জসীম উদ্দিন
রাহমানীর আলেমদের নামে মিথ্যা অপবাদ ও গালি-গালাজের বয়ানঃ
জসীম উদ্দিন
রাহমানীর অন্ধ ভক্তরা মনে করে সে একজন বড় জিহাদী আলেম। অথচ তার বক্তব্যের ভাষা ও
চরিত্র, একজন আলেমতো দূরের কথা সাধারণ একজন ঈমানদারের চরিত্রের সাথে সামজস্যপূর্ণ
নয়। জসীম উদ্দিন রাহমানী নিজের ভ্রান্ত #তাকফিরী মতবাদ প্রতিষ্ঠা করার জন্য যেই
সমস্ত আলেমরা তাকফিরী খারেজী #মানহাজের বিরুদ্ধে সবচাইতে বেশি সরব, সেই সালাফি আলেমদের নামে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া শুরু করে। এর দ্বারা তার উদ্দেশ্য ছিলো
- সত্যিকারের আলেমদের ব্যপারে মানুষের মনে বিদ্বেষ ও শত্রুতা সৃষ্টি করে দেওয়া, যাতে
করে তারা আলেমদের কোন কথা না শুনে। আর সাধারণ মানুষ যদি আলেমদের কথা না শুনে, ইসলাম
সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা না হয়, তাহলে মূর্খ ও বেদাতী লোকেরা নিজেদের মনমতো যা খুশি কুরান
হাদীসের অপব্যখ্যা করলেও তারা ধরতে পারবেনা, কোনটা সঠিক আর কোনটা ভুল। এইজন্য বর্তমানে
আমরা দেখতে পাই, ক্বুরান হাদীসের স্পষ্ট বক্তব্য দিয়ে কোন কিছু বললেও জসীম উদ্দিন রাহমানীর
অন্ধ ভক্তরা শয়তান, কাফেরদের এজেন্ট, পা চাটা গোলাম, দরবারী, দালাল,
মুনাফেক, আহলে খবিস ইত্যাদি নোংরা ভাষায় গালি দেওয়া শুরু করে। হয়তোবা, প্রমানসহ
পোস্ট দেওয়ার পরেও এই পোস্টে গালি-গালাজ শুরু করবে।
=> মিথ্যা কথা বলা মুনাফেকের
চরিত্রঃ
আবু হুরায়রা রা. থেকে
বর্ণিত, রাসূল সা. বলেছেন, “মুনাফেকদের লক্ষণ হচ্ছে তিনটি
ক. কথা বলার সময় মিথ্যা
বলা,
খ. ওয়াদা করে ভঙ্গ করা
এবং
গ. আমানতের মধ্যে খেয়ানত
করা।”
সহীহ বুখারিঃ ৩৩, সহীহ
মুসলিমঃ ৫৯।
=> কোন ঈমানদারের
নামে মিথ্যা অপবাদ দেওয়ার শাস্তিঃ
রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
“যে ব্যক্তি কোন ঈমানদার সম্পর্কে এমন কিছু বর্ণনা
করে যা তার মধ্যে নেই, কেয়ামতের দিন আল্লাহ তাকে জাহান্নামীদের ঘাম, রক্ত ও পূজের
মাঝে রাখবেন যতক্ষণ না সে যেই মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে তার দায় থেকে মুক্ত হয়।”
মুসনাদে আহমাদ,
আবু দাউদ।
একজন সাধারণ
ঈমানদার সম্পর্কে মিথ্যা কথা বলার শাস্তি যদি এই হয়, তাহলে যারা আলেম, যারা হচ্ছেন
সত্যিকারের নবী-রাসূলদের ওয়ারিশ, তাঁদের সম্পর্কে মিথ্যা কথা বলে মানুষকে আলেমদের
থেকে দূরে সরানোর জন্য তাঁদের নামে মিথ্যা কথা প্রচার করা কতো বড় জঘন্য কাজ হতে
পারে?
যাই হোক, জসীম
উদ্দিন রাহমানী জেনে-বুঝে ক্বুরান ও সুন্নাহর সালাফী ওলামাদের সম্পর্কে মিথ্যা
অপবাদ দিয়েছেন। সে দাবী করেছে, সালাফী আলেমরা নাকি বুকে হাত না বাঁধলে কাফের বলে, রাফা
ইয়াদাইন না করলে কাফের বলে, জোরে আমীন না বললে কাফের বলে, (নাউযুবিল্লাহি মিন
যালিক)।
জসীম উদ্দিন
রাহমানীর আলেমদের নামে মিথ্যা অপবাদ দেওয়ার লিংক, ৫:১৭ মিনিটে -
https://www.youtube.com/watch?v=qIXVOHDRu_A
মন্তব্যঃ জসীম
উদ্দিনের যত বড় অন্ধ ভক্ত হোক, কোন একজন আলেমের কাছ থেকে প্রমান করে দেখান, বুকে
হাত না বাঁধলে সালাফী কোন আলেম তাকে কাফের বলেছেন, জোরে আমীন না বললে কাফের
বলেছেন, রাফা ইয়াদাইন না করলে কাফের বলেছেন?
