১. স্বামী বিদেশ থাকা – স্ত্রীর অধিকার নষ্ট করে কোন স্বামী যদি
দীর্ঘদিন বিদেশে থাকে এবং একারণে কোন স্ত্রী জিনা-ব্যভিচারে লিপ্ত হয় তাহলে সেই ব্যভিচারিণী
স্ত্রীর জন্য স্বামীও দায়ী থাকবে। স্ত্রীর অধিকার লংঘন হয় এমন কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার
আগে অবশ্যই স্ত্রীর অনুমতি নিয়ে নিতে হবে। অধিকাংশ স্ত্রীই হয়তো মুখ ফুটে কিছু বলবেনা
– তারপরেও খারাপ শোনা গেলেও একথাই সত্যি যে,
অনেক প্রবাসীর স্ত্রী আসলে পরপুরুষের প্রতি আসক্ত বা পরকীয়ায় লিপ্ত। তাই বাস্তবতার
কথা চিন্তা করে সঠিক সিদ্ধান্ত দিন। ঘর আগুনে পুড়ে গেলে পরে আফসোস আর আফসোস করে কোন
লাভ নেই। জীবন একটাই – যা করার ভেবে চিন্তেই করুন। আপনার ভুল সিদ্ধান্ত ও অবহেলার কারণে যেমন আপনার স্ত্রীর
চরিত্র নষ্ট হবে, তার সাথে সাথে আপনার ও আপনার সন্তানদের ভবিষ্যতও নষ্ট হবে – এমন ঘটনা বহু ঘটছে।
২. অবাধ্য স্ত্রী – বিয়ের পরে অনেক স্ত্রী নিজের অহংকারের কারণে
স্বামীর আনুগত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং স্বামীর সাথে ঘৃণা ও বিদ্বেষ পোষণ করা শুরু
করে। স্বামী যখন ঘরে যেই ভালোবাসা ও শান্তি পাওয়ার কথা সেটা থেকে বঞ্চিত হয় তখন সে
বাইরে সেটা তালাশ করে।
৩. অত্যাচারী স্বামী – অনেক পুরুষ আছে যারা স্ত্রীদেরকে মানুষই
মনে করেনা, স্ত্রীর উপরে শারিরীক ও মানসিকভাবে অত্যাচার ও নির্যাতন করে আনন্দ পায়।
এইরকম একটা পুরুষকে ভালোবাসা একটা মেয়ের জন্য উত্তপ্ত আগুনের কয়লা দিয়ে বানানো পোশাক
পড়ার মতোই কঠিন। এরকম বহু নারী একটা সময় নারী লোভী অন্য পুরুষের পাল্লায় পড়ে। কত যে
নারী এইরকম এক শয়তান থেকে বাঁচার জন্য আরো বড় শয়তানের পাল্লায় পড়ে দুনিয়া ও আখেরাত
বর্বাদ করছে।
৪. বেপর্দায় চলাফেরা করা,
গায়ের মাহরাম নারী ও পুরুষের অবাধ মেলামেশা – একটা ফতোয়াতে পড়েছিলাম – এক নারী জিজ্ঞেস করছে, তার খালাতো বোনের স্বামীর সাথে সে উঠা-বসা করতো। সেই লোকটা
তার রূপের প্রেমে পড়ে তার কাজিনকে তালাক দিয়েছে সে কি এখন তাকে বিয়ে করতে পারবে কিনা?
আরেক মেয়ে ফতোয়া জানতে চেয়েছিলো – সে নিজে অনেক ধার্মিক এবং তার পরিবারও অনেক ধার্মিক। একবার ইন্টারনেটে পরিচয় এমন
তার চেয়ে বয়সে ছোট একটা ছেলেকে আত্যহত্যার সিদ্ধান্ত থেকে বুঝিয়ে সে সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে
আনে। ছেলেটা তার বাসায় আসে তাকে ধন্যবাদ দেওয়ার জন্য, আর এইভাবে শয়তান সুযোগ নিয়ে তাদেরকে
পথভ্রষ্ট করে তাদেরকে জিনাতে লিপ্ত করে। এর ফলে সে গর্ভবতী হয়। তার পরিবার খুব ধার্মিক
ও অভিজাত ফ্যামিলির, পরিবারে সম্মান রক্ষার্থে সে গর্ভপাত করতে পারবে কিনা?
