“ইলম” : মানব জাতির শ্রেষ্ঠ হওয়ার কারণ
বিসমিল্লাহ।
আলহা’মদুলিল্লাহ। ওয়াস সালাতু ওয়াস
সালামু আ’লা রাসুলিল্লাহ। আম্মা বাআ’দু।
“যারা জানে, এবং যারা জানে না, তারা কি কখনো সমান হতে পারে?”
সুরা আয-যুমারঃ
৯।
আল্লাহর সমস্ত
সৃষ্ট জীবজগতের মাঝে মানব জাতি হচ্ছে শ্রেষ্ঠ। আর সমস্ত মানুষের মাঝে শ্রেষ্ঠ হচ্ছেন
যারা নবী ও রাসুল তাঁরা। আর সমস্ত নবী ও রাসুলদের মাঝে শ্রেষ্ঠ হচ্ছেন আমাদের নবী
মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। স্বাভাবিকভাবেই মনে প্রশ্ন আসতে পারে, সৃষ্টির মাঝে এই শ্রেষ্ঠত্বের তারতম্য কিসের উপর ভিত্তি করে
নির্ধারিত? এই প্রশ্নের উত্তর হচ্ছেঃ ‘ইলম’ বা জ্ঞান। আমরা যদি মানব জাতির সৃষ্টির
সূচনার দিকে লক্ষ্য করি, তাহলে দেখতে পাই যে আল্লাহ তাআ’লা যখন আদম আ'লাইহিস সালাম কে সৃষ্টি করার ইচ্ছা ফেরেশতাদের কাছে বলেছিলেন,
তখন ফেরেশতারা বলেছিলো,
“আপনি কি পৃথিবীতে এমন কোন জাতি সৃষ্টি করবেন, যারা দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করবে এবং রক্তপাত ঘটাবে? অথচ আমরা নিয়ত আপনার প্রশংসা করছি এবং আপনার পবিত্র সত্ত্বার স্মরণ করছি।” [সুরা আল-বাক্বারাহঃ ৩০]
ফেরেশতাদের এই
কথা বলার কারণ হচ্ছে,
তাঁরা মনে করেছিলোঃ আল্লাহর ইবাদতকারী হিসেবে তারাই শ্রেষ্ঠ।
তখন আল্লাহ বলেছিলেন,
“নিঃসন্দেহে আমি যা জানি, তোমরা জান না।”
যাই হোক, ফেরেশতা ও জিনদের তুলনায় মানব জাতি যে শ্রেষ্ঠ সেটা সবার
সামনে প্রমান করে দেওয়ার জন্য আল্লাহ তাআ’লা আদম আ’লাইহিস সালাম কে সমস্ত জিনিসের নাম শিখিয়ে দিয়েছিলেন, অর্থাৎ তাঁকে ‘ইলম’ দান করেন। আর তখন
ফেরেশতাদের সামনে সেই সমস্ত জিনিসগুলো উপস্থাপন করে তাদেরকে এইগুলোর নাম বলে দিতে
বলেন। কিন্তু ফেরেশতারা এই বলে নিজেদের অপারগতা প্রকাশ করেছিলো,
“(হে আল্লাহ!) তুমি পবিত্র! আমরা কোন কিছুই জানি না, তবে তুমি যা আমাদেরকে শিখিয়ে দিয়েছ (সেগুলো ছাড়া), আর
নিশ্চয় আপনি প্রকৃত জ্ঞানসম্পন্ন, হেকমতওয়ালা।” [সুরা আল-বাক্বারাহঃ ৩২]
ফেরেশতারা যখন
সেই জিনিসগুলোর নাম বলতে অক্ষম হলো, তখন
আল্লাহ আদম আ’লাইহিস সালাম কে সেইগুলোর নাম বলে দিতে বললেন,
“তিনি (আল্লাহ) বললেন, হে আদম! ফেরেশতাদেরকে
বলে দাও এসমস্ত জিনিসের নাম। তারপর যখন তিনি (আদম আঃ) বলে দিলেন সে সবের নাম,
তখন তিনি (আল্লাহ) বললেন, আমি কি তোমাদেরকে
(ফেরেশতাদেরকে) বলিনি যে, আমি আসমান ও যমীনের যাবতীয় গোপন
বিষয় সম্পর্কে খুব ভাল করেই অবগত রয়েছি?