মূলত আলেমদের
সাথে শত্রুতাবশত তাঁদের নামে মিথ্যা কথা বলে জসীম উদ্দিন রাহমানী তার ভক্তদেরকে
বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন। ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বাল সহ সমস্ত সালাফী আলেমরা
নামাযে বুকে হাত বাঁধা, জোরে আমীন বলা, রাফা ইয়াদাইন করা সুন্নত বলে ফতোয়া
দিয়েছেন, কোন আলেমই এইগুলোকে নামাযের ফরয-ওয়াজিব বলেন নি। আর আমরা সকলেই জানি,
নামাযের যেইগুলো শুধু সুন্নত, ফরয-ওয়াজিব নয়, সেইগুলো কেউ না করলেও তার নামায হয়ে
যাবে, শুধু সওয়াব কম হবে। এইগুলো না করলে কাফের বলার প্রশ্নই আসেনা। অথচ, আলেমদের
সাথে শত্রুতা ও নিজের অন্ধ জেদের কারণে কি নিকৃষ্ট মিথ্যা অপবাদ আরোপ করেছেন, কথিত
জিহাদী আলেম(!) জসীম উদ্দিন।
যে মিথ্যা কথা
বলেছে সেটা স্পষ্ট প্রমানিত হয়, তার গরম গরম ওয়াজের প্রেমে পড়ে সেইগুলো শুনে নিজের
দ্বীনকে কে কে ধ্বংস করতে রাজি আছেন?
এছাড়া সেই একই
বক্তব্যে আরেকটি মিথ্যাচার করেছে, সালাফী আলেমরা নাকি আল্লাহর আইন যারা মানেনা
তাদেরকে মানার কথা বলেছেন, তাদেরকেও কাফের বলেনা??
হ্যা,
সত্যিকারের আলেমরা শরিয়াহ দিয়ে দেশ পরিচালনা না করলে ঢালাউভাবে কাফের ফতোয়া দেন
না। কারণ, আল্লাহ তাদের সবাইকে কাফের বলেন নি, কাউকে কাফের বলেছেন, অন্যদেরকে (কবীরাহ
গুনাহতে) লিপ্ত ফাসেক-জালেম বলেছেন। সুতরাং, আকীদা অনুযায়ী আল্লাহর আইন দিয়ে কেউ
বিচার না করলে হতে পারে সে বড় কাফের, হতে পারে সে বড় পাপী ফাসেক, জালেম – কিন্তু ঢালাউভাবে কাফের বলা
খারেজীদের লক্ষণ। কারণ, খারেজীরা ফাসেক, জালেম কিন্তু মুসলমানদেরকে কাফের বলে
ফতোয়া দিতো। হায় আফসোস! ক্বুরান হাদীস না বুঝে, ওলামাদের কাছ থেকে ইসলাম না শিখে
জসীম উদ্দিন কাফের বলার মূলনীতি না বুঝে উলটা আলেমদেরকেই গালি-গালাজ করার স্বভাব
বেছে নিয়েছে। আর গরম গরম ওয়াজের ভক্ত ২০-২২ বছরের ছেলে-পিলেরা সাহাবা ও পূর্বয
যুগের ইমাম ও আলেমদের কাছ থেকে ইসলাম না শিখে জসীম উদ্দিনের তাকফিরি মানহাজকেই
সত্যিকারের ইসলাম বলে বিভ্রান্ত হচ্ছে।
ক্বুরান ও হাদীসের রেফারেন্সসহ
স্বনামধন্য সালাফী আলেম, আল্লামাহ শায়খ ইবনে উসাইমিন রহঃ এর বিস্তারিত ফতোয়ার লিংক-
http://ansarus-sunnah.blogspot.com/2014/09/blog-post_12.html
আল্লাহর আইন দিয়ে যে দেশ
পরিচালনা করেনা বা বিচার করেনা সে কি?
