শনিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

শাড়ী পড়া যাবে?


মুসলমানদের আদি নিবাস হচ্ছে মক্কা-মদীনা। আরব বিশ্বের কোথাও কেউই শাড়ি পড়েনা। শাড়ি হচ্ছে মূলত ভারতীয় মুশরেক হিন্দুদের পোশাক, যা পড়লে মহিলাদের পেট পিঠ উন্মুক্ত হয়ে থাকে, শরীরের অবয়ব প্রকাশিত হয় যা সম্পূর্ণ হারাম ও অশ্লীলতা। সুতরাং, শাড়ি কোন মুসলমান নারীর পোশাক হতে পারেনা। নারীদের দেখাশোনার দায়িত্ব পুরুষদের উপরে ন্যস্ত। সুতরাং, যেই সমস্ত পুরুষদের অধীনে নারীরা শাড়ি পড়ে বেপর্দা চলাফেরা করে, তারা বোকা এবং দাইয়ুস। যেই পরিবারের পুরুষেরা ঠিক থাকেনা, তাদের নারীরা ঠিক থাকেনা। আজকাল পুরুষেরা হয়ে গেছে গাফেল (উদাসীন), যেই সমস্ত পুরুষেরা স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ন্ত্রনে রাখেনা, তারা ইহকাল ও পরকাল দোনো জাহানেই ক্ষতিগ্রস্থ।
কিছু প্রশ্নের উত্তরঃ
assa admin...tahole ki porbe???
ক্বামিস।
Vai shari jodi hijab mene pore taholeo ki haram hobe???
না হবেনা, কারণ হিজাব অর্থ হচ্ছে রেগুলার পোশাকের উপরে আলাদা একটা কাপড় বা চাদর দিয়ে সারা শরীর ঢেকে দেওয়া।
vai shari pora haram kothay pailen? hadith soho proman den.
শাড়ি পড়লে মহিলাদের পেট পিঠ উন্মুক্ত হয়ে থাকে, শরীরের অবয়ব প্রকাশিত হয় যার কারণে পুরুষদের কাছে আকর্ষণীয় লাগে। পর পুরুষদের আকৃষ্ট করে এমন পোশাক পড়া সম্পূর্ণ হারাম ও অশ্লীলতা।

শরীরে কোনো ব্যথা অনুভব করলে যা করবেন ও বলবেনঃ

শরীরে কোনো ব্যথা অনুভব করলে যা করবেন ও বলবেনঃ
আপনার দেহের যে স্থানে আপনি ব্যথা অনুভব করছেন, সেখানে আপনার হাত রেখে তিনবার বলুন,
«بِسْمِ اللَّهِ»
বিসমিল্লাহ
অর্থঃ (আল্লাহর নামে।)
তারপর সাতবার বলুন,
«أَعُوذُ بِاللَّهِ وَقُدْرَتِهِ مِنْ شَرِّ مَا أَجِدُ وَأُحَاذِرُ».
ঊযু বিল্লা-হি ওয়া ক্বুদরাতিহী মিন শাররি মা আজিদু ওয়া উহা-যিরু।

অর্থঃ এই যে ব্যথা আমি অনুভব করছি এবং যার আমি আশঙ্কা করছি, তা থেকে আমি আল্লাহ্‌র এবং তাঁর কুদরতের আশ্রয় প্রার্থনা করছি।

মৃত্যুর পূর্বে ও পরের সুন্নত ও বিদআ'ত

মৃত্যুর পূর্বে ও পরের সুন্নত ও বিদআ'তঃ

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
যার জীবনের শেষ কথা হবে
لَا إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ
উচ্চারণঃ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।
অর্থঃ আল্লাহ ছাড়া আর কোন সত্য মাবূদ (বা উপাস্য) নেই।
সে ব্যক্তি (ক্ষমা পেয়ে সরাসরি অথবা, পাপের শাস্তি ভোগ করার পরে কোন একদিন) জান্নাতে প্রবেশ করবে
আবু দাউদঃ ৩/১৯০, হাদীসটি সহীহ, শায়খ আলবানী সহীহ তিরমিযীঃ ৩/১৫২।