এই কথার দ্বারা
উদ্দেশ্য, এই কথা প্রমান করে দেওয়া যেঃ যেই ইলম
আল্লাহ তাআ’লা আদম আ'লাইহিস সালাম কে দিয়ে সৃষ্টি করেছেন,
তার কারণে ফেরেশতাদের চাইতে তিনি উত্তম, এটা বুঝিয়ে দেওয়া। এই কথা প্রমান করে
দেওয়ার পর, আল্লাহ তাআ’লা ফেরেশতা এবং ইবলিস জিনকে আদেশ করেন, আদম আ'লাইহিস সালাম ‘সম্মান সূচক’ সিজদাহ করার জন্যে।
মানুষের মাঝে
সম্পদ, সৌন্দর্য, বংশ বা
জাতি দ্বারা মর্যাদা নির্ধারিত হয়না, বরং আল্লাহর কাছে সেই
ব্যক্তি তত বেশি সম্মানিত যে যত বেশি মুত্তাক্বী বা আল্লাহভীরু। মহান আল্লাহ তাআ’লা বলেন,
“নিশ্চয় আল্লাহর কাছে সে-ই সর্বাধিক সম্মানিত, যে বেশি মুত্তাক্বী।”
সুরা হুজুরাতঃ
১৩।
অনেকে মনে করেন, শুধুমাত্র ক্বুরান ও হাদীস জানার নাম জ্ঞান, এটা ঠিকনা। বরং, ক্বুরান ও হাদীস জানা, তার উপর আমল করা এবং সর্বোপরি ‘তাক্বওয়া’ বা আল্লাহকে ভয় করার নাম হচ্ছে ইলম। মহান আল্লাহ তাআ’লা বলেন,
“আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে শুরহুমাত্র জ্ঞানীরাই তাঁকে ভয় করে থাকে।”
সুরা ফাতিরঃ
২৮।
“যাদেরকে জ্ঞান দান করা হয়েছে, আল্লাহ তাদেরকে
মর্যাদায় অনেক উঁচু করবেন।”
সুরা মুজাদালাঃ
১১।
এই আয়াতগুলো
দ্বারা এটাই প্রমানিত হয়, মানুষের ‘ইলম’ দ্বারাই তাক্বওয়া অর্জিত হয়, আর তাক্বওয়ার উপর নির্ভর করে মানুষ আল্লাহর কাছে সম্মানিত হয়।
এতো গেলো
ক্বুরান থেকে প্রমান, মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের
কারণ তার ইলম। এবার হাদীসে রাসুল সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম এ দেখুন, ইলম এর ফযীলত। তিনি বলেছেন,
“তোমাদের মাঝে সেই ব্যক্তি সর্বোত্তম, যে
নিজে ক্বুরআন শিক্ষা করে এবং অন্যদেরকে শিক্ষা দেয়।”
সহীহ
আল-বুখারী।
রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন,
“আলেমের মর্যাদা আবেদের উপর ঠিক সেইরূপ, যেরূপ
আমার মর্যাদা তোমাদের উপর।”
তারপর আল্লাহর
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “নিশ্চয় আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতাকুল, আসমান-জমিনের সকল
বাসিন্দা এমনকি গর্তের মধ্যে পিঁপড়ে এবং (পানির মধ্যে) মাছ পর্যন্ত মানবমন্ডলীর
মাঝে যারা অন্যদেরকে ইলম শিক্ষা দেয়, তাদের জন্য মঙ্গল কামনা
ও নেক দুআ’ করতে থাকে।”
তিরমিযীঃ ২৬৮৫, দারেমীঃ ২৮৯, হাদীসটি হাসান।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে
শুনেছি যে,
“আলেমরা হচ্ছেন নবী রাসূলদের উত্তরাধিকারী।”
আবু দাউদঃ ৩৬৪১, দারেমীঃ ৩৪২,
দ্বীন শিক্ষা
করা আমাদের সকলের জন্য ফরয দায়িত্ব। ক্বুরানের প্রথম ওয়াহীই ছিলো “ইক্বরা” – পড়ো!
নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
“দ্বীন শিক্ষা করা প্রত্যেক মুসলমান (নারী ও পুরুষের) জন্য ফরয।”
ইবনু মাজাহ, হাদীসটি হাসান সহীহ।
শায়খ মুহাম্মদ
বিন সালেহ আল-উসায়মিন রাহিমাহুল্লাহ বলেন,
“দ্বীন শিক্ষা করা এক প্রকার জিহাদ, যে
কারণে তালিবুল ই’লম (দ্বীন শিক্ষার্থীদেরকে) যাকাত দেওয়া যায়।”
[ফতোয়া আরকানুল
ইসলাম]
আসুন, আমরা
আমাদের দ্বীন শিক্ষা করি, এর দ্বারা নিজেরা উপকৃত হই এবং অন্যদেরকেও আলোকিত করি।
আল্লাহ আমাদের সকলকে সেই তোওফিক দান করুন।
দ্বীন শিক্ষার্থীদের কিছু দিক-নির্দেশনাঃ
ছোট ছোট কিছু
বই বাছাই করবেন, বড় ওলামাদের লেখা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর
উপরে। অত্যন্ত সহজ ভাষায় লেখা, যেইগুলো পড়লে আপনি অত্যন্ত
সহজ ভাষায় ইসলামের মূল বিষয়গুলো জানতে পারবেন। এমন বইগুলো ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বারবার
পড়বেন, আর সেই টপিকগুলোর উপরে ভালো বক্তাদের ওয়াজ লেকচার
শুনবেন। নিয়মিত ক্বুরানের কিছু আয়াত পড়বেন, অন্তত ১০-২০টা করে
আয়াত হলেও। আর কিছু হাদীস পড়বেন, যাতে করে সব সময় রাসুল সাঃ
এর আদর্শের কথা স্বরণে থাকে। আর সর্বদা আল্লাহকে স্বরণ করবেন, উঠতে বসতে, বাথরুমে যাওয়ার পূর্বে, বাথরুম থেকে বের হয়ে, খাওয়ার পূর্বে ও পরে দুয়া,
এমন যতগুলো মাসনুন দুয়া যা রাসুল সাঃ নিয়মতি করতেন প্রত্যেকটা কাজের
পূর্বে - সেইগুলো খুঁজে খুঁজে বের করে পড়বেন, মুখস্থ করবেন
এবং আমল করবেন। আর বর্তমান যুগের বড় বড় ফেতনাগুলো কি সেটা জানবেন, এবং এ থেকে বাঁচার চেষ্টা করবেন। আল্লাহ আমাদেরকে সেই তোওফিক দান করুন,
আমিন।
আর অবশ্যই
অবশ্যই পছন্দের ক্বারীদের তেলাওয়াত শুনবেন, দিনের
একটা সময় নির্দিষ্ট করে, কাজ করতে করতে, খেতে খেতে, জার্নিতে, যখন
যেইভাবে সুযোগ হয়। বিশেষ করে কিছু সুরা যেমন সুরা ওয়াক্বিয়া, সুরা ইয়াসীন, সুরা মুলক, সুরা
দাহার, সুরা যুমার, সুরা হিজর, সুরা আর-রাহমান...এইগুলো শুনবেন বার বার, সাথে সাথে
আয়াতে অর্থগু ফলো করবেন, এভাবে চেষ্টা করলে আস্তে আস্তে
সরাসরি আরবী থেকেই ক্বুরানের অর্থ বুঝতে পারবেন। ক্বুরান মানুষের জীবনকে
আশ্চর্যজনকভাবে পরিবর্তন করে দেয়, সেই জন্য আরবীতে ক্বুরান
বুঝা জরুরী।
বাংলা ভাষাভাষী
ইসলামিক বক্তাদেরর মাঝে রয়েছেন শায়খ আব্দুল হামীদ মাদানী, শায়খ মতিউর রহমান মাদানী, শায়খ
শহীদুল্লাহ খান মাদানী, ডা আবু বকর জাকারিয়া, কাযী মুহাম্মাদ ইব্রাহীম, শাহ ওয়ালী উল্লাহ আরো
অনেকেই।
দ্বীন শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় কিছু বই এর নামঃ
এই বইয়ের লিস্ট
তাদের জন্য, যারা একেবারে প্রথম থেকে ইসলাম
সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের জন্যে চেষ্টা করছেন। এখানে আমি চেষ্টা করেছি শুধুমাত্র বড়
আলেম বা নির্ভরযোগ্য তালিবুল ইলমদের লেখা অত্যন্ত উপকারী এমন বইগুলোর নাম দেওয়ার
