সোমবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

প্রসংগঃ মুসলিম আমীর বা শাসকদের অধিকার

প্রসংগঃ মুসলিম আমীর বা শাসকদের অধিকার
_____________________________
মুসলিম আমীর বা শাসকদের ব্যপারে আমাদের দৃষ্টিভংগি কেমন হওয়া উচিত?
ইমাম তাহাবী রাহিমাহুল্লাহ (মৃত্যু ৩২১ হিজরী), তার বিখ্যাত আহলে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের আকীদা নামক কিতাবে উল্লেখ করেছেনঃ
আমীর ও শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করাকে আমরা জায়েয মনে করি না, যদিও তারা যুলুম-অত্যাচার করে। আমরা তাদেরকে অভিশাপ দিব না, এবং তাদের আনুগত্য হতে হাত গুটিয়ে নিব না। তাদের আনুগত্য আল্লাহর আনুগত্যের সাপেক্ষে ফরয, যতক্ষণ না তারা আল্লাহর অবাধ্যচরণের আদেশ দেয়। আমরা তাদের মঙ্গল ও কল্যাণের জন্য দুয়া করব।
আকীদাহ আত-ত্বাহাবীয়া।
_____________________________
মুসলিম আমীর বা শাসক অত্যাচারী জালেম হলে তাদের ব্যপারে ধৈর্য ধরতে হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধঃ
হুযায়ফা ইবনে ইয়ামান (রাঃ) বলেছেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! এক সময় আমরা অকল্যাণ ও মন্দের মধ্যে (কুফরীর মধ্যে) ডুবে ছিলাম। অতঃপর আল্লাহ আমাদেরকে কল্যাণের (ঈমানের) মধ্যে নিয়ে এসেছেন। এখন আমরা সেই কল্যাণের মধ্যে বহাল আছি। তবে এই কল্যাণের পরে কি আবার অকল্যাণের যুগ আসবে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। আমি আবার বললাম, সেই অকল্যানের যুগের পর কি পুনরায় কল্যানের যুগ আসবে? তিনি বললেনঃ হাঁ, আসবে। আমি পুনরায় জিজ্ঞেস করলাম, সেই কল্যানের পর কি আবার অকল্যানের যুগ আসবে? তিনি বললেনঃ আসবে। আমি জিজ্ঞেস করলামঃ তা কিভাবে? তিনি বললেনঃ আমার পরে এমন কিছু ইমামের (শাসক) আগমন ঘটবে, তারা আমার প্রদর্শিত পথে চলবে না এবং আমার সুন্নাত (জীবন বিধান) গ্রহন করবে না। (অর্থাৎ তারা নিজেদের খোয়াল-খুশী মত চলার পথ আবিষ্কার করে নেবে)। অচিরেই তাদের মধ্যে এমন কিছু লোক সমাজের নেতৃত্ব নিয়ে দাঁড়াবে যাদের মানব দেহে থাকবে শয়তানের অন্তর
আমি (হুজাইফা রাঃ) জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! যদি আমি সেই যুগে উপনীত হই তাহলে আমি কি করব?
তিনি (সাঃ) বললেনঃ তুমি আমীরের নির্দেশ শোন এবং তার আনুগত্য কর। যদিও সে তোমার পিঠে আঘাত (নির্যাতন) করে এবং তোমার ধন-সম্পদ ছিনিয়ে নেয় তবুও তার কথা শোন এবং তার আনুগত্য কর
সহীহ মুসলিমঃ কিতাবুল ইমারাহ (প্রশাসন ও নেতৃত্ব) অধ্যায়, হাদীস নং- ৪৫৫৪।
এই হাদিসে রাসুল সাঃ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেনঃ
