শায়খ সালেহ আল-ফাওজান হাফিজাহুল্লাহ কে ফোন করে এক বোন প্রশ্ন করেছিলেনঃ
এক লোক দাঁড়ি রাখেনা,
সে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছে। দাঁড়ি না রাখার কারণে তিনি তার
বিয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন।
শায়খ ফাওজান একথা শুনে বললেনঃ "সে ঠিক কাজই করেছে। কারণ, দাঁড়ি রাখার মতো
গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যপারকে যে অবহেলা করে তার মানে সে দ্বীনের অন্য ব্যপারগুলোতেও
গাফিলতি করবে। আর এর থেকে যে ছেলে-মেয়েগুলো জন্ম নেবে, তারাও এইরকম (গাফেল) হবে। তাই
একে বিয়ে না করে আরো ভালো কারো জন্যে অপেক্ষা করা উচিত, এর
প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলে আল্লাহ এর থেকে ভালো কাউকে দেবেন।
ফতোয়ার লিংক -
https://www.youtube.com/watch?v=vLUaq01g8QQ
=> যে
সমস্ত ভাইয়েরা দাঁড়ি শেইভ করার মতো ফাসেকী কাজে অভ্যস্ত তাঁরা একটু চিন্তা করুন।
আলেমরা হচ্ছেন নবী রাসুলদের ওয়ারিশ। শায়খ ফাওজানের মতো একজন যুগশ্রেষ্ঠ আলেম ও
ফকীহ উপদেশ দিয়েছেন, দাঁড়ি না রাখলে তাকে বিয়ে না করে অন্য
কারো জন্য অপেক্ষা করতে। আর আপনি দাঁড়ি রাখাকে হালকা বিষয় মনে করছেন?
=> বর্তমানে
দ্বীন মানতে আগ্রহী নারীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অজাতশ্রশ্রু হয়ে থাকলে একসময়
হয়তোবা কলেজ ইউনিভার্সিটতে বয়ফ্রেন্ড নিয়ে ঘুরে বেড়াতো এমন ফাসেক মেয়ে ছাড়া অন্য
নারীরা আপনাকে বিয়ে করতে আগ্রহী হবেনা। সুতরাং, হে
বুদ্ধিমান! ভাবিয়া করিও কাজ।
=> একবার
আমি শায়খ আব্দুল হামীদ মাদানীকে জিজ্ঞেস করছিলাম, এক বোনকে
সুদী ব্যংকে কাজ করে এমন একজন লোক বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছে। শায়খ উত্তরে বলেন,
হারাম উপার্জনে লিপ্ত কাউকে বিয়ে করা জায়েজ নয়।
__________________________
ফতওয়াঃ দাঁড়ি শেইভ করা ও টাখনুর নিচে কাপড় পড়া হারাম।
একবার আমি দাঁড়ি নিয়ে একটা পোস্ট দেই, খুব অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম
বিশেষ একটা দলের লোকেরা সেই পোস্টে দাঁড়ির রাখার ব্যাপারে চরম আপত্তি জানিয়েছেন।
দাঁড়ি রাখা নাকি সুন্নত, দাড়ি রাখা ছোটোখাটো বিষয়, এইগুলো নিয়ে কথা বললে নাকি ফেতনা সৃষ্টি হয়! এরকম ছোটোখাটো বিষয় নিয়ে
নাকি মুসলিমদের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করা ঠিকনা!