জন্যে, যা পড়লে একজন মানুষ সহজেই ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন
করতে পারেন। বইগুলো কেউ হোম ডেলিভারি নিতে চাইলে আমাদের পেইজে মেসেজ করুন।
ঈমান, আক্বীদাহ ও তাওহীদ
বিষয়ক বইঃ
১. “আকীদাহ আত-ত্বাহাবীয়া” - ইমাম ত্বাহাবী
রাহিমাহুল্লাহ। আহসান পাবলিকেশান, দাম – ১৫ টাকা।
২. “আল-আক্বীদাতুল ওয়াসাতিয়াহ” - শায়খুল ইসলাম ইবনে
তাইমিয়্যা রাহিমাহুল্লাহ। তাওহীদ পাবলিকেশান, দাম – ২৫ টাকা।
৩. “তাওহীদের ডাক” – ইমাম মুহাম্মাদ নাসির উদ্দীন আল-আলবানী রাহিমাহুল্লাহ। তাওহীদ
পাবলিকেশান্স, দাম – ১৫ টাকা।
এই তিনটা বই
আসলে খুব ছোট। কিন্তু একজন মুসলিমের সঠিক ‘আক্বীদাহ’ বা ধর্মীয় বিশ্বাস কেমন হওয়া উচিৎ, সে সম্পর্কে
অত্যন্ত প্রাঞ্জল ও সহজ ভাষায় এই তিনটি বইয়ে খুব ভালো ধারণা পাবেন।
৪. “কিতাব আত-তাওহীদের ব্যাখ্যা” – মূলঃ শায়খুল ইসলাম মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওহহাব রাহিমাহুল্লাহ।
ব্যখ্যা লিখেছনেঃ শায়খ সালিহ বিন আব্দুল আজীজ ও শায়খ মুহাম্মাদ বিন ইব্রাহীম,
তাওহীদ পাবলিকেশান/দারুস সালাম পাবলিকেশান, দাম
– ১৬৫ টাকা।
এই বইটা পড়ে
আক্বীদাহর বিষয়গুলোর মাঝে সবচাইতে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তাওহীদ ও শিরক সম্পর্কে
জানতে পারবেন। তাওহীদ বা শিরকমুক্ত এক আল্লাহর ইবাদত করার জন্যে অত্যাবশ্যকীয় একটা
পাঠ্যবই।
৫. “ফতোয়া আরকানুল ইসলাম” - আল্লামাহ মুহাম্মাদ
বিন সালিহ আল-উসাইমিন রাহিমাহুল্লাহ। তাওহীদ পাবলিকেশান, দাম
– ২৩৫ টাকা। এই বইয়ের ঈমান
অধ্যায়ে আহলে সুন্নত ওয়াল জামআ’তের ঈমান, আক্বীদাহ, মূলনীতি
নিয়ে ১২০টি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর ক্বুরান ও হাদীসের আলোকে বিস্তারিত বিবরণ
দেওয়া হয়েছে।
৬. “দুই শতাধিক প্রশ্নোত্তরে নাজাত
প্রাপ্ত দলের আক্বীদাহ” – আল্লামা হাফেয বিন আহমাদ
আল-হাকামী রহিমাহুল্লাহ।
এই বইটি
প্রটাতি মুসলিমের পড়া উচিত, যাতে সে বুঝে শুনে
ইসলাম পালন করতে পারে। আহলুস-সুন্নাহর আক্বীদাহ খুবই সুন্দরভাবে ক্বুরআন
ও হাদিস থেকে প্রতিটি কথার দলিল দিয়ে প্রশ্ন ও উত্তর আকারে সাজিয়েছেন।
৭. তিনটি মৌলনীতির
পরিচয় – শায়খুল ইসলাম মুহাম্মাদ
বিন আব্দুল ওহহাব রাহিমাহুল্লাহ। তাওহীদ পাবলিকেশান, দাম – ২০ টাকা।
ফিকহ এর উপরে
বইঃ
৮. “অত্যাবশ্যকীয় পাঠ” – ইমাম আব্দুল আজিজ বিন বাজ রহিমাহুল্লাহ, সাবেক
সউদি আরবের প্রধান মুফতি লিখিত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বই। ঈমান-আকীদা, পবিত্রতার বিধান, নামাজ শিক্ষা ও অন্যান্য
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলী অন্তন্ত সংক্ষিপ্তভাবে লিখা, মুসলিম
উম্মাহর জন্যে উপদেশ হিসেবে।
৯. “আরকানুল ইসলাম ও আল-আক্বীদাহ
আল-ইসলামিয়া” – শায়খ মুহাম্মদ বিন জামিল
যাইনু রাহিমাহুল্লাহ। ঈমান, আক্বীদাহ, ইসলাম