১. মুসলিমদের উপর ভবিষতে কিছু শাসক আসবে যারা ক্বুরান ও সুন্নাহ অনুযায়ী চলবেনা। উল্লেখ্য বর্তমানে বিভিন্ন মুসলিম দেশে এইরকম জালেম শাসক দেখা যাচ্ছে।
২. তাদের কাজকর্ম এতো জঘন্য হবে যে, রাসুল সাঃ তাদেরকে মানুষের ভেতরে শয়তানের অন্তর বলেছেন। আমার মনে হয়না অন্য কোন ভাষায় কোন মানুষকে এর চাইতে খারাপ বলে বর্ণনা করা যেতে পারে।
৩. সেই সময়ে আমরা কেউ যদি পৌঁছে যাই তাহলে আমরা যেন সেই শাসকের আনুগত্য করি, এমনকি সে যদি আমাদেরকে মারধর করে এবং আমাদের সম্পদ ছিনিয়ে নেয়।
এখন বলতে পারেন বিদ্রোহ না করে কেন রাসুল সাঃ আমাদেরকে শাসকরা জালেম হলেও তবুও তাদের আনুগত্য করতে নির্দেশ দিয়েছেন? এর কারণ হচ্ছে, বিদ্রোহ করলে যেই ক্ষতি হয় তাঁর তুলনায় যুলুম সহ্য করা অনেক কম ক্ষতিকর, যা যুগে যুগে খারেজীদের কার্যকলাপ দ্বারা বারবার প্রমানিত হয়েছে। আপনারা বর্তমান লিবিয়া, তিউনিয়সিয়া, মিশর, সিরিয়া ইত্যাদি দেশে বিদ্রোহের দিকে লক্ষ্য করে দেখুন বিদ্রোহের পূর্বের শাসকদের জুলুম অত্যাচার ও পরে দেশে বিশৃংখলা ও ফেতনা-ফাসাদ দেখলে বুঝতে পারবেন, কেনো বিদ্রোহের ব্যপারে ইসলাম এতো সতর্কতা অবলম্বন করেছে।
_____________________________
মুসলিম আমীর বা শাসকদের প্রকাশ্যে সমালোচনা করা জায়েজ নয়ঃ
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলছেন,
যে ব্যক্তি সুলতানকে (শাসক/নেতাকে) উপদেশ দিতে চায়, সে যেন প্রকাশ্যে সেটা না করে। বরং তার জন্যে করণীয় হচ্ছে, সে তার সুলতানের হাত ধরে নিয়ে তাকে লোকচক্ষুর আড়ালে ব্যক্তিগতভাবে উপদেশ দেবে। যদি সেই সুলতান তার উপদেশ গ্রহণ করে, তাহলে সেটা তার (সুলতানের) জন্যে ভালো এবং এটাই তার করা উচিৎ। কিন্তু সুলতান যদি উপদেশ গ্রহণ না করে, তাহলে উপদেশদাতা তার দায়িত্ব থেকে মুক্তি পেলো। 
হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ইবনে আবি আসিম তার আস-সুন্নাহ নামক গ্রন্থে। শায়খ আলবানী রাহিমাহুল্লাহু হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন, যিলাল আল-জান্নাহ।
_____________________________
আহলে সুন্নাহর লোকেরা মুসলিম শাসকদেরকে গালি-গালাজ করেনা, বরং তাদের কল্যানের জন্যে দুয়া করে। কারণ শাসকের হেদায়েত হলে তার দ্বারা পুরো দেশবাসী উপকৃত হবে। এইজন্যে ইমাম আহলে সুন্নাহ, আহমাদ ইবনে হাম্বাল রাহিমাহুল্লাহকে (মৃত্যু ২৪১ হিজরী) যখন মুহতাজিলা কুফুরী মতবাদ মেনে নেওয়ার জন্যে জেলখানায় দিন-রাত অমানুষিক অত্যাচার ও নির্যাতন করা হতো, তবুও তিনি তৎকালীন জালেম বাদশাহর বিরুদ্ধে বদ দুয়া করতেন না, বরং তার জন্যে দুয়া করতেন। অত্যাচারী বাদশাহকে তিনি কখনো কাফের বলে ফতোয়া দিতেন না, বা তার সমালোচনা করে জনগণকে তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার জন্যে উস্কে দিতেন না। পক্ষান্তরে, মুসলমান শাসকদেরকে গালিগালাজ করা ও মিম্বারে বসে তাদের সমালোচনা করে জনগণকে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্যে উস্কে দেওয়া মনপূজারী, বেদাতী ও খারজীদের একটা লক্ষণ। ইমাম আল-বারবাহারি রাহিমাহুল্লাহ (মৃত্যু ৩২৯ হিজরী) বলেন,
