মুসলমান বিজ্ঞানী নয়, বরং কাফের
অনেকে মুসলিম নামের
সাথে সাদৃশ্য থাকায় কিছু ব্যক্তিকে মুসলিম বিজ্ঞানী বলে গর্ব বোধ করেন। অথচ হক্ক কথা হচ্ছে তাদের নাম দেখে মুসলিম বলে মনে হলেও, প্রকৃতপক্ষে তারা ইসলাম বিহীন, কাফের অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছিলেন। যারা কাফের অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে, তাদের পরিণতি সম্পর্কে
আল্লাহ তাআ’লা বলেছেন, “যারা কাফের হয়েছে এবং কাফের অবস্থায়
মৃত্যুবরণ করেছে, (কেয়ামতের দিন) যদি সারা পৃথিবী পরিমাণ স্বর্ণও তাদের (পাপের কাফফারা হিসেবে দেওয়া হয়), তবুও তাদের তওবা কবুল
করা হবে না। তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব! আর তাদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই।” সুরা আলে-ইমরানঃ ৯১।
সুতরাং, দ্বীনি ভাই
ও বোনদের প্রতি আমাদের আহবান, কোন কাফেরকে মুসলমান বলে গর্ব বোধ করবেন না। আল্লাহ তাআ’লা আমাদের রব্ব, ইসলাম আমাদের দ্বীন, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের রাসুল, ক্বুরআনুল কারীম আমাদের কিতাব
– আমাদের সম্মানের জন্য এতোটুকুই
যথেষ্ঠ, আলহা’মদুলিল্লাহ।
বিভিন্ন বই-পুস্তকে
ওমর খৈয়াম, ইবনে সিনা, আব্দুস সালামের মতো ‘যিন্দীক’ লোকদেরকে বড় মুসলিম বিজ্ঞানী ও দার্শনিক বলে প্রচার করা হয়। অথচ তারা ইসলাম থেকে অনেক
দূরে ছিলো, যা তারা নিজেরাই স্পষ্ট করে গেছেন।
(১) ওমর খৈইয়ামের কুখ্যাত
বইয়ের নাম হচ্ছে ‘রুবাইয়াত’, যার মূল বিষয়বস্তু হচ্ছেঃ
- তাক্বদীর বা আল্লাহ তাআ’লা মানুষের ভাগ্য নির্ধারণ করেছেন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ এবং নিন্দা। এটা বড় কুফুরী কাজ, যার কারণে একজন মানুষের ঈমান
নষ্ট হয়ে মুর্তাদ হয়ে যাবে।
- বিয়ে বহির্ভূত অবৈধ
প্রেম ভালোবাসার কল্প-কাহিনী, যা নষ্ট চরিত্রের লোকদেরকে আকর্ষণ
করে।
- সুস্পষ্ট ধর্মদ্রোহীতা,
ধর্মীয় বিধি-বিধানকে অস্বীকার করা এবং সেইগুলো নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করা।
একমান্ত্র নাস্তিক ছাড়া
কোন
ঈমানদান এমন কাজ করে না।
- সম্মানিত আলেম ওলামাদেরকে গালি-গালাজ করা। এটা মুনাফেক লোকদের কাজ।
(২) ইবনে সিনা এবং আল-ফারাবীঃ
ইবনে সিনা বড় চিকিৎসক
এবং একজন বিজ্ঞানী হতে পারেন, কিন্তু তিনি ছিলেন অমুসলিম বা কাফের। তার সম্পর্কে ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম আল-জাওজিয়া রাহি’মাহুল্লাহ বলেন, “ইবনে সিনা হচ্ছে একজন কাররামিয়া বাতেনিয়া (শিয়াদের কাফের একটা ফেরকা), যারা
এই পৃথিবীর শুরু এবং শেষ আছে তা বিশ্বাস করেনা। তারা বিশ্বাস করেনা যে, এই পৃথিবীর একজন সৃষ্টিকর্তা আছেন
এবং তারা আল্লাহর প্রেরিত নবী-রাসুলদেরকেও বিশ্বাস করেনা।” তিনি আরো বলেছেন, “এই গোমরাহ লোক এবং তার অনুসারীরা আল্লাহ, ফেরেশতা, কিতাব, নবী-রাসুল এবং পরকাল বিশ্বাস করে না।” ইগাসাত আল-লাহফানঃ ২/২৮৬-২৮৭।
ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী
রাহি’মাহুল্লাহ একজন শাফেয়ী আলেমের উদ্ধৃতি দিয়ে উল্লেখ করেছেন, “ইবনে সিনা এবং আবু নাসের আল-ফারাবী
মতো লোকেরা বিশ্বাস করে যে, এই পৃথিবী কখনো ধ্বংস হবেনা এবং আল্লাহ কোনকিছু ঘটার পূর্বে
তা কখন, কিভাবে ঘটবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা জানেন না (নাউযুবিল্লাহি মিং যালিক)। ইবনে সিনার সময়ের আলেমরা তার এবং আল-ফারাবীর ব্যপারে স্পষ্টভাবে উল্লেখ
করেছেন যে, তাদের এই আকিদাহ কুফুরী, এবং তা মুসলিমদের আক্বীদাহর সাথে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক।” লিসান আল-মীযানঃ ২/২৯৩।
আল্লামাহ মুহাম্মাদ
বিন সালেহ আল-উসাইমিন রাহি’মাহুল্লাহ এবং ফযীলাতুশ-শায়খ সালেহ আল-ফাউজান হা’ফিজাহুল্লাহ সহ অন্যান্য আলেমদের ফতোয়া হচ্ছে, “ইবনে সিনার নামে কোন স্কুল-কলেজ,
হাসপাতাল বা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নাম রাখা জায়েজ নয়।”
(৩) পাকিস্থানী বিজ্ঞানী
আব্দুস সালাম ১৯৭৯ সালে ফিজিক্স বা পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরষ্কার পেয়েছিলেন। নাম শুনে মুসলিন মনে হলেও আসলে তিনি ছিলেন একজন কাদিয়ানি,
যারা পাকিস্থানে নিজেদেরকে আহমাদীয়া মুসলিম বলে পরিচয় দিয়ে মুসলিমদেরকে
ধোঁকা দেয়। তাদের বিশ্বাস
হচ্ছে মুহা’ম্মদ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর
প্রেরিত সর্বশেষ নবী
নন, গোলাম আহমাদ কাদিয়ানী নামের এক দাজ্জালকে তারা নবী বলে বিশ্বাস করে ও অনুসরণ
করে। এই উম্মতের ইজমা অনুযায়ী
ভন্ড নবী গোলাম আহমদের অনুসারী কাদিয়ানিরা হচ্ছে কাফের। যে ব্যক্তি কাদিয়ানীদেরকে কাফের
মনে করবে না, সে নিজেই কাফের হয়ে যাবে।
(৪) এপিজে আবুল কালাম
আজাদঃ
২০১৫ সালে মৃত্যবরণ
করা ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি, তিনি ছিলেন একজন আদর্শ ‘সেকুলার’ বা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী, কিন্তু তিনি মুসলিম ছিলেন না। আর একারণেই ভারতের মতো উগ্র হিন্দু রাষ্ট্রে আদর করে
তাকে রাষ্ট্রপতি বানানো
হয়েছিলো। কারো বাবা-মা
মুসলমান থাকলেই বা কারো নাম মুসলমানদের মতো হলেই তিনি মুসলমান হয়ে যান না। মুসলমান হতে হলে ইসলাম কবুল করে, আল্লাহ এবং তাঁর রাসুলকে
মেনে নিয়ে জীবন পরিচালনা
করতে হয়।
(৫) বাংলাদেশের কিছু
ঔপন্যাসিক, বিজ্ঞানী দাবীদার লোকও এই তালিকায় রয়েছেন। তবে সুশীল, মুক্তমনা ইত্যাদি চমকপ্রদ নাম নিয়ে নির্লজ্জভাবে বিশেষ একটি রাজনৈতিক দল এবং প্রতিবেশী হিন্দু দেশের দালালী করার মতো ঘৃণ্য কাজে লিপ্ত থাকার কারণে তাদের ব্যপারে আলোচনা করে সময় নষ্ট করলাম না।
সর্বশেষ, দুর্জন বিদ্বান হলেও
পরিত্যাজ্য।