এর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত পরচিতি এবং ইবাদত এর নিয়ম কানুন
নিয়ে অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য একটি বই। তাওহীদ পাবলিকেশান, দাম – ১০০ টাকা।
৫. “ফতোয়া আরকানুল ইসলাম” - আল্লামাহ মুহাম্মাদ
বিন সালিহ আল-উসাইমিন রাহিমাহুল্লাহ। তাওহীদ পাবলিকেশান, দাম
– ২৩৫ টাকা। এই বইটা
অবশ্যই সংগ্রহ করবেন। ঈমান, সালাত, যাকাত,
হাজ্জ ও সাওম সম্পর্কে জরুরী মাসলা মাসায়েল ও ফতোয়ার উপরে এই বইটা
সবার কাছে থাকা উচিত ও পড়ে আমল করা উচিত।
হাদীসের বইগুলোঃ
হাদীসের উপরে
বইয়ের ব্যপারে আমার সাজেশান হচ্ছে, প্রথমেই
সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম কিনবেন না। কারণ এই বইগুলো অনেক বড়, আর সবগুলো খন্ড কিনতে গেলে অনেক টাকারও প্রয়োজন। তাই সেগুলো দ্বীন শেখার
একেবারে প্রথমে না কিনে, প্রথমে “রিয়াদুস সালেহীন” ও “বুলুগুল মারাম” এই ২টা হাদীসের কিতাব
ভালোভাবে পড়ে শেষ করে পরবর্তী পর্যায়ে বুখারী কিনবেন। কারণ, ইসলাম সম্পর্কে সঠিক অর্জনের জন্য এই দুইটি বইয়ে সাধারণ মানুষের অধিক
গুরুত্বপূর্ণ হাদীসগুলো বাছাই করে সংক্ষিপ্তভাবে সাজানো হয়েছে। আর অবশ্যই দুইটি বই
কিনবেন তাওহীদ পাবলিকেশান থেকে, কারণ তারা সহীহ ও জয়ীফ হাদীস
তাহকীকসহ প্রকাশ করেছে।
১০. “তাহকীক রিয়াদুস সালেহীন” – ইমাম নববী রাহিমাহুল্লাহ। তাওহীদ পাবলিকেশান, দাম – গ্লোসী পেপারে ~৫৫০ টাকা।
শায়খ
আল-আলবানী রাহিমাহুল্লাহর তাহকীকসহ, অবশ্যই
তাওহীদ পাবলিকেশারটা কিনবেন। যদি সম্ভব হয় তাহলে ‘গ্লোসি পেপারে’ উন্নতমানের প্রিন্টেরটা
কিনবেন। একজন মুসলিম জীবনের প্রত্যেকটা দিক কিভাবে কুরআন ও সহীহ হাদীস দিয়ে
পরিচালনা করবে তা জানার জন্য প্রতিদিন পাঠ্য এই বইটা।
১১. “হাদীসে আরাবাইন” বা “নবী সাঃ এর ৪০ হাদীস” – ইমাম নববী রাহিমাহুল্লাহ। অনুবাদকঃ আব্দুল্লাহিল কাফী। জায়েদ
লাইব্রেরী, ৫০ টাকা।
দুয়া, ঝাড়ফুঁক ও যিকর এর বইঃ
১২. “হিসনুল মুসলিম” – শায়খ সাঈদ আল-কাহতানী। আহসান পাবলিকেশান, দাম – ৫০ টাকা। পীস পাবলিকেশানের আছে, শব্দার্থসহ,
আপনার যেটা ভালো লাগে সেটা কিনতে পারেন।
১৩. “সহীহ দুয়া, ঝাড়ফুক ও যিকর” – শায়খ আব্দুল হা’মীদ মাদানী। এটা খুব উপকারী একটা
বই। তাওহীদ পাবলিকেশান, দাম – ৮০ টাকা।
১৪. সুন্নত
অনুযায়ী আমল শেখার জন্য বইঃ
সকাল থেকে ঘুম
থেকে উঠে ঘুমানোর আগে পর্যন্ত ১০০০ এর বেশি কি কি সুন্নত আমল আছে সেটা জানার জন্য “১০০০ সুন্নত” - এই বইটা অবশ্যই অবশ্যই
কিনবেন। এই বইয়ের সবগুলো আমল কুরান ও সহীহ হাদীস থেকে নেওয়া হয়েছে। তাওহীদ
পাবলিকেশান, দাম মাত্র ৬০ টাকা।
তোওবা ও ঈমানী দুর্বলতাঃ
শায়খ মুহাম্মাদ
সালেহ আল-মুনাজ্জিদের লেখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দুইটি বই, যা সকলের পড়া উচিতঃ
১৫. “আমিতো তাওবা করতে চাই, কিন্তু...”