যদি তুমি কোন ব্যক্তিকে দেখো সে শাসকদের বদদুয়া করছে, তাহলে জেনে রাখো সে একজন মনপূজারী, বিদাতী। আর তুমি যদি কোন ব্যক্তিকে দেখো সে শাসকদের জন্য ভালো দুয়া করছে, তাহলে সে একজন আহলে সুন্নাহ, ইন শা আল্লাহ্।
শরাহুস সুন্নাহঃ পৃষ্ঠা ১১৩-১১৪।
_____________________________
মুসলিম শাসকদেরকে অন্যায়ভাবে অপমান করার পরিণামঃ
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলছেন,
যে ব্যক্তি যমীনে আল্লাহর নিযুক্ত সুলতানকে অপমান করবে, আল্লাহ তাআলা তাকে লাঞ্চিত করবেন।
সহীহ আত্-তিরমিজিঃ ২২২৪, হাদীসটি হাসান সহীহ।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
যে ব্যক্তি কোন মুমিন ব্যক্তি সম্পর্কে এমন কটূক্তি করবে, যা তার মাঝে প্রকৃতপক্ষে নেই, আল্লাহ তাকে রাদগাতুল খাবাল তথা জাহান্নামীদের গলিত রক্ত-পূজের স্তুপে বসবাস করাবেন।
আবূ দাউদ, বিচার অধ্যায়, ৩১২৩ নং হাদীস।
_____________________________
ইমাম আল-বারবাহারি রাহিমাহুল্লাহ (মৃত্যু ৩২৯ হিজরী) বলেন,
যে ব্যক্তি কোন মুসলিম শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে সে
ক খারেজীদের মধ্যে একজন
খ সে মুসলিমদের মাঝে বিভক্তি সৃষ্টি করলো
গ সে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হাদীসের বিরোধীতা করলো এবং
ঘ তার মৃত্যু যেন জাহেলী যুগের মৃত্যুর মতো।
শরাহুস সুন্নাহঃ পৃষ্ঠা ৪২।
_____________________________
উপরের দীর্ঘ এই আলোচনার মাধ্যমে আহলে সুন্নাহর আকীদাহ অনুযায়ী মুসলিম আমীর বা শাসকদের অধিকার কেমন, সে সম্পর্কে কিছু হাদীস এবং পূর্ববর্তী বড় ওলামাদেরপ্ত কিছু কথা তুলে ধরা হলো। যারা আহলে সুন্নাহ বা সুন্নী, সালাফী বা আসারি আকীদাহর বিরোধীতা করে, তাদের ব্যপারে আমাদের দৃষ্টিভংগি কেমন হওয়া উচিত?
উত্তরঃ ইমাম আবু জাফর আহমাদ ইবনে মুহাম্মদ রাহিমাহুল্লাহ (যিনি ইমাম তাহাবী নামে বেশি পরিচিত), আকীদাহর উপরে লেখা তাঁর অনন্য বইয়ে প্রায় ১০২টি পয়েন্টে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামআতের আকীদাহ বর্ণনা করার পর ১০৩ নাম্বার পয়েন্টে উল্লেখ করেছেন:
এই হচ্ছে আমাদের দ্বীন এবং আমাদের আক্বীদাহ বা মৌলিক ধর্ম বিশ্বাস, যা প্রকাশ্যে এবং অন্তরে আমরা ধারণ করি। যারা উল্লিখিত বিষয় বস্তুর বিরোধিতা করে, তাদের সঙ্গে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই।
আল-আক্বীদাহ আত-তাহাবীয়া।
_____________________________
বিনীত,