একারণে মৃত্যু পথযাত্রীর সামনে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলে তাকে কালেমা স্বরণ করিয়ে দিতে হবে। উল্লেখ্য, সুরা ইয়াসীন বা অন্য কোন দুয়া/সুরা পড়লে মওতের কষ্ট, মৃত ব্যক্তির অথবা কবরে শায়িত ব্যক্তির আজাব মাফ হয়, এই হাদীস সহীহ নয়। সুতরাং নামধারী আলেম যারা আসলে অল্পশিক্ষিত হুজুর তাদেরকে ভাড়া করে এনে অথবা আত্মীয়-স্বজন নিজেরা মিলে মূমুর্ষূ ব্যক্তি, মৃত লাশ বা কবরের সামনে ক্বুরান তেলাওয়াত করা, ক্বুরান খতম দেওয়ানো বিদাত।


এইরকম বিদআত করলে সম্ভাবনা আছে উল্টা মৃত ব্যক্তিকে আরো বেশি শাস্তি দেওয়া হতে পারে। সেইজন্য দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা পূর্বেই পরিবারের লোকদেরকে ওয়াসীয়ত করে যাবেন, কারো মৃত্যুর পরে আত্মীয়-স্বজনরা যেন চিতকার করে কান্নাকাটি ও বুকফাটা বিলাপ, বুকে ও মাথায় হাত চাপড়ানো, কাপড় ছিড়ে ফেলা, মেজবানী খাওয়ানো, কোন ধরণের বিদাতী দুয়া, দুরুদ, মিলাদ-কিয়াম, ফাতেহা পাঠ, চিল্লা-চল্লিশা, কুলখানি, মৃত্যুবার্ষিকী, স্বরণসভা, ২-৪ মিনিট নীরবতা পালন করা. . .এমন কোন অনুষ্ঠান পালন না করে। এই সবগুলো কাজ নিকৃষ্ট হারাম ও মারাত্মক বেদাত। এইগুলো আত্মীয়-স্বজন বা বনধু-বান্ধবদের মাঝে কেউ করলে আপনারা এমন বিদাতি দাওয়াতে শরীক হবেন না, সেইগুলোতে বিলানো কোন খাবার খাবেন না অথবা এইগুলোতে কোনভাবে সাহায্যও করবেন না।

শুক্রবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

এমন কিছু যা দুঃখ দূর করে মনে শান্তি নিয়ে আসতে পারেঃ

আমাদের সবারই কম-বেশি মন খারাপ হয়. . .
এমন কিছু যা দুঃখ দূর করে মনে শান্তি নিয়ে আসতে পারেঃ
১. জামাতে নামায পড়া।
২. জামাতের প্রথম কাতারে নামায পড়া।
৩. ওযু করা. . .আশ্চর্যজনকভাবে মনকে পরিবর্তন করে দিতে পারে, বিশেষ করে ক্লান্তি ও অবসাদ দূর করার জন্য।
৪. নির্জনে পছন্দের ক্বারীদের কন্ঠে প্রিয় কিছু আয়াত বারবার শোনা।
৫. অসুস্থ অবস্থায় মা যখন মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়।
৬. নিজের কৃত পাপের জন্য অশ্রু সহকারে নির্জনে আল্লাহর কাছে তোওবা-ইস্তেগফার করা, দুয়া করা ও তাঁর কাছে সাহায্য চাওয়া।
৭. ক্বুরান ও সহীহ হাদিসে বর্ণিত নবী-রাসুলদের কাহিনীগুলো পড়া।
৮. ক্বুরানের কোন সুরা অথবা কোন দুয়া মুখস্থ করা।
৯. বড় আলেমদের জীবনী ও তাদের উপদেশ শোনা অথবা পড়া।
১০. দীর্ঘদিন পরে নিজ পরিবারে প্রত্যাবর্তন করা অথবা পরিবারের লোকদের সাক্ষাত পাওয়া।
১১. এমন কোন স্বপ্ন দেখা যা আল্লাহর পক্ষ থেকে শুভ সংবাদ বলে ধারণা হয়।
১২. নফল রোযা রাখা।

বুধবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

উম্মতের পুরুষেরা সংশোধন হলে এর নারীরাও ঠিক হবে”

প্রসংগঃ দাইয়ুস
=> উম্মতের পুরুষেরা সংশোধন হলে এর নারীরাও ঠিক হবে

মহান আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন,
الرِّجَالُ قَوَّامُونَ عَلَى النِّسَاء

উচ্চারণঃ আর-রিজালু ক্বাওয়্যামুনা আলান-নিসা।
অর্থঃ পুরুষেরা নারীদের উপর কর্তৃত্বশীল।
Men are the protectors and maintainers of women.

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং তোমাদের প্রত্যেককেই তার অধীনস্থদের রক্ষণাবেক্ষণ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে। একজন পুরুষ তার পরিবার ও সংসারের জন্য দায়িত্বশীল এবং তাকে তার রক্ষণাবেক্ষণ ও দায়িত্ব পালন সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। স্ত্রীলোক তার স্বামীর ঘরের রক্ষণাবেক্ষণকারী এবং তাকে সে সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে. . .অতএব তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এব প্রত্যেককে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে।
সহিহুল বুখারীঃ ৭/৪১ হাদীস নং- ৫২০০।

#দাইয়ুস কে?
উত্তরঃ যে আপন স্ত্রীকে বেপর্দায় বাহির হতে বাঁধা দেয়না, সে ব্যক্তি দাইয়ুস।
- আল-ইসতিদাদ লি-ইয়াওমিল মাআদ (পরকালের পাথেয়), ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী রাহিমাহুল্লাহ।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
তিন ব্যক্তির জন্য আল্লাহ জান্নাত হারাম করে দিয়েছেনঃ
১. যে ব্যক্তি মদ তৈরী করে,
২. যে ব্যক্তি পিতা- মাতার নাফরমানী করে এবং
৩. দাইয়ুস (যে ব্যক্তি নিজ পরিবারের মাঝে অশ্লীলতাকে প্রশ্রয় দেয়)।
[মুসনাদে আহমাদঃ ৫৮৩৯]

দাইয়ুস বলা হয় ঐ ব্যক্তিকে, যে তার স্ত্রী ও পরিবারের অন্য সদস্যরা অশ্লীল কাজ বা ব্যভিচার করলে সে ভাল মনে করে গ্রহণ করে অথবা প্রতিবাদ না করে চুপ থাকে। উপরের হাদিসটির ব্যাখ্যা ব্যাপক। এখানে মূল বিষয় হল ফাহেশা বা অশ্লীলতা। যে ব্যক্তি নিজ ঘরে ইসলাম অনুশাসন পালনে শিথিলতা করে, ছেলে-মেয়েদের হিজাব পালন করতে উৎসাহ দেয় না বা আদেশ করেনা, ঘরে অশ্লীল ও বিজাতীয় নাটক-সিনেমা, গান-বাজনা চলে, এর কোন প্রতিবাদ করে না. . .যে ব্যক্তি এমন শরীয়াহ বিরোধী অশ্লীলতাকে মেনে নেয় সেই ব্যক্তি হল দাইয়ুস।  

“আহলুল হাদীস” বলতে কি শুধুই মুহাদ্দীসগণকেই বুঝায়?