তোওবা কি, তোওবা কিভাবে করতে হবে, কিভাবে বুঝবো
আমার তোওবা কবুল হয়েছে কিনা, এছাড়া বিভিন্ন ধরণের পাপ যে করে
ফেলেছে সে কিভাবে তোওবা করবে – তোওবা সংক্রান্ত এমন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য
এই বইটা অবশ্যই পড়বেন।
১৬. “ঈমানী দুর্বলতা”
দুর্বল ঈমানের
লক্ষণসমূহ কি, ও ক্বুরান ও সুন্নাহ অনুযায়ী দুর্বল
ঈমানের চিকিতসা কি – এনিয়ে ইমাম ইবনুল কাইয়্যিমের অত্যত্ন গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা
পাবেন এই বইয়ে যার অনুসরণ করলে একজন মানুষের জীবন পরিবর্তন হওয়া সম্ভব ইন শা
আল্লাহ।
১৭. “আল-ক্বুরান অর্থানুবাদ” – কাজী মুহাম্মাদ ইব্রাহীম। মানারাহ পাবলিকেশান। সুরা বাইয়্যিনাহ
থেকে সুরা নাস ও সুরা ফাতেহার সরল তর্জমা, শব্দার্থ, সুরার শিক্ষা, শানে নুযূল এবং সংক্ষিপ্ত তাফসীরসহ
নতুন শিক্ষার্থীদের জন্য অসাধারণ একটি বই।
১৮. “নারীদের পবিত্রতার জরুরী বিধান” – আবু আহমাদ সাইফুদ্দীন বেলাল। নারীদের হায়েজ-নিফাস সম্পর্কে এই
বইটি এবং “ফতোয়া আরকানুল ইসলাম” বইটির পবিত্রতা অধ্যায়ে নারীদের ঋতু সম্পর্কিত প্রশ্নের
উত্তরগুলো অধিকাংশ প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য যথেষ্ঠ হবে ইন শা’ আল্লাহ।
১৯. “সালাত ত্যাগকারীর বিধান” – আল্লামাহ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমিন রাহিমাহুল্লাহ।
অনুবাদক – আকরামুজ্জামান বিন আব্দুস সালাম।
২০. “উলামার মতানৈক্য ও আমাদের করণীয়” – আল্লামাহ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমিন রাহিমাহুল্লাহ।
তাওহীদ পাবলিকেশান্স।
২১. “বিশ্ববরেণ্ব আলেমদের দৃষ্টিতে
তাবলীগ জামাত” – মুহাম্মাদ বিন নাসের
আল-উরাইনী। আল-ফুরকান পাবলিকেশান।
২২. “ইসলাম স্বীকৃত অধিকার” – আল্লামাহ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমিন রাহিমাহুল্লাহ।
তাওহীদ পাবলিকেশান্স।
২৩. “রমযান মাসের তালীম” – আল্লামাহ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমিন রাহিমাহুল্লাহ।
২৪. “পরকালের পাথেয়” – ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী রাহিমাহুল্লা। অনুবাদক – রফিকুল ইসলাম মাদানী।
২৫. “মৃত্যুর পর যা হবে” – আব্দুল্লাহ শাহেদ মাদানী
২৬. “কতিপয় হারাম কাজ যা মানুষ করছে” – সালেহ আল-মুনাজ্জিদ
২৭. দুঃখ-কষ্ট
ও বিপদ-আপদঃ ঈমানদারদের জন্য অভিশাপ নয়, আশীর্বাদ
– শায়খ ডা সালেহ আস-সালেহ।
আহসান পাবলিকেশান, ১৫ টাকা।
২৮. সুখী হওয়ার
১০টি উপায় – মুহাম্মাদ নাসীল শাহরুখ। ও.আই.ই.পি. ৩৫ টাকা।
২৯. জাদুটোনা, চোখের নযর, জিনের আসরের চিকিতসা ও
ঝাড়ফুক – পীস পাবলিকেশান।
৩০. “সহীহ আকীদার মানদন্ডে তাবলিগী
নিসাব” – মুরাদ বিন আমজাদ, তাওহীদ পাবলিকেশান। দাম
১৫০ টাকা। প্রচলিত তাবলীগ জামাত ও ফাযায়েলে আমল বইয়ের মাঝে শিরক বেদাত নিয়ে
দলীল ভিত্তিক সুন্দর আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়াও এই বইটা পড়লে প্রচলিত অনেক শিরক,
