[প্রশ্ন নং ৫] আমি এক ব্যক্তি বা একাধিক
ব্যক্তির গীবত করেছি এবং অনেককে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছি অথচ তারা নির্দোষ। এখন তাদেরকে
এ বিষয়গুলো অবহিত করে কি ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে? আর যদি তাদেরকে জানানো শর্ত না হয়ে
থাকে তাহলে কিভাবে তাওবা করবো?
উত্তর: বিষয়টি নির্ভর করছে এর ভাল ও
মন্দ দিকটি নির্ণয় করার উপর। যদি তাদেরকে গীবত করার বিষয়টি জানালে ক্রোধান্বিত না
হন বা আপনার প্রতি কোন আক্রোশের সৃষ্টি না হয় তাহলে আপনি সরাসরি বলে ক্ষমা চেয়ে নিবেন।
কোন রকমের বিস্তারিত বিষয় উল্লেখ না করে। যেমন হয়তো বললেন, আমি আপনার ব্যাপারে অতীতে
ভুল করেছি বা আপনাকে কথার দ্বারা কষ্ট দিয়েছি, এখন আমি আল্লাহর নিকট তাওবা করেছি সুতরাং
আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন। তাহলে কোন অসুবিধা নেই।
আর যদি তাদেরকে জানালে ক্রোধ ও আক্রোশ
বেশী হবার আশংকা থাকে, এটিই সাধারণত ঘটে থাকে বা তাদেরকে সাধারণ ভাবে বললে যদি ব্যাখ্যা
দাবী করে এবং তা শুনলে আপনার প্রতি তাদের ঘৃণা বৃদ্ধির আশংকা থাকে, তাহলে তাদেরকে জানানো
ওয়াজিব নয়। কেননা শরীয়ত ফেতনা ফাসাদের অনুমতি দেয় না। কাউকে কোন বিষয় জানানোর
ফলে সম্পর্কের অবনতি ঘটলে সেটিও শরীয়তের কাম্য নয়। তাছাড়া দ্বীনের উদ্দেশ্য হলো
মুসলমানদের মাঝে পারস্পারিক সম্পর্ক ও ভালবাসা বৃদ্ধি করা। তাকে জানানোর ফলে হয়তো
শত্রুতা আরো বেড়ে যেতে পারে এবং সে হয়তো আপনার প্রতি খুবই আক্রোশী হয়ে উঠতে পারে।
এ অবস্থায় তাওবা করার ক্ষেত্রে আপনার জন্য নিম্নোক্ত বিষয়গুলির প্রতি দৃষ্টি দেয়া
প্রয়োজন:
১. অনুতপ্ত হওয়া এবং আল্লাহর নিকট ক্ষমা
প্রার্থনা করার সাথে সাথে এই অপরাধের কদর্যতা ও জঘন্যতার কথা চিন্তা করা এবং বিশ্বাস
রাখা যে তা হারাম।
২. কারো গীবতের কথা শুনে বিশ্বাস করবে
না এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিকে নির্দোষ মনে করবে।
৩. যাদের গীবত করেছো তাদের ব্যাপারে বিভিন্ন
মজলিসে সুনাম বর্ণনা করবে তাদের ভালো গুনাবলীর কথা উল্লেখ করবে।
৪. যাদের গীবত করেছো তাদের পক্ষ নিয়ে
কথা বলবে এবং কেউ তাদের প্রতি কটাক্ষ করলে বা বদনাম করলে তা প্রতিহত করবে।
৫. তাদের জন্য গোপনে ক্ষমা প্রার্থনা
করবে। (মাদারেজুস সালেকীন ১/২৯১, মুগনী ব্যাখ্যা সহ ১২/৭৮)
হে মুসলমান ভাই! আপনি আর্থিক অধিকার
(হক) এবং শারীরিক অপরাধের মধ্যে পার্থক্য লক্ষ্য করুন, গীবত ও চোগলখোরীর মধ্যে পার্থক্য
লক্ষ্য করুন। আর্থিক অধিকারের কথা জানালে এর দ্বারা মালিকেরা উপকৃত হবে এবং তাদের নিকট
তা ফেরত দিলে তারা খুশী হবে, এজন্য তা গোপন করা জায়েয হবে না। তবে ইজ্জত আবরুর ব্যাপারটি
এ থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন, কেননা তা জানালে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, বিব্রতকর
অবস্থায় পড়বে।