***********************************************
আহলুল হাদীস বলতে কি শুধুই মুহাদ্দীসগণকেই বুঝায়?
***********************************************
আহলুল হাদীস বলতে শুধু মুহাদ্দীসগনকেই বুঝায় না, বরং সর্বক্ষেত্রে যারা হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে এককভাবে অনুসরনীয় ইমাম হিসেবে মানে, এবং নির্দিষ্ট কোন একজন সালাফের অন্ধ অনুসরণ (তাকলিদ) করে না তাদেরকেও বুঝায়। আসুন সালাফদের কতিপয় উক্তি সম্পর্কে জানি যাতে প্রমাণিত হবে আহলুল হাদীস বলতে শুধু মুহাদ্দীসগণকে বুঝায় না।
১. বহু উলামা যেমন ইমাম বুখারী (রহঃ) (আল-হুজ্জাহ ফী বয়ান আল-মুহাজ্জা, ১/২৪৬), ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহঃ) (ফাত-উল-বারী ১৩/২৫০), এবং ইমাম আল-মাদীনি (রহঃ) (সুনান তিরমিযী, হা: নং ২১৯২) বলেন, নাযাত প্রাপ্ত দল হল আহলুল হাদীস।
=> এখন আহলুল হাদীস বলতে যদি শুধুমাত্র মুহাদ্দীসগণকে বুঝানো হয়, তাহলে কি শুধুমাত্র মুহাদ্দীসগণই জান্নাতে যাবে, আর সাধারণ লোক জান্নাতে যেতে পারবে না?
২. আহলে সুন্নাহ এর ইমাম, আহমদ বিন হাম্বল (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, আমাদের নিকট, আহলুল হাদীস ঐ ব্যক্তি যিনি হাদীসের উপর আমল করেন। [মানাক্কিব আল-ইমাম আহমদ লি ইবনে জওযী, ২০৮ পৃ: সহীহ সনদ সহকারে]
৩. ইবনে তাইমিয়াহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, আমরা আহলুল হাদীস বলতে তাদেরকেই শুধু বুঝাইনা যারা হাদীস শুনেন, লিখেন এবং সেগুলো বর্ণনা করেন, বরং আমরা আহলুল হাদীস বলতে যেকোন ব্যক্তিকেই বুঝি যারা হাদীস যত্নসহকারে মুখস্থ করেন, অনুধাবন করেন এবং তা অনুসরণ করেন - আভ্যন্তরিন ও বাহ্যিক উভয় দিক থেকে। [মাজমুআ আল-ফাতাওয়া, ৪/৯৫]
=> ইবনে তাইমিয়াহ-র উক্ত ব্যাখ্যা প্রমান করে আহলুল হাদীস বলতে দুই ধরণের লোক বুঝায়
১. মুহাদ্দীসীন (হাদীসের আলেম) এবং
২. তাদের আওয়াম (যারা হাদিসে আলেম নন কিন্তু হাদিসের অনুসরণকারী)।
৪. হাফিয ইবনে হিব্বান (রহঃ) আহলুল হাদীস সম্পর্কে বলেন, তারা হাদীসের উপর আমল করেন, হাদীসের পক্ষালম্বন করেন এবং এর বিরুদ্ধবাদীদের নিশ্চিহ্ন করেন। [সহীহ ইবনে হিব্বান, আল-ইহসান ৬১২৯]
৫. ইমাম আহমদ বিন সানান আল-ওয়াসিতি (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, এ দুনিয়ার এমন কোন বিদায়াতীকে দেখবেন না যে আহলুল হাদীসদের প্রতি শত্রুতা পোষন করেনা। [মাআরিফাতু উলুম আল-হাদীস, হাকীম, পৃঃ ৪, সনদ সহীহ]
=> সকলেই জানে মুহাদ্দীসগণ ও তাদের আওয়ামদের প্রতি কি পরিমান বিদ্বেষ বিদায়াতীরা পোষণ করে। একথা প্রমাণিত যে যারা বিদায়াতী কালচার পরিত্যাগ করে কুরআন ও সহীহ সুন্নাহ মতে আমাল করেন, সেই আহলে হাদীসদের প্রতি ব্রেলভী ও বেশির ভাগ দেওবন্দী পন্থিরা অত্যধিক ঘৃণার চোখে দেখেন।
৬. কুরআনের সূরাহ বানী ইসরাঈল এর ৭১ নং আয়াতের যেদিন আমি প্রত্যেক দলকে তাদের নেতাসহ আহবান করব - অংশের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ইবনে কাসির (রাহিমাহুল্লাহ) উল্লেখ করেছেন যে,