বেদাত ও জাল হাদী সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানতে পারবেন।
কেনো এইগুলো শিরক বেদাত সুন্দরভাবে ব্যখ্যা করা হয়েছে।
৩১. আদর্শ
বিবাহ ও দাম্পত্য - শায়খ আব্দুল হামীদ মাদানী
13. Adorsho Bibaho O Dampotto
http://www.abdulhamid-alfaidi-almadani.com/books.htm
৩২. নামাযে
খুশু ও খুযু (মনোযোগ ও একাগ্রতা) অর্জনের উপায়সমূহ – সালেহ আল-মুনাজ্জিদ। আহসান পাবলিকেশান। ২৫
টাকা।
৩৩. “বুলুগুল মারাম” – ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী (রহঃ) এর সংকলন করা একটা হাদীসের
কিতাব। সহীহ হাদীস অনুযায়ী কিভাবে নামায, রোযা, হজ্জ যাকাত সহ বিভিন্ন ইবাদতের প্রশ্নের উত্তর বা মাসলা মাসায়েল জানার
জন্য প্রয়োজনীয় সবগুলো সহীহ হাদীস তিনি একত্র করেছেন। প্রায় ১৫৫০টির মতো হাদীস
আছে এই কিতাবে। তাওহীদ পাবলিকেশান থেক “তাহকীক” সহ বেড়িয়েছে, আপনারা অবশ্যই “তাওহীদ পাবলিকেশানের তাহকীক” সহ বইটা কিনবেন। তাহকীক
করা বইগুলো এইজন্য কিনবেন কারণ, মূল বইয়ে ২-১টা যে ভুল ছিলো,
তা একদল আলেম গবেষণা করে সংশোধন করে দিয়েছেন। দাম ৪০০টাকা।
নবী ও রাসূলদের
জীবনী
৩৪. নবী
সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম এর জীবনী জানার জন্যে নির্ভরযোগ্য একটি বইঃ “আর-রাহীখুল মাকতুম” – শায়খ শফিউর রহমনান মুবারকপুরী রাহিমাহুল্লাহ। তাওহীদ
পাবলিকেশান।
৩৫. ক্বুরানুল
কারীমে বর্ণিত ২৫ জন নবী-রাসূলদের জীবনি জানার জন্যে পড়ুনঃ “নবীদের কাহিনী” – ডা. আসাদুল্লাহ আল-গালিব।
নামাযের উপর বইঃ
৩৬. নামাযের
সঠিক বর্ণনা জানার জন্য আল্লামাহ বিন বাজ রাহিমাহুল্লাহর এই ছোট্ট একটা বই খুব
সুন্দর ও উপকারী। ছোট কিন্তু নারী বা পুরুষের সহীহ নামায পড়ার পদ্ধত জানার জন্য
এটা অবশ্যই পড়বেন।
বইয়ের নামঃ “নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নামায
আদায়ের পদ্ধতি” – শায়খ আব্দুল আজীজ বিন
আবদুল্লাহ বিন বাজ (রহঃ)
তাওহীদ
পাবলিকেশান, দাম – ১৫টাকা।
৩৭. “ফতোয়া আরকানুল ইসলাম”
শায়খ
মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমিন (রহঃ)
এই বইয়ের
নামায, ওযু ও গোসল অধ্যায়ের সবগুলো প্রশ্নের
উত্তর পড়বেন ও উত্তরগুলো বুঝে মুখস্থ রাখবেন যাতে করে কেউ আপনাকে প্রশ্ন করলে ঐ
বইগুলো থেকে সঠিক উত্তরগুলো তাকে বলে দিতে পারেন।
এইগুলো ছাড়া
আরো ২-১টি বই কিনবেন, আরো বেশি ও বিস্তারিত
দলীল ও প্রমান ও প্রয়োজনীয় তথ্য জানার জন্য।
৩৮. বইয়ের
নামঃ “নবী (সঃ) যেইভাবে নামায পড়তেন”
শায়খ
নাসিরুদ্দিন আলবানী (রহঃ)
অনুবাদক – এম এন সিরাজুল ইসলাম,
বিশ্ব প্রকাশনী। দাম- ১১০ টাকা। এই অনুবাদক ছাড়া অন্যটা কিনবেন না।
সেগুলোতে মূল বইয়ের ভুল অর্থ ও বিকৃত করা হয়েছে। এই বইটাতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ
প্রশ্নের উত্তর দেওয়া আছে, দলীল সহকারে।
৩৯. “স্বলাতে মুবাশশির” – শাইখ আব্দুল হামীদ ফাইযী মাদানী হাফেজাহুল্লাহ। বইটি
