প্রশ্নঃ সরকার ইসলাম বিরোধী কাজে লিপ্ত, নাস্তিক ও ইসলাম ও দেশের
শত্রুদের হয়ে কাজ করছে। হরতাল যদি নাজায়েজ হয়, তাহলে আমরা
করে কি করবো?
উত্তরঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন মুনকার বা খারাপ কোন কাজ
হতে দেখ তখন তোমাদের দায়িত্ব হচ্ছে তোমরা হাত দিয়ে সেটার পরিবর্তন করবে, যদি সেটা করতে না পারো
তাহলে জবান দ্বারা করতে হবে আরে সেটাও যদি করতে না পারো তাহলে অন্তর থেকে সেটাকে
ঘৃণা করবে। আর সেটা হলো ঈমানের দুর্বলতম স্তর।
সহীহ আল-মুসলিম।
এই হাদীস থেকে বুঝা যাচ্ছে,
কোনো ইসলাম বিরোধী, হারাম বা কোনো খারাপ কাজ
হতে দেখলে ঈমানদারদের উপর দায়িত্ব হচ্ছেঃ যদি “ক্ষমতা” থাকে তাহলে হাত দিয়ে বাঁধা
দিতে হবে এবং সংশোধন করে দিতে হবে। এখানে ক্ষমতা হচ্ছে – অথরিটি অথবা সামর্থ্য। যেমন,
বড় ভাইয়ের ক্ষমতা আছে ছোট ভাইকে হাতে বাঁধা দেওয়ার – এটা শক্তি দিয়ে।
প্রধানমন্ত্রী কোনো ভুল করলে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা আছে প্রধানমন্ত্রীকে বাঁধা দিয়ে
সংশোধন করার। অনুরূপ মুসলমানদের যদি ক্ষমতা থাকে, জিহাদ করার
তাহলে ইসলামের দুশমন যারা ইসলাম ও মুসলমানদের ক্ষতি করে তাদের উপর ফরয হচ্ছে তাদের
বিরুদ্ধে জিহাদ করে ইসলাম ও মুসলমানদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এটা হলো যদি শক্তি
থাকে তাহলে বল প্রয়োগ করে সংশোধন করা।
এই ক্ষমতা যাদের থাকবেনা,
তাদের দায়িত্ব হচ্ছে – জবান বা কথার দ্বারা বাঁধা
দেওয়া। অর্থাৎ উপদেশ দিতে হবে, তাদেরকে ভুল ধরিয়ে দিতে হবে,
সংশোধন করার জন্য আহবান জানাতে হবে, কাফের হলে
তাকে দাওয়াত দিতে হবে, ইসলাম সত্য ধর্ম বোঝানোর চেষ্টা করতে
হবে।
তাদের বিরুদ্ধে বই পত্র লিখতে হবে, টিভি, মিডিয়াতে ইসলামের বাণী তুল ধরতে হবে ও সমস্ত মুনকারের বিরুদ্ধে মানুষকে
সতর্ক করতে হবে। ওয়াজ মাহফিল, দাওয়াত, তাবলিগ,
বই, পুস্তক, বক্তব্য ও
লেখনীর মাধ্যমে মানুষের কাছে ইসলামের দাওয়াত ঘরে ঘরে পৌছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করতে
হবে।
আর কারো যদি এই ক্ষমতাও নাও থাকে তাহলে সে অন্তরে সেটার প্রতি ঘৃণা করবে, এবং কিভাবে এর প্রতিকার করা
যায় সেই চিন্তা করবে।
ইসলাম কায়েমের দুটি পথ – দাওয়াত ও জিহাদ। মানুষকে দাওয়াত দিতে হবে, যদি
দাওয়াত দিতে বাঁধা দেয়, ইসলামের কথা বললে নির্যাতন করে তাহলে
যদি ক্ষমতা থাকে তাহলে কাফেরদের বিরুদ্ধে জিহাদ চলবে।
কিন্তু এই দুইটার বাইরে,
ইসলাম কায়েমের জন্য শিরকি কুফুরী মতবাদ (গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, হরতাল) – এইগুলো হলো ভ্রান্ত।
ইসলাম এসেছে দুনিয়াতে সমস্ত শিরক ও কুফুরী উৎখাত এক আল্লাহর উপাসনা
প্রতিষ্ঠিত করার জন্য। কেউ যদি বলে,
সেই ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য কোনো একটা শিরক (গণতন্ত্র) করতে হবে – হয় সে মূর্খ নয় পথভ্রষ্ট। সে
ইসলাম বলতে কুরারন হাদীসের ইসলাম বুঝেনা – শয়তানের ইসলামকে বুঝে। কারণ
শয়তান চায় মানুষ শিরক করে জাহান্নামে যাক। শয়তান এদেরকে ধোঁকা দিচ্ছে – তোমাদেরকে জান্নাতে যেতে হলে
শিরক করতে হবে। আল্লাহ তাদেরকে, আমাদেরকে, আমাদের সকলকে হেদায়তে করুন - আমিন।