আনসারুস সুন্নাহ।

এমন একটি দেশ, আর কোথাও আছে কি?

এবছর হজ্জের সময় মিনাতে প্রতারক জাতি শিয়াদের বিশৃংখলার কারণে প্রায় ৭০০ এর অধিক লোকের দুঃখজনক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রেডিও তেহরান, প্রেস টিভিসহ, প্রথম আলো, RTTN সহ বিভিন্ন শিয়া, নাস্তিক, ও বিদাতী খারেজী মতবাদের অনুসারী মিডিয়াগুলো সার্বিক বিবেচনায় বিশ্বের একমাত্র ইসলামিক রাষ্ট্র সৌদি আরব বিদ্বেষী প্রচারণা শুরু করেছে। ইসলামের গোপন বা প্রকাশ্য শত্রুরা ইতিমধ্যে হাজার হাজার কাল্পনিক ও বানোয়াট খবর ছাপিয়ে সাধারণ মানুষদেরকে সৌদি আরব সম্পর্কে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করছে। দুঃখজনক হলেও সত্যি আহলে সুন্নাহর শক্তিশালী কোন প্রচার মাধ্যম না থাকলে ইসলাম ও মুসলিম দেশ বিরোধী অনেক অপপ্রচারের জবাব দেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা। যাই হোক, ইসলাম প্রচার ও প্রসারে সৌদি আরবের ভূমিকা নিয়ে শায়খ আব্দুর রাক্বীব মাদানী (হাফিঃ) এর একটি আর্টিকেল তুলে ধরছি। এর সাথে সাথে শায়খ আব্দুল্লাহিল হাদী (হাফিঃ) এর কিছু কথা সংযোজিত করা হলো।
_____________________________
এমন একটি দেশ, আর কোথাও আছে কি?
_____________________________
১. যে দেশে শেষ নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রেরিত হয়েছেন এবং যেখান থেকে সারা বিশ্বে ইসলাম প্রচার লাভ করেছে।
২. যে দেশে এই যুগেও কোন একটি মন্দির নেই, কোন গির্জা ঘর নেই, কোন অমুসলিমের নাগরিকত্ব নেই।
৩. যে দেশে কোন একটি পীরের দরগাহ নেই, যেখানে 'লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ' পাঠকারীরা জঘন্য শির্ক করে।
৪. নামাযের সময় হলে যেখানে দোকান-পাট বন্ধ করা হয়, আলেম বাহিনী আওয়াজ দেয়, চলো সবাই মসজিদে চলো।
৫. যেই দেশে সবগুলো মসজিদে একসাথে আযান দেওয়া হয়, একই সময়ে সেখানকার সকল মসজিদে নামায পড়া হয়।
৬. কোনো মদের দোকান নেই, আর না আছে মদের ফ্যাক্টরি।
৭. কোনো একটি সিনেমা হল নেই।
৯. যেখানে বাধ্যতামূলক মাধ্যমিক পর্যন্ত স্কুলে ইসলামী শিক্ষা নেয়া সকলের জন্য জরূরী।
১০. যেখানে প্রাইমারী থেকে মেয়েদের পড়ার স্কুল আলাদা আর ছেলেদের স্কুল আলাদা।
১১. যেখানে পর্দার কাপড় পরিধান করা ছাড়া কোন মহিলার বাড়ির বাইরে আসা নিষিদ্ধ।
১২. যেখানে বছরের কোন একটি দিনও হরতাল নেই, আর না আছে রাস্তা অবরোধের ঘটনা।
১৩. বিশ্বের একাধিক দেশের লোক যেখানে কাজ করতে এসে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। নিজ দেশের সম্পর্কে মন্তব্য করে বলে, দেশের অবস্থা খারাপ দেশে থাকার মত অবস্থা নেই।
১৪. নিজ মুসলিম ভাইয়েরা আপোষে রাজনৈতিক দলের নামে বিভক্ত হয়ে যেখানে মারামারি খুনাখুনি করে না।
১৫. যেই দেশের পরিচালক সারা বিশ্বের মাঝে সবচাইতে বেশি কুরআন বিতরণ করে থাকেন সম্পূর্ণ ফ্রী, এবং বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করে বিতরণও করেন।
১৬. পাশ্চাত্য দেশ ও ইয়াহুদী-খ্রীস্টানদের সংস্থাগুলোর তীব্র বিরোধীতা সত্ত্বেও যেই দেশে এখনো 'হুদুদ' বা ইসলামী আইন কিসাস রাস্তা-ঘাটে প্রকাশ্যে বাস্তবায়ন করা হয়।
১৭. যেই দেশে অমুসলিমদের দ্বীনের দাওয়াত দেওয়ার জন্য রয়েছে কয়েক শত ইসলামিক সেন্টার রয়েছে। বছরে প্রায় ২০ হাজারেরও বেশী সংখ্যায় যেখানে অমুসলিম ইসলাম গ্রহণ করে থাকে।
১৮. যেই দেশ বিশ্বের ১৬০টিরও অধিক দেশের ছাত্রদেরকে স্কলারশিপ দিয়ে মদীনা ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্বুরান ও হাদীস ভিত্তিক বিশুদ্ধ ইসলাম পড়ার সুযোগ করে দিয়েছে।
১৯. প্রায় পৃথিবীর সকল দেশেই সেই দেশের অর্থায়নে দ্বাইয়ী দ্বীনের কাজ করে যাচ্ছেন।
২০. বর্তমান সময়ে যেই দেশের সরকার এবং জনগণের মাধ্যমে পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশী মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে।
২১. সর্বোপরি, যারা সারাবিশ্বে ইসলামের মুল দাওয়াত 'তাওহীদ' ছড়িয়ে দিচ্ছে...
২২. যে দেশে যাকাত আদায় না করলে কোন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স রিনিউ করা হয় না।
২৩. যে দেশে যাদু-টোনা করা ফৗেজদারী আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ এবং তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। যাদু-টোনার বই ছাপানো এবং ক্রয়-বিক্রয় করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
২৪. যে দেশে কুরআন-হাদীসকে জাতীয় সংবিধান হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। যার কারণে সেখানে মানব রচিত আলাদা কোন সংবিধান নাই।
২৫. যে দেশে কুরআন মুখস্থ করতে পারলে জেলে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির সাজা কমিয়ে দেওয়া হয়।
২৬. যে দেশের আকাশে কালিম খচিত পতাকা উড়ে এবং কালিমার সম্মানে তা কোন উপলক্ষেই এক মিনিটের জন্য অর্ধনমিত রাখা হয় না।
আর বললাম না..
নচেৎ আরো এইরকম অনেক বৈশিষ্ট্য আছে। তবে কিছু মন্দ যে নেই তা নয়, তবে এইসব ভালোর তুলনায় তার সংখ্যা তেমন নয়। এসব ভালো গুণ বর্ণনা করলে অনেকে বর্ণনাকারীকে কত কি বলে? তাদের তোয়াক্কা না করেই পোস্টটা লেখা হল। আপনার এখন দেখুন, শতভাগ সত্যি এই কথাগুলো শুনে কত জনে কত কি বলে? বলতে আমরা আসলে পটু...................!