সুন্দরভাবে সালাত আদায়ের জন্য চমৎকার, অসাধারন একটি বই।
http://www.islamhouse.com/402231/bn/bn/books/সালাতে_মুবাশ্বির
৪০. ৭০টি কবীরাহ গুনাহ – ইমাম আয-যাহাবী
৪১. সহীহ ফাযায়েল আমল - সানাউল্লাহ বিন নাযির
৪১. সহীহ ফাযায়েল আমল - সানাউল্লাহ বিন নাযির
বইগুলোর অনলাইন ডাউনলোড লিংক –
১. “আকীদাহ আত-ত্বাহাবীয়া” http://islamhouse.com/bn/books/65739/
২. “আল-আক্বীদাতুল ওয়াসাতিয়াহ” http://peacestudionet.blogspot.com/2014/07/blog-post_5996.html
৩. “তাওহীদের ডাক” http://peacestudionet.blogspot.com/2014/07/blog-post_5535.html
৪. “কিতাব আত-তাওহীদের ব্যাখ্যা” https://islamhousebd.wordpress.com/kitabut-tawhid/
৫. “ফতোয়া আরকানুল ইসলাম”
http://www.quraneralo.com/fatawa-arkanul-islam/
৬. “দুই শতাধিক প্রশ্নোত্তরে নাজাত প্রাপ্ত দলের আক্বীদাহ”
https://islamerahban.files.wordpress.com/2013/04/aqidah-bisoy-a-200-prosno-uttor.pdf
৭. তিনটি
মৌলনীতির পরিচয়
http://islamhouse.com/bn/category/192658/showall/showall/1/
৮. “অত্যাবশ্যকীয় পাঠ”
http://d1.islamhouse.com/data/bn/ih_books/single/bn_muslim_ummahr_guruttopurno_dars_shomuho.pdf
৯. “আরকানুল ইসলাম ও আল-আক্বীদাহ
আল-ইসলামিয়া”
১০. “তাহকীক রিয়াদুস সালেহীন”
http://www.quraneralo.com/riyadh-us-saliheen/
১১. “হাদীসে আরাবাইন” বা “নবী সাঃ এর ৪০ হাদীস” http://www.waytojannah.com/40-hadeeth-arabic-bangla-and-english/
১২. “হিসনুল মুসলিম” http://www.islamhouse.com/1588/bn/bn/books/হিসনুল_মুসলিম_বা_কুরআন_ও_হাদীস_থেকে_সংকলিত_দৈনন্দিন_যিকর_ও_দোআর_সমাহার
১৩. “সহীহ দুয়া, ঝাড়ফুক
ও যিকর” (লিংকে ১৭ নাম্বার বই, এই নামে আছে – 17. Sohih Dua O
Zikr)
http://www.abdulhamid-alfaidi-almadani.com/books.htm
১৪. “১০০০ সুন্নত”
http://islamiboi.wordpress.com/category/১০০০-এরও-বেশী-সুনান/
১৫. “আমিতো তাওবা করতে চাই, কিন্তু...”
http://islamhouse.com/bn/books/321050/
১৬. “ঈমানী দুর্বলতা”
http://islamiboi.wordpress.com/2013/06/06/imani-durbolota/
১২. “তাহকীক বুলুগুল মারাম”
http://www.waytojannah.com/tahkik-bulugul-maram-bangla/#more-3057
৭. “রমযানের ফাযায়েল ও রোযার মাসায়েল” https://islamhousebd.wordpress.com/ramadhan/
“সহীহ আকীদার মানদন্ডে তাবলিগী নিসাব”
http://islamhousebd.wordpress.com/2013/08/31/সহীহ-আক্বীদার-মানদন্ডে-ত/
“নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নামায আদায়ের পদ্ধতি”
http://ansarus-sunnah.blogspot.com/2014/03/blog-post_7841.html
“নবী (সঃ) যেইভাবে নামায পড়তেন”
http://islamhousebd.wordpress.com/2011/08/30/নবী-সাল্লাল্লাহু-আলাইহি/
“স্বলাতে মুবাশশির” http://www.islamhouse.com/402231/bn/bn/books/সালাতে_মুবাশ্বির