পূর্ব যুগীয় কোন কোন মনীষীর উক্তি রয়েছে যে, এতে আহলুল হাদীসদের খুবই বড় মর্যাদা রয়েছে। কেননা, তাঁদের ইমাম হলেন হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)।
=> আল্লাহু আকবার! এটা সুবিদিত যে মুহাদ্দীসগণ ও তাদের আওয়াম এর মহান ইমাম হলেন হযরাত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)।
৭. হাফিয ইবনুল কাইয়ুম (রাহিমাহুল্লাহ) তাঁর বিখ্যাত কাসিদা নু-নিয়াহ্‌ তে বলেছেন, ওহে তোমরা যারা (আহলুল হাদীসদের) ঘৃণা কর এবং আহলুল হাদীসদের গালিগালাজ কর, তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ কর যে শয়তানের সাথে তোমাদের দুস্তি হয়েছে। [আল-কাফিয়া আশ-শাফিয়া পৃ: ১৯৯]
=> আপনি পৃথিবীর যেখানেই যান না কেন দেখতে পাবেন আহলুল হাদীসদের প্রতি সবচেয়ে বেশি ঘৃনা ও বিদ্বেষ পোষণ করে বিদায়াতীরা।
৮. জালালুদ্দীন সুয়ুতি (রহঃ) সুরাহ বানী ইসরাঈল এর ৭১ নং আয়াতের তাফসীরে উল্লেখ করেছেন যে "আহলুল হাদীসদের জন্য এর চেয়ে বড় শ্রেষ্ঠতার আর কিছু নাই কারণ আল্লার রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ব্যতীত আহলুল হাদীসদের আর কোন ইমাম নেই।"
[তাদরীবুর রাওয়ি: ২/১২৬, নূ':২৭]
=> পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে সাধারণ আহলে হাদীসরাও মুহম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে সবচেয়ে বড় ইমাম মানে, এবং এটাই তাদের মানহাজ, এটাই তাদের ঈমান।
৯. আবু মানসুর আব্দুল কাহিব বিন তাহির আল বাগদাদী (রাহিমাহুল্লাহ) শামের সীমান্তবর্তী এলাকায় বাসকারী অধিবাসীগণ সম্পর্কে বলেন, তাদের সকলেই মাযহাবের দিক দিয়ে ছিলেন আহলুল হাদীস, আহলুস সুন্নাহর অন্তর্ভূক্ত। [উসূল আদ-দীন, পৃষ্ঠা ৩১৭]
=> এখন একথা বিশ্বাস করার কোন মানে নাই কোন এলাকার সকল অধিবাসীগণই মুহাদ্দীস হবেন, সুতরাং খতীব বাগদাদী এখানে সাধারণ লোকদেরকেই আহলুল হাদীস বুঝিয়েছেন যাদের ইমাম হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)।
১০. আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ বিন আহমাদ বিন আল-বিনা আল-মাদকিসি আল-বাশারী (রাহিমাহুল্লাহ) তার সময়ের সিন্ধির অধিবাসী সম্পর্কে বলেন, তাদের বেশিরভাগই ছিলেন আহলুল হাদীস। [আহসান আল-তাক্বাসীম ফী মারিফাতুল আকালীম, পৃ: ৩৬৩]
=> উপরের আল-বাশারী (রহঃ) এর উক্তিও প্রমাণ করে যে, শুধুমাত্র মুহাদ্দীসীনরাই আহলে হাদীস নয়, পূর্বযুগে সাধারণ জনগণও আহলে হাদীস হিসেবে পরিচিত হতেন।
শেষকথাঃ এরকম আরো বহু সালাফদের উক্তি উল্লেখ করা যাবে। আমার মনে হয় উপরে উল্লিখিত ১০টি উক্তিই প্রমান হিসেবে যথেষ্ট যে মুহাদ্দীসগণ ছাড়াও সাধারণ লোকজন যারা সহীহ হাদীসের উপর আমাল করেন তারাও আহলুল হাদীস হিসেবে পরিচিত হতেন।
এছাড়া দেওবন্দী বহু আলেমের কিতাবে আহলুল হাদীস বলতে সাধারণ লোকজনকে বুঝানো হয়েছে এমন বহু উদাহরণ দেয়া যাবে। সে বিষয়ে লিখব একদিন।
[হাফিয যুবাইর আলী যাই (রাহিমাহুল্লাহ) এর লেখা অবলম্বনে]
Collected post