- শায়খ Abdur Raquib ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৩ এ লিখা প্রবন্ধ থেকে নেওয়া এবং শায়খ আব্দুল্লাহিল হাদীর কিছু অংশ সংযোজিত করা (কিঞ্চিত পরিমার্জিত)।

মঙ্গলবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

আরাফাহর রোযা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি ফতোয়াঃ

আলহামদুলিল্লাহ, আরাফাহর রোযা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি ফতোয়াঃ
প্রশ্নঃ রমযানের রোযা বাকি আছে এমন কোন ব্যক্তি কি কাযা রোযার নিয়ত করে আরাফাহর দিনে রোযা রাখতে পারবে? আর কাযা রোযার নিয়ত করলে সে কি আরাফাহর দিনে রোযা রাখার সওয়াব পাবে?
উত্তরঃ ইমাম আব্দুল আজিজ বিন বাজ রাহিমাহুল্লাহ ও ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালেহ আল-উসাইমীন রাহিমাহুল্লাহ এর ফতোয়া হচ্ছে, কোন ব্যক্তি যদি আরাফাহর দিনে কাযা রোযার নিয়ত করে রোযা রাখে তাহলে সে দুইটি সওয়াব একই সাথে পাবে, একটি হচ্ছে ফরয কাযা রোযা রাখার সওয়াব, সাথে সাথে আরাফাহর দিনে রোযা রাখার সওয়াবও সে পেয়ে যাবে (ইন শা আল্লাহ)।
রেফারেন্সঃ
১. মালেকী এবং শাফেয়ী মাযহাবের ফুকাহাদের মতামতঃ হাশিয়াত আদ-দাসুকী ৫/৯৫; হাশিয়াত আত-ইয়ানা আত-ত্বালিবিন ২/২৫২; আল-ফাতওয়া আল-ফিকহিয়া আল-কুয়াইতিয়াহ ২/৮৩.
২. মাজমু ফাতওয়া ইবনে উসায়মিন ২০/২৯.