http://ansarus-sunnah.blogspot.com/2014/08/blog-post_57.html
আমাদের দেশের
একজন ইসলামী অধ্যাপক, ডা খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাংগীর স্যার খারেজী ও জেএমবির মতো
বোমাবাজি করে মানুষ মারা দলের বিরুদ্ধে ‘ইসলামের নামে জংগীবাদ’ এই নামে একটি বই লিখেন। যেহেতু
জেএমবির সাথে জসীম উদ্দিনের চিন্তা-ভাবনার মিল আছে, তাই সে আব্দুল্লাহ জাহাংগীর
স্যারকে ‘জাতীয় দালাল’ বলে গালি দিয়েছে।
লিংক – ১৭ মিনিট থেকে নিজের মনগড়া
ব্যখ্যা –
http://taifaalmansurah.wordpress.com/2013/01/18/attack-of-shaitan-through-ages-part-03/
এছাড়া, জসীম
উদ্দিন ‘একজন দরবারী আলেমের বক্তব্যের প্রতিবাদ’ নামে একটা লেকচার দেয় আমেরিকান বক্তা নোমান আলী
খানের বিরুদ্ধে। নোমান আলী খান রাসুল সাঃ এর বিরুদ্ধে ইয়াহুদীদের বানানো সিনেমার
প্রতিবাদে অনেক মুসলমানের মুসলিম দেশগুলোতে বেহুদা ভাংচুর ও রক্তপাতের বিরুদ্ধে
কিছু কথা বলেছিলো কারণ ইয়াহুদীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে মুসলমান দেশে ভাংচুর
আসলে মুসলমানদেরই ক্ষতি, কাফেরদের কোন ক্ষতি নেই, বরং মুসলমানেরা নিজেরাই নিজেদের
সম্পদ নষ্ট করেছে দেখে তারা মুসলমানদেরকে নিয়ে হাসাহাসিই করবে। সেই লেকচারে সে
সরাসরি নোমান আলী খানকে দরবারী আলেম, ইয়াহুদীদের দালাল, ইয়াহুদীদের চাইতে নিকৃষ্ট
বলে ফতোয়া দিয়েছে।
হতে পারে নোমান
আলী খানের কিছু কথা সঠিক নয়, তাই বলে সে দরবারী (তাগুতের টাকা খেয়ে ফতোয়া পরিবর্তন
করেছেন), ইয়াহুদীদের দালাল – এই কথা কেউ কোনদিন প্রমান করতে পারবে? কারো কথা আমার ভালো লাগে,না তাই বলে
আন্দাজে মানুষের সম্পর্কে যারা মিথ্যা অপবাদ দেয় এমন ব্যক্তিকে যারা আলেম মনে করে – এদেরকে আল্লাহ হেদায়েত করুন – এর চাইতে বেশি আর কি বলা যেতে
পারে?
=> জসীম
উদ্দিন রাহমানীর সালাফি আলেমদের নামে এই মিথ্যা অপবাদগুলো তার ভক্তরা অন্ধ ভক্তিতে
বিশ্বাস করেছে, এবং তারাও ব্যপকভাবে এই মিথ্যা কথা প্রচার করে যাচ্ছে। যাদের
মিথ্যা কথাগুলো সারা দুনিয়া রাষ্ট্র হয়ে যায় তাদের শাস্তিঃ
সামুরা ইবন জুনদুব রাদিয়াল্লাহু
‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম
প্রায়ই বলতেন,
“তোমাদের কেউ কি কোনো স্বপ্ন দেখেছে?”
তখন আল্লাহ যা মঞ্জুর করেন,
তা কেউ কেউ বর্ণনা করতেন।
একদিন প্রত্যুষে তিনি বললেন,
আমার কাছে রাতে (স্বপ্নে) দু জন আগন্তুক এসেছিল। তারা আমাকে উঠালো এবং বলল, আমাদের
সাথে চলুন। আমরা গেলাম, তখন এমন এক ব্যক্তির নিকট পৌঁছলাম, যে তার পিঠের উপরে শুয়ে
ছিল আর অন্য একজন লোহার কাঁচি নিয়ে তার উপরে দণ্ডায়মান ছিল। সে তার চেহারার এক পার্শ্বে
এসে তার চোয়াল চিরে গর্দান পর্যন্ত, তার নাসিকা চিরে গর্দান পর্যন্ত এবং তার চক্ষু
চিরে গর্দান পর্যন্ত কেটে নিয়ে যাচ্ছিল।…অতঃপর অপর চেহারার অপর পার্শ্বে গিয়ে এ পার্শ্বে যা করেছিল তাই করল। এক পার্শ্ব
শেষ করার সঙ্গে সঙ্গে আবার তা পূর্বের অবস্থায় ফিরে যেত। ফলে সে অপর পার্শ্বে গিয়ে
পুনরায় একই কাজ করত।”
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “আমি বললাম, সুবহানাল্লাহ!! এই দু জন কারা?
তারা আমাকে বলল, সামনে
এগিয়ে যান, সামনে এগিয়ে যান।”
(অতঃপর ফেরেশতা দু জন তিনি
যা দেখেছেন তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলল:) “আপনি যে লোককে দেখেছেন তার চোয়াল গর্দান পর্যন্ত, তার নাসিকা চিরে গর্দান পর্যন্ত
এবং তার চক্ষু গর্দান পর্যন্ত চিরে নেওয়া হচ্ছিল, সে হলো ঐ ব্যক্তি, যে তার ঘর থেকে
সকালে বের হয়ে এমন এক মিথ্যা কথা বলে, যা দিগন্তে ছড়িয়ে পড়ে।”
সহীহ বুখারিঃ ৫৭৪৫।