#
আজকে নারীদের বিয়ে সংক্রান্ত দুইটি জরুরী মাসয়ালা দেওয়া হলো। কত নারী যে প্রেমের ছলনায়
আবেগে গা ভাসিয়ে দিয়ে নিজে নিজে কোন অপাত্রকে বেছে নিয়ে, অথবা বাবা মায়ের পছন্দ করা
অপাত্রের কারণে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে। কত বোনেরা এর প্রতিকার জানতে চান, এক আল্লাহ
মাবূদ ভালো জানেন। সুতরাং নারী এবং তার গার্জিয়ানের উভয়ের উচিৎ নিজেদের খেয়াল-খুশিকে
নয়, বিয়ের ক্ষেত্রে ইসলামী বিধি-বিধানকে প্রাধান্য দেওয়া। আল্লাহ আমাদের জীবকে ক্বুরান
ও হাদীস দিয়ে পরিচালনা করার তোওফিক দান করুন, আমিন।
-
আনসারুস সুন্নাহ।
_______________________
=>
কোন নারী তার পিতা বা পিতা জীবিত না থাকলে বৈধ ওয়ালী (দাদা, ভাই বা চাচা, এমন কোন পুরুষ
গার্জিয়ানের) অনুমতি ছাড়া পালিয়ে গিয়ে একা একা বিয়ে করতে পারবেনা। এ ধরণের বিয়ে অশুদ্ধ
এবং নারীর ওয়ালী ব্যতীত বিয়ে হলে তারা পরস্পরের স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বিবেচিত হবে না।
উল্লেখ্য, মেয়ের মা বা অন্য কোন নারী মেয়ের ওয়ালী হতে পারেন না। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
“(নারীদের
ক্ষেত্রে) ‘’ওয়ালী’ বা অভিভাবক ব্যতীত কোন বিবাহ নেই।” [তিরমিযী]।
তিনি
(সাঃ) আরো বলেছেন, “যে
নারী নিজে নিজের বিবাহ সম্পন্ন করবে তার বিবাহ বাতিল, বাতিল, বাতিল। অভিভাবকরা যদি
ঐ নারীর বিবাহে বাধা সৃষ্টি করে, তবে যার ওলী নেই সুলতান বা শাসক তার ওলী বা অভিভাবক
হবে।”
আহমাদ,
তিরমিযী, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ।
_______________________
=>
নারী যেমন ওয়ালী অর্থাৎ তার অভিভাবকের সম্মতি ছাড়া বিয়ে করতে পারবেনা, আবার কোনো নারীর
পছন্দ ছাড়া তার গার্জিয়ান জোর করে কারো সাথে বিয়ে দিতে পারবেনা। কোনো গার্জিয়ান যদি
কোন নারীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূরবক বিয়ে দেয়, তাহলে তিনি ইচ্ছা করলে শরীয়াহ কোর্টের
মাধ্যমে এই বিয়ে বাতিল করে দিতে পারবেন। অতএব হে গার্জিয়ান সম্প্রদায়! আল্লাহকে ভয়
করুন, কন্যাদেরকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করবেন না।
রাসুলুল্লাহ
(সাঃ) বলেছেনঃ “পূর্বে বিয়ে হয়েছে এমন নারীর সাথে পরামর্শ করা
ছাড়া তাকে বিয়ে দেওয়া যাবেনা। আর একজন কুমারী মেয়েকে তার সম্মতি আছে কিনা জিজ্ঞাস না
করে তাকে বিয়ে দেওয়া যাবেনা। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলো, কুমারী মেয়েকে কিভাবে জিজ্ঞাসা
করা হবে (কারণ, সেতো লজ্জায় হ্যা বা না কিছুই বলবেনা)।
রাসুলুল্লাহ
(সাঃ) বললেনঃ “কুমারী মেয়ের নীরব থাকাই হলো সম্মতি।”
[সহীহ
আল-বুখারী ৬৪৫৫]
_______________________
কোনো
গার্জিয়ান যদি কোনো নারীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে দেয় তাহলে শরীয়াহ কোর্টের মাধ্যমে সেই
বিয়ে বাতিল করে দিতে পারবে তার প্রমানঃ
মা
আয়িশাহ (রাঃ) এর কাছে একটি মেয়ে এসে বললো, সামাজিক মান-মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য আমার বাবা
তার ভাইয়ের ছেলের সাথে (চাচাতো ভাইয়ের সাথে) আমার বিয়ের বিয়ে দেয় কিন্তু আমি এই বিয়ে
করতে চাইনি (অর্থাৎ আমাকে জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়েছে)।
আয়িশাহ
(রাঃ) বললেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) না আসা পর্যন্ত তুমি এখানে বসে থাকো।
রাসুলুল্লাহ
(সাঃ) আসলে আয়িশাহ (রাঃ) তাঁকে মেয়েটির ব্যপারে বললেন। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) মেয়েটির বাবাকে
ডেকে পাঠালেন এবং পরে মেয়েটিকে বললেন তুমি যেকোনো একটা বেছে নিতে পারো (হয় এই বিয়ে
মেনে নিয়ে সংসার করতে পারো অথবা চাইলে এই বিয়ে ভেঙ্গে দিতে পারো)।
মেয়েটি
বললোঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আমার বাবা যা করেছে আমি সেটা মেনে নিয়েছি। কিন্তু আমি
অন্য নারীদের কাছে এটা প্রমান করতে চাচ্ছিলাম (অর্থাত নারীদেরকে জোর করে বিয়ে দেওয়া
যাবেনা)।
[সুনানে
আন-নাসায়ী ৩২১৭]
_______________________
প্রশ্নঃ
কোন ছেলের ব্যপারে একটি মেয়ে যদি সন্তুষ্ট না থাকে, তাহলে তাকে বিয়ের করার জন্য চাপ
দেওয়ার অনুমতি কি বাবা-মায়ের আছে?
উত্তরঃ
সৌদি আরবের প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন ও বড় মুফাসসির, শায়খ আব্দুর রহমান আস-সা’দি (রহঃ) বলেন,
“বিয়ের
জন্য মেয়ের বাবা মেয়েটির প্রতি জোর করতে পারবেনা, মেয়ের মা জোর করতে পারবেনা, এমনকি
যদিও তারা (মেয়ের বাবা ও মা), তাদের দুজনেই ছেলের দ্বীনদারির ব্যপারে সন্তুষ্ট হয়ে
থাকেন।”
আল-মাজমু’আহ আস-সাদিআ’হঃ ৭/৩৪৯।
_______________________
সুতরাং,
নারীদের বিয়ের ক্ষেত্রে গার্জিয়ান এবং যাকে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে – উভয়ের সম্মতি লাগবে। একতরফা কোনো কিছু ইসলামে
গ্রহণযোগ্য নয়।
_______________________
এতো
গেলো সরাসরি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সুন্নাহ থেকে প্রমান...
এবার
দেখুন বাস্তব ঘটনার উপর ভিত্তি করে শায়খ সালিহ আল-মুনাজ্জিদ (হাফিজাহুল্লাহ) এর আরো
দলীল-প্রমানসহ ফতোয়া।
http://islamqa.info/en/47439