রবিবার, ২৬ জুলাই, ২০১৫

ইলম নেওয়ার ব্যপারে সতর্কতা

ইলম নেওয়ার ব্যপারে সতর্কতা
- আনসারুস সুন্নাহ
_________________________
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
কেয়ামতের একটা লক্ষণ হচ্ছে যে, মানুষ জাহেল (মূর্খ) লোকদের কাছ থেকে ইলম (জ্ঞান) অর্জন করবে।
[তাবারানি, জামি আস-সাগীরঃ ২২০৩]
_________________________
আপনারা দ্বীন সম্পর্কে জানার জন্যে ফেইসবুক, ইউটিউব বা ইন্টারনেটে কার লেখা পড়ছেন, কার কথা শুনছেন, কাকে অনুসরণ করছেন বা উস্তাদ (শিক্ষক) হিসেবে কাকে নিচ্ছেন সেই ব্যপারে খুব সতর্ক থাকবেন। কারণ মাজহুল বা অপরিচিত লোক, যে কোন আলেম এর ছাত্র নয় এবং যাকে কোনা আলেম চেনেন না, যার আকিদাহ মানহাজ স্পষ্ট নয়, সে কি হক্কপন্থী নাকি মনপূজারী বিদাতীদের অন্তর্ভুক্ত, এমন লোকের কাছ থেকে ইলম নেওয়া যাবেনা।
_________________________
ইমাম মুহাম্মাদ ইবনে সিরীন রাহিমাহুল্লাহ বলেনঃ
এই যে জ্ঞান (দ্বীনের ব্যপারে), এটাই হচ্ছে তোমার দ্বীন। সুতরাং, কার কাছে থেকে তুমি দ্বীনের জ্ঞান নিচ্ছসেই ব্যাপারে সতর্ক থাকো।
[সহীহ মুসলিম, মুকাদ্দিমা]
_________________________
ইমাম শুবাহ রাহিমাহুল্লাহ (মৃত্যুঃ ১৬০ হিজরী) বলেন,
ইলম তার কাছ থেকেই নাও, যে ব্যক্তি পরিচিত।
[আল-জারহ ওয়াত-তাদীলঃ ২/২৮]
_________________________
ফেইসবুকে বিরক্তিকর একটা ব্যপার হচ্ছে, ইসলামিস্ট বা ইসলামিক লেখক নামে এক শ্রেণীর লোকেরা আমি নিজে যা মনে করি সেটাকেই ইসলাম নাম দিয়ে প্রচার করে যাচ্ছে। এদের লেখালেখি, দাওয়াত সম্পূর্ণ তাদের নিজস্ব চিন্তা-ভাবনা নির্ভর, তাদের ব্যক্তিগত জীবনকে ঘিরেঃ আজকে আমার এই হইছে, আমি অমুক জায়গায় গেছি, আমার ২ বছরের দুধের বাচ্চা আল্লামাহ হয়ে গেছে, আমার বউ তো রাবেয়া বাসরী হয়ে গেছে, আল্লাহর দুনিয়াতে আমি যে কতোবড় আল্লাহ ওয়ালা, বুজুর্গ লোক - সেটা বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের কতই না চেষ্টা! এদের অবচেতন মনে জনপ্রিয়তার প্রতি মোহ, নিজেকে প্রকাশ করতে চাওয়ার ব্যাধি ও রিয়ার শিরক ঢুকে আছে। হাস্যকর ব্যপার হচ্ছে, যথেষ্ঠ পরিমান ইলম ছাড়াই দাওয়াতী কাজে নেমে পড়ায় এই ভ্রান্তিগুলোকেই তারা ইসলামের মহান খেদমত মনে করে ধোকা খাচ্ছে। আপনারা ফেইসবুক, ইউটিউব, পত্রিকা বা ম্যগাজিনের এমন আধা ইসলামিক লেখক, বক্তা, কথিত ইসলামিক পেইজ পড়বেন না, যদিও তারা যতইনা চমকপ্রদ ছবি ও লেখা পোস্ট করুক কারণ এইগুলোর আড়ালে তাদের জাহালত (অজ্ঞতা) ও দ্বোয়ালালাহ (ভ্রষ্টতা) লুকিয়ে আছে, যার দ্বারা অন্যদেরকে বিভ্রান্ত করছে। যেমন নিজের মৌচাকে মধু না থাকলে অন্যদেরকে মধু দেওয়া যায়না, ঠিক তেমনি যার নিজের ইলম নেই, সে অন্যদের লেখা কপি বা নকল করে সে কখনো দ্বাইয়ী বা ইসলাম প্রচারকারী হতে পারেনা।
_________________________
ইলম নিতে এমন আলেমদের কাছ থেকে, যারা সকলের কাছে পরিচিত, যেমন যেমন শায়খ বিন বাজ (রহঃ), শায়খ সালেহ আল-ফাউজান (হাফিঃ), শায়খ আব্দল মুহসিন আল-আব্বাদ (হাফিঃ)। অথবা এমন সত্যিকারের দ্বাইয়ী ও তালেবুল ইলম, যারা আলেমদের ছাত্র, দীর্ঘদিন আলেমদের সাথে থেকে দ্বীন শিক্ষা করেছেন। যেমন আমাদের বাংলা ভাষাতে শায়খ আব্দুল হামীদ মাদানী, শায়খ শহীদুল্লাহ খান মাদানী, শায়খ মতিউর রহমান মাদানী এবং অন্যান্যরা।

_________________________