বুধবার, ২০ এপ্রিল, ২০১৬

সিজারিয়ান ডেলিভারী নাকি নরমাল ডেলিভারী?

(১) আমাদের দেশের অধিকাংশ মহিলারা জব অথবা বিজনেস করে না।
(২) তাদের অধিকাংশের স্বামীই মারাত্মক রকমের এমন বড়লোক না যে শখ(!) করে অথবা স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার কারণে নিজে থেকে সিজারিয়ান ডেলিভারি করানোর জন্যে বায়না ধরবে। বরং, সিজারিয়ান ডেলিভারির জন্য যে খরচ, সেই ভয়েই অনেক বাবা ভয়ের মাঝে থাকেন
(৩) অন্যদিকে লন্ডন, এমেরিকার মহিলাদের বেশিরভাগ স্বাবলম্বী, তাদের হেলথ ইন্সুরেন্স থাকে, তাদের স্বামীরা আমদের দেশের স্বামীদের চাইতে বড়লোক, তাদের মহিলারা বাঙ্গালী মহিলাদের চাইতে শরীরের ব্যপারে অধিক সচেতন।
(৪) তারপরেও কেনো বাংলাদেশী কোন গর্ভবতী মহিলাকে সন্তান প্রসবের জন্যে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সিজারিয়ান ডেলিভারী করানো বর্তমানে বাধ্যতামূলক হয়ে গেছে? অন্যদিকে লন্ডন এমেরিকাতে কোন মহিলা নিজে থেকে চেয়ে, অনুরোধ করেও সিজারিয়ান ডেলিভারী করার জন্যে ডাক্তারকে রাজী করাতে পারে না?
(৫) হঠাত করে বাংলাদেশী সমস্ত মহিলাদের শরীরে কি এমন পরিবর্তন হয়ে গেছে যে, মাত্র ২০-৩০ বছর আগেও যেখানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নরমা ডেলিভারীতে সন্তান প্রসব সম্ভব হতো, এখন আর সেটা সম্ভব হচ্ছেনা?
(৬) সত্যি কথা বলতে, বর্তমানে হাসপাতালগুলোতে নরমান ডেলিভারীতে সন্তান প্রসবের পরিবর্তে সিজারিয়ান ডেলিভারীর সংখ্যা অনেকগুণ বেড়ে যাওয়ার পেছনে কয়েকটি কারণের মাঝে প্রধান দুটি কারণ হচ্ছেঃ
(ক) হাসপাতাল এবং ডাক্তারের আর্থিক সুবিধার প্রতি লোভ এবং
(খ) একশ্রেণীর লোকদের অজ্ঞতা বা ফ্যাশান হিসেবে বিনা কারণে স্বেচ্ছায় সিজারিয়ান ডেলিভারীকে বেছে নেওয়া।
(৭) যেখানে নরমাল ডেলিভারীতেই সন্তান প্রসব সম্ভব, সেখানে শুধুমাত্র ডাক্তার বা হাসপাতালের টাকা উপার্জনের লোভে সিজারিয়ান ডেলিভারী সাজেস্ট করা নাজায়েজ, হারাম, এইভাবে তাদের উপার্জনের টাকা অবৈধ।
(৮) আমি মুসলিম ডাক্তার ভাই ও বোনদেরকে অনুরোধ করবো, আপনারা আপনাদের পেশার সাথে সম্পর্কিত বিষয়গুলোর উপরে শরিয়তের কি বক্তব্য তা জানার চেষ্টা করুন, হালাল হারাম সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করুন। ডাক্তারী পেশার সাথে জড়িত অনেকেই বিভিন্নভাবে হারাম অর্থ উপার্জন ও বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়ে থাকেন। না জানার কারণে হয়তোবা আপনিও সেই হারামের পাল্লায় পড়বেন।
(৯) আর সাধারণ মানুষের কাছে আমি আহবান জানাবো, সন্তান জন্ম দেওয়ার যেই ব্যবস্থা আল্লাহ দিয়েছেন সেটাই উত্তম। এর দ্বারা যে কি উপকার রয়েছে সে সম্পর্কে ইমাম মুহাম্মদ বিন সালেহ আল-উসায়মিন রাহিমাহুল্লাহ বলেন,
স্বাভাবিক কষ্টকর সন্তন প্রসবের দ্বারা
(i) মায়ের অনেক গুনাহ মাফ হয়।
(ii) আল্লাহর কাছে সওয়াব পাওয়ার নিয়তে ধৈর্য ধারণ করলে, আল্লাহর কাছে সেই মায়ের মর্যাদা অনেক বৃদ্ধি পায়।
(iii) সেই মা সুস্থ থাকার মর্যাদা বুঝতে পারে এবং এটা তার উপরে আল্লাহর নিয়ামতগুলো চিনতে সাহায্য করে।
(iv) সন্তানের প্রতি মায়ের ভালোবাসা অনেক বেশি হবে।
(v) মা ও সন্তানের দুইজনের জন্যে এটাই উত্তম।
(vi) নরমাল সন্তান হলে সেই মায়ের ভবিষ্যতে অধিক সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষমতা অক্ষুণ্ণ থাকবে।
(vii) সিজারিয়ানে অনেক সময় সন্তান ও মায়ের ক্ষতি হয়, যেকারণে সন্তানের অংগ হানি এবং ভবিষয়্যতে মায়ের সন্তান জন্ম দেওয়া কঠিন হয়।

(viii) হাসপাতালে ডাক্তারদের অধিকহারে সিজারিয়ান ডেলিভারী সাজেস্ট করা মুসলমানদের বিরুদ্ধে একটা ষড়যন্ত্র হতে পারে। কারণ মায়ের পেটে ছুড়ি ব্যবহার করলে ভবিষ্যতে সেই মায়ের সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষমতা কমে যাবে, তার সন্তান কম হবে। এইভাবে মুসলমানদের জনসংখ্যা কম হওয়ার দ্বারা আস্তে আস্তে তাদেরকে দুর্বল করা হবে।