[দুঃখিত যেই ভাই এটা পোস্ট করেছিলেন তার নামটা এই মুহূর্তে মনে পড়ছেনা, মনে থাকলে এই পোস্টে কার্টেসী দেওয়া জরুরী ছিলো] 

মঙ্গলবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

“দেওবন্দ” হাসপাতালের রোগীদের পরিচয়ঃ (সংক্ষিপ্ত)

দেওবন্দ হাসপাতালের রোগীদের পরিচয়ঃ (সংক্ষিপ্ত)

গতকাল আমি একটা পোস্টে কমেন্ট করেছিলাম,
ইমাম আবু জাফর আত-তাহাবী রাহিমাহুল্লাহ বলেন,
শুধুমাত্র ফাসেক ও বোকা লোকেরাই তাক্বলীদ করে।
[লিসান আল-মীযানঃ ১/২৮০]

ইমাম তাহাবী রহঃ এর এই কথাটা আসলে ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী রহঃ তার বিখ্যাত কিতাব লিসান আল-মীযান এর প্রথম খন্ডের ২৮০ নাম্বার পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেন। হানাফী মাযহাবেরই একজন নির্ভরযোগ্য বড় ইমাম তাকলীদের এতো কড়া সমালোচনা করেছেন, এটা আহলে দেওবন্দের একজন সমর্থক সহ্য করতে পারেনি। #ফিকহে_হানাফী নাম নিয়ে কথিত সেই হানাফী পালটা মন্তব্য করে,

কোন গাঁজাখোর ছাড়া উক্ত মন্তব্য ইমাম ত্বাহাবীর দিকে নিসবত করতে পারেনা।

ফিকহে হানাফী আইডির মতো বা এরকম যারা আমাদের পাক-ভারত উপমহাদেশে হানাফী হওয়ার দাবীদার এরা আসলে হানাফী হয়, এরা হচ্ছে দেওবন্দী অথবা বেরেলুবী সিলসিলার সূফীদের মুকাল্লিদ। এরকম দেওবন্দ হাসপাতালের রোগীদেরকে চেনার কিছু লক্ষণ নিচে তুলে ধরা হলো।

১. হানাফী ও আহলে সুন্নাহ(!) নাম নিয়ে ধোঁকাঃ
ক. তারা দাবী করে তারা হানাফি, অর্থাৎ তারা ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর অনুসারী। অথচ আকিদার ব্যপারেই তারা ইমাম আবু হানীফা রহঃ কে মানেনা।
খ. তারা দাবী করে তারা আহলে সুন্নাহ। কিন্তু তাদের মাযহাবে নাই এমন সুন্নাহর কথা শুনলেই তাদের গায়ে জ্বলুনি শুরু হয়ে যায়।
গ. তারা বলে চার মাজহাবই সঠিক, কিন্তু অন্য মাজহাব মানলে তাদের কাছে সেটা নতুন ফেতনা, যদিও সেটা প্রমানিত কোন সুন্নত হোক না কেনো।

২. আকিদাহঃ আশাআরি ও মাতুরিদি আকিদার অনুসারী।

৩. তরীকাঃ সূফী (চিশতি/ নকশাবন্দী/ মুজাদ্দেদী/ কাদেরী)।

৪. মানহাজঃ কট্টর সূফীবাদী ও জাহেল মুরুব্বীদের অন্ধ তাকলীদ, গালিগালাজ।

৫. শরিয়তের উৎসঃ মুরুব্বীদের জাল-জয়ীফ সমৃদ্ধ বয়ান, ঝুটা কিসসা-কাহিনী, কাশফ নাম দিয়ে শিরকি কাহিনী ও আজগুবী খাব (স্বপ্ন) ও আষাঢ়ে গল্প।


আমার কথাগুলোর সত্যতা জানার জন্য আপনারা দেওবন্দীদের লেখা আল-মুফান্নাদ, ফাজায়েলে আমাল, বেহেশতি যেওর, মকসুদুল মুমিনিন এরকম কিছু বই দেখতে পারেন।

রবিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

প্রসংগঃ শহীদ মিনার, স্মৃতিসৌধ, মূর্তি, ভাষ্কর্য. . .

