানে
বেদাতী, বিশুদ্ধ জাহেল বা পিউর মূর্খ, সূফীবাদী, খারেজী আকীদার লোকেরা নিজেদেরকে আল্লামাহ
দাবী করে। আর তাদের ধোকায় পড়ে সাধারণ মানুষের কাছে এই মিথ্যুক দাজ্জালেরাই হচ্ছে ইসলামিক
সেলেব্রিটি! আজকাল অনেক বেপর্দা মুফতিনি সাহেবানরাও
ফেইসবুক, ইন্টারনেটে ইসলাম সম্পর্কে ফতোয়া দিচ্ছে! ফেবু শায়খরা একদেশে জিহাদ করছে দাবী করে পোস্ট দিয়ে বাহবা কুড়ায়, আর অন্যদেশে ধরা খায়। তাই সাবধান! আলেমদের
কাছ থেকে যাচাই করে নিন, যার কথা শুনছেন তিনি কি আসলেই মুফতি, নাকি এফ.এম. মুফতি? তিনি
কি আসলেই একজন শায়খ নাকি মিল্ক শায়খ?