কুরান ও সুন্নাহ বিরোধী সম্পূর্ণ মনগড়া তাদের কথা বার্তা। অথচ তারাই নাকি
আবার রাষ্ট্রে ইসলাম কায়েম করবে।
আবার অনেকে ইয়াহুদী খ্রীস্টানদের অনুকরণে ফ্রেঞ্চ কাট বা খোচা খোচা
স্টাইলিশ দাঁড়ি রেখে মনে করছেন - আমি ইসলাম পালন করছি।
যাই হোক, দাঁড়ি
রাখা ও টাখনুর নিচে কাপড় ঝুলিয়ে পড়া এমন একটা বিষয় অনেক মুসলমান পুরুষের মাঝে
কম-বেশি গাফিলতি লক্ষ্য করা যায়।
আজকে তাই পুরুষদের মাঝে খুব বেশি দেখা যায় এমন দুইটি বিষয় নিয়ে একজন
আলেমের ফতওয়া অনুবাদ করে দেওয়া হলো।
ফতোয়া দিয়েছেনঃ বর্তমান সৌদি আরবের সম্মানিত প্রধান মুফতি, ফতওয়া বোর্ডের প্রেসিডেন্ট
ও বহু গ্রন্থ প্রণেতা শায়খ আব্দুল আজীজ ইবনে আব্দুল্লাহ আলে আশ-শায়খ (হা’ফিজাহুল্লাহ)।
__________________________
(((ফতওয়া))))
প্রশ্নকারীঃ আমি আপনার কাছে সঠিক উত্তর জানতে চাচ্ছি কারণ এই বিষয়টা নিয়ে
আমি কিছুটা সন্দেহের মাঝে আছি। আর তা হলো দাঁড়ি শেইভ করা ও টাখনুর নিচে কাপড়
পড়া নিয়ে। টাখনুর নিচে কাপড় পড়ার হুকুম কি? এটা কি সব ধরণের কাপড়ের
জন্য প্রযোজ্য? আর কেউ যদি এই কাজ করে তাহলে কি সমস্যা?
সৌদি আরবের গ্রান্ড মুফতি,
আল্লামাহ আব্দুল আ’জীজ ইবনে আব্দুল্লাহ আলে-শায়খ শায়খ এর
উত্তরঃ
দাঁড়ি ছেড়ে দেওয়া (অর্থাৎ বাড়তে দেওয়া) ওয়াজিব, দাঁড়ি রাখা ওয়াজিব এবং
এটা নবী (সাঃ) এর সৃষ্টিগত প্রকৃতির অন্তর্ভুক্ত।(*)
আর দাঁড়ি শেইভ করা হারাম,
দাঁড়ি ছোটো করা হারাম। সুন্নাহ হচ্ছে দাঁড়ি যেইভাবে আছে ঠিক
সেইভাবে ছেড়ে দেওয়া যেইভাবে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন। এমন
কারো কথা শুনবেন না যারা বলে দাঁড়ি ছোটো করা জায়েজ, আর যে
কোনো উপায়ে দাঁড়ি কাটাকে জায়েজ প্রমান করার চেষ্টা করে। এমনকি সে যদি নিজেকে
আলেম দাবী করে তবুও তার কথা শুনবেন না। কারণ, নিজেকে আলেম
দাবী করার মাধ্যমেই প্রমানিত হয় না যে সেই ব্যাক্তি কোন আলেম নয়। “সুন্নাহ” সবার জন্য প্রযোজ্য।
আর টাখনুর নিচে কাপড় পড়া হারাম। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “টাখনুর নিচে পায়ের যতটুকু অংশ কাপড় পড়া
হবে সেটা জাহান্নামে যাবে।”
(সহীহ বুখারী)।
তিনি (সাঃ) আরো বলেছেন,
“অহংকার বশত যে (টাখনুর নিচে) কাপড় ঝুলিয়ে
পড়ে বিচারের দিনে আল্লাহ্ তার দিকে তাকাবেন না” (তিরমিযী)।
“বিচারের
দিনে তিন প্রকার মানুষের সাথে আল্লাহ্ কোনো কথা বলবেন না, তাদের দিকে তাকাবেন না,
তাদেরকে (গুনাহ থেক) পবিত্র করবেন না আর তাদের জন্য রয়েছে
যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। এক হচ্ছে যেই ব্যাক্তি (টাখনুর নিচে) কাপড় ঝুলিয়ে পড়ে,
যেই ব্যাক্তি উপকার করে খোঁটা দেয়, আর তৃতীয়
হচ্ছে যেই ব্যাক্তি মিথ্যা কসম করে কোনো কিছু বিক্রি করার চেষ্টা করে।” (সহীহ মুসলিম)।
+++ফতওয়া এখানেই সমাপ্ত।
আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেছেন,
“তোমরা
মুশরিকদের বিরোধিতরা কর,
দাঁড়ি লম্বা কর, আর মোচ খাট কর।”
সহিহ বুখারী ২/৮৭৫,
সহীহ মুসলিম।
__________________________