প্রসংগঃ শহীদ মিনার, স্মৃতিসৌধ, মূর্তি, ভাষ্কর্য. . .
ধ্বংসপ্রাপ্ত আদ জাতির স্বভাব ছিলো উঁচু উঁচু স্তম্ভ নির্মান করা। তাদের কাছে হুদ আলাইহিস সালাতু আস-সালাম কে নবী করে পাঠানো হয়েছিলো। হুদ (আঃ) তার পথভ্রষ্ট জাতির লোকদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন,
তোমরা কী প্রতিটি উচ্চস্থানে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মান করছো নিরর্থক।

সূরা শুআরাঃ ১২৮। 

ইমাম ও মুক্তাদী সকলকেই প্রত্যেক রাকাতেই সুরা ফাতেহা পড়তে হবে

ইমাম ও মুক্তাদী সকলকেই প্রত্যেক রাকাতেই সুরা ফাতেহা পড়তে হবেঃ
নামায একাকী হোক কিংবা জামাতে, ইমাম কিরাত আস্তে পড়ুক অথবা উচ্চস্বরে. . .ইমাম ও মুক্তাদী সকলের জন্যই সুরা ফাতেহা পড়া ওয়াজিব। যেই হাদীস দ্বারা এই মতটা সন্দেহাতীতভাবে সঠিক বলে প্রমানিত হয়ঃ

উবাদা ইবনে সামিত রাদিয়াল্লাহু আনহ থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা কি ইমামের ক্বিরাআত পাঠ করা অবস্থায় পিছনে কিছু পাঠ করে থাক? (তোমরা) এটা করবে না। বরং কেবলমাত্র সুরা ফাতিহা চুপে চুপে পাঠ করবে।
[বুখারীঃ ৭৫৬, মুসলিমঃ ৩৯৪, তিরমিযীঃ ২৪৬, ইবনে মাজাহঃ ৮৩৭]

ইমাম আবূ ঈসা তিরমিযী রাহিমাহুল্লাহ বলেন,
উবাদা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত হাদীসটি হাসান ও সহীহ। এই বিষয়ে আবু হুরায়রা, আয়িশাহ, আনাস, আবু কাতাদা ও আবদুল্লাহ ইবন আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে। উমর ইবনুল খাত্তাব, আলী ইবন আবী তালিব, জাবির ইবন আবদুল্লাহ, ইমরান ইবন হুসায়ন রাদিয়াল্লাহু আনহ প্রমুখ সাহাবী এই হাদীছ অনুসারে আমল করেছেন। তাঁরা বলেছেন, সূরা ফাতিহা পাঠ ব্যতিরেকে সালাত জায়েয হবে না। ইমাম আব্দুল্লাহ ইবন মুবারক, ইমাম শাফিঈ, ইমাম আহমদ, ইমাম ইসহাক ও এই অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

[তিরমিযীঃ ২৪৬ নম্বর হাদীসে টীকা দ্রষ্টব্য]

তাহাজ্জুদ সালাতের বিধিবিধান

তাহাজ্জুদ সালাতের বিধিবিধান

ফযীলত: ফরজের পরে তাহাজ্জুদের সালাত আল্লাহ তায়ালার নিকট সবচেয়ে প্রিয়। এটি নিরাপদে জান্নাত লাভের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়।

সময়: অর্ধ রাতের পরে। রাতের শেষ তৃতীয়াংশে পড়া উত্তম। তবে ঘুম থেকে না জাগার সম্ভাবনা থাকলে ইশা সালাতের পর দু রাকআত সুন্নতের পর ও বিতরের আগে তা পড়ে নেয়া জায়েজ আছে।

রাকআত সংখ্যা: সর্ব নিম্ন দু রাকআত। আর সর্বোচ্চ ৮ রাকায়াত পড়া উত্তম। তবে আরও বেশী পড়া জায়েজ আছে। এরপরে বিতর নামায পড়া।