এইরকম অনেক সত্যি ঘটনা
আছে, বেপর্দা নারীদের সাথে মেশা ও গায়ের মাহরাম নারী ও পুরুষের ফ্রী মিক্সিং – কিভাবে জিনা-ব্যভিচার ও পরকীয়ার রাস্তাকে
খুব সহজ করে দিয়েছে। বর্তমানে কলেজ ইউনিভার্সিটিতে জিনা-ব্যভিচার ও অবৈধ সম্পর্কে ব্যপকতার
প্রধান একটা কারণ হচ্ছে নারী ও পুরুষের সহশিক্ষা, সহাবস্থান ও বেশিরভাগ নারীদের বেপর্দা,
অর্ধনগ্ন হয়ে চলাফেরা।
কারণ যাই হোকনা কেন, আল্লাহর
সাথে শিরক করার পর সবচাইতে বড় একটা পাপ হচ্ছে – জিনা।
জেনাকারী, নারী-পুরুষের
অবৈধ যৌন সম্পর্কের শাস্তিঃ
চুলার ন্যায় বড় একটা গর্ত
থাকবে যেন সেটা বিশাল একটা কড়াই। গর্তের উপরিভাগ হচ্ছে সরু ও নীচের অংশ চওড়া এবং এর
নিচ থেকে আগুন জ্বলতে থাকবে। এর ভেতরে জেনাকারী নারী ও পুরুষদেরকে উলংগ করে আগুনে পুড়িয়ে
শাস্তি দেওয়া হবে। আগুন গর্তের একেবারে মুখের কাছে চলে আসলে জেনাকারীরা আগুনের তাপ
সহ্য করতে না পেরে উপরে চলে আসবে যেন তারা গর্ত থেকে পালিয়ে যেতে পারে। ফেরেশতারা তাদেরকে
আবার আগুনের গর্তে ফেরত পাঠাবেন। আগুনের তাপ একটু কমে আসলে তারা আবার গর্তে নিচে ফিরে
যাবে। এইভাবে তাদেরকে কেয়ামত পর্যন্ত শাস্তি দেওয়া হবে।
ঘরে স্বামী/স্ত্রী রেখে
অন্য কারো সাথে জেনা করার শাস্তিঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) মি’রাজের রাত্রিতে একদল লোকের কাছে উপস্থিত হয়ে দেখতে পেলেন তাদের সামনে একটি পাত্রে
গোশত রান্না করে রাখা হয়েছে। অদূরেই অন্য একটি পাত্রে রয়েছে পঁচা দুর্গন্ধযুক্ত কাঁচা
গোশত। লোকদেরকে রান্না করে রাখা গোশত থেকে বিরত রেখে পঁচা এবং দুর্গন্ধযুক্ত, কাঁচা
গোশত খেতে বাধ্য করা হচ্ছে। তারা চিৎকার করছে এবং একান্ত অনিচ্ছা সত্বেও তা থেকে ভক্ষণ
করছে। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিবরীল ফেরেশতাক জিজ্ঞেস করলেনঃ এরা কোন
শ্রেণীর লোক? জিবরীল বললেনঃ এরা আপনার উম্মতের ঐ সমস্ত পুরুষ লোক যারা নিজেদের ঘরে
পবিত্র এবং হালাল স্ত্রী থাকা সত্বেও অপবিত্র এবং খারাপ মহিলাদের সাথে রাত কাটাতো।
উৎসঃ আল-খুতাবুল মিম্বারিয়াঃ ডা সালেহ আল-ফাওজান।