৩. মাজমু ফাতওয়া ইবনে বাজ ১৬/৪০৬.  

আনোয়ার আল-আওলাকির ‘মানহাজ’ কি ছিলো?

আনোয়ার আল-আওলাকির মানহাজ কি ছিলো?
___________________________
জনপ্রিয় এমেরিকান বক্তা আনোয়ার আল-আওলাকি, যাকে তার ভক্তরা ইমাম আওলাকি বলে ডাকে, তার প্রকৃত মানহাজ ছিলো তাকফিরী কুতুবী মানহাজ। আওলাকি এবং বাংলাদেশের জেএমবি আর ইরাকের আইসিস এদের সবার root disease same. সাধারণত অল্প বয়ষ্ক ছেলেরা খুব সহজেই আওলাকির হৃদয় গলানো লেকচার শুনে নিজের অজান্তেই কুতুবি মানহাজের দিকে আকৃষ্ট হয়ে শেষ পর্যন্ত খারেজী আকীদাহর গর্তে গিয়ে পড়ে। এমনই কিছু ছেলেদের দ্বারা পরিচালিত একটা ফেইসবুক পেইজ হচ্ছে Rais Drops যার উদ্দেশ্য হচ্ছে আওলাকির লেখা অনুবাদ করে প্রচার করা। দুঃখজনকভাবে কিছু অল্প বয়ষ্ক ছেলে নিজেদেরকে আহলে হাদীস দাবী করে, কিন্তু তাকফিরী কুতুবীদের সাথে সুসম্পর্ক রাখে, তাদেরকে প্রমোট করে। এমন কুতুবী ও আধ-কুতুবী ব্যক্তি এবং সংগঠন - দুটোই বর্জনীয়।
___________________________
বিদআতি কোন ব্যক্তির ওয়াজ বা লেকচার শোনা, তার লেখা বই-পুস্তক পড়া বা তার কাছ থেকে ইলম নেওয়ার হুকুমঃ
ইমাম আল-বারবাহারি রাহিমাহুল্লাহ বলেন, কোন বাক্তির মাঝে বিদআত প্রকাশ পেলে, তুমি তার কাছ থেকে সাবধান থেকো। কেননা, সে যা প্রকাশ করে, তা অপেক্ষা সে যা গোপন করে তা অনেক বেশী ভয়ংকর।
[ইমাম আল-বারবাহারী, শরাহুস সুন্নাহ]
___________________________
ওলামাদের সতর্কবানী সত্ত্বেও, শুধুমাত্র প্রিয় বক্তা বা লেখকের প্রতি অন্ধ ভালোবাসার কারণে বিদআতির কাছ থেকে ইলম নেওয়ার ভয়াবহ পরিণতিঃ
১ ফুযাইল ইবনে আইয়ায রাহিমাহুল্লাহ বলেন, তুমি কোন আহলুল বিদআহর লোকের সাথে বসবেনা। আমি ভয় করি যে, তুমি যদি কোন বিদআতির সাথে বসো, তাহলে আল্লাহর অভিশাপ তোমার উপরেও আসবে।
২ ইমাম সুফিয়ান আস-সাউরি রাহিমাহুল্লাহ বলেন, যে ব্যক্তি একজন বিদআতির কথা শ্রবণ করে, সে আল্লাহর হেফাজত থেকে নিজেকে বের করে নিলো, এবং তাকে তার উপরেই ছেড়ে দেওয়া হবে।
[ইমাম আল-বারবাহারী, শরাহুস সুন্নাহ]
___________________________

বিঃদ্রঃ যারা কুতুবী মানহাজ কি জানেন না, তারা প্রথমে কুতুবী মানহাজ কি সেটা জানুন, এরপর আওলাকির সাথে মিলিয়ে দেখুন। না জেনেই অহেতুক তর্ক করে সময় নষ্ট করবেন না।