তাহাজ্জুদ পড়ার নিয়ম: দু রাকআত দু রাকআত করে যথা সম্ভব লম্বা কিরাআত, লম্বা রুকু ও সেজদা সহকারে একান্ত নিবিষ্ট মনে পড়া।

পড়ার স্থান: ঘরে পড়া উত্তম। তবে মসজিদে পড়াও জায়েজ আছে।

কিরাআত: উঁচু বা নিচু উভয় আওয়াজে পড়া জায়েজ আছে। তবে কারো কষ্টের কারণ হলে চুপিচুপি পড়া কর্তব্য।

ছুটে গেলে: তাহাজ্জুদে অভ্যস্ত ব্যক্তি কোন কারণ বশত: রাতে পড়তে না পারলে সূর্য উঠার পর ও যোহরের সময় হওয়ার পূর্বে তা পড়ে নিতে পারে।

জামায়াতে পড়া: রামাযান ছাড়া অন্য সময় মাঝে-মধ্যে জামায়াতে পড়া জায়েজ আছে। তবে নিয়মিতভাবে নয়। রামাযানে তারাবীহ জামাআতে পড়া সুন্নত।

নিয়মিত পড়া: নিয়মিত তাহাজ্জুদ পড়াআল্লাহ তায়ালার নিকট অত্যন্ত পছন্দনীয় আমল।

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে তার পছন্দীয় আমল গুলো সম্পাদন করে তাঁর প্রিয় বান্দাদের অন্তর্ভূক্ত করে নিন। আমীন।
গ্রন্থনায়: আব্দুল্লাহিল হাদী
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব।

http://salafibd.wordpress.com/

শনিবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

“গর্ব বা অহংকার হারাম ও কবীরাহ গুনাহ”

গর্ব বা অহংকার হারাম ও কবীরাহ গুনাহ
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
যার অন্তরে সরিষার দানা (অর্থাৎ সামান্যতম) পরিমাণও অহংকার আছে, সে (প্রথম পর্যায়েই) জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না এবং যার অন্তরে সরিষার দানা (সামান্যতম) পরিমাণ ঈমান আছে সে জাহান্নামে (স্থায়ীভাবে) প্রবেশ করবে না
সহীহ মুসলিমঃ ৯১, তিরমিযীঃ ১৯৯৮, আবু দাউদঃ ৪০৯১, আহমাদ ৩৭৭৯, হাদীসটি সহীহ, শায়খ আলবানী

যারা অহংকারী, কেয়ামতের দিন তাদেরকে পিঁপড়ার সমান মানুষ করে উঠানো হবে. . .সমস্ত প্রকার লাঞ্চনা ও গঞ্ছনার মাঝে তারা পড়বে (মানুষ পিষে ফেলবে, পায়ে মাড়িয়ে দেবে ইত্যাদি)। তাদেরকে জাহান্নামীদের রক্ত ও পূজ খাওয়ানো হবে। [নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক...লা হা'উলা ওয়ালা ক্বুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ!]
তিরমিযীঃ ১০(৩/২০২৫)।

কিছু অহংকারী লোকদের পরিচয়ঃ
. সত্য জানার পরেও তার প্রত্যাখ্যানকারী, কাফের ও মনপূজারী বিদাতীরা।
. অন্য মুসলমান ভাই ও বোনদেরকে যারা ছোট নজরে দেখে বা তাদেরকে অপমান করে।
. বেনামাযী।  
. টাখনুর নিচে কাপড় পরিধানকারী পুরুষ।
. বেপর্দা-বেহিজাবী নারী।
. স্বামীর অবাধ্য স্ত্রী।
. স্ত্রীর উপর জুলুমকারী ও স্ত্রীকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যকারী স্বামী।
. যারা ধন-সম্পদ, বিদ্যা-বুদ্ধি, শারীরিক সৌন্দর্য নিয়ে বড়াই করে।
. অহংকারবশত যারা আত্মীয়দের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে।

১০. দেশ, ভাষা বা জাতি বা বংশ নিয়ে যারা মিথ্যা গর্ব করে বেড়ায়।