“একই
নাম, কিন্তু দুইজন আলাদা”
_____________________
শায়খ
আব্দুল আ’জিজ বিন আব্দুল্লাহ আহলুশ-শায়খঃ
সৌদি
আরবের বর্তমান ‘প্রধান মুফতির’ নাম হচ্ছে, আল্লামাহ আব্দুল আ’জিজ বিন আব্দুল্লাহ আহলুশ-শায়খ হা’ফিজাহুল্লাহ। বর্তমানে জীবিত আলেমদের মাঝে তিনি
সৌদি আরবের শীর্ষস্থানীয় আলেমদের মাঝে একজন। আহলুশ-শায়খ কথাটির অর্থ হচ্ছে ‘শায়খ’ এর বংশধর। এখানে শায়খ বলতে ‘শায়খুল ইসলাম’ মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওহহাব রহিমাহুল্লাহর এর
বংশধদের বোঝানো হয়। মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওহহাব রহিমাহুল্লাহ হচ্ছেন হিজরী ১২ শতাব্দীর
একজন মুজাদ্দিদ, যিনি তাঁর সারাটা জীবন আরব ভূখন্ডে ‘তাওহীদ’ এর দাওয়াতের জন্য জিহাদ করেছেন। একারণে সমগ্র
আরব বিশ্বে তাঁর নাম অত্যন্ত সম্মান ও ভালোবাসার সাথে নেওয়া হয়। উল্লেখ্য পরবর্তীতে
তাঁর বংশ থেকে অনেকে আলেম হয়েছেন, এবং নিজ যোগ্যতায় সৌদি আরবের ধর্মীয় বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ
দায়িত্ব পালন করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৯ সালে সৌদি আরবের প্রাক্তন প্রধান মুফতি
মৃত্যুবরণ করার পর শায়খ আব্দুল আ’জিজ
বিন আব্দুল্লাহ আহলুশ-শায়খ সম্মানিত এই আসনের উত্তরাধিকারী নির্বাচিত হন। উল্লেখ্য,
আপনারা প্রতিবছর হজ্জের সময় ‘আরাফাহর
ময়দানে’ ইহরামের পোশাক পড়া অবস্থায় যাকে খুতবা দিতে
দেখেন, তিনিই হচ্ছেন শায়খ আব্দুল আ’জিজ
বিন আব্দুল্লাহ আহলুশ-শায়খ। সুবহা’নাল্লাহ,
এটা আল্লাহর একটা নিয়ামত যে, তিনি একাধারে বিগত ৩৪ বছর ধরে আরাফার ময়দানে খুতবা দিয়ে
আসছেন। শায়খ এর জন্ম হয়েছিলো ১৯৪৩ সালে, অর্থাৎ বর্তমানে তাঁর বয়স ৭৩।
_____________________
শায়খ
আব্দুল আ’জিজ বিন বাজ রাহিমাহুল্লাহ
সৌদি
আরবের বর্তমান প্রধান মুফতির পূর্বে যিনি প্রধান মুফতি ছিলেন তাঁর নাম হচ্ছে, ইমাম
আব্দুল আ’জিজ বিন আব্দুল্লাহ বিন বাজ রাহিমাহুল্লাহ, যিনি
‘শায়খ বিন বাজ’ নামে আরব ও অনারব সারা বিশ্বে ব্যপক পরিচিতি
লাভ করেছিলেন। শায়খ বিন বাজ আধুনিক যুগে ‘আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআ’ত এর একজন ‘ইমাম’ হিসেবে বিবেচিত। ইমাম অর্থ নেতা, অর্থাৎ তিনি
শীর্ষস্থানীয় এমন একজন আলেম ছিলেন, যার দাওয়াত ও তাবলীগ দ্বারা সমগ্র উম্মত ব্যপকভাবে
উপকৃত হয়েছে। শায়খ বিন বাজ এর জন্ম হয়েহছিলো ১৯১০ সালে, মৃত্যু ১৯৯৯ সনে। তিনি ১৯৯৩
থেকে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত প্রধান মুফতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
_____________________
এতো
গেলো, দুইজনের নাম এবং পদবীর দিক থেকে মিল। এবার অন্য একটা দিকের কথা বলি। এই দুইজনই
খুব অল্প বয়স থেক দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছিলেন। শায়খ বিন বাজ রাহিমাহুল্লাহ মাত্র ২০ বছর
বয়সে এবং শায়খ আব্দুল আ’জিজ
বিন আব্দুল্লাহ আহলুশ-শায়খ হা’ফিজাহুল্লাহ মাত্র ১৭ দুই চোখের দৃষ্টি শক্তি হারিয়েছিলেন। আল্লাহ এভাবেই তাঁর
বান্দাদের মাঝে কাউকে সাময়িক কষ্টে ফেলে তাদেরকে দুনিয়া ও আখেরাতে উভয় জাহানে মর্যাদার
দিক থেকে উন্নত করেন।