মুসলিম উম্মাহর আলেম ও বিজ্ঞ ব্যক্তিদের
দৃষ্টিতে ‘ISIS বা IS’এর আসল চেহারাঃ (পর্ব-৩)
সাধারণ মানুষের জন্য কর্তব্য হচ্ছে
দ্বীনি বিষয়ে নির্ভরযোগ্য কোনো আলেমে দ্বীনকে জিজ্ঞাসা করে ক্বুরান ও সুন্নাহ
অনুযায়ী সেই বিষয়ে হক্ক জেনে নেওয়া। যেমনটা আল্লাহ তাআ’লা কুরানুল কারীমে উল্লেখ করেছেনঃ
“ফাস-আলু আহলায-যিকরি
ইন কুনতুম লা তাআ'লামুন।”
অর্থঃ যদি তুমি জা জানো তাহলে যারা
জ্ঞানী তাদের কাছ থেকে জিজ্ঞাস করে জেনে নাও।
সুরা আল-আম্বিয়াঃ ৭।
বর্তমানে কিছু স্বঘোষিত মুফতি-মুহাদ্দিস
বের হয়েছে, আহলুল বিহয়াহ ও আহলুল হাওয়া লোকদের
মিথ্যাচার শুনে ওলামাদেরকে ঘৃণা করে, তাদের সাথে
শত্রুতা করে, তাদের উপদেশকে উপেক্ষা করে নিজেরাই
ফতোয়া দেয়! এরা ওলামায়ে রব্বানীদেরকে মিথ্যাবাদী বলে কিন্তু কাফের মিডিয়া থেকে
পাওয়া মিথ্যা প্রোপাগান্ডাকে নির্দ্বিধায় বিশ্বাস করে! অথচ ফাসেকের দেওয়া নিউজ
যাচাই-বাছাই ছাড়া বিশ্বাস করা আল্লাহ ক্বুরানুল কারীমে নিষেধ করেছেন। যাই হোক, সত্য সন্ধানী সুন্নী ভাই ও বোনদের জন্য ISIS সম্পর্কে সম্মানিত মুসলিম আলেম ও দ্বাইয়ীদের বক্তব্য দেওয়া হলো। সাথে সাথে ISIS এর কিছু কুকীর্তী যা তারা করেছে - অন্য সুন্নী গ্রুপগুলোকে কাফের ফতোয়া দিয়ে
নির্বিচারে হত্যা করা - তার সচিত্র বর্ণনা ও সিরিয়াবাসীদের ইন্টারভিউ দেওয়া
হলো।
https://www.youtube.com/watch?v=m7Wrj2N0zhY&feature=youtu.be
৮) শাইখ আব্দুল আযীয আলফাওযান বলেনঃ এই
দল হচ্ছে পাপিষ্ঠ খারেজী দল। ইরাক, আফগানিস্থান ও
সিরিয়াতে এরা বহু রক্তপাত ঘটিয়েছে।
৯) মুহাম্মাদ আস সা’দী বলেনঃ সিরিয়ায় যুদ্ধরত মুজাহিদদেরকে খতম করার জন্যই আইএস আইএসএর উতপত্তি
হয়েছে।
১০) ডঃ আব্দুল করীম আল বাক্কার বলেনঃ
সিরিয়া হতে আগত বহু তালিবুল ইলম (ছাত্র) ও আলেমদের সাথে আমার সাক্ষাৎ হয়েছে। তাদের
কাছে আইএস আইএসএর অপকর্ম ছাড়া অন্য কিছু শুনিনি। বাশ্শার আল আসাদের প্রশাসন এবং
তারা এক ও অভিন্ন। তারা এবং বাশ্শার আল আসাদ একই অপরাধীর দুই চেহারা।
১১) শাইখ মুহাম্মাদ আল-মুনাজ্জিদ এই
খারেজী দল সম্পর্কে বলেনঃ এরা মুসলিমদেরকে কাফের বলে এবং মুসলিমদের রক্তকে হালাল
মনে করে। সতরাং যেসব মুসলিম এদের সাথে যোগদান করেছে, তাদের উচিত এদের দল ত্যাগ করা।
১২) সিরিয়ার আলেমগণ বলেনঃ এই সংগঠনটি
অন্যায়ভাবে মানুষকে হত্যা করছে এবং মানুষের সম্পদের উপর আক্রমণ করছে। এদের জিহাদ
ইসলামী জিহাদ নয়; বরং পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টির
শামিল। সিরিয়ার আলেমদের ফতোয়া হচ্ছে এই দলে যোগ দেয়া এবং তাদের সাথে যোগ দিয়ে
যুদ্ধ করা হারাম। কেননা তাদের দল ও জিহাদ অস্পষ্ট ও অন্ধকারচ্ছন্ন। তাদের নেতা
অপরিচিত,
তাদের অর্থের উৎস অজ্ঞাত এবং তাদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য
অস্পষ্ট।
১৩) সিরিয়ার বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনের
বক্তব্য হচ্ছে, এই আইএসআইএস নামক দলটি প্রথম যেদিন তার
নাম ঘোষণা করেছে, সেদিন থেকেই এই দলের কার্যকলাপ
সিরিয়ার নাগরিকদের উপর বহু মসীবতের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। তাদের কার্যকলাপ শুধু
বাশশারের যুলুম হতে স্বাধীন এলাকাগুলোর মধ্যেই সীমিত, মানুষকে কাফের বলাতে বাড়াবাড়ি করা এবং যুদ্ধরত মুজাহিদ গ্র“পের কমান্ডারদেরকে খেয়ানতের অপবাদ দেয়া। তারা সিরিয়ার মুজাহিদ গ্র“পগুলোকে কাফের ফতোয়া দিয়েছে এবং এই অযুহাতে মুসলিমদের জান-মালকে হালাল মনে
করছে যে,
পথভ্রষ্ট ও দলাদলিতে লিপ্ত ফির্কাগুলোর বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ
করা জায়েয। তারা বাশ্শার আল আসাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও সংগ্রাম করতে জনগণকে
বাধাগ্রস্ত করছে এবং তাদের মনে ভয়-ভীতির সঞ্চার করেছে।
তাদেরকে যখন মুজাহিদগণ আল্লাহর শরীয়ত
বাস্তবায়ন করার জন্য স্বাধীন অঞ্চলগুলোতে নিরপেক্ষ ইসলামী আদালত প্রতিষ্ঠা করার
আহবান জানালো, তখন তারা টালবাহানা করেছে এবং তা
প্রতিষ্ঠা করতে অস্বীকার করেছে। প্রায় প্রতিদিনই খবর আসছে যে, তারা কোন না কোন মুজাহিদকে বন্দি করছে অথবা হত্যা করছে। তাদের কাজগুলো প্রথম
যুগের খারেজীদের কাজের মতই। তাদের কাজগুলো ঐসব খারেজীদের কর্মকান্ডের মতই, যাদেরকে হত্যা করতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আদেশ দিয়েছেন। ভিন্ন
মতের লোকদেরকে কাফের বলার ক্ষেত্রে, মুসলিমদেরকে
হত্যা করার ক্ষেত্রে এবং অহংকার ও তাকাব্বরী করে হক প্রত্যাখ্যান করার ব্যাপারে
তাদের মধ্যে খারেজীদের বৈশিষ্টসমূহের সমাহার ঘটেছে। এই কারণে তাদের এবং খারেজীদের
হুকুম একই। গাদ্দারী করা, খেয়ানত করা, চুক্তিভঙ্গ করা এবং আমানত নষ্ট করার ব্যাপারে তারা খারেজীদের সীমাকেও ছাড়িয়ে
গেছে। (চলবে)
বিশেষ দ্রষ্টব্য: আগামী পর্বে এ বিষয়ে
ড: সালেহ আল সুহাইমীর পূর্ণ ভাষণ আসছে। বন্ধুদেরকে অপেক্ষায় থাকার অনুরোধ করা হলো।
Collected from Shaykh Abdullah Shahed Al-madani
https://www.facebook.com/abdullahshahed.